মহাজনের জমি চাষ

শ্রম (মে ২০১৫)

ফরহাদ ইমরান
  • 0
  • ৬৫
দেশ এখন অনেক এগিয়েছে ।বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দৈহিক শ্রমজীবীদের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে বহুলাংশে । এক দেশ থেকে অন্য দেশের কাজ সম্পাদন করা যাচ্ছে ।শ্রম আইনেও এসেছে পরিবর্তন । শ্রমিকদের কে সুযোগ-সুবিধা ভালই দেয়া হচ্ছে । বর্তমানের কথা আমি নাই বললাম । আমি শুধু রমিজ মিয়ার গল্পটা একটু বলতে চাই- বছরে একবার ফসল হয় ।ছয় মাস পানির নিচে জমি থাকে তাই কোন কিছু চাষ করা যায় না । বর্ষা এলে মাছ ধরে রমিজের সংসার চলে ।তিন মেয়ে দুই ছেলে আর বউকে নিয়ে তাঁর সংসার ।খুবই অভাবে চলে তাঁর দিন-রাত । তবে পরিবারের সদস্যদের দেখে বুঝার উপায় নেই যে অভাবের সংসার ।প্রতি বছরই সদস্য সংখ্যা বেড়ে চলছে ।এ বিষয়ে তাঁর কোনো আক্ষেপও নেই,আছে অকাট্য যুক্তি- রিজিকের মালিক আল্লাহ্‌ । মুখ যহন দিছে খাওনও দিব ।এই অভাবের মাঝে সন্তানদের সাদ-আহ্লাদ পূরণ করার সামর্থ্য হয়ে উঠেনি । বিয়ের পরে তাঁর বউকে একটা শাড়ী পর্যন্ত কিনে দিতে পারেনি ।অবশ্য এ ব্যাপারে তাঁর বউ এর কোনো দুঃখ-বোধও নেই ।কারন স্বামীর এ দৈন্য-দুর্দশার কথা সে জানত । রমিজের এক ছেলে তাঁর সাথে মাছ ধরে । তাঁর অনেক কষ্ট হয় বাবার এই অবস্থা দেখে ।তাঁর চোখে অনেক স্বপ্ন একদিন সে অনেক টাকা রুজি করে তাঁর পরিবারের কষ্ট দূর করবে । দেখতে দেখতেই আবার জমি চাষের সময় এসে গেছে । এদিকে তাঁর বড় মেয়ের বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে ।অনেক সমন্ধও এসেছে কিন্তু মেয়ে বিয়ে দেওয়ার মত সামর্থ্য রমিজের নেই । এইবার ব্যুরো ধানের ফলন ভাল হলে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেবে । বাপ-ছেলে জমিতে কাজ শুরু করে দিয়েছে ।মাছ বিক্রি করে কিছু টাকা জমিয়ে ছিল। এই টাকা দিয়ে মহাজনের জমিতে চাষ করল । নিজের জমির পাশাপাশি অন্যর জমিতেও কাজ করে বাপ-ছেলে মিলে তানাহলে যে প্রতিদিনের খাবার জুটবে না । গ্রামের টাকলু মাথার পয়সাওয়ালা জবির খাঁ র জমিতে প্রায়ই কাজ করে । জবির খাঁ টাকা দেয়ার সময় প্রায়ই বকবক করে ।আজ বলে উঠল কিরে রমিজ তুইত দেখছি এখন আর আগের মত কাম-কাজ করতে পারছ না ।কালকে থেকে তুই আর আইছ না ।শুধু তর পুলারে পাডাইয়া দিছ । রমিজ মিয়ার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল ।২০ বছর ধরে কাম করতাছি এহনও যে কত ট্যাহা বাকী আছে এর ত হিসাবই নাই । আর আইজ বয়স হইয়া গেছে বইলা । কপাল সবই কপাল । এইদিকে এইবার রমিজের বর্গাকৃত জমিতে ভাল ফসল হইছে ।এইবার তাঁর মেয়ের বিয়ে দিতে পারবে । ধান দেখে লোভ সামলাতে পারল না মহাজন । ধান কেটে নিয়ে আসল মহাজন ।রমিজ মিয়া জমিতে গিয়ে যখন দেখল এই অবস্থা আকাশে বিজলী চমকের মত ঘটনা ঘটল । সে ছুটে গিয়ে মহাজনকে বলল বাবু আমার জমির ধান কাইটা আনছেন ক্যান? মহাজন ধমক দিয়ে বলল আমার জমি মানে এই জমি তোর ? আমার জমি থেকে আমি ধান কেটে আনছি ।তুই কাজ করেছিস এর জন্য কিছু মাইনে নিয়ে চলে যা । রমিজ মাইনে ছাড়াই বাড়িতে চলে এল ।এভাবেই রমিজরা শোষিত হয়েছে দিনের পর দিন । রমিজের মেয়ের বিয়েটা আর দেয়া হল না ।কে জানে হয়তোবা হয়েছে এমনই কোনো আরেক রমিজের ছেলের সাথে । যারা কাজ করে তারা শুধু মাইনে চায় না সাথে স্বীকৃতিও চায় ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নাসরিন চৌধুরী হুম এমনই হয় বা হয়েছে। স্বীকৃতি দেয়া উচিত। শুভেচ্ছা জানবেন
এমএআর শায়েল সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন ভাবনা। সুন্দর হয়েছে। চালিয়ে যান। শ্রম সংখ্যায় আমার লেখা ভিন্নধর্মী গল্প-আর কতদূর পড়ার আমন্ত্রন জানাচ্ছি। সাথে গঠনমূলক সমালোচনা আশা করছি.
মাইদুল আলম সিদ্দিকী চমৎকার হয়েছে... চালিয়ে যান আমরা আরও ভালো কিছু পাবো আপনার কাছ থেকে...!
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,পাতায় আমন্ত্রন রইল।
সোহানুজ্জামান মেহরান যেটুকু লিখেছেন পড়ে ভাল লাগলো।তবে হাত আরেকটু মজবুত করতে হবে।শুভকামনা।

২৩ এপ্রিল - ২০১৫ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪