বিশ্বের কোন এক অঞ্চলের রাজা সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলেন তার রাষ্ট্রীয় কোষাগারের সব অর্থ প্রজাদের মাঝে বণ্টন করবেন। সে অনুযায়ী প্রথমে তিনি রাজ্যের প্রত্যেক পরিবারের সদস্য সংখ্যা গননা করলেন। এরপর পরিবারের আকার অনুযায়ী অর্থ ভাগ করে দিলেন। যা এতটাই নিরপেক্ষ এবং সুষম ভাবে বন্টিত হয়েছিল যেন বর্ষায় বনে নেমে আসা বৃষ্টির জল।
গোটা রাজ্য সুখ সাচ্ছ্যন্দে ভরে উঠল। রাজার সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল। এমনকি আশে পাশের রাজ্যগুলো সেই রাজ্যের প্রতিটি প্রজাকে রাজার বিশেষ নিরাপত্তা কর্মী হিসাবে ভাবতে শুরু করল।
ঠিক এক বছর পরে রাজা ঘোষণা করলেন,“ রাজ্যের প্রতিটি পরিবারকে তাদের বার্ষিক ব্যয়ের হিসাব লিপিবদ্ধ করে রাজ প্রাসাদে হাজির হতে হবে এবং রাজা প্রদত্ত অর্থের উদ্বৃত্ত অংশ রাজ কোষাগারে জমা দিতে হবে।“
ঘোষণাটি ছড়িয়ে পরলে গোটা রাজ্য বজ্রপাতের শব্দ শোনার মত থমকে দাড়িয়ে পড়ল। যেন সুইচ অফ করার আগেই যন্ত্রটি থেমে গিয়েছিল। ঠিক সিটি বাজার আগেই যেন প্রেশার কুকারটি উত্তপ্ত বাস্প ছেড়ে দিয়েছিল। কিম্বা বেলুনটি হিলিয়াম গ্যাস ভর্তি ছিল কিন্তু উপড়ে উঠতে পারছিল না।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শুধু মাত্র একজন লোক এলেন। তার গায়ে এক প্যাঁচের কাপড় জড়ানো। আসলে কাপড়টি ছিল অসংখ্য কাপড়ের টুকরার জোড়া। যেটি নৌকার পালের মত হাওয়ায় ভাসানো যায়। হতে পারে প্যারাসুটের কাপড় যেটাকে বিশ্বাস করে ঝাপ দেয়া যায়।
লোকটি ডান হাতে রাজাকে একটা কাগজ দিয়ে বললেন,” এই নাও তোমার হিসাব।“ আর বাম হাতে একটা থলে দিয়ে বললেন,” এই নাও পৃথিবী।“
রাজা দেখলেন হিসাবের নামে একটা সাদা কাগজ দিয়েছে আর তাকে দেয়া ব্যাগের সব অর্থই এক বছর পরেও অব্যবহৃত।
রাজা হাসলেন, বললেন,” তুমিই একমাত্র ব্যাক্তি যে আমার ডাকে সাড়া দিয়েছ, এই অর্থ তোমার।“ রাজা তার দিকে ব্যাগটি বাড়িয়ে দিলেন। লোকটি রাজাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,” অর্থ তোমারি থাক, তোমার হিসাব একটু কঠিন হোক। শীঘ্রই মহা হিসাবরক্ষকের সাথে তোমার সাক্ষাত হবে।“ - কতটা দ্রুত? - আসছে যুদ্ধে। রাজা হেসে বললেন,” প্রজারা আমায় রক্ষা করবে।“ লোকটি হাসলেন , বললেন,” গরীব প্রজারা তোমার উপর রুষ্ট। এই প্রথম তারা সঞ্চয়ের মুখ দেখল কিন্তু তুমি তাদের কাছে হিসাব চেয়েছ। ওদের ভয় তুমি জীবিত থাকলে ওদের হিসাব দিতে বাধ্য করতে পার। আর ধনীরা ক্ষেপে আছে আগে থেকেই, তাদের ধারনা তোমার সুষম বণ্টন তাদের বেশি কিছু পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। একই ধারনা রাজ কর্মচারীদেরও। আর তোমার পরিবারের লোকজন তোমার উপর বিরক্ত, তারা মনে করছে তুমি তাদের জন্য কিছুই রাখলে না। সবাই তোমার বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ।“
রাজা বললেন,” তুমি ভণ্ড, রাজ্যের সবার কাছে আমি দয়ালু?“ - মহা হিসাবরক্ষক দয়ালু এবং অমর। তুমি দয়ালু কিন্তু মরণশীল। - তুমিকি বলতে পারবে আমার মন কি চায়? - তুমি প্রজাদের ততটুকু দিতে চাও যার যতটুকু প্রয়োজন। একজন রাজা যিনি পছন্দ করেন সমাজতন্ত্র! - তুমি কে? - তুমিই আমি, আমিই তুমি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ইমরানুল হক বেলাল
মন দিয়ে আবার পড়ে দেখেছি ।
এটা রাজ্য রাজা প্রজার গল্প।
বেশ ভালই লিখেছেন।
এভাবে লিখতে লিখতেই মানুষ এক সময় দার্শনিক হয়ে উঠে।
আপনার শুভকামনা রইল।
ভোট আগেই দিয়েছি।
আমার পাতায় আমন্ত্রণ ।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।