অনুপমা খুব অসুস্থ কয়েকদিন ধরে। পড়ালেখার জন্য অনুপমা ঢাকাতে থাকে ওর ফ্যামিলি থাকে গ্রামের বাড়িতে। অনুপমা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখানের ২য় বর্ষের ছাত্রী। অনুপমা কয়েকজন বান্ধবীর সাথে বাসা ভাড়া করে থাকে ধানমন্ডিতে।
কয়েকদিন ধরে অনুপমার খুব জ্বর। জ্বর না কমায় অনুপমা ওর বান্ধবী মুনার সাথে ডাক্তার এর কাছে এসেছে। ডাক্তার কিছু পরীক্ষা করে নিয়ে যেতে বলেছে আর কিছু ঔষুধ খেতে বলেছে আপাতত। ডাক্তার দেখিয়ে অনুপমা আর ওর বান্ধবী বাসায় ফিরে যায়। অনুপমার অসুখের কথা অনুপমা বাবা- মা কে জানায়নি কারণ তারা দুরে থাকে অযথাই চিন্তা করবে।
পরেরদিন পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তার এর কাছে যায় অনুপমা। ডাক্তার রিপোর্ট দেখে বলে তোমার তো ডেঙ্গু হইছে। প্লাটিলেটের পরিমান ও কমে গেছে তুমি এক কাজ কর ভর্তি হয়ে যাও হাসপাতালে। আর রক্ত দেয়া লাগবে তোমার। মুনা অনুপমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয় আর রক্তের জন্য অন্যান্য বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করে। রক্তের ও বেবস্থা হয়ে যায় খুব দ্রুত।
মুনার ক্লাস থাকে মুনা চলে যায় ক্লাসে। অনুপমা একা একা হাসপাতালে বিরক্ত অনুভব করতে থাকে। সময় কিভাবে কাটানো যায় তা চিন্তা করতে থাকে। একসময় ঠিক করে যে অপরিচিত নাম্বারে ফোন দিয়ে কথা বলবে অনুপমা। এতে কিছুটা সময় কেটে যাবে বলেই ধারণা অনুপমার। যেই ভাবা সেই কাজ অপরিচিত নাম্বারে কল দিয়ে কথা বলতে থাকে অনুপমা কিন্তু অপরিচিত মানুষদের সাথে কেউ সাধারনত কথা বলতে চায় না। অনুপমা কিছুটা হতাশ হয় কিন্তু তারপর ও কল দেয়। অনুপমা ঠিক করে এইবার যাকে কল দিবে তাকে কারণ জানাবে কথা বলার তাহলে হয়তো সেই লোকটি কথা বললে ও বলতে পারে। অনুপমা আবার কল দেয়। ওপর প্রান্ত থেকে হ্যালো কে বলছেন ? অনুপমা : আমি রত্না বলছি (আসল পরিচয় লুকিয়ে যায় অনুপমা) । ওপর প্রান্ত থেকে জবাব আসে আমি তো রত্না নাম কাউকে চিনি না। অনুপমা : আপনি আসলে আমাকে চিনেন না। আমি কি আপনার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলতে পারি ? ওপর প্রান্ত থেকে বলে আমি অপরিচিতদের সাথে কথা বলি না। এভাবেই কিছুক্ষণ কথা চলতে থাকে। অনুপমা জানায় কেনো ফোন দিয়েছে। সব শুনে অপর প্রান্তের লোকটির একটু মায়া হয়। কথা বলতে রাজি হয় অনুপমার সাথে। ওপর প্রান্তের ছেলেটির নাম মারুফ বলে জানায় অনুপমকে।
অনুপমা হাসপাতালে ছিল মোট ৪ দিন। মারুফের সাথে কথা বলে ভালই সময় কেটেছে অনুপমার। বাসায় ফিরে আসে অনুপমা। হাসপাতালে যে সম্পর্কের শুরু তা ভালোই চলতে থাকে দুজনের। সময়ের সাথে সাথে এ সম্পর্ক বন্ধুত্ব থেকে গড়ায় প্রেমে। যদিও এ ভালোবাসা এখনো মোবাইল কথোপকথনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। দুজনেই দেখা করার ইচ্ছে সম্মতি জানায়।
কয়েকদিন পরেই দেখা করার দিন ঠিক করে অনুপমা। ঠিক সময়েই অনুপমা যায় দেখা করতে কিন্তু মারুফ এখনো আসেনি। সকাল ১১ টার সময় আসার কথা রূপমের। ১ ঘন্টা পার হয়ে গেছে এখনো আসেনি রুপম। রূপমের মোবাইলে কল করেই যাচ্ছে অনুপমা কিন্তু রুপম ফোনটা ধরছে না। অনেকক্ষণ পরে ফোন ধরে কেউ একজন। এটা রূপমের কন্ঠ না নিশ্চিত অনুপমা। অনুপমা জানতে চায় আপনি কে বলছেন ? ওপর প্রান্ত থেকে জানায় এই মোবাইল যার তার এক্সিডেন্ট হয়েছে। আপনি দ্রুত হাসপাতালে চলে আসেন। অনুপমা যেন আকাশ থেকে পড়ছে। নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে হাসপাতালে রওনা দেয় অনুপমা।
হাসপাতালে যখন পৌছে অনুপমা তখন রূপমের বাসার সবাই সেখানে। রূপমের বাসার সবাই কাদছে। সবার কান্না দেখে অনুপমার মনটা কেমন যেনো আরো বেশি খারাপ হয়ে উঠে। ইচ্ছা করছে চিত্কার করে কাদতে। রূপমের বাসার কেউ অনুপমকে চিনে না। অনুপমা একটু এগিয়ে জানতে চায় সবাই কাদছে কেনো ? রূপমের বাসার একজন জানায় রুপম রোড এক্সিডেন্ট এ মারা গেছে। অনুপমার ভিতরটা কষ্টে কেদে উঠছে তবুও কান্না চেপে বাইরে বেড়িয়ে আসে। বাইরে বের হয়ে একটা রিকশা নেই অনুপমা। রিকশাতে উঠে অনুপমার ভিতরে চলতে থাকা কষ্টগুলো যেন বেরিয়ে পড়ে। হাউমাউ করে কাদতে থাকে অনুপমা। মনের কষ্ট নিয়ে বাসার পথে যেতে থাকে অনুপমা। এ কষ্ট কাউকে বলে বুঝানো যাবেনা হয়ত সারাজীবন এ কষ্ট বুকে নিয়েই কাটিয়ে দিতে হবে অনুপমকে। কাউকেই হয়ত অ কষ্টের কথা বলে বুঝানো যাবেনা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
imranul haque belal
Ati ekti asadaron golpo
mohammad alam bhai
Aponar jonno duya kori
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।