1.
হ্যালো , অধরা তুই কোথায় ?
এক্ষুণি টিএসসিতে চলে আয় | দশ মিনিটের মধ্যে , তাড়াতাড়ি |
অয়ন ভাইয়া , আমি এখন আসতে পারবনা | আমার কাজ আছে |
তোর আবার কাজ কী ? খালি তো খাস আর ঘুমাস |
ভালো হবেনা অয়ন ভাইয়া , আমি শুধু খাই আর ঘুমাই | মনে রেখ আমি কিন্তু ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্রী |
ঠিক আছে , তুই পড়াশুনা করিস | তোর মতো ভালো মেয়ে সারা পৃথিবীতে নাই | এখন প্লিজ , একটু তাড়াতাড়ি আয় |
ঠিক আছে আসতে পারি তবে একটা শর্ত আছে |
একটা কেন একশটি শর্ত মানতে রাজি আছি |
একশটি মানতে হবেনা , এখন শুধু একটি মানলেই হবে | আইসক্রিম খাওয়াতে হবে|
ঠিক আছে , একশটি আইসক্রিম খাওয়াবো | তুই জলদি আয় তো |
অধরার বড় ভাই রাতুলের বন্ধু অয়ন | অয়ন আর রাতুল একসংগে বড় হয়েছে | একসংগে লেখাপড়া করেছে | অয়নকে নিজ ছেলের মতো ভালোবাসেন রাতুলের মা - বাবা |
অধরা ক্যাম্পাসেই ছিল তাই আসতে দেরি হলোনা |
অয়ন ভাইয়া , বললে না তো কি জন্য ডেকেছ? আর আমরা কোথায় যাচ্ছি ?
কোথায় যাচ্ছি ? কি জন্য ডেকেছি , সব পরে বলবো | এখন চুপ করে থাক | বেশি কথা বলিস না | নাকি আমার সাথে যেতে তোর সমস্যা আছে ?
সমস্যা ! সে তো প্রশ্নই আসেনা | তবে মাঝে মধ্যে তোমার কাজকর্মে মনে হয় তুমিই একটা বিরাট সমস্যা |
কি বললি ? আমিই একটা সমস্যা ! কান ধর বলছি , কান ধর |
এখানে কান ধরলে সবাই দেখবে বরং তুমি যেখানে নিয়ে যাবে সেখানে গিয়ে ধরবো| তোমার সামনে , অন্য কেউ দেখবে না | শুধু তুমি . .
দেড় ঘণ্টার মধ্যে ওরা পদ্মার চরে গড়ে ওঠা পদ্মা রিসোর্টে গিয়ে পৌঁছালো | এতো সুন্দর জায়গা ! চারদিকে পদ্মার বিস্তৃত জলরাশি | আনন্দে আত্মহারা হয়ে অধরা চিৎকার করে বললো , অয়ন ভাইয়া এই দেখো কান ধরেছি | এমন জায়গায় কান ধরলে কান ধরা সার্থক |
কান ধরতে হবেনা | এখন বল , তোকে কেমন সারপ্রাইজ দিলাম ?
It's a great surprise . You are so sweet .
Only sweet ?
Not only sweet but also rosogolla .
আবার ফাজলামো করা হচ্ছে |
সরি , সরি অয়ন ভাইয়া |
সারাদিন আনন্দ - উচ্ছাসে কাটলো ওদের | কিন্তু যে জন্য অধরাকে আজ এখানে নিয়ে আসা সে কথাটি আজও বলতে পারল না অয়ন |
২.
অয়ন ভাইয়া , আগামীকাল সকালে আমাদের বাসায় একটু আসতে পারবে ?
কেন ?
কাল তোমাকে একটি জায়গায় নিয়ে যাব | ঠিক দশটায় বাসায় চলে আসবে মনে থাকে যেন | তুমি তো আবর অলওয়েজ লেট | লেট লতিফের মতো লেট অয়ন বলেই অধরা হাসলো |
পরদিন ঠিক দশ মিনিট লেটে পৌঁছাল অয়ন |
আজ সারাদিন রিকশায় করে ঘুরে বেড়াব |
রিকশায় করে সারাদিন ঘোরার কি আছে ?
আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই | আমার সাথে যেতে তোমার সমস্যা আছে নাকি অন্য কাউকে শিডিউল দিয়ে এসেছ ?
সেই কপাল কি আমার আছে ? সেই কপাল থাকলে এখন শুধু শুধু সময়টা নষ্ট করি | অধরাকে খেপানোর জন্য বললো অয়ন |
আমার সাথে কোথাও গেলে তোমার সময় নষ্ট হয় ? ঠিক আছে , তোমাকে আমার লাগবে না | তুমি রিকশা থেকে নামো |
রাগ করছিস কেন ? আমি তো দুষ্টমি করে বললাম | তোর মতো সুন্দরীর পাশে বসলে নিজেকে ধন্য মনে হয় |
ধন্য না কচু | আমার মতো সুন্দরী মেয়ের পাশে বসে রিকশায় ঘুরছ একটু স্মার্ট হয়ে আসবে তো | গাল ভরা খোঁচা দাড়ি | কতদিন হয়েছে শেভ করোনি | আয়নায় নিজের চেহারা দেখো ?
অয়ন মনে মনে ভাবলো , আসলেই তো অধরা কত সুন্দরী একটি মেয়ে | অয়ন কতবার চেষ্টা করেছে অধরাকে মনের কথা খুলে বলতে , পারেনি | যখনই নিজের মনের গহিনে অনেক দিনের জমানো কথাটি বলতে যাবে তখনই কি যেন হয় | সবকিছু গুবলেট হয়ে যায় | আজ অয়ন বলবেই | আজ অধরাকে ওর মনের কথা অবশ্যই বলবে |
কি অয়ন ভাইয়া , একেবারে পান্তা ভাত হয়ে গেলে দেখি !
সেটি আবার কি ? মানুষ কি কখনো পান্তা ভাত হয় ?
হয় , হয় | তোমার মতো মানুষ মাঝে মধ্যে পান্তাভাত হয় | তবে তোমার মনটা খুব ভালো | এজন্যই তোমাকে আমি পছন্দ করি |
তোমাকে আমি পছন্দ করি কথাটি যেন অয়নের মনে আনন্দের বার্তা বয়ে দিলো . . তাহলে অধরাও কি অয়নকে ভালোবাসে ! ভাবতেই অদ্ভুত রকমের ভালোলাগায় শিহরিত হলো অয়ন |
এই রিকশাওয়ালা ভাই , রাখো | অধরার কথায় সংবিৎ ফিরে এলো অয়নের |
ওরা একটি কফিশপে ঢুকলো | কোণার দিকের টেবিলে একটি ছেলে বসা ছিল |
অধরা সরাসরি সে দিকটায় গেল | ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বললো , দেখোনা অয়ন ভাইয়ার জন্য দেরি হয়ে গেল | সব কিছুতেই লেট |
অয়নের দিকে ছেলেটি হাত বাড়িয়ে দিলো | ভদ্রতার খাতিরে অয়নও নিজ হাত বাড়ালো |
অয়ন ভাইয়া , ও হচ্ছে সোহান | আমাদের ডিপার্টমেন্টেই মাস্টার্সে পড়ে | আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি| আমাদের ব্যাপারটা তোমাকেই প্রথম বললাম | আব্বু-আম্মুকে তোমাকেই ম্যানেজ করাতে হবে | একমাত্র তুমিই পারবে |
কাঁপা কণ্ঠে অধরাকে আশ্বস্ত করলো অয়ন | আর মনে মনে ভাবলো , অধরা তুই সত্যিই বলেছিস , আমি অলওয়েজ লেট |
ওদেরকে Congratulation বলে বাহিরের দিকে পা বাড়ায় অয়ন। পেছন হতে অধরা অয়নের বাম হাতটি ধরে টান দিয়ে বলল, ’ বুদ্ধু , তুমি কি আমাকে কখনো তোমার মনের কথাটি বলবেনা?’
অয়ন হতভম্ব হয়ে গেল। খানিকক্ষণ অহনার দিকে কিছু বলার আগেই অহনা বলল, ’ সোহান আমার খুব ভালো বন্ধু বৈ আর কিছু না। ওর পরামর্শেই তো আজকের নাটকটি করলাম । জানি, তুমি এখনো কিছুই বলবে না কারণ তুমি তো অলওয়েজ লেট। তাইতো আমিই তোমাকে বলে ফেললাম, ও I Love You.
কাঁপা কণ্ঠে অয়ন বললো , অধরা তুই সত্যইি বলছেসি , আমি অলওয়জে লটে ।
১৩ জানুয়ারী - ২০১৫
গল্প/কবিতা:
৫ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪