পরীক্ষা শেষ। আমার দাদাবাড়ি মহিমাগঞ্জ গেলাম ছুটিতে। বাড়িটি অন্যসব বাড়ি থেকে সম্পুর্ণ আলাদা। পিছনে জঙ্গল দিয়ে ঘেরা। দাদাসহ মোট ১৫ থেকে ২০টি পরিবারের বসবাস। আমার চাচারা সবাই এখানে থাকে। প্রথম দিন রাতে দাদী আমাকে শোয়ার রুমে রেখে নিজের রুমে চলে গেলেন। আমি ঠিকঠাক মতই ঘুমালাম।
পরের দিন রাতের ঘটনা... আমার মোটেও ঘুম আসছিলো না। প্রায় মাঝরাত। বিদ্যুৎ নেই। ঘুটঘুটে অন্ধকার আর নিস্তব্ধ রাত। জানালাটা খোলাই ছিল। হঠাৎ বিকট আওয়াজ শুনতে পেলাম। আমার বুক দুর দুর করে কেঁপে উঠলো। সব এলোমেলো হয়ে গেল। এত বিকট আওয়াজ আমি আগে কখনও শুনিনি। পাশের টেবিলের ড্রয়ারে রাখা টর্চ লাইটটা জ্বালিয়ে দরজার দিকে ধরলাম। দরজাও ঠিকঠাক। পাশের রুমের আমার চাচাতো ভাই রাকিবকে ডাক দিলাম। কোন আওয়াজ পেলাম না। আমার দুঃশ্চিন্তা হতে লাগলো। নিজেই নিজেকে সাহস দিতে লাগলাম। আসলে আমি স্বপ্ন দেখছি না বাস্তব। ডান হাত দিয়ে কানে চিমটি বসিয়ে দিলাম। ইশ! চিমটিটা সত্যিই আমার কানে লেগেছে। আমার শরীর আরও হিম হতে লাগলো। আমার রুমের ডান কোণায় একটা অলৌকিক ছায়ামূর্তির মত দেখা গেল। ছায়াটি ক্রমেই আমার দিকে এগিয়ে আসছে আবার খানিক এগিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। আমি তখনও ওই ছায়ার দিকে তাকিয়ে আছি। আমার শরীর শিউরে উঠল। ছায়াটি দেখতে মানুষের না পশুর তা ঠাহর করতে পারছি না। মনে হলো হয়তো কেউ এসেছে। আমি আবারও ডাক দিলাম রাকিবের নাম ধরে। কিন্তু কই! কোন আওয়াজ পেলাম না। চোখ আড়াল হতেই দেখি ছায়াটি তার জায়গায় আর নেই। ভোর হতে না হতেই দরজাটি ঠকঠক আওয়াজ করলো। প্রথমে আমি স্থির হলাম। তারপর ঠিক করলাম এবার পরীক্ষা করা যাক। আসলে মানুষ না অন্য কিছু। তখনও পরপর আওয়াজ করেই চলেছে। দরজার নিচের দিকে তাকালাম। কিন্তু পায়ের মত কিছু দেখা যাচ্ছে না। পরপর ৩ থেকে ৪ বার শব্দ হওয়ার পর গলার আওয়াজ পেলাম। আমার দাদী। দরজা খুলে আমার দেখা সব ঘটনা দাদীকে খুলে বললাম। দাদী একটু মুচকী হাসি হেসে অতীতের সব ঘটনা লুকানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু আমার জানার আগ্রহ দেখে দাদী অতীতের সব ঘটনা আমাকে খুলে বলল।
প্রায় ১’শ বছর পূর্বে এইখানে ঝাউ,জঙ্গল ভরা ছিল। ভূতের বসবাস ছিল এখানে। বর্তমান বাড়িঘর হওয়াতে তাদের আবাসস্থল ভেঙ্গে যায়। তাই তারা নতুন কোন মানুষের আগমন দেখলেই বিভিন্ন আঙ্গিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তারা কোন ক্ষতি করে না। আমি যখন প্রথমে এই বাড়িতে আসি, তখন ওরা আমাকেও ছায়ামূর্তি, কুকুর, বিড়াল, বউ হয়ে ভয় দেখায়। এই রকম করে তোর মাকেও ভয় দেখিয়েছিল। সেই জন্য তোর মা আমাদের রেখে শহরে গিয়ে থাকে। সব শুনে আমি মনে কোন ভয় না রেখে সকালের নাস্তা সেরে মহিমাগঞ্জ রেলষ্টেশনে এসে ট্রেন ধরে শহরের দিকে রওনা হলাম।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নাসরিন চৌধুরী
ভয় পাবার মত তবে এমন বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হয়না মানে ভূত এভাবে কাউকে ভয় দেখায় বুঝি!! কি জানি ! শুভকামনা জানবেন
ফারুক নুর
"আমার দুঃশ্চিন্তা হতে লাগলো। নিজেই নিজেকে সাহস দিতে লাগলাম। আসলে আমি স্বপ্ন দেখছি না বাস্তব। ডান হাত দিয়ে কানে চিমটি বসিয়ে দিলাম। ইশ! চিমটিটা সত্যিই আমার কানে লেগেছে। আমার শরীর আরও হিম হতে লাগলো। আমার রুমের ডান কোণায় একটা অলৌকিক ছায়ামূর্তির মত দেখা গেল। ছায়াটি ক্রমেই আমার দিকে এগিয়ে আসছে আবার খানিক এগিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। আমি তখনও ওই ছায়ার দিকে তাকিয়ে আছি।" ভয়ের কি চমৎকার উপস্থাপনা । ভালো লিখেছেন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।