কুহেলী

ভৌতিক (সেপ্টেম্বর ২০১৭)

Fahmida Bari Bipu
মোট ভোট ৪৮ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৪.৯৫
  • ৩৩
  • ১০
  • ২০
কুহেলী
নির্জন পাহাড়ি রাস্তায় বেশ উদ্ধত গতিতেই গাড়ি হাঁকিয়ে চলেছে তন্ময়। গাড়ির গতি যথেষ্ট উপরের দিকে। ঘোরানো হলেও রাস্তা মোটেও এবড়োথেবড়ো নয়। আর মোটামোটি ফাঁকাই বলা যেতে পারে। সামনে থেকে বেশ অনেকক্ষণ বাদে বাদে একটা দুটো গাড়ির দেখা মিলছে।
একটু আগে একপশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে। এখনো ঝিরঝির করে ঝরে চলেছে। আকাশ বেশ মেঘলা, দিনের বেলাতেই কেমন একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন ভাব। রাস্তাঘাট পিচ্ছিল হয়ে আছে। পাহাড়ি পিচ্ছিল রাস্তায় দুরন্ত গতিতে গাড়ি হাঁকানো মোটেও কাজের কথা নয়। কিন্তু এই শুনশান মায়াবী নীরবতায় তন্ময়ের কেন যেন গতি কমাতে মন চাইছে না। সিডি প্লেয়ারে জগজিৎ সিং তার জাদুকরী কণ্ঠের মায়াজাল বিছিয়ে চলেছেন। তারই মোহাবিষ্টতায় আর প্রকৃতির নির্জনতায় তন্ময় বিভোর হয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল।
মাঝে মাঝেই হুটহাট লং ড্রাইভে বেরিয়ে পড়তে মন চায় ওর। বন্ধুবান্ধব মিলে তো একসময় প্রায়ই বেরিয়ে পড়া হতো। কিন্তু এখন পেশাগত ব্যস্ততায় সেভাবে আর সময় হয় না। বয়সের সাথে সাথে গাম্ভীর্যও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। তাই ঠিক সবসময় হুল্লোড়ে সফর আর উপভোগ্য হয় না। নিজেই নিজের সঙ্গী হতে ইচ্ছে করে মাঝে মধ্যে।
আর বৃষ্টিভেজা এমন মায়াবী নির্জনতায় সাঁই সাঁই ছুটে চলা গাড়ির নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ ওর নিজের হাতে...এই ভাবনাটির মাঝেই কেমন যেন একটা ঘোরলাগা ব্যাপার আছে। তন্ময় গভীর তন্মময়তায় সেই ঘোরটাকেই উপভোগ করছে এখন।
সেই সাথে উপভোগ করছে প্রকৃতির অবারিত ঔদার্য। একেবারে চোখ জুড়িয়ে যাওয়া সৌন্দর্য!
রাস্তার দু’পাশে হ্রদের বিচিত্র মনোরম শোভা আর বৃষ্টিস্নাত পাহাড় ঘেঁষা প্রান্তরে আদিবাসীদের নিজস্ব জুমচাষ। রাঙ্গামাটির রূপের যেন শেষ নেই। প্রতি বছর কত পর্যটক শত বাধা বিপত্তিকে দূরে ঠেলে রাঙ্গামাটি পর্যটনে আসেন। পাহাড়ের কোলে লুকিয়ে থাকা ঝরণা আর সবুজ অরণ্যের মাঝে নাগরিক জীবনের ক্লান্তি দূর করেন।
ব্যবসায়ী তন্ময় অনেকদিন থেকেই মনে মনে স্বপ্ন বুনে চলেছে, পর্যটন ব্যবসায় নামার। এই এতগুলো বছরে এটা সেটা অনেক রকম ব্যবসা করে ভালোই হাত পাকানো হয়েছে। শুঁটকী ব্যবসা থেকে শুরু করে আমদানী রপ্তানী পর্যন্ত...কিছুই বাদ দেয়নি সে। তাতে পয়সা এসেছে হু হু করে, কিন্তু মনে তৃপ্তি আসেনি। এমন একটা কিছু করার সাধ জাগে, যাতে অর্থ আর পরিতৃপ্তি দুটোই ইচ্ছেমত লুটোপুটি খায়।
হোটেল ব্যবসায়ীদের দেখেই স্বপ্নটা প্রথম মাথাচাড়া দেয়। সুন্দর একটা হোটেলকে সাজিয়ে গুছিয়ে কাস্টমারদের মনের মতো করে উপস্থাপন করার মাঝে দারুণ একটা শৈল্পিক ব্যাপার আছে। নিজেকে বেশ শিল্পী শিল্পী মনে হয় যেন বিষয়টাতে।
কিন্তু ঢাকা শহরে হোটেল বানিয়ে ব্যবসা ফেঁদে বসতে কেন যেন মনে থেকে সায় মিলতো না ওর। প্রতিযোগিতা তো আছেই, তার ওপরে জমির আকাশ ছোঁয়া মূল্য। ঠিকমত জমাতে না পারলে অর্থ আর শ্রম দুটোই একেবারে পানিতে যাবে। শেষে লাভ খাওয়া তো দূর, বিনিয়োগের অর্থ উঠে আসাই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
আর ঢাকাতে কী মানের হোটেল বানাবে তা নিয়েও তন্ময় সন্দিহান। তার আবার সবকিছুতেই বেজায় নাক উঁচু। টপক্লাস হাই ফাই লেভেলের কাস্টমার ধরে রাখার মতো হোটেল না বানাতে পারলে কিছুতেই সেই অর্থে পরিতৃপ্তি মিলবে না তন্ময়ের। কিন্তু সেরকম কাস্টমার ‘র্যা ডিসন’ ‘প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ’ কিংবা ‘শেরাটন’ ছেড়ে ওর হোটেলে আসবে কোন দুঃখে!
তাই মনের দুঃখ মনেই চেপে রেখে চুপ করেই বসে ছিল তন্ময়। ঠিক চুপ করে অবশ্য বলা যায় না। বরং বলা যায়, সুযোগের অপেক্ষাতে ছিল এতদিন। সঠিক সময় আর সঠিক স্থানে মনের মতো একটা সুযোগ পেলে স্বপ্নটা নিয়ে আবার ভাবা যেতে পারে।
সেই সুযোগ কেমন যেন হুট করেই পেয়ে গেল একদিন।
ওর আরেক ব্যবসায়ী বন্ধু ইমন বেশ কিছুদিন ধরেই ব্যবসার কাজে রাঙ্গামাটি এসে বসে ছিল। ইমনের কাজকর্মই যেন কেমন! কীসের যে ব্যবসা করে সেটাও ঠিকঠাক কাউকে জানায় না। আজ এখানে তো কাল ওখানে। মাঝেমাঝেই ডুব মেরে বসে থাকে। তারপরে হঠাৎ একদিন ভুস করে মাথা তুলে নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়।
এবারেও বেশ অনেকদিন ডুব মেরে থেকে একদিন আচমকাই তন্ময়কে ফোন করলো। গলার স্বর বেশ উচ্ছ্বসিত।
‘দোস্ত, এতদিনে মনে হয় তোর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে রে!’
তন্ময় হঠাৎ এই কথার সূত্র খুঁজে পায় না। অবাক কণ্ঠে বলে,
‘কোন স্বপ্ন? কীসের কথা বলছিস?’
‘বাঃ! স্বপ্ন তোর, আর তোর নিজেরই মনে নাই! আমি এখন রাঙ্গামাটি দোস্ত। আর সপ্তাহখানিকের মতো থাকবো। তারপরে ঢাকায় ফিরবো। এইখানে জব্বর একটা বাড়ির সন্ধান পাইছি। অনেকখানি জায়গা নিয়ে একেবারে পেল্লাই বাড়ি। চারপাশের সিন সিনারিও দারুণ। তোর হোটেল এইখানে বানাইতে পারলে দারুণ একটা ব্যাপার হবে।’
তন্ময় এতক্ষণে বুঝতে পারে। খুব বেশি আশান্বিত হয় না সে। কীসের না কী একটা বাড়ির সন্ধান পেয়েছে, সেটাকে হোটেল বানিয়ে ফেলার চিন্তাভাবনাও এর মধ্যেই শুরু করে দিয়েছে! তন্ময় তাই গলার স্বর স্বাভাবিক রেখেই খানিকটা নিস্পৃহ গলায় বলে,
‘মুরগী দেখলেই ঝলসানো মাংসের চিন্তা মাথায় আসলে হবে বন্ধু? কার বাড়ি কোথায় বাড়ি...তাদেরকে উৎখাত করে হোটেল বানাতে বসবো নাকি?’
ইমন বেশ যেন মর্মাহত হয়। দুঃখিত কণ্ঠে বলে,
‘দোস্ত, তুমি নামেই আমার দোস্ত! আমার ওপরে একবিন্দু ভরসা নাই তোমার। আমি কী না জেনেই তোমারে মিথ্যামিথ্যি আশার আলো দেখাইতেছি? এই বিশাল বাড়ির মালিক দুই বুড়া বুড়ি। তাদের ছেলে-মেয়ে কেউ নাই। আশেপাশের কারো সাথেই তাদের তেমন আলাপ পরিচয়ও নাই। দু’একজন চাকর বাকরই মনে হয় তাদের দেখাশুনা করে।
অনেকদিন ধরেই তারা বাড়ি বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে রেখেছে। এই বিশাল বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে তারা কই যাবে কেউ জানে না। তবে এখন পর্যন্ত বাড়ি বিক্রি হয়নি। মাঝে মাঝে কেউ কেউ আগ্রহী হয়ে নাকি খোঁজ খবরও করেছে। তবে এখনো কোনো খরিদ্দার পাওয়া যায়নি।
দাম শুনে হয়ত পিছিয়ে পড়ে। বিশাল বাড়ি। তাও আবার এইরকম একটা জায়গায়। দাম তো সেইরকমই হবে! কিন্তু তুই তো ব্যবসায়ী। যে দামে কিনবি তার কয়েকগুণ উশুল করে নিবি। তাই তোকে জানানোটা দরকার মনে করলাম।’
‘তুই নিজে দেখেছিস?’
‘এখনো দেখিনি। তবে শুনেছি। আমাকে এক ডিলার ফোনে এই বাড়ির কথা বলেছে। আমার ব্যবসা বাণিজ্যের কথা জানতে পেরে মনে করেছে, হয়ত হোটেল খোলার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাতে পারি। তখনই আমার তোর কথা মাথায় এসেছে। তুই না হোটেলের ব্যবসা করতে চাস!
এই সপ্তাহটা আমি রাঙ্গামাটি আছি। তুই এই সপ্তাহেই চলে আয়। আমার সাথে থাকবি। দু’জনে মিলে একসাথে বাড়িটা দেখতে যাবো।’
‘হুম! না দেখেই এত উচ্ছ্বাস! বুড়ো বুড়ি কেন এতদিন পরে বাড়িটা বিক্রি করতে চাইছেন? ভূতুড়ে বাড়ি নয় তো! সেইরকম কিছু হলে হোটেল বানিয়ে তো উল্টে আরো ফেঁসে যাবো!’ তন্ময় মজা করে বলে।
ইমন খেপে ওঠে,
‘আজেবাজে বকে সময় নষ্ট করিস না। কিনবি কী না বল! আবারো বলছি আমি থাকতে থাকতেই চলে আয়। তোকে আশেপাশের এলাকা একটু ভালোমত দেখিয়েও দিতে পারবো।’
তন্ময়কে আর বেশি কিছু ভাবনাচিন্তা করার সুযোগ দেয় না ইমন। নিজেই একরকম ওর আসার দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলে। তন্ময়ও মনে মনে ভাবে, গিয়ে দেখে আসাতে তো আর ক্ষতি নেই কিছু। কেনা না কেনা পরের ব্যাপার। দেখলেই যে কিনে ফেলতে হবে এমন তো কোন কথা নেই!
তবে এই রাস্তায় আসতে আসতে আর পাহাড়ি সৌন্দর্যের অশ্রুত সঙ্গীত অনুভব করতে করতে তন্ময় মনে মনে সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলে।
নাঃ! এসে ভুল করেনি সে। যত দামই হাঁকাক বুড়ো বুড়ি, বাড়িটা সে কিনবেই। ব্যবসা সে বেশ ভালোই বোঝে, এতটুকু বিশ্বাস তার নিজের প্রতি আছে। এই অপার্থিব সৌন্দর্যের নির্জনতাটাকেই সে বিশেষ পারঙ্গমতায় উপস্থাপন করবে।
নির্জনতার নিজস্ব একটা ভাষা আছে। সেই ভাষাকে ঠিকমত ফুটিয়ে তুলতে পারলে কোলাহলও তার কাছে হার মেনে যায়।
এসব ভাবতে ভাবতেই গাড়ি চালাচ্ছিল তন্ময়। বৃষ্টিভেজা পথঘাট কেমন যেন রহস্যময়তার চাদরে মুড়িয়ে নিয়েছে নিজেকে। দিনের আলো ফুরোতেও আর বেশি দেরি নেই। দু’পাশের ঘন ঝোপঝাড়ের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে শেষ বিকেলের মরা ক্ষীণ আলো। একটু পরে সেটুকুও মিলিয়ে যাবে। গাড়ির স্পিডটা একটু কমিয়ে দেওয়ার জন্য হাতটা তুলতে গিয়েও নামিয়ে ফেললো তন্ময়। আজ থাকুক না এটুকু গতি! নির্জন পথ। এই তো সুযোগ গতিকে উপভোগ করার!
জগজিৎ সিং বাজতে বাজতে কখন যেন থেমে গিয়েছে। সিডিটা বের করে নিল তন্ময়। এখন একটু জেলোতে ডুব মারা যাক। নির্জন অন্ধকার রাস্তা...দু’পাশে মায়াবী নৈঃশব্দ..একটুখানি চাঁদের আবির্ভাবে আকাশভরা কালো মেঘের ইতিউতি সরে যাওয়া...এসবের মাঝে জেনিফার লোপেজের উদ্দাম মাদকে ডোবা সুরলহরী। নিজের অজান্তেই ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠলো তন্ময়ের। ওহে সুকণ্ঠী তন্বী গায়িকা, যদি জানতে... কোন দূর অজানা দেশের নিস্তব্ধ পথের নিঃসঙ্গ যাত্রীর মনেও তোমার কণ্ঠের মাদকতা ছড়িয়ে চলেছো!
সিডিটা ঢুকিয়ে প্লেয়ারটা অন করতে যেতেই আচমকা তীব্র একটা আলো এসে ধাঁধিয়ে দিয়ে গেল তন্ময়ের চোখ। বাঁকের অপরপাশ থেকে হঠাৎ যেন ভূতের মতো উদয় হয়েছে একটা লরি। নির্জন ফাঁকা রাস্তা পেয়ে তার গতিও একই রকম দুরন্ত। আর একটু পরেই মুখোমুখি দেখা হয়ে যাবে তন্ময়ের গাড়ির সাথে।
একমুহুর্ত সময় পেল তন্ময়। সাঁ করে স্পিডব্রেকারে পা চলে গেল তার।
.................................................................................................................................
ইমন তার হোটেলে বসে পরেরদিনের প্ল্যান করছিল। তন্ময় ফোন করেছিল। রাস্তায় আছে। প্রায় কাছাকাছি এসে গেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামীকালই ওরা বাসা দেখতে যাবে। আজ তো আর সম্ভব হচ্ছে না। রাত হয়ে গেছে। দিনের আলোতেই চারপাশটা ঘুরে দেখার জন্য ভালো। তবে যে ডিলার ফোন করেছিল, সে বেশ মজার একটা কথা বলেছে।
‘স্যার, রাতের বেলায় আসবেন। আপনার কষ্ট করার দরকার নেই। আমাকে একটা ফোন দেবেন। আমিই আপনাকে দেখিয়ে নিয়ে আসবো। বুড়ো বুড়ি রাতে ঘুমাতে পারে না তো! সারারাত জেগে বসে থাকে। তাই কেউ দেখতে আসলে রাতের বেলাতেই সুবিধা হয় তাদের জন্য। আলো ঝলমল করে পুরো বাড়ি সাজিয়ে গুছিয়ে রেখে দেয়।’
কথাটা শুনে অবাক হলেও কিছু বলেনি ইমন। পাগল ছাগল আর কী! রাতের বেলায় কেউ বাড়ি দেখতে যায় নাকি?
তন্ময়কে এখানে হোটেল ব্যবসায় নামিয়ে দিতে পারলে ইমনের নিজেরও কিছু লাভ হয় বৈকি! রাঙ্গামাটিতে ওর প্রায়ই আসতে হয়। ওর ব্যবসার পার্টনাররাও যাবতীয় ডিলিং সংক্রান্ত ব্যাপারে এই শহরটাকেই বেশি সুবিধাজনক মনে করেন। কাজেই এখানে বন্ধুর একটা হোটেল থাকলে থাকা খাওয়া নিয়ে আর ভাবতে হবে না।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বেশ একটু চিন্তিত হয়ে পড়লো ইমন। রাত সোয়া এগারোটা। এত দেরি তো হওয়ার কথা নয়! সন্ধ্যে সাতটার দিকেই তন্ময় ফোন করে জানিয়েছিল যে, কাছাকাছি চলে এসেছে। অথচ এখনো এসে পৌঁছলো না! এতক্ষণ টিভি দেখছিল বলে সময়ের জ্ঞান ছিল না ইমনের। ঠিক করে রেখেছিল, বন্ধু এলে একসাথে ডিনার করবে। পেটে টান ধরতেই সময়ের খেয়াল মাথায় এসেছে।
মোবাইলটা নিয়ে তন্ময়ের নাম্বারে রিং করলো ইমন। রিং হলো অথচ ফোন ধরলো না তন্ময়। এ তো ভারী চিন্তার ব্যাপার হলো! এই অন্ধকার রাত্রিতে অচেনা জায়গায় ঠিকঠাকমত এসে পৌঁছতে পারবে তো! কী করা যায় ইমন দ্রুতবেগে চিন্তা করতে লাগলো।
................................................................................................................................................
লরিটা দেখে তন্ময় এতই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিল যে, আরেকটু হলেই বড় কিছু একটা হয়ে যেতে পারতো। তবু যেটুকু হলো সেটাও কম কিছু নয়। তাড়াতাড়ি ব্রেক কষতে গিয়ে টাল সামলাতে না পেরে ওর গাড়িটা গিয়ে রাস্তার একপাশে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়েছে। ধাক্কাটা বেশ জোরেই লেগেছে। প্রচণ্ড ঝাঁকুনি খেয়ে অনেকখানি সামনে ঝুঁকে পড়েছে তন্ময়। গাড়ির সামনের অংশটা বেশ ভালোই দুমড়ে গেছে বুঝতে পারে সে।
সারা গায়ে বেশ তীব্র একটা ব্যথা টের পায় তন্ময়। এসবের মধ্যেও সে দেখতে পায়, লরির ড্রাইভার একবার শুধু মাথা বাড়িয়ে কী ঘটেছে তা দেখে নিয়েই সোজা চম্পট।
আশ্চর্য হয়ে যায় তন্ময়। অন্ধকারে লরির নাম্বার বোঝার উপায় নেই। বুঝতে পারলে ঠিকই এই লরির ড্রাইভারকে একসময় দেখে নিত সে। এভাবে বাঁকের মুখে হর্ণ না বাজিয়ে হুড়মুড়িয়ে কেউ ঢুকে পড়ে? তার লরির জন্যই একজন লোক গাড়ি নিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়েছে...আর সে কী না এমন লেজ গুটিয়ে পালাচ্ছে! মানুষের মধ্যে মানবতা দিন দিন কেমন কমে আসছে!
গাড়ি থেকে নেমে আসে তন্ময়। গাড়িটার চারপাশ ঘুরে ফিরে দেখে। যতটা ভেবেছিল, তার চেয়ে ভালো অবস্থাতেই আছে গাড়িটা। আশা করা যায়, বাকী রাস্তাটুকু চলে যেতে পারবে।
চারপাশের অন্ধকারটা আরো খানিকটা জেঁকে বসেছে। প্রচুর জোনাকী পোকা দেখতে পেল সে। গ্রাম ছাড়া অন্য কোথাও যে এই জিনিসের দেখা মেলে, জানা ছিল না তন্ময়ের।
এতক্ষণে মেঘ কেটে গিয়ে আকাশে চাঁদ দেখা দিয়েছে। ইতিউতি তারাদের ঝিকিমিকি। চারিদিক শুনশান, নিস্তব্ধ। গাছের পাতা পড়ার শব্দও বুঝি শোনা যাবে।
হঠাৎ একটু সামনেই একটা প্রকাণ্ড বাসা চোখে পড়লো তন্ময়ের। কেমন যেন রাজা-বাদশাহদের বাড়ির মতো ফটকওয়ালা আর বেশ খোলামেলা জায়গাজুড়ে মস্ত দালান। অবশ্য চারপাশে প্রাচীর ঘেরা। তাই দালানের উচ্চতা বাইরে থেকে দেখা গেলেও সবটুকু অবয়ব বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। তবে এটুকু সে বেশ বুঝতে পারছে, বিশাল এক প্রাসাদোপম বাড়ি।
বাড়িটা যেন রূপকথার বই থেকে উঠে আসা কোনো দত্যিপুরি। এইরকম জায়গাতে এমন একটা বাড়ি দেখে যথেষ্ট বিস্ময় ফুটে উঠলো তন্ময়ের চোখে মুখে। আচমকা একটা সম্ভাবনা মাথায় আসতেই গাড়িটাকে সেখানে রেখেই সামনে এগিয়ে গেল তন্ময়।
ফটকের একপাশেই বড় সাইনবোর্ডটা চোখে পড়লো তার। হ্যাঁ, যা ভেবেছে তাই! এই সেই বাড়ি, যা কেনার উদ্দেশ্যেই সে এখানে এসেছে। ভালোই হলো। ইমনের সাথে আসার আগেই বাড়িটা সরেজমিনে একবার দেখে যেতে পারবে। ভেতরে ঢুকবে কী ঢুকবে না এটা এখনো মনস্থির করে উঠতে পারছে না। এত রাতে বুড়ো বুড়িকে বিরক্ত করা কি ঠিক হবে?
ফটকের কাছে দাঁড়াতেই সেটা আপনাআপনি খুলে গেল। আশ্চর্য! এত বড় ফটক তাহলে কী কাজের জন্য? শুধু দেখানোপনার জন্য? আর কেউ আসতেই সেটা আপনাআপনি খুলে গেল কীভাবে? কোন দারোয়ান কিংবা কাউকে তো দেখা গেল না!
অবশ্য বিষয়টা নিয়ে বেশিক্ষণ ভাবনা চিন্তা করার সময় পেল না তন্ময়। চিন্তাটা খুব তাড়াতাড়িই মাথা থেকে সরে গেল। কারণ ভেতরে ঢুকেই ওর চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গেছে। বাইরে থেকে যতটা বড় মনে হয়েছিল, বাড়িটা তার চেয়েও আরো অনেক বড়। চারপাশে বড় বড় গাছ। অন্ধকারে ঠিকমত বোঝা যাচ্ছে না যদিও, তবে কাঠজাতীয় গাছই বেশি মনে হচ্ছে।
ফুলের কোন গাছ চোখে পরলো না। পুরোটা জায়গাজুড়ে অসংখ্য পাতা পড়ে রয়েছে। সেগুলো আবার বৃষ্টিতে ভিজে একেবারে জঞ্জালের মতো হয়ে রয়েছে। এত বড় একটা বাসায় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেউ থাকবে না? এত নোংরা হয়ে রয়েছে চারপাশ!
এই দীর্ঘসময়ে সে একটা কাকপক্ষিরও দেখা পেল না। এই নির্জন জনমানবশূন্য বিশাল বাড়িতে দু’জন বয়স্ক মানুষ কীভাবে থাকেন? সত্যিই আশ্চর্যের বিষয়!
তন্ময় বাড়ির মূল ফটকে কড়া নাড়লো। আর ঠিক তখনই বাইরের লনটা আলোকিত হয়ে উঠলো। এতক্ষণ অন্ধকারে ছিল বলে ঠিকমত বুঝতে পারছিল না। জায়গাটা এখন আর ততটা নোংরা বলে মনে হচ্ছে না।
লনের মাঝামাঝি জায়গায় ভারী সুন্দর একটি ফোয়ারা। কিছু মেয়ে পানিতে নেমে জলকেলী করছে। চারপাশ থেকে পানি এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে তাদের। ফোয়ারাটাকে এই বৃষ্টিভেজা রাতেও সচল দেখা গেল। সবকিছুই আলোকোজ্জল, ঝলমলে...অথচ একেবারে শুনশান।
দু’বার কড়া নাড়তেই ভারী কাঠের দরজা খুলে গেল, ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ করে প্রবল আপত্তি জানিয়ে। বাড়িটাতে লোকজনের হয়ত তেমন একটা আসা যাওয়া নেই, সেই কারণেই দরজাগুলোও তেমন ব্যবহার হয় না।
এমন মজবুত ভারী কাঠের দরজা এখন আর চোখেই পড়ে না। বাড়িটা নিশ্চয়ই অনেক আগের তৈরি। ভাবতে ভাবতেই সামনে দৃষ্টিপাত করলো তন্ময়। তবে সামনে কাউকেই দেখা গেল না। ইতঃস্তত মুখে অপেক্ষা করতেই খনখনে আওয়াজটা কানে ভেসে এলো,
‘ভেতরে চলে আসুন। বৃষ্টি নামবে এখুনি। বাইরে দাঁড়িয়ে কী চিন্তা করছেন?’
একটু ভয় ভয় করতে লাগলো তন্ময়ের। কেউ যেন ওর দিকে না তাকিয়েই ওর চলাফেরা মুখভাব সবকিছু লক্ষ্য করছে। অথচ সে এখনো কারো দেখাই পায়নি। কী কেলো রে বাবা!
দরজা সরিয়ে ভেতরে ঢুকেই অবশ্য সেই আশঙ্কা আর রইলো না মনে। বেশ ঝকঝকে আলোর রোশনাই পুরো ঘরে। তন্ময় নিজেকে বিশাল এক হলরুমে আবিষ্কার করলো। রুমটি দৈর্ঘ্য প্রস্থে ঠিক যেন একটি ফুটবল খেলার মাঠ। এত বড় হলঘর আজকাল চোখে পড়া তো দূরের কথা, কেউ বানানোর কথা কল্পনাও করতে পারে না।
বিশাল সেই ঘরটি দারুণভাবে সজ্জিত। দেওয়াল জুড়ে মস্ত বড় বড় পেইন্টিং। কী নেই তাতে?
দেশ-বিদেশের বড় বড় চিত্র শিল্পীদের আঁকা চোখ ধাঁধানো সব চিত্রকর্ম। এখানে সেখানে বাঘ আর হরিণের চামড়াও ঝুলে থাকতে দেখা গেল। এক কোণায় এই বাড়ির পূর্ব পুরুষদের ছবি সাজিয়ে রাখা। একপাশের দেওয়ালের নীচু লম্বা একটি সারিজুড়ে টানা বইয়ের র্যা ক, দেওয়ালের সাথে সেঁটে রাখা। তাতে ঠাসাঠাসি করে বই রাখা হয়েছে।
হল ঘরের ঠিক মাঝখানটাতে অতি সুদৃশ্য বিশাল সোফাসেট। বাহারী রংবেরং এর কুশন শোভা পাচ্ছে সেখানে। একটা বেশ বড়সড় ফায়ারপ্লেস চোখে পড়লো তন্ময়ের। ভেতরে দপদপিয়ে আগুন জ্বলছে। তন্ময়ের হঠাৎ মনে হলো, মাসটা মার্চ। এই সময়ে বাংলাদেশের একটি অঞ্চলে ফায়ারপ্লেসে আগুন জ্বলবার কথা নয়। তবে এটাও ঠিক, ঘরের মধ্যে বেশ ঠান্ডা। ফায়ারপ্লেসের আগুনে একটুও যেন গরম হচ্ছে না ঘরটা।
‘এই যে, এদিকে আসুন। এত অবাক হয়ে দেখার কিছু নেই। বসে আরাম করে দেখুন!’
হঠাৎ আওয়াজে আবার চমকে উঠলো তন্ময়। এতক্ষণ চারপাশে দৃষ্টি দেবার কারণে ঘরের মধ্যিখানে বসে থাকা জলজ্যান্ত মানুষ দু’জনকেই ওর চোখে পড়েনি।
সোফায় বসে আছেন বর্ষীয়ান দু’জন মানুষ, পুরুষ এবং মহিলা। বয়স আন্দাজ করে রীতিমত আঁতকে উঠতে হয়। চামড়া কুঁচকে দু’পাশে ঝুলে পড়েছে। দুজনেরই চোখের দৃষ্টি কেমন যেন ঘোলাটে স্থির। যেন সোজাসুজি একদিকে তাকিয়েই কথা বলছেন। গায়ের রঙ ম্যাটম্যাটে বিবর্ণ। তন্ময়ের বিস্ময়ের সীমা রইলো না। এত নির্জন পরিবেশে বিশাল এক প্রকাণ্ড বাড়িতে জনমানবহীন অবস্থায় কীভাবে তারা একা একা থাকছেন?
তন্ময়কে বেশ সাদরেই অভিবাদন জানালেন দু’জন। বৃদ্ধ’র হাতে ধরা রয়েছে একটি পাইপ। তাতে মাঝে মাঝে মুখ গুঁজে দিচ্ছেন। তন্ময় অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো, বৃদ্ধার হাতে উলের কাঁটা। না তাকিয়েই উল দিয়ে কী যেন বুনে চলেছেন তিনি। এই বয়সে উল কাঁটা বোনার চোখ আছে নাকি তার?
তন্ময় সোফায় বসতে বসতে জিজ্ঞেস করে,
‘এই বাসায় আপনারা দু’জন একাই থাকেন? আর কেউ নেই?’
বৃদ্ধ নিস্পৃহ স্থির দৃষ্টি মেলে দিয়ে বলেন,
‘অনেকেই ছিল। বাড়ি বিক্রি করে দিব, ঠিক করলাম। তারপরে একে একে সবাইকেই বিদায় করে দিলাম।’
জিজ্ঞেস করা উচিত হবে কী হবে না ভাবতে ভাবতে বলেই ফেললো তন্ময়,
‘কিন্তু বাড়ি বিক্রি করে আপনারা কোথায় যাবেন? মানে...এই বয়সে!’
এবারে বৃদ্ধা মুখ খুললেন, সেই একই রকম নিরেট নিস্পৃহ কণ্ঠে...
‘সে নিয়ে ভাবনা নেই! অনেকেই বাড়ি কিনতে আসে...কথাবার্তা হয়...ভালোই লাগে! একা একা থাকি। কেউ এলে ভালোই লাগে। তাছাড়া...কেউ না এলে আমরা কীভাবে বেঁচে থাকবো!’
বৃদ্ধা হাসছেন। কেমন ভাবলেশহীন নিরেট হাসি। শুধু শব্দ হচ্ছে, অথচ একটুও মুখ নড়ছে না। বৃদ্ধ’র হাসির শব্দও এবার শোনা যাচ্ছে। তন্ময় অবাক হয়ে গেল। এভাবে হাসছে কেন দুজন? তার মনে হাজার প্রশ্ন কিলবিল করছে। আবার আরেকটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল সে,
‘বাড়িটা এতদিন বিক্রি হলো না কেন? যারা এসেছিল কারোরই পছন্দ হয়নি?’
বৃদ্ধ উত্তর দিলেন এবার,
‘পছন্দ তো সবাই করে! কিন্তু কেনার ফুরসতই কেউ পায় না!’
‘তার মানে?’ তন্ময়ের গলার স্বর আপনা থেকেই চড়ে গেল এই হেঁয়ালি পূর্ণ কথায়।
উল কাঁটা ফেলে রেখে বৃদ্ধা তন্ময়ের দিকে এগিয়ে আসতেই বৃদ্ধ খপ করে কাপড়ের এক কোনা ধরে থামিয়ে দিলেন তাকে। বললেন,
‘আঃ! চোখের মাথা খেয়ে বসে আছো নাকি? এ তো এখন আমাদের দলেই..দেখতে পাচ্ছো না?’
বৃদ্ধা একটুখানি ভ্রু কুঁচকেই আবার ঠনঠনে গলায় হেসে উঠলেন। হাসতে হাসতেই বললেন,
‘তাই তো বলি! গন্ধটা আজ যেন টাটকা পাচ্ছি না! নতুন দলে ভিড়েছে তো! বুঝতে পারিনি...হি হি হি...’
......................................................................................................................................................
সারারাত উৎকণ্ঠায় কাটানোর পরে পরদিন খুব ভোরে একটা ফোন পেল ইমন।
‘হ্যালো, আমি স্থানীয় থানার ওসি বলছি। আপনার নাম কি ইমন? আপনি কি রাঙ্গামাটিতে এখন? তাহলে আপনাকে এখানে একটু আসতে হবে...’
ইমন হন্তদন্ত হয়ে কাপড়টা পাল্টে নিয়েই চলে আসে ওসি সাহেবের দেওয়া নির্ধারিত ঠিকানায়।
রাস্তার একপাশে গাছের সাথে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে পড়ে আছে তন্ময়ের গাড়ি। আর গাড়ির মধ্যে নিথর হয়ে পড়ে আছে তন্ময়ের রক্তাক্ত মৃতদেহ।
পুলিশ অফিসার রুটিন জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলেন।
‘ডেডবডি’র প্যাণ্টের পকেটে একটা মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। সেখানে লাস্ট কলটা আপনার নাম্বারে করা হয়েছে।’
বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে কিছু বলতে যেতেই ইমনের হঠাৎ চোখ পড়লো রাস্তার পাশের ঘন জঙ্গলের ভেতরে বিশাল ফটকওয়ালা বাড়িটার দিকে। জায়গাটার ঠিকানা মনে করতেই ইমনের কেমন যেন সন্দেহ হলো।
বাড়িটা বেশ বড়, তবে কেমন যেন পোড়োবাড়ি মনে হচ্ছে। যেন বছরের পর বছর ধরে খালি পরে আছে। দিনের আলোয় কেমন ফ্যাকাশে বিবর্ণ দেখাচ্ছে বাড়িটাকে! ইমনের হঠাৎ মনে পড়ে যায় সেই রহস্যমাখানো কথা,
‘স্যার রাতের বেলায় আসবেন...দিনের চেয়ে রাতের বেলাতেই এই বাড়ি ঝকঝক করে বেশি...’
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া আপনার পুরস্কার বিজয়ী লেখাগুলো সত্যি চমৎকার। এতো রাতে পড়তে বেশ ভয়ই লাগছিল। আরো চমৎকার সব গল্প লিখবেন পাঠকদের জন্য।
সালমা সেঁতারা All of theem's are very good.Thank's to all. bye!!
শাফিন শরৎ So long introduction with so less necessary information...
হাহ হা...বেশ ভাল বলেছেন। গক'তে আপনার মতো সত্য বলার পাঠক খুব দরকার। তবে কথা হচ্ছে ভাই, লিখেছিলাম তো গল্প, আপনি কোনো রিপোর্ট মনে করে পড়েননি তো! ;)
মোজাম্মেল কবির অভিনন্দন আপা।
Khudro Rana অভিনন্দন!!
ফেরদৌস আলম অনেক অনেক অভিনন্দন !
রাজু বরাবরের মতো অসংখ্য অভিনন্দন । অনেক অনেক শুভেচ্ছা ।
ম নি র মো হা ম্ম দ অনেক অভিনন্দন।
এশরার লতিফ অনেক অভিনন্দন।

০১ ডিসেম্বর - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৬৭ টি

সমন্বিত স্কোর

৪.৯৫

বিচারক স্কোরঃ ৩.০৩ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ১.৯২ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪