জলছবি

ভালোবাসা / ফাল্গুন (ফেব্রুয়ারী ২০১৫)

জুনায়েদ বি রাহমান
  • ৫০
অনেকদিন পর মেয়েটিকে দেখে কিছুটা অবাক হল ছেলেটি। আগের মতই আছে মেয়েটি। জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে অপাশের সিটে। অদ্ভুত নিষ্পাপ লাগছে মেয়েটাকে! ছেলেটার ইচ্ছে করছিল বোকের পাজরের সাথে জড়িয়ে নিতে। কিন্তু না...! কিছুই করতে পারেনি। বলতে পারেনি সেই না বলা কথাগুলো। বাস্তবতা তাকে বলতে দেয়নি। মেয়েটি বাস থেকে পুর্বের স্টেন্ডেই নেমে গেছে। ছেলেটা বসে আছে। জীবন নামের গাড়িটি এগিয়ে চলছে অচেনা গন্তব্যে।বাস্তবতার কাছে আজ আবারও হার মানল হ্রিদয়ে জাগা প্রয়াসগুলো। সেই চিরচেনা নিয়মে। অত:পর, অজান্তে বিসর্জন ঘটল কয়েকফোটা অশ্রুর।

ধরে নেওয়া যাক, সেই ছেলেটার নাম জল আর মেয়েটার নাম ছবি। ছেলেটি ভীষণ শান্ত। আর মেয়েটি ভীষণ দুষ্ট। গ্রামের পরিবেসেই তাদের বেড়ে উঠা। নিয়মিত এদিক ওদিক ঘুরাফেরা, আড্ডা-গল্প আর খেলাধুলায় কেটে যেতো ওদের বেলা। হঠাত্ একদিন ক্লান্ত দুপুরের উদাস ছায়ায় ছবির সাথে পরিচয় হলো জলের। জলের রঙহীন পৃথিবীতে তুমুল আলোড়ন তুললো ছবি। ছেলেটার হ্রিদয়ে তুলিবিহীন একে দিল নিজের জলছবি। আর সেই ছবিটি ঘিরেই
ছেলেটার সাদামাটা পৃথিবিতে প্রতিনিয়ত জন্ম নিত সহস্র রঙিন স্বপ্ন। সেইসব স্বপ্নে বিভোর হয়ে ছেলেটি প্রায়ই মেয়েটিকে নিয়ে উড়ে বেড়াত কল্পরাজ্যের আকাশে। নিজীব রাতের নিরবতায়, আধারের ছায়ায় চোখের কোনে বোনত অজস্র সুখের স্বপ্ন। প্রায়ই রৌদ্রজ্জল সকালবেলায় কিংবা উদাস দুপুরের ব্যস্ততায় দেখা হত দুজনের। ছোট ছোট কথামালায় মুখরিত হয়ে উঠত চারপাশ। কখনোবা কাছাকাছি বসে স্বপ্ন বোনা, অথবা হাতে হাত রেখে দিগন্তে ছুটে চলা। এবাবেই একটু একটু করে খুব কাছের মানুষ হয়ে গেলো দুজন। ক্রমান্বয়ে শিকড় গজাতে থাকলো নতুন সম্পর্কের। সেই সম্পর্কটা বন্ধুত্বের নাকি ভালোবাসার ওরাই জানত না। আর তাই বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মাঝখানেই আটকে রইলো সম্পর্কটা।
কখনো একে অন্যকে ভালোবাসি বলতে পারেনি। হয়তোবা, ওরা বলতেই চায়নি। কি ছিল সেই না বলার করণ? কেউই জানেনা। হতে পারে হারিয়ে ফেলার ভয় অথবা সংশয়, কিংবা অনুভূতির অস্পষ্টতা।

ধীরে ধীরে পেরিয়ে যেতে থাকল সময়। বাস্তবতার ছোয়া লাগল জলের চিন্তাভাবনায়। ভাবতে শুরু করলো পরিবারের কথা। সরে আসল কল্পনার জগত থেকে। বদলে গেল তার আচরন। সেই শীতল আচরনে ক্ষতবিক্ষত হতে থাকল ছবি। বিবেকের কাঠিতে জন্ম নিল নতুন নতুন প্রশ্ন, তবে কি এসব মিত্যে মরিচিকা? আবেগের ঘোরে করে যাওয়া অভিনয়। অত:পর, মত্ত হল জলের পৃথিবী থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টায়। বাড়তে লাগলো দূরত্বের পরিধি।

তারপর তারপর,
কখনো কখনো আগের মতো কাছে আসার চেষ্টা করে দুজন। কিন্তু কাছে আসা হয় না। জলের নিরবতা আর ছবির বিষন্নতা একাকার হয়ে অজানায় হারিয়ে যায় সব ইচ্ছে। বিপরীতে জন্ম নেয় নতুন ক্ষোভ আর হতাশা। অসয্য যন্ত্রনা এসে ভিড় জমায় হ্রিদপিন্ডে। যন্ত্রনার অবসান চায় আত্মা। তখন দূর আকাশের তারার ভিড়ে হারাবার ইচ্ছে জাগে। নাহ, কেউই দূর আকাশের নিলিমায় কিংবা হাজারও তারার ভিড়ে হারিয়ে যায়নি। সুকতারা হয়ে জ্বলে উঠেনি রাতের আকাশে। বেঁচে আছে দুজন....! হ্যা, বেশ ভালো আছে মেয়েটি। হয়তোবা অন্য কেউ এসে রাঙিয়ে দিয়েছে ওর জীবন। আর ছেলেটি? সে ব্যস্ত তার নিজের পৃথিবী নিয়ে। পরিবার, বন্ধুবান্ধব আর অদূর ভবিষতের ভাবনা প্রতিনিয়ত ভাবায় তাকে। তবে মাঝে মাঝে রাতের গভীরে একান্ত নিরবে ফিরে যায় তার অতীতে। চোখের পাতায় ভেসে উঠে ফেলে আসা সৃতিগুলো। বাস্তবতার চাদরে ঘুমিয়ে থাকা স্বপ্নগুলো আবার ও জেগে উঠে। প্রাণবন্ত হয়ে উঠে হ্রিদয়ে আকা সেই জলছবি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রুহুল আমীন রাজু সুন্দর লেখা ....ভালো লাগলো .
ভালো লাগেনি ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
অনুপ্রাণিত হলাম আপনার প্রেরনাদায়ী মন্তব্য থেকে। অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো
ভালো লাগেনি ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
Arif Billah অনবদ্য রচনা। ভাল লাগা রেখে গেলাম।
ভালো লাগেনি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
অশেষ ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
রবিউল ই রুবেন ভালো লাগল। ভোট করলাম। আমার কবিতা ও গল্প পড়ার আমন্ত্রণ রইল।

২৪ অক্টোবর - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ১৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "নগ্নতা”
কবিতার বিষয় "নগ্নতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ মে,২০২৪