মির্জা সাহেব

বিজয় (ডিসেম্বর ২০১৪)

জুনায়েদ বি রাহমান
  • ১৭
  • ২০
মির্জা বাড়ির প্রধান ফাটকে মানুষের উপচে পড়া বিড়। মুক্তি বাহিনির কামান্ডার করিম মির্জা মারা গেছেন। উনাকে শেষ বিদায় জানাতে দিগ-দিগন্ত থেকে ছুটে এসেছে শত-শত মানুষ।

বিশেষ এক ধরনের সাইরাম বাজিয়ে জনতার ভিড় ঠেলে পর পর তিনটি গাড়ি এসে থামল বাড়ির প্রধান ফাটকে। নীল রঙ্গের জীপ থেকে কয়েকজন পুলিশ নেমে লাশবাহী গাড়ির সামনে দাঁড়াল। তাঁরপর, বিশেষ অঙ্গ-ভঙ্গির মাধ্যমে হাত উচু করে মৃত ব্যাক্তিকে শ্রদ্ধা জানাল। কয়েকজন লাশটি বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেল। স্তব্দ বাতাসের সাথে কান্নার করুণ সুর ভেসে এল বাড়ির ভেতর থেকে। করিম মির্জার ছেলে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। স্ত্রী জয়নব খাতুনের পরনে সাদা কাপড়। মুখে কোন কথা নেই, চোখে নেই জল। পাশে বসে সান্তনা দিচ্ছেন ষাটউর্ধ্ব কয়েকজন বৃদ্ধা। ঘরের মাঝখানে মেঝেতে রাখা হয়েছে করিম মির্জার মৃতদেহ। চার পাশে বসে প্রবিত্র কোরান তেলায়াত করছেন কয়েকজন। একটু পর পর চাদর তুলে লাশের মুখ দেখার সুযোগ করে দিচ্ছেন মুর্শেদ আলম।
জয়নব খাতুনের দৃষ্টি সাদা চাদরে ঢাকা লাশের দিকে। মূহুর্তে চোখের স্মৃতিপাটে ভেসে উঠলো পিছনে ফেলা আসা কিছু স্মৃতি। ১৯৭১ সাল। দেশে তখন পাকিস্তানি হেনাদের বর্বরতা চলছে। সেদিন রাতে গ্রামের কয়েকজন মেয়ে,ছেলে- বুড়োকে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে। পরদিন পাক বাহিনীর বর্বরতা থেকে গ্রামকে রক্ষা করার জন্য মির্জা সাহেবের নেতৃত্বে গঠন করা ১৭ সদস্য বিশিষ্ট মুক্তি বাহিনী।

প্লান অনুযায়ী স্কুলের পেছনে বাঁশ বাগানে অবস্থান নিয়েছে মুক্তি বাহিনী। স্কুল ঘরটায় আস্তানা গড়েছে হানাদাররা। রাসু স্টেনগানের নিচের অংশে চাপ দিতেই কয়েকটি গুলি বেরিয়ে গিয়ে লাগলো দাড়িয়ে থাকা প্রহরীর বুকে। শুরু হল গুলাগুলি। মুক্তি বাহিনী চারদিক্‌ থেকে স্কুল ঘিরে ফেলেছে। মেলেটারি বাহিনীর ছুড়া একটি গুলি এসে লাগলো রাসুর মাথায়। মাটিতে ডলে পড়ল রাসু। সেদিকে কারো খেয়াল নেই। নেই প্রান বাঁচানোর কোন ভয়। অবিরাম গুলা গুলি চলছে। হারু, নুরু, আর আবুর দেহ সবুজ ঘাসের উপর পড়ে আছে। কারো হাত, কারো পা, কারো মাথা কিংবা বুকের তাজা রক্তে লাল হয়ে আছে সবুজ মাঠ। আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াছে আজ মুক্তি বাহিনীর বিজয়ে ধন্নি। সেদিন মির্জা সাহেব বীরের বেশে ফিরেছিলেন ঘরে।

হাজার হাজরা মানুষ। খোলা ম্যাটে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হল।
শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে সাড়ে তিন হাত মাটিতে সমাহিত করা হল বাংলা মায়ের সৈনিককে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
জুনায়েদ বি রাহমান ধন্যবাদ সানাউল্লাহ ভাই
জুনায়েদ বি রাহমান আপনি ঠিক বলেছেন আপু। সময়ের সল্পতার কারণে বড় পরিসরে লিখতে পারিনি। এখন থেকে লিখার চেষ্টা করব।আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু@Ruma Hamid
জুনায়েদ বি রাহমান আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত জানানোন অনেক অনেক ধন্যবাদ @পারভেজ ভাই।
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ ছোট পরিসরে হলেও সুন্দর লিখেছেন গল্পটি।
ruma hamid মুক্তিযুদ্ধের গল্পে এত অল্প কথায় মনের সাধ মেটেনারে ভাই । তবুও ভালো লাগলো ।
রিক্তা রিচি দারুন প্রকাশ . শুভকামনা রইলো . পাতায় আমন্ত্রণ জানাই
মাহমুদ হাসান পারভেজ আমরা এ প্রজন্মের। মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুলো সবই শোনা- নয়তো পড়া- নয়তো নাটক সিনেমায় দেখা।বাকিটা কল্পনা। তবে অামার মতামত- আমাদের ’সেই’ দিনগুলি নিয়ে অবশ্যই আরো অনেক বেশী স্টাডি বা সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ খবর করে তবেই সেটি নিয়ে গল্প লেখা উচিৎ। মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবন দিয়ে দেশকে মুক্ত করেছেন আর আমরা এটুকু করতে পারবোনা! নিশ্চয়ই পারব। জুনায়েদ ভাই, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপনার যে চেষ্টা আছে সেটা আপনাকে অনেকদুর এগিয়ে নিয়ে যাবে, এই কামনা।
মুহাম্মাদ লুকমান রাকীব অনেক ভাল লাগল। শুভ কামনা থাকল।।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি অসাধারণ.... ভীষণ আবেগ জড়িয়ে রয়েছে লিখায়....তবে জুনায়েদ বানানের বিষয়ে আরও যত্নবান হবেন কেমন......

২৪ অক্টোবর - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ১৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪