প্রত্যাবর্তন

ব্যথা (জানুয়ারী ২০১৫)

রাব্বি রহমান
  • ৫৪
- এখানটায় আমরা আড্ডা দিতাম নারে ?
- হু , আপনার এখনও মনে আছে এই যায়গাটার কথা ।

সদরের একমাত্র সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ডান পাশের দেয়াল ধরে এগিয়ে চলছে অরিন্দম ও তার ছোট বেলার বন্ধু অরিত্র ঘোষ । এই বিদ্যালয়টা সরকারি হয়েছে বেশ কিছুদিন হয়েছে । প্রায় ৫০ বছর হলো এই বিদ্যালয়টা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ।

- এখানে একটা চায়ের দোকান ছিলো না ?
- সেতো কবেই ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে , এই যে নতুন ভবনগুলো দেখছেন এগুলো করা হয়েছে সেই পুরোনো ক্লাব ঘরটিকে ভেঙ্গে ।
- অরিত্র তুই আমাকে আপনি করে বলছিস কেন ?
- অনেকদিন পরে দেখা আপনি না তুমি বলবো বুঝতে পারছিলাম নাহ , তুই শালা বড্ড বদলে গেছিস।
- আর তুই তো পুরো পুরোহিতের বেশ ধারন করেছিস ; বিকাশ,জামাল,সুবল,নাজিমদের কি খবর ?
- সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গিয়েছে ।

কথা বলতে বলতে চেনা রাস্তার পথ ধরে হেটে চলছিল অরিন্দম হাওলাদার ও অরিত্র ঘোষ দুই বন্ধু । অরিত্র একটা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজীর শিক্ষক । এই জেলা শহরে বেশ নাম ডাক রয়েছে তার ।

মাস তিনেক আগের ঘটনা একটা পত্রিকায় অরিত্র দেখতে পায় একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হারিয়ে যাওয়া এক মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে । সেখানে এক মুক্তিযোদ্ধার আত্নকাহিনী বর্ণিত হয়েছে কিভাবে হারিয়ে গিয়েছিল আর এর পরে কিভাবে বেঁচে গিয়েছে সে মুক্তিযোদ্ধাটি । অরিত্র চশমাটা ভালো করে পরে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি পড়ার চেষ্টা করে । লেখার শিরোনামটি ছিলো এরকমের “ সুইসাইড স্কোয়াডের অভিমানী এক গেরিলা ” প্রতিবেদনটির গেরিলার আত্নকথা অংশটি পড়তে শুরু করে অরিত্র –


যুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিলো ১৬ বছর মেট্রিক শেষ হয়েছে মাত্র । আসলে বাবা মার অবাধ্য হয়েই যুদ্ধে গিয়েছিলাম । আমি ঠিক যোদ্ধা কিনা জানি না । মে মাসে প্রথম সপ্তাহে বাসা থেকে বের হয়ে যাই । পাড়ার ফুটবল ক্লাবের ম্যানেজার ছিলেন ইকবাল ভাই । সে আমাকে নিয়ে যায় তাদের গোপন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে । অনেক পথ পায়ে হেটে , নৌকায় করে এভাবেই আমরা পৌছাই টেকনাফের অদূরে দখিনপাড়ায় । ওই এলাকা টা অনেক দুর্গম মানুষের জাতায়াত নেই বললেই চলে । মায়ানমার থেকে কিছু চোরাকারবারির নৌকা এসে শাহ পরীর ঘাট নামক যায়াগায় থামতো । সেই যায়াগাটাও দখিন পাড়া থেকে তিন মাইলের পথ । একচালের একটা ঘর তোলা হয়েছিলো সেখানটায় । ইকবাল ভাই আমাকে বলেছিলো আমার অনেক কষ্ট হবে তবুও আমি তার সাথে গিয়েছিলাম । যাওয়ার পরে দেখি ইকবাল ভাইয়ের সমবয়সী আরও প্রায় দশ থেকে বারো জন । ইকবাল জানালো এখন থেকে আমি এখানেই থাকোবো । আমি জানতে চেয়েছিলাম ভাই আমি যুদ্ধে করবো না ? ইকবাল ভাই খেলার মাঠে যেভাবে জ্ঞান দিতেন সেভাবে তিন থেকে চার মিনিট আমাকে বুঝিয়ে ছিলেন যুদ্ধ কত প্রকার এবং কি কি ? আস্তে আস্তে জানতে পারি এখানে যারা আছে সবাই সুইসাইড স্কোয়াডের সদস্য । তারা এত গহীনে অবস্থান করে কারন এখানে তাদের জীবনের ভয় দূর করানোর জন্য সাইকোলজক্যাল প্রশিক্ষণ দেয়া হয় আর সেই কাজটি করেন আমাদের পাড়ার ফুটবল ম্যানেজার ইকবাল ভাই । এর সাথে সাথে গেরিলা ট্রেনিং ও দেয়া হয় । আর যখন দেশের যে প্রান্ত থেকে ডাক পরে তখন এর বেরিয়ে পরে । বার্মা থেকে আসা অস্রও মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌছে দেয় একটা অংশ । ওই ছোট ক্যাম্পে আমাদের অনুপ্রানিত করার জন্য বঙ্গবন্ধুর ভাষন শোনানো হতো । ক্যাম্পে হাসান নামে এক ভাই ছিল তার মুখে মুখে রাজনীতির গল্প শুনতাম । তিনি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়তেন । ১৯৪৭ এর দেশ ভাগ থেকে শুরু করে ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন , ১৯৬৬ এর ছয় দফা , ’৭০ এর নির্বাচন , বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষন , ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষনার গল্প তিনি সারা রাত ধরে শোনাতেন প্রায়ই । আস্তে আস্তে সময় অতিবাহিত হতে থাকে আমাদের দলের সদস্য সংখ্যা কমতে কমতে তিন জনে পৌছে গিয়েছে ।
আমি ছাড়া অন্য যে দুজন বেঁচে আছে তারাও যদি দেশের জন্য ডাক পরে তবে চলে যাবেন । ওই ক্যাম্পের সবাই নিজেদের মৃত ভাবতো । নভেম্বর মাস চলছে । যুদ্ধ জয়ের সুবাস বইছে চার দিকে । ইকবাল ভাই বললেন অরিন্দম অনেক তো যুদ্ধ হলো এবার যা একটু শাহ পরীর ঘাটে ; দেখ কয়েকটা বোতল পাওয়া যায় কিনা , আর অস্রের একটা চালান আসার কথা আছে । সেদিন ১৫ নভেম্বর ছিল আমি তিন মাইল হেটে ঘাটে পৌছে কয়েকটা নৌকা দেখতে পাই । নিয়মিত আসা যাওয়ার ফলে অনেকেই আমাকে চিনতো তারা আমাকে দুইটা বার্মিজ মদের বোতল আর কিছু গ্রেনেড দেয় । আমি যখন ক্যাম্পে ফিরি তখন প্রায় সন্ধ্যা । কিন্তু ক্যাম্পের সামনে ফিরে আমি ক্যাম্প খুজে পাই নি । পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আমাদের প্রিয় গেরিলা ট্রেনিং ক্যাম্প । কিছু পার্বত্য পাহাড়ি আমাকে দেখে ধরে নিয়ে যায় নাফ নদীর তীরে । সেখানে দাড় করিয়ে বেধে রাখা হয়েছিলো ইকবাল ভাই , হাসান ভাইকে । দুজন পাকিস্তানি আর চার-পাঁচ জন দাড়ি টুপি ওয়ালা রাজাকার তাদেরকে বেদম প্রহর করছিল । আমাকেও তাদের সারিতে দাড় করায় । তাদের দুজনকে গুলি করে মেরে ফেলে । আমার গুলিটা লেগেছিলো পায়ে । তার পর হাত পা বেধে নাফ নদীতে ফেলে দিয়েছিলো । যখন জ্ঞান ফিরে তখন দেখি আমি একটা চৌকিতে শুয়ে আছি বার্মার আল লেথান নামক এক গ্রামে । জেলে নৌকার জেলেরা আমকে উদ্ধার করে মাঝ নদীতে । দেশ স্বাধীন হলেও আমি আর দেশে আসতে পারিনি ওখান থেকে দুর্বৃত্তদের হাতে পড়ে লাওসে গিয়ে মুক্তি পাই সেও প্রায় ১৯৭৫ সালের দিকে । তার পরে জানতে পারলাম বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে । তার পরে জানলাম রাজাকারদের মাফ করে দেয়া হয়েছে । আমার ক্ষোভ জন্মালো যে দেশ জাতির জনককে হত্যা করতে পেরেছে , যে দেশে ইকবাল-হাসান ভাইদের খুনীদের ক্ষমা করা হয়েছে সে দেশে আর ফিরবো না ।


চশমাটা মুছে অরিত্র ভালোকরে দেখার চেষ্টা করে প্রতিবেদনের সাথে দেয়া মুক্তি যোদ্ধার ছবিটা । অরিত্রের সারা শরীর শির শিরিয়ে ওঠে । এতক্ষণ যে মানুষটার গল্প সে পড়ছিল সে যে তারই হারিয়ে যাওয়া বন্ধু অরিন্দম । অরিত্রের চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে । যুদ্ধ শেষ হবার পর সবাই ফিরে এলেও তাদের পাড়ার ইকবাল ভাই আর ডানপিটে অরিন্দম আর কখনো ফিরে আসেনি । সবাই ধরে নিয়েছিল তারা দুজন মারা গিয়েছে । পাড়ার ক্লাবটার নাম করা হয়েছে ইকবাল-অরিন্দম স্মৃতি সংসদ । প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর তাদের ছবিতে ফুল দেয়া হয় । অথচ অরিন্দম বেঁচে আছে তার বিশ্বাস হচ্ছে না । অরিন্দম তার সব থেকে কাছের বন্ধু ছিলো । দুজন মিলে কত কিছু যে করেছে সে কথা বলে শেষ করা যাবে নাহ ।

ক্লাস টেনে পড়ার সময় ডানপিটে অরিন্দমের প্রেম হয়ে গিয়েছিল পাশের পাড়ার শ্রেয়শীর সঙ্গে । অরিত্রের কাজ ছিলো শ্রেয়শীর কাছে অরিন্দমের চিঠি পৌছে দেয়া আর গার্লস স্কুলের ডান পাশের রাস্তার দেয়ালের আড়ালে দাঁড়িয়ে অরিন্দম-শ্রেয়শী যখন কথা বলতো তখন তাদের পাহাড়া দেয়া । অরিত্রের সেই প্রিয় বন্ধু বেঁচে আছে এটা ভাবতেই অরিত্রের কান্না চলে আসছে ; আনন্দের অশ্রু । অরিত্র পত্রিকা টা নিয়ে ছুটে গিয়ে সবাইকে দেখাবে ভেবেই আবার চুপ করে বসে থাকে ।

অরিত্র ফিরে যায় ১৯৭১ এর মে মাসের সেই দিনটিতে । যে দিন অরিন্দম যুদ্ধে গিয়েছিল । সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে অরিন্দম এসেছিল গার্লস স্কুলের ডান দেয়ালের পাশে । সে দিন অরিন্দম শ্রেয়শীকে ধরে অনেক কেঁদেছিল । বিদায়ের কান্না । শ্রেয়শী কথা দিয়েছিল অরিন্দমের জন্য সে আজীবন অপেক্ষা করবে । অরিন্দম বলেছিল সে চিঠি লিখবে আর দেশ স্বাধীন হতে বেশি দিন লাগবে না মনে হয় । যাওয়ার আগে অরিত্রের হাতে শ্রেয়শীকে তুলে দিয়ে গিয়েছিলো । শেষ কথাই ছিলো অরিত্র আমার জীবনকে দেখে রাখিস।

সে দিন অরিন্দমের স্বপ্নাতুর চোখে আবেগ আর আন্দোলন মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিলো । সে শ্রেয়শীর চোখে চোখ রেখে যুদ্ধে গিয়েছিলো । তার চোখে মুক্তির গান ছিলো আর শ্রেয়শী তাকে আজন্ম আশ্বাসের গান শুনিয়েছিল । যুদ্ধে যাওয়ার পরে প্রথম কিছুদিন অরিন্দম অরিত্রের ঠিকানায় শ্রেয়শীর চিঠি পাঠাতো । তারপরে চিঠি পাঠানোও বন্ধ হয়ে যায়
ঢাকায় পত্রিকা অফিসে যোগাযোগ করে অরিত্র , অরিন্দমের নাম্বার সংগ্রহ করে তাকে ফোন দেয় । পরিচয় দিতেই ওপ্রান্ত থেকে সেই পুরোনো চিৎকার কিরে শালা সাধুউউউ...... অরিন্দম জানিয়েছিল আগামী বিজয় দিবস সে বাংলাদেশেই উদযাপন করবে । অরিন্দম জানায় এখন বাংলাদেশে ফেরা যায় কারন রাজাকার বাচ্চাগুলোর বিচার হয়েছে । বঙ্গবন্ধু হত্যারও বিচার হয়েছে । ইকবাল ভাই-হাসান ভাইয়েরা আমাকে এখন বাংলাদেশে যেতে বলছে ।

সেই অরিন্দম প্রায় ৪৫ বছর পর ফিরে এসেছে । তার পাশেই রয়েছে । আগের মতোই কথা বলে শুধু মাত্র এখন খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটে ।


- দোস্ত মা-বাবা মারা গিয়েছে অনেক আগেই আমি জেনেছি ।
- শালা তাতে কি আমার বাসায় যাবি ।
- হুম , তা তুই বিয়ে করেছিস অরিত্র?
- এক ছেলে আর এক মেয়ের বাবা আমি ; তুই কি নাক খাটো কাউকে ?
- নারে সাধু আমি বিয়ে টিয়ে করিনি , কি করছিস ?
- এইতো গার্লস স্কুলে ইংরেজী পড়াই , তুই ?
- আমি লাওসে একটা ইন্ডস্ট্রী করেছি , দোস্ত শ্রেয়শীর কথা মনে আছে ?
- চল বাসায় সবাই অপেক্ষা করছে ,
- তুই কি সেই চিঠিগুলো ওকে দিয়েছিলি বন্ধু , জানিস ক্যাম্পে ওকে অনেক মিস করতাম।
- হু চল তোকে দেখতে হাজারো লোক এসেছে।
- দোস্ত ওর কি বিয়ে হয়ে গেছে , স্বামী কি করে ?
- চল......চল......
- জানিস অরিত্র এই দেশটার উপরে অনেক ক্ষোভ আমার , যাই হোক এবার শ্রেয়শী কে একবার দেখে যাবো । ও কি আগের মতোই আছে । এখন হয়তো ওর উপরে আমার অধিকার নেই । তোর মনে আছে এখানটায় আমারা দেখা করতাম ।


ক্লাবের মাঠে গিয়ে সবার সাথে দেখা করে । ইকবাল ভাইয়ের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কান্না করে অরিন্দম তারপরে অরিত্রের বাসায় এসে পৌছে অরিন্দম । বাসায় আসার পরে একটা কিশোরী মেয়ে অরিন্দমের জন্য শরবত নিয়ে আসলে মেয়েটিকে দেখে অরিন্দম থমকে ওঠে মেয়েটি একদম যার চোখে চোখ রেখে অরিন্দম যুদ্ধে গিয়েছিল একদম তার সেই শ্রেয়শীর মতো দেখতে । সেই রকমের লম্বা চুল , টানা টানা চোখ , মুখের তিলটাও আছে । একদম ৫মে ১৯৭১ এর শ্রেয়শী কে সে দেখতে পায় মেয়েটির মধ্যে । অরিত্রের ডাকে ঘোর কাটলে জানতে চায় –

- মেয়েটি কে অরিত্র ?
- শ্রেয়শীর মেয়ে অরিত্র জানায় ,
- শালা তুই যে আমার ভালো দোস্ত আমি জানতাম শ্রেয়শীকে নিয়ে এসেছিস কখন ? ওর স্বামীও কি এসেছে ?

দরজার পর্দা ফাকা করে অরিন্দমের দিকে তাকিয়ে যে মানুষটি তখন চোখের জল মুছছিল সে আর কেউই নয় মিসেস অরিত্র ঘোষ । অরিন্দমের শ্রেয়শী । অরিন্দম মারা গেছে ভেবে ভেঙ্গে পরেছিল শ্রেয়শী । তখন তার পাশে দাড়িয়েছিল অরিন্দমের প্রিয় বন্ধু অরিত্র । বছর দুয়েক গড়ালে শ্রেয়শীর সাথে অরিত্রের প্রেম হয়ে যায় আর তার পরে বিয়ে । তাদের বড় মেয়েই আজ অরিন্দমকে শরবত পরিবেশন করছে । শ্রেয়শী কেঁদে চলছে অঝোরে ।
অরিত্র সব কিছু খুলে বলে অরিন্দমকে । অরিন্দম সব কিছু শুনে চুপ করে থাকে কিছুক্ষণ । সে জানায় সে যতদিন এখানে থাকবে ততদিন হোটেলে থাকবে । অরিত্রের বড় মেয়ের মাথায় হাত বোলায় অরিন্দম । মেয়েটিকে কাছে ডেকে বলে মাগো তোকে দেখে আমার মাকে মনে পরে যাচ্ছে । অনেক বড় হবি মা । তোর মাকে বলিস অরিন্দম ভালো আছে ।


১৬ ডিসেম্বর ক্লাবের মাঠে বিজয় উৎসব পালন শেষে আবার ফিরে যাবার জন্য বেড়িয়ে পড়লো অরিন্দম । হোটেল থেকে গাড়িতে বেরিয়ে গার্লস স্কুলের ডান পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে এক মহিলা অরিন্দমের পথ আটকে দাঁড়ায় । অরিন্দম গাড়ি থেকে নেমে দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে দেখতে পায় মাথায় সিঁদুর হাতে শাখা পরে দাঁড়িয়ে আছে শ্রেয়শী । অরিন্দমের চিনতে একটুকুও কষ্ট হয় না । এর চোখে চোখ রেখেই তো যুদ্ধে বেড়িয়েছিলো।
- ভালো আছো অরিন্দম ?
- হু , তুমি ?
- অনেক ভালো আছি মৃত ভালোবাসাকে বুকে নিয়ে , চলে যাচ্ছো ?
- হু চলে যাচ্ছি ।
- তুমি ফিরলে না কেনো , আবার আসবে ?
- যে দেশর জন্য যুদ্ধ করেছিলাম সেই দেশে মুজিব বাচতে পারেনি , ইকবাল ভাইয়ের খুনীরা মন্ত্রী হয়েছিলো সে দেশে আসবো কেনো । নাহ আর আসবো নাহ কোনদিন ।
- একবারও আমাকে দেখার ইচ্ছে জাগেনি ?
- নাহ তোমার মেয়েকে দেখেছি একদম তোমার মতো হয়েছে !
- আমাকে ভুলে গিয়েছো ?
- জানতে চাচ্ছো ‘তোমাকে ভুলে গেছি কি না’ ? শ্রেয়শী পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে ভুলে থাকা ; স্মৃতি থেকে পালিয়ে বাঁচার জন্য এই সুদীর্ঘ প্রবাসের ! অর্ধেকটা কাটিয়েছি বোহেমিয়ানদের মতো ঘুরে ঘুরে ! নাফ থেকে বার্মা লাওস থেকে চীন । তবু বাঁচতে পারিনি স্মৃতি থেকে । চীনের প্রাচীরে দাঁড়িয়ে মনে পড়েছে তোমাকে । ভুলতে পারিনি তোমাকে , শত চেষ্টা করেও পারিনি ! আর কেউ না জানুক অসংখ্য নির্ঘুম রাত জানে ; সেই না ভুলতে পারার ইতিহাস।
- অরিন্দম !!!
- নিজেকে ভীষণ একা মনে হয় আজকাল । যদি একাত্তরে ফিরে যেতে পারতাম । শ্রেয়শী তোমাকে ঘিরে থাক পৃথিবীর সমস্ত সুখ ! তোমার সৃষ্টিতে - তুমি ভালো থেকো শ্রেয়শী !!!
- অরিন্দম একটাবার হাতটা ধরবে ?
- যে চোখে চোখ রেখে যুদ্ধে গিয়েছিলাম সে চোখে ছিলো মুক্তির গান আজন্ম আশ্বাসের ধারা । অধিকার নেই । একাত্ম হও শ্রেয়শী তোমাতেই ফিরবো ।
- আমি তোমাকে এখনও ভালোবাসি অরিন্দম ।
- ভালো থেকো , আমাকে আমার অসমাপ্ত গল্পের বেদনা টা নিয়ে যেত দাও । ১৬ ডিসেম্বরে শহীদ বেদিতে ফুল দিও আমি বুঝে নেব তুমি এখনও আছো ।
- বিদায় !!!
- ওপারে দেখা হবে , ভালো থেকো !!!!!!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নাঈম ?????? ??? ?????? ?????, ???? ??? ??????
মিছবাহ উদ্দিন রাজন শুভকামনা রইলো ।
ভালো লাগেনি ২৪ জানুয়ারী, ২০১৫
পবিত্র বিশ্বাস ভালো হয়েছে..................শুভেচ্ছা রইল
ভালো লাগেনি ২৩ জানুয়ারী, ২০১৫
মাইদুল আলম সিদ্দিকী শুভকামনা রইল...।
ভালো লাগেনি ২৩ জানুয়ারী, ২০১৫
শেখ শরফুদ্দীন মীম সত্যিই ভালো লিখেছেন । আমার ছোট্ট কবিতাটুকু সময় করে পড়বেন।
রাজু সুন্দর । ভালো লাগলো ।
ভালো লাগেনি ১২ জানুয়ারী, ২০১৫
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,ভাই।আমার কবিতা ও গল্প পড়ার আমন্ত্রন রইল।
সৃজন শারফিনুল খুব সুন্দর শেষটা অসাধারণ। শুভ কামনা এবং ভোট রইলো। পাতা দেখার আমন্ত্রণ।

১২ অক্টোবর - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪