নূরীর আত্মকথা

দিগন্ত (মার্চ ২০১৫)

মুহাম্মাদ লুকমান রাকীব
  • 0
  • ২২
পরিচয়নামাঃ
ওর নাম নূরী। এটা ডাক নাম, আসল নাম না। আসল নাম নূর জাহান। বয়স আসছে মাসের পনের তারিখে আঠার হবে। নূরী এবার এইচ.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছে। খুব ভাল পরীক্ষা হয়েছে তার। সবচেয়ে ভাল রেজাল্ট হবে বলে শিক্ষক মহলের সবার প্রত্যাশা। কিন্তু বাড়ীর সবাই তার কাছে এমন আশা করছে না বরংচ তার বাড়ির সকলে বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লেগে গেছে।
নূরী দেখতে খুব সুদর্শনা। চোখ দুট বড় বড়। নাক‘টা সরু j¤^v বাংলালিংক টাওয়ারের মতন। চোখের ভ্রু দুটুতে পশম কম হলেও তার কাজল কালো। ঠোট দুটু একেবারেই রক্তিম টক টকে লাল ভেজা গোলাপের তরতাজা পাপরীর মতন। ঠিক দেখে মনে হয় কোন অষ্কার পাওয়া শিল্পীর দীর্ঘমেয়াদি কারুকার্য।
এতোসব সুন্দরী মেয়েদের গুণ বলে কিছু একটা নেই বলে সমাজে কুসংষ্কার আছে। কিন্তু নূরীর গুণে গুনান্নিত হয়ে সেরা গীবৎকারী সাকচুন্নির মুখও প্রশংসার পঞ্চমুখ হয়ে ফুটবে।
কিন্তু সব শেষে সুন্দরী মেয়েরা যে শুধু সুন্দর গুনই গুনান্নিত বটে সে তার থেকে আলাদা করে গুচিয়েছে নিজেকে। মোট কথা, একটা নারী সর্বপরি হতে যতো গুণ প্রয়োজন সব গুলোতেই গুনান্নিত নূরী নামের এই নূর জাহান।

স্বপ্নচূড়া
নূরী নিন্মবিত্ত ফ্যামিলি স্ট্যাটাসের মেয়ে হলেও সে একেবারে কম ¯^cœ দেখতে ভালবাসে যে তা না। তার সবচেয়ে দীর্ঘ যে ¯^cœUv এটা হল সে কচি কাচা ছেলে মেয়েদের স্কুলে টিচিং করে বাকি সারাজীবন কাটাতে চায়। ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের সাথে সে খেলা করতেও ভালবাসে। ইদানিং সে ‘ইমাম প্রি-কেডেট স্কুল-এ ছোট সোনামণিদের সময় দিচ্ছে আর পাশা পাশি দু একটা ক্লাসও নিচ্ছে। কিন্তু তা তার বাবা মা একেবারেই মানতে পারছেন না। তারা কোন উযূহাত মানতে রাজি নন। তারা উঠে পড়েই লেগেছেন বিয়ের জন্য।

বিয়ে-শাদি
ফরহাদ ইতালির রাজধানী রোমে প্রায় দশ বছর ধরে থাকার পর পয়তাল্লিশ দিনের ছুটিতে দেশে এসেছে। তার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখছে তার উচ্চবিত্ত ফ্যামেলী। তারা কোন যৌতুন চাই না। চাই সুন্দরী সুদর্শনা একটা মেয়ে। কম শিক্ষিত হলেও চলবে। চলতি বছরে মেয়েকে ইতালি নিয়ে যাবে। ছেলে পক্ষ অনেক মেয়ে খুঁজা খুঁজির পর নূরীর স্বন্ধান পেল। নূরীকে তাদের খুব পছন্দ হল। বিনা হিসেবে তারা নূরীকে বউ বানাতে আগ্রহী। অন্যদিকে এমন সমন্ধ পেয়ে নূরীর বাবা মা তো আত্মহারা। মেয়ে দেখার তিনদিন পর নূরীর বিয়ে হল এলাকার সবচেয়ে ধুম-দাম ভাবে।

সংসার জীবন
স্বামী হিসেবে ফরহাদ অতুলনীয়। বিদেশী ছেলেরা একপ্রকার এমনি হয়। একটু স্ত্রীপ্রিয়। ফরহাদও ঠিক তারচেয়েও বেশী। কিন্তু সে একটু লজ্জাশীল। আর থাকাটাও যেন ভাল,কারণ “ছেলেদের লজ্জা থাকাটা ভাল, কিন্তু না থাকাটা স্বতন্ত্র| আর মেয়েদের লজ্জা না থাকাটা আরও লজ্জাকর।
নূরীর শ্বাশুরী একটু কররাটে। আসলে এখনকার সব শ্বাশুরীরাই একটু এরকম হয়, আর হওয়াটাও যেন স্বাভাবিক|
নূরীর সংসার জীবন আর দাম্পত্ব্য জীবন বেশ আনন্দেই কাটতে লাগল। বিয়ের প্রায় পঁচিশ দিন অতিবাহিত হতে না হতেই দেশের প্রায় জনপ্রিয় দশ স্থানে হানিমুন করা হয়ে গেছে। কিন্তু এরই মাঝে খুব যতনে প্রাণের মধ্যে পোষে রেখেছে তার স্বপ্নসাধনা|

স্বপ্নপূরণ
একদিন রাত্রিবেলা নূরী তার স্বামীর সাথে বারান্দায় বসে গল্প করছিল। স্বামী আগ্রহ নিয়ে নূরীর জীবনবৃত্যান্ত শুনছিল। নূরী সুযোগ বুঝে তার আসল স্বপ্নের কথা প্রকাশ করল। কিন্তু সে সময়টা নূরীর খুব ভয়ও হচ্ছিল। স্বামী না জানি তার এমন স্বপ্ন শুনে আবার রেগে উঠে।
-আমার ছোট বেলা থেকেই ঠিক তোমার মতনই এমন একটা স্বপ্ন ছিল। কিন্তু বেশিদূর লেখা পড়া করতে পারিনি বলে স্বপ্ন পূরণ করতে পারিনি। আমার হয়ে তুমি যদি এমনটি কর তাহলে তোমার মাঝে যেন আমার স্বপ্নটাও পূরণ হবে। এমন কথা জানাল তার স্বামী ফরহাদ।
নূরী ফরহাদের এমন উদার কথা শুনে একেবারে চুপসে গেল। কিছুক্ষণ পর বলল,-আমি আসলে তোমাকে এমন কথা বলতে রিতিমতো ভয় পাচ্ছিলাম।
-কেন, ভয় পাচ্ছিলে? আমার মধ্যে মনুষত্ব্য নাই নাকি?
-না। ঠিক তা না। আসলে...
-শুণ! কারও ইচ্ছা শক্তির উপর জোর থাকলে সে তার ইচ্ছা পূরণ করতে সক্ষম হয় অবশ্যই আর যদিও সময় অতিবাহিত হয়।
কথায় আছে-লক্ষ নিয়ে পথ চলা গন্তব্য স্থলে না পৌছতে পারলে আংশিক কাছে তো যাওয়া যাবে। আমি তোমাকে আমার বন্ধুর এক স্কুলে কাল থেকেই পাঠাচ্ছি। তুমি আবাদত সেখানে টিচিং দিয়ে যাও। যখন ইতালিতে যাবা তখন সেখানকার একটা বাঙালি স্কুলে তোমাকে জয়েন করিয়ে দিব তুমি সেথানে টিচিং দিবা। কি খুশি তো?
-নূরী স্বামীকে মুহুর্তের মধ্যে জড়িয়ে ধরল। এক সময় আনন্দ অশ্রু তার দুচোখ থেকে ভাসতে ভাসতে তার স্বামীর শরীর স্পর্শ করল। স্বামীর শরীর ভিজে গেল। ফরহাদ বুঝতে পারল দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন পোষে রাখা মানুষের স্বপ্ন যদি অনায়াসে এমনি পূরণ হয় তবে এমন করেই হয়তো মানুষ আনন্দ অশ্রু ঝড়ায়।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ সুন্দর গল্পটা পড়ে বেশ ভাল লাগল ।
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,পাতায় আমন্ত্রন রইল।

১০ অক্টোবর - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ১০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী