দিগন্তে আকাশ মিশেছে কেন পৃথিবীর গায়ে

দিগন্ত (মার্চ ২০১৫)

রবিন রহমান
  • 0
  • ৪৬
বায়ুর ঘারে চেপে এক নারী মেঘ ঘুরে বেরাচ্ছে। হঠাৎ মেঘ বায়ুকে বললো :
দেখ ,দেখ, বায়ু কত সুন্দর একটা মানব কন্যা । বায়ু, তুই কি একটা মানব কন্যা এনে দিতে পারবি আমাকে । আমার খুব ইচ্ছা একটা মানব কন্যা মানুষ করবো। আমাদের রাজ্যে কত পরি কন্যা ঘুরে বেরায়। পরি কন্যা অনেক সুন্দর কিন্তু ওদের ডানা থাকাতে ছোটাছুটি করে বড্ড বেশী। খুব চঞ্চল পরী কন্যা। কিন্তু মানব কন্যা গুলো ওমন নয়। মানব কন্যা গুলো খুব শান্ত ¯^ভাবের হয়। তাই আমার খুব ইচ্ছা একটা মানব কন্যা লালন পালন করবো । আমি একটা মানব কন্যা চাই, তুই আমাকে একটা মানব কন্যা এনে দিবি।
বায়ু খুব চিন্তীত হয়ে পরে । বলে :
এটা সম্ভব নয় । কোন বাবা মায়ের বুক খালি করে আমি এটা করতে পারবো না। এতে বাবা মায়ের অভিশাপ লাগতে পারে ।
মেঘ: গত বছর ঝড়ে অন্য এক মেঘের সাথে ধাক্কা লেগে বিজলি হয়েছিল। বিজলিটা গিয়ে পরেছিল এক মানব পরিবারে, এক কন্যার বাবা মায়ের উপর। আমি দেখে খুব ব্যথিত হই, কিন্তু কিছু করতে পারিনি। ওরা মারা যায় কিন্তু ওদের একটা মেয়ে বেঁচে যায়। সেই মেয়েটাকে আমি পেতে চাই ,তুই মেয়েটাকে এনে দিবি।
বায়ু তাতে রাজি হতে মেঘ ঠিকানা বলে দেয় । বায়ু ঠিকানা নিয়ে চলে আসে মেয়েটার খোঁজ নিতে, পৃথিবীতে। বায়ু ঠিকানা নিয়ে খুঁজতে খুঁজতে এসে দেখে মেয়েটাকে ওর খালা অযতেœ ফেলে রেখেছে। বায়ুর মনটা খুব খারাপ হয়, বায়ু চুরি করে মেয়েটাকে নিয়ে চলে আসে মেঘের রাজ্যে। মেয়েটির খালা ঘর থেকে বারান্দাতে এসে দেখে মেয়েটা নেই। খালা বরং খুশি হয়, মনে মনে বলে অপদ গেছে। বায়ু মেয়েটাকে নিয়ে মেঘকে দেয়। মেঘ খুব খুশী। খুব যতœ নিয়ে মেয়েটাকে লালান পালন করতে থাকে। বায়ু মেয়েটার প্রয়োজনীয় পোষাক ,খাবার ,অন্যান্য সবকিছু পৃথিবী থেকে নিয়ে দেয়। যেমন গোয়ালার কাছথেকে দুধ, দর্জির কাছথেকে কাপড়, গাছের কাছথেকে ফল বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে যায় মেঘের কাছে ।
মা মেঘটা মেয়ের নাম রাখে সম্পূর্না। কারন মেয়েটি তার মায়ের অভাব পূরণ করেছে। মা মেঘ সম্পূর্নাকে নিয়ে লোকালয়ে আসেনা। বনের ধারে থাকে, ওখানে বৃষ্টি দেয়। মা মেঘ লোকলয়ে যায় না কারন লোকালয়ে মানুষের ভয়, যদি সম্পূর্না কে কেউ দেখে ফেলে। এদিকে পৃথিবীর সম্রাট তৈমুরের একটা ছেলে আছে ,তীমুর। খুব দূরন্ত ¯^ভাব তার। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে, হৈ হুল্লর করতে সে ভালোবাসে। একদিন বন্ধুদের সাথে শিকারে বের হয়েছে। বনে ঢুকতে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। কোন মতে বৃষ্টি থেকে বাঁচতে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে যায় রাজপুত্র। বৃষ্টি শেষ হতে আকশের দিকে তাকায় সম্রাট পুত্র। সুন্দর রংধনু উঠেছে। রংধনু দেখতে দেখতে চোখ পরে মেঘের দিকে। দেখে সুন্দর নারী কেশ এলিয়ে দেয়া। কৌতূহলি হয়ে তাকিয়ে থাকে সে। সম্পূর্না মুখ ঘুরিয়ে হঠাৎ তাকাতে চোখ পরে রাজপুত্রের দিকে। পৃথিবীতে ওর মতো মানুষ দেখে অবাক হয়ে চেয়ে থাকে । এদিকে তীমুর সম্পূর্নাকে দেখে প্রেমে পরে যায় সম্পূর্নার । কিন্তু দূরুত্ব অনেক ,মেয়েটিকে পাশে পাওয়া সম্ভব নয় । শিকার না করে ফিরে আসে তীমুর । রাণিকে ঘটানাটা খুলে বলে । রাণি গুরুত্ব দেয়না ওর কথায়।
কিন্তু রাজপুত্র দিনের পর দিন সব ফেলে বনের ধারে সময় কাটাতে থাকে । তা দেখে রাণি একটু চিন্তিতো হয়ে পরে ।রাজাকে ঘটনাটি খুলে বলে । রাজা ,উজির কে বিষয় টি দেখতে বলে । উজির লুকিয়ে একদিন রাজপুত্রের পিছু পিছু দেখতে যায় ,রাজপুত্র কোথায় যায়। গিয়ে দেখে এক অপূর্ব সুন্দর মেয়ে মেঘের দেশে ,রাজপুত্র সেদিকে চেয়ে অছে,। রাজপুত্রের দিকে মেয়েটি চেয়ে আছে । উজির রাজপ্রাসাদে ফিরে আসে ,রাজাকে ঘটনা খুলে বলে । রাজা বলে-
ভালো কথা । রাজ পুত্র বড় হয়েছে ,ওকে বিয়েতো দিতেই হবে । তুমি দেখো কোন ব্যবস্থা করা যায়কিনা । মেঘের দেশে খবর পাঠানোর ব্যবস্থা করো । উজির অনেক ভেবে দেখে ,একমাত্র বায়ু পারবে মেঘের দেশে যেতে । উজির বায়ুকে খবর পাঠায় । বায়ু ব্যস্ত হয়ে রাজ প্রাসাদে আসলে উজির বলে -
বায়ু ,রাজার পুত্র তীমুর মেঘের কন্যাকে ভালোবেসে ফেলেছে । মেঘের রাজ্যে একমাত্র তুমিই যেতে পারবে। তাই তোমাকে কাজটা করতে হবে । মা মেঘের কাছে তুমি তীমুরের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবে । মেঘকন্যার সাথে তীমুরের বিয়ে দিতে চায় রাজা । তুমি মেঘকে গিয়ে প্রস্তাব দাও ।
বায়ু প্রস্তাব নিয়ে মেঘের রাজ্যে চলে যায় । মা মেঘকে গিয়ে বলে -
সম্পূর্নার মা , মেঘ । তোমাকে একটা প্রস্তাব দিতে চায় । পৃথিবীর সম্রাটের পুত্র তীমুর ,সে সম্পূর্নাকে ভালো বেসে ফেলেছে । সম্পূর্নাও নাকি ওকে দেখেছে। রাজার ইচ্ছা দুজনার বিয়ে দেবে । তুমি রাজি হলে রাজার সাথে আমি কথা বলতে পারি।
মেঘ মাতা অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নেয় ,মেয়ে যেহেতু বড় হয়েছে তাকেতো বিয়ে দিতেই হবে । পৃতিবীর সম্রাট ,তার পুত্রের সাথে বিয়ে, মন্দ হয় না । বায়ু কে বলে -
ঠিক আছে দেখো । যদি বিয়ে দিতে চাও তবে বিয়ের অনুষ্ঠান কিন্তু আমাদের রাজ্যে হবে । আমাদের রাজ্যের সকল মেঘ সম্পূর্না কে আদর করে ,তারা চায় ওদের মেয়ের বিয়ে ওদের রাজ্যে ধুম ধাম করে দিতে । তাছারা আকাশ ,চাঁদ, সূর্য তারাও বিয়েতে পাশে থাকতে চায়। ওরাও যে আমার মেয়েকে খুব ভালোবাসে। তাহলে তুমি রাজার সাথে কথা বলতে পারো । সে যদি এটা মেনে নেয় তবে ঠিক আছে ।
বায়ু চলে আসে পৃথিবীতে ,রাজার কাছে এসে মেঘের কথা জানায় । রাজা বলে -
দেখো বায়ু , আমি পৃথিবীর সম্রাট । আমার ছেলের বিয়েতে অনেক হাতি, ঘোড়া ,লোক লস্কর ,পৃথিবীর প্রাণি সকলে অতিথী হবে । এতো কিছু নিয়ে মেঘের রাজ্যে যাবো কি করে । বরং মেঘ কন্যাকে তুমি পৃথিবীতে নিয়ে এসো ।
বায়ু মেঘকে কথাটা জানালো ,মেঘ বায়ুকে বললো -
এটা অসম্ভব। আমি আমার মেয়েকে কোনমতে এভাবে বিয়ে দেবোনা ।
বায়ু নিজেও চিন্তিত হয়ে পরে । সে নিজের ক্ষমতা বলে অল্প কিছু অতিথী হয়তো বহন করতে পারে । এখন কি হবে, তবে কি মেঘ কন্যার বিয়ে হবে না । এদিকে আকাশ একথা শুনে মেঘ মাতা কে বলে -
হে মেঘ মাতা ,তুমি চিন্তিত হচ্ছো কেনো । আমি ব্যবস্থা করছি । তোমার মেয়েতো আমারও মেয়ের মতো ।ওর জন্য আমি কিছু করবোনা তাকি হয় ,আমি ব্যাবস্থা করছি । কথাটা বলে আকাশ তার বিশাল আকার দেহকে বাঁকিয়ে দেয় । ওর দেহ এসে পৃথিবীর গায়ে স্পর্শ করে । আর এতে দিগন্ত হয় ,যে দিগন্ত দিয়ে মেঘের ভেলা পৃথিবীতে এসে পৃথিবী থেকে পৃথিবীর সম্রাট সহ সকলকে মেঘের রাজ্যে নিয়ে যায় । মেঘের রাজ্যের সাথে পৃতিথীবির রাজ্যের সম্পর্ক তৈরি করে দিতে আকাশ দিগন্ত তৈরি করে দেয় । যা আজও আছে।












আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Arif Billah চমৎকার কথামালা। শুভ কামনা রইল।
শেখ শরফুদ্দীন মীম শ্রদ্ধা জানবেন। গল্পটি বেশ ভালো লাগলো। ভোট রেখে গেলাম। সময় করে আমার কবিতাটি( আলোর সন্ধানে) পড়বেন।
রবিউল ই রুবেন সুন্দর গল্প, ভালো লাগলো.
রবিন রহমান ভালো লাগা জানলে আমারো ভালো লাগে, লেখাটি পড়বার জন্য ধন্যবাদ
জুন ভালো লাগলো। বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুন্দর গল্প। ভালো লাগা সাথে ভোট রেখে গেলাম।
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,পাতায় আমন্ত্রন রইল।
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ গল্পের বিষয় বস্তু যাই হোক, উপস্থাপনের চমৎকারিত্বই তাকে উপভোগ্য করে তোলে । ভাল লাগল ।
নাইমুল খান গল্পের দিগন্ত, দিগন্তের গল্প ! গল্প গল্পই ! খুব ভাল হয়েছে !

১৩ আগষ্ট - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ১৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪