বোধোদয়

কি যেন একটা (জানুয়ারী ২০১৭)

সূনৃত সুজন
অয়ন ।
বয়স সাতাশ ছুঁই ছুঁই । বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে।
দিন রাতের বেশীর ভাগ সময়ই গেমস, ফেসবুক, ইউটিউব সময় কাটায়।
বার্সালোনা আর রিয়াল মাদ্রিদের কোন খেলাই সে মিস করে না। বাদ পড়ে না আলোচিত কোন ক্রিকেট ম্যাচও। বন্ধুদের সাথে প্রথম সারির রেস্টুরেন্টে অনর্থক আড্ডায় সময় ব্যয় করে।
এক মধ্যরাতে অয়ন ড্রাংক হয়ে একা একা টলতে টলতে আবোলতাবোল বলতে বলতে ফাঁকা রাস্তায় হাঁটছিলো। এক উদ্ভট লোকের সাথে দেখা হয় তার। মধ্যরাতে গাছ লাগানো যার নেশা। লোকটি তখন একটা গাছ রোপণ করছেন।
অয়নের মনে হলো এমন অদ্ভুত লোক সে জীবনে দেখে নি।

: (এই মালটা আবার কে?) এই যে । এতরাতে এখানে কি করছেন ?
: অক্সিজেনের ফ্যাক্টরী বানাই।
: এসব ধান্দাবাজি কবে থেকে? দিনের বেলা কি করেন?
: দিনের বেলায় পেট চালানোর কাজ করি। আর রাতের বেলা নেশায় ডুবে যাই।
গাছ লাগানোর নেশা। যত বেশি গাছ লাগাবো তত বেশি অক্সিজেন মানুষের
ফুসফুসে ঢুকবে। অথচ কেউ জানবে না কার লাগানো গাছে মানুষ শ্বাস নিচ্ছে।
কী মজা তাই না !
: কতদিন এ পাগলামি চলবে?
: যতদিন দেহে আছে প্রাণ।
: আপনার মতো পাগল এই প্রথম দেখলাম।
: (মাথা ঝাঁকাবে) সময় নাই। সময় নাই। অল্প একটু সময় নিয়ে এসেছো তুমি।
অনেক কাজ। একবার ভাবো তো, তুমি নাই অথচ পৃথিবীটা আপন নিয়মে চলছে।
কেমন লাগবে?
: মানে?
: সাতশ কোটি মানুষ। আজ থেকে ঠিক একশ বছর পর কেউ থাকবে না। হাহাহাহা
নতুন মানুষে নতুন করে সাজবে পৃথিবী।
: তো? আমি কি করবো?
: জীবনের খাতায় ঋণ বাড়ছে দিনের পর দিন।
তোমার ঋণ তো তোমাকেই শোধ করতে হবে!
: কিসের ঋণ ? কিভাবে শোধ করবো?
: সময় নাই। মানুষের জন্য অনেক কাজ করতে হবে তোমাকে।
তোমাকে বাঁচতে হাজার বছর। এই দেশে মানুষের বড়ই অভাব।
: আপনার মানসিক সমস্যা আছে। আপনি ডাক্তার দেখান।
: আমরা সবাই কোন না কোনভাবে মানসিক রোগী। হাহাহাহাহা।
শোনো, মানুষের খোলস পরে থেকো না। মানুষ হয়ে ওঠো । ভেতর বাহির মানুষ।


বাসায় ফেরে অয়ন। ভাবতে থাকে কিসের ঋণ ? কিভাবে শোধ করবে সে?
বার বার তার কানে প্রতিধ্বনিত হয়_‘মানুষ হয়ে ওঠো। ভেতর বাহির মানুষ।
পরদিন লোকটার খোঁজে সেই রাস্তায় আবার যায় অয়ন কিন্তু তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। লোকটির লাগানো গাছটি নেতিয়ে আছে। গাছটি ঠিকঠাক করে পরম মমতায় আঁজলা ভরে পানি ঢেলে দেয়। শক্ত খুঁটির সাথে গাছটিকে বেঁধে দিয়ে বাসায় ফেরে অয়ন।

কানে প্রতিধ্বনিত হয়- ‘মানুষ হয়ে ওঠো। ভেতর বাহির মানুষ।’
তার মনে হয় তার এত দিনের যাপিত জীবন কোন জীবন নয়। বরং জীবনের সার্থকতা অন্য কিছুর ভেতর । গেমস তাকে টানে না । ভার্চুয়াল জগতকে তার মরীচিকা মনে হয় । সচেতনভাবেই সে তার মুঠোফোনের গেমস আনইনস্টল করে । বন্ধুরা ফোন দেয় ফোন ধরে না। ডুবে যায় গভীর ভাবনায়।

মাস খানেক পর।
কয়েকটা পথশিশুকে পড়ানোর দায়িত্ব নেয় সে।
এ যেন নতুন এক মানুষ । এ এক নতুন অয়ন। প্রতিটা ভালো কাজের পর একটা অদ্ভুত ভালো লাগায় মন ভরে ওঠে তার। ভেতরে কী যেন একটা ঢুকে গেছে। কী এক দারুণ নেশায় ডুবে গেছে অয়ন।
মানুষ হবার নেশা...
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আওসাফ অগ্নী ভাল।তবে আরও বড় হলে ভাল হত।
ভালো লাগেনি ৩১ জানুয়ারী, ২০১৭
ধন্যবাদ !
ভালো লাগেনি ৩১ জানুয়ারী, ২০১৭
সেলিনা ইসলাম সমাজে অয়নরা আছে বলেই এখনো মনে হয় পৃথিবীতে ভালো বলে কিছু আছে। অয়নদের জন্য ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা রইল।অসাধারণ থিম-এ চমৎকার গল্প। শুভকামনা রইল।
ভালো লাগেনি ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭
ধন্যবাদ!
ভালো লাগেনি ৩১ জানুয়ারী, ২০১৭
সেজান খন্দকার অনেক ভাল হয়েছে।
ভালো লাগেনি ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭
অনেক ধন্যবাদ !
ভালো লাগেনি ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭
আহা রুবন বেশ ভাল। মোজাম্মেল কবির ভাইয়ের সঙ্গে একমত। একটু বড় করলে স্বাভাবিক হত। মনে হয়েছে আসল কথাটা বড় বেশি দ্রুত বলে ফেলেছেন। শুভেচ্ছা জানবেন।
ভালো লাগেনি ৬ জানুয়ারী, ২০১৭
ধন্যবাদ !
ভালো লাগেনি ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭
মোজাম্মেল কবির চমৎকার থিম... আপনার গল্প মনেহয় প্রথম পড়ছি। কবিতা পড়েছি আগেই। আরও কিছুটা টানা যেতো হয়তো। খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলো। তাবে একটা বার্তা আছে গল্পে... ভোট এবং শুভ কামনা রইলো।
ভালো লাগেনি ৪ জানুয়ারী, ২০১৭
ধন্যবাদ দাদা ! পরবর্তীতে মনে থাকবে ।
ভালো লাগেনি ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭

২৪ জুলাই - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ২৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪