প্রিয় বাবা, কেমন আছো তুমি? কেমন আছে আমার মেঠো পথ, যে পথ গিয়ে মিশেছে সন্ধ্যা নদীর বাঁকে। কত গোধূলি কেটেছে আমার স্রোতের মায়াজালে। জান বাবা, কতদিন জোনাক দেখিনি, ছাতিম ফুলের গন্ধে মেতে উঠেনা আমার আঙ্গিনা। নরোম কাশফুল, শরতের চাঁদ, শিশির ভেজা ঘাসে মাখামাখি করিনা কতদিন! আমাদের উঠোনের কোনে কাঁঠালগাছগুলো আছে? ঘরের পেছনের আমগাছগুলো? খেজুর গাছটায় কি এখনো রস হয়? আমাদের কালো গাভীটা কি বুড়ো হয়ে গেছে? দুধ দেয় ঠিকমত? নতুন ধানের চালের পিঠা ,পায়েসের জন্য এখনও কি রাগ করে বসে থাক? মা দেখতে পায় এখনও সেই আগের মতো তোমার অভিমান?
ভাবছো মেয়েটা কি পাগল হয়ে গেল! এত এত প্রশ্ন কেন করছি? মনে আছে তোমার বাবা, বছরের প্রথমদিন নাকি সবাই ইলিশ মাছ আর পান্তা ভাত খায়। মা পান্তা ভাত রেঁধেছিল কিন্তু ইলিশ জোটাতে পারেনি। তুমি বললে, “এক ইলিশের দামে পুরো সংসার একমাস চলবে। এমন বিলাসিতা কি পোষায়রে মা! আরও বললে, বছরের শেষদিনটাতে এসে জীবনের হিসেব দেখো। নতুন বছরে এসে শুধরে নাও পুরোনো ভুলগুলো। একজন ভাল মানুষ হও আগে। দেখো একদিন ঠিক এমন ইলিশ প্রতিদিন তোমার খাবার টেবিলে থাকবে।” কতটা ভাল মানুষ হয়েছি সেটা জানিনা তবে আমার চারপাশটায় খেলা করে সোনাঝরা রোদ সে রোদে আমি ভেসে যাই। আর হাঁ আমি কিন্তু খাবার টেবিলে প্রতিদিন ইলিশ রাখিনা বাবা। কেন জানি ইলিশ কিনতে গেলে তোমার সেদিনের কথাটি মনে পড়ে যায়, “এক ইলিশের দামে পুরো সংসার একমাস চলবে।” তোমার এই একটি কথা আমাকে উপলব্ধি করতে শিখিয়েছে যে, কিভাবে সংযম করতে হয়, কিভাবে পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়। আমি এখন আয় ব্যয়ের হিসেবটা খুব বুঝি। তুমি নিশ্চয়ই জান আমি সমাজকল্যাণমূলক কিছু সংস্থার সাথে কাজ করছি। এতে অনেক স্বস্তি পাই বাবা।
তোমার প্রেসার বেড়ে যায়নিতো? ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে? কত করে বললাম চলে আস আমার কাছে কিন্তু তুমি ও মা শুনলেইনা। আঁকড়ে ধরে পড়ে আছ নিজের দেশের মাটি। আমি যদি পারতাম তোমার কাছে চলে আসতে! পারিনা বাবা, এখন অনেক কিছুই পারিনা। অভাব ছিল কিন্তু ওখানটাতেই কত সুখ ছিলো একদিন! আজ সব আছে কিন্তু পৃথিবী কেমন জানি বদলে গেছে বাবা। দোয়া রেখো।
ভাল থেকো তোমার রাজকন্যা
জামান সাহবে চিঠিটা প্রায় দশবার করে পড়লেন এবং স্ত্রীকে ডেকে বললেন, আমার জীবনে আর কোন চাওয়া নেই। আমার রাজকন্যা একজন ভাল মানুষ হয়েছে। আচ্ছা সে কি কোনদিন উপলব্ধি করতে পেরেছে আমরা তাদের জন্মদাতা বাবা মা নই? তবে আমি বেশ উপলব্ধি করতে পারছি, তাকে এখন জানিয়ে দেয়া দরকার তার জন্মপরিচয়........ ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Helal Al-din
.
বলছিলাম কি আপুমনি
বেশ হয়েছে গল্পখানি,
যদিও প্রথম চিঠিই ছিল
শেষে এসেছে চোখে পানি।
গল্পটা বোন তোমার লেখা
চরিত্রটা আমার রুপেই,
জোনাক দেখিনা অনেক বছর
পা রাখি না ঘাসের ঝোপে।।
আপনার লেখাটা বেশ ভাল লেগেছে। তাই কয়েকটি চরণ উপহার হিসেবে পাঠালাম। তবে ভুলগুলি মাফ করবেন।
ভাল থাকবেন, শুভেচ্ছা রইলো।
ইমরানুল হক বেলাল
অসাধারণ একটি কাব্যময় গল্প।
আত্মজীবনীমূলক।
শেষের দিকে অসাধারণ ফিনিশিং হয়েছে।
আপনার সাহিত্যকর্ম উজ্জীবিত হোক।
আমার লেখা "জীবন চলার পথে"
গল্পটি পড়ার জন্য আমন্ত্রণ।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।