অসম্পূর্ন মিলন

ব্যথা (জানুয়ারী ২০১৫)

গোবিন্দ বীন
  • ১৬
  • ৫২
হঠাৎ সেদিন সন্ধায় রিমঝিম করে বৃষ্টি পড়ছিল। সেই আওয়াজ যেন আমার কানে তার আগমনের আভাস দিয়ে যাচ্ছিল। শীত অনুভব করছিলাম, তবুও
বাইরে গিয়ে বারান্দার এক কোনে দাড়িয়ে হাঁস মুরগির আনাগোনা দেখছিলাম।, আশ্রয়ের জন্য এদিক সেদিক ছুটছে, কিন্তু কেউ তাদেরকে একটু আশ্রয়
দিচ্ছে না। ভাবলাম,গৃহহীন জীবন এমনি ছন্নছাড়া হয়। তখন ঠান্ডা লাগছিল তাই চা খেয়ে বিশ্রাম করার জন্য বিছানায় যাচ্ছিলাম। ঠিক তখনি ফোনটা মধুর সুরে বেজে উঠল,আমি ভাবলাম নিশ্চয়ই সে হবে?
আমি দৌড়ে গেলাম,না দেখেই ফোনটা রিসিভ করতেই,"আমারে ছাড়িয়া...."গানটি কলার টিউন করতে, এটা শুনেই ফোনটা বিছানার উপর ছুড়ে ফেললাম। এটা সিম সার্ভিসের কল ছিল। কিছুক্ষণ চুপ করে রইলাম!
ফোনটা হাতে নিয়ে ফোন দিতেই ব্যাস্ত দেখাচ্ছিল। বার বার চেষ্টার পর সফল হল,ফোন ধরতেই বললাম কাল তুমি আসবে না?
সে বলল,হ্যাঁ। কাল আসতে আসতে আমার সন্ধা হবে।
কাল তোমার ফেভারিট শাড়িটা পরব,অনেক দিন হল সেটা পরি না। তোমাকে দেখার অনেক ইচ্ছা করছে, এ কথাটা বলতেই ফোনটা কেটে গেল। আমার
মোবাইলের ব্যাটারির চার্জ শেষ।বৃষ্টি প্রায় শেষের দিকে দু'এক ফোটা পড়ছে।
বাইরে হিমেল বাতাস বইছিল,খোলা আকাশের নিচে বসলাম।মেঘ সরে গিয়ে কয়েকটা তারা দেখা যাচ্ছে।
মনে হচ্ছিল যেন সেই নিঃস্ব আকাশে হারিয়ে যাই,তারারা একসাথে হয়ে কানে কানে কি যেন
বলছে?সেই রাতটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রাত,কিছুতেই যেন কাটতে চাইছে না।তখন যদি ঘড়ির
কাটাটাকে সরাতে পারতাম,তবে সেটাও করে দেখাতাম।কিন্তু সেটা কারো পক্ষে সম্ভব ছিল না।
রাতে ঘুমাতে গিয়ে দেখি ঘুম আসছে না,একবার বিছানার ডান দিকে যাচ্ছি,আরেকবার বামদিকে। তার কথা ভাবতে ভাবতে কোনমতে ঘুম ধরল। সে রাতেই এক আঁধার স্বপ্ন দেখে থমকে গেলাম,তখন শুধু প্রভুর নাম ছাড়া অন্য কিছু মুখে আসছিল
না। কিন্তু খারাপ স্বপ্ন দেখার পর মোটেও ঘুম আসছিল না।সেদিন সকালটা ছিল সোনালি রোদে উজ্জ্বল পাখির কোলাহলে পরিপূর্ণ,কারন আগের দিন প্রচন্ড বৃষ্টি হয়েছিল।সেদিন খুব ভোরেই ঘুম থেকে উঠে চমকে গেলাম,ভাবতে নিজেকেই অবাক লাগছিল! আজ এত
সকালে কিভাবে ঘুম ভাঙল? হাত-
মুখ ধুয়ে হালকা কিছু খাওয়ার জন্য টেবিলে বসলাম।কিন্তু সেগুলো খেয়ে শেষ করতে পারলাম না।
তাড়াহুড়ো করে অফিস ব্যাগটা হাতে নিয়ে অফিসের দিকে রওনা দিলাম।মনে হচ্ছিল, অফিসের রাস্তাটা যেন বেড়েই যাচ্ছে।
অফিসে গিয়ে দেখি ফোনটা বাড়িতে ফেলে এসেছি।
সেদিন অফিসের কাজে মন বসছিলনা,মনটা তাকে দেখার জন্য ছটফট করছিল।আবার কাজের চাপও ছিল,তবুও বসকে অনেক রিকুয়েষ্ট করার পর অর্ধ বেলা অফিস করে ছুটি নিলাম।
বাড়িতে এসে দুপুরে কিছু না খেয়ে,তাকে আনার জন্য রওনা দিলাম।
ভাবলাম,বাড়িতে এসে দুজনে একসাথে দুপুরের খাবারটা খাব।কথায় আছে সামনের খাবারকে অবহেলা করতে নেই,কিন্তু খাওয়ার মন চাইছিল না। যখন বাড়ি থেকে বের হচ্ছি তখন ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি ৫টা মিসড কল। ভাবলাম সে বুঝি আমার জন্য
অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
আমি তাকে অনেক বার ফোন দিলাম,কিন্তু সে ফোনটা রিসিভ করছিল না।আমি ভাবলাম তার ফোনটা সাইলেন্ট হবে না হয়তো অন্য কোন কারন! কিছু ক্ষণ পর আমি আবারও চেষ্টা করলাম। দুই,তিন বার ফোন দেওয়ার পর রিসিভ হল,কিন্তু কোন আওয়াজ আসছিল না। কিছুক্ষণ পর এক অচেনা কণ্ঠ শুনতে পেলাম।
আমি বললাম আপনি কে? তখন সেখান থেকে কান্নার আওয়াজ আসছিল।তখন বললাম কান্নার আওয়াজ কিসের? সেই অচেনা কণ্ঠ বলল,কিছুক্ষণ আগে এখানে একটি ভয়াবহ এক্সিডেন্ট ঘটেছে আর ফোনটা এখানে পরেছিল।
একথাটা শোনার পর মনে হচ্ছিল কেও যেন আমার গলাটা চেপে ধরেছে।তখন আমার শরীরটা একেবারে বরফের মত ছিল ।
হাতে ফোনটা ধরে রাখতে পারলাম না। আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেখানে পৌঁছালাম এবং অনেক জনকে জিজ্ঞেস করলাম,কিন্তু তারা কোন প্রশ্নের উওর
না দিয়ে পাগলের মত এদিক ছুটছে।সেদিন সে আমার নীল রঙের ফেভারিট
শাড়িটা পড়েছিল|সেই শাড়িতে তাকে খুব সুন্দর লাগত,মনে হত স্বপ্নলোক থেকে পরি নেমে এসেছে।
এদিক ওদিক ছোটার সময় কোন কিছুর সাথে পা টা আমার আটকে গেল,পিছনে ফিরে দেখি আমার সেই শাড়িটা।মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছিল তার
মুখখানি যেন আমাকে কিছু বলছে? ভাবতেও পারলাম না যে তার সাথে আমার এভাবে দেখা হবে।
সে সারাজীবনের জন্য গভীর রজনীতে ঘুমিয়ে আছে।
যে আমার সাথে সারাজীবন একসাথে পথ চলার প্রতিজ্ঞা করেছিল, সে আজ কিভাবে আমাকে ছেড়ে একা পথ হাঁটছে?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নেমেসিস ভালোলগা এবং শুভকামনা রইল।
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
মিলন বনিক শেষটা যতটা না আবেগের তার সাথে আগের নাটকীয় হাস্যরস গুলো কেমন খাপছাড়া লাগছিল....একটু রিভিউ করে নিলে ভালো একটা গল্প হবে...শুভ কামনা....
ভালো লাগেনি ১১ জানুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ,ভাই।
ভালো লাগেনি ১২ জানুয়ারী, ২০১৫
মনজুরুল ইসলাম ভালো লাগলো তবে গল্পে আবেগ ও নাটকীয়তা আর একটু বাড়ালে আরো ভালো লাগত.অনেক অনেক শুভো কামনা.
ভালো লাগেনি ৯ জানুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ,ভাই।
ভালো লাগেনি ১২ জানুয়ারী, ২০১৫
জাতিস্মর ভালো লাগলো। শুভকামনা রইলো।
ভালো লাগেনি ৯ জানুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ,ভাল লাগার জন্য।
ভালো লাগেনি ১২ জানুয়ারী, ২০১৫
জোহরা উম্মে হাসান মন ছুঁয়ে গেল গভীর বেদনায় !
ভালো লাগেনি ৮ জানুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১২ জানুয়ারী, ২০১৫
মিসির আলম অসম্পূর্ন মিলন নামটার সার্থকতা লেখক অত্যন্ত সুন্দরভাবে বুঝিয়েছেন। বেশ লাগলো ।
ভালো লাগেনি ৭ জানুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ,ভাই।
ভালো লাগেনি ৮ জানুয়ারী, ২০১৫
Arif Billah গল্পটি বেশ চমৎকার। শুভ কামনা রইল।
ভালো লাগেনি ৭ জানুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ,ভাই।
ভালো লাগেনি ৭ জানুয়ারী, ২০১৫
আল মামুন খান ভালো লাগলো। শুভকামনা রইলো।
ভালো লাগেনি ৭ জানুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ৭ জানুয়ারী, ২০১৫
আশিক বিন রহিম বৃষ্টি পড়ছিল,,আভাস দিয়ে যাচ্ছিল,,,,অনুভব করছিলাম,,,আনাগোনা দেখছিলাম,,,, এই সব্ধ গুলো গল্পতাকে হালকা করে দিয়েছে...... বলে আমার মনে হয় ......তবে গল্প ভালো হয়ছে ,,,,,, সুভ্হ কামনা
ভালো লাগেনি ৬ জানুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ৭ জানুয়ারী, ২০১৫

১৫ এপ্রিল - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৪৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪