নাম জানা- না জানা কতো ফুল ফোটে রাতের আঁধারে ঝরে যায় ম্লান হয়ে প্রভাতে। শিশিরের অশ্রুবিন্দুর মতো আমিও ঝরে যাবো একদিন; এ মাটির পৃথিবী থেকে দেশান্তরে, দূর আকাশের ওপারে যেখানে মেঘ-বালিকাদের সাথে মেঘ-বালকরা খেলা করে আমার আত্মা কখনো আসবে না আর রঙিন এই চরাচরে।
তবুও আমি দূর হতে দেখবো তোমাদের; আমার হৃদয় ভরে দেখবো আমার প্রিয় গ্রাম-বাংলার চিরচেনা রূপ অপরূপ মেঠো পথ, ছায়াঘন নিবিড় গাছ-গাছালি যেখানে হাওয়ার ডানা দোলা দেয় প্রাণে বিচিত্র পাখ-পাখালি গ্রাম-বাংলার মন-মাতানো এ অপূর্ব রূপের সমাহার আমাকে দোলা দেয় আজও হৃদয়মাঝে বার বার।
শীতের সকালে সবজি ক্ষেতের উষ্ণ ধোঁয়া সরিয়ে বাংলার প্রকৃতির মেয়েরা আইলে আইলে শাক তোলে মায়েরা-বৌয়েরা পিঠা-পায়েস তৈরিতে ব্যস্ত; কৃষকের হাঁক-ডাক নতুন ফসল বোনার আমন্ত্রণ মাঠে মনে পড়ে সেই শীতের শৈশব-কৈশোর যেতাম তখন আমরা সকালবেলায় কাচারীঘরে নিমগ্ন পাঠে।
আজ সেদিন নেই শব্দের শিল্পবোনা প্রকৃতির রূপ-সৌন্দর্য ঘিরে কতদিন দেখি না পূর্ণিমার জোছনাভরা রূপের সাগরে উদাসীন বাউলের মতো গানের পাণ্ডুলিপি হৃদয়ে এঁকে বকুলফুলের নির্যাস প্রশস্ত বুকে; শুধু বেঁচে আছি শহরের লোডশেডিংয়ের বিচিত্র রঙিন খেলায় অপেক্ষায় শুধু ক্ষুধার অন্ন জোগাড়ে এই লণ্ডভণ্ড কালবেলায়।
মায়াময় গ্রাম-বাংলার সোনালী ধান, পাখির ডানার শব্দ, বিচিত্র কোলাহল ফুলের পশরায় মেতে ওঠা রূপ-পরীদের মতো অন্তরের গোপন কালিতে রেখেছি সাজিয়ে অবিরত; বর্ষা, হেমন্ত-বসন্ত কতোরূপ শিউলি ফোটা শ্যামলী মা জননীর একদিন আমার দেহ পচে-গলে ঠাঁই নেবে বুকে- সে মাতৃভূমির কাঁঠালচাঁপার তলে। আকাশ থেকে নামবে বৃষ্টি আমাকে চিরশান্তি দেবে বলে।
নিঘুম কতো রাত কেটেছে এই বাংলার পথ-ঘাট চেনা নদী-সাগর হাওড়-বাঁওড় ঘুরে যেখানে মাছরাঙ্গা পুকুরের জলে, হলদে পাখি সোনালু ফুল নিয়ে অবিরত খেলা করে আজ আমার শরীরে সেই মাছেদের ঘ্রাণ, সোনালু ফুলের প্রভাত ফেরী বুকের ভেতর গ্রাম বাংলার বৈষ্ণব কবিতার পদাবলী; মহামুনি বাল্মিকীর মতো শরবিদ্ধ পাখির চিৎকার-হাহাকার শ্লোক। দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধার 'জয়বাংলা শ্লোগান অপরাজিত ফিনিক্স পাখির মতো; মৌমাছির গুনগুন গান আকাশে-বাতাসে ভাসমান।
আমার আত্মা চলে যাবে একদিন এ গ্রাম-বাংলার সব মায়াময় কথকতা ফেলে তবুও আমি রয়ে যাবো অশ্রুসজল প্রেয়সীর বুকে অথবা চিরচেনা বনজোছনার তলে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তানভীর আহমেদ
মনে হলো জীবন বাবুর ‘আবার আসিব ফিরে’ এর ছোঁয়া পেলাম। সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম ব্যাপারগুলোতে কলমের শৈল্পিক আঁচড় দক্ষতার প্রমাণ দেয়। তারপরেও কবিতাটির গঠনগত দিক কিছুটা দূর্বল মনে হলো। “আমার আত্মা কখনো আসবে না আর রঙিন এই চরাচরে।” এ ধরনের লাইনগুলোতে শেষের ব্যবহৃত শব্দগুচ্ছ বাক্যের মাঝখানে ব্যবহার করলে দূর্বলতাটিকে পাশ কাটানো সম্ভব হয়। এটা অবশ্য আামার ব্যক্তিগত মতামত।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।