একজন ফজু মাষ্টার

শিক্ষা / শিক্ষক (নভেম্বর ২০১৫)

আল- আমিন সরকার
  • 0
  • ২৮
আযান দেওয়ার সাথে সাথে ঘুম থেকে উঠেন তিনি । রাত গভীর হওয়ার আগেই ঘুমোতে যান । তার এ নিয়মে কখনো পরিবর্তন হয়নি । ছাত্রদের ও সারা জীবন এই শিক্ষাই দেন- “তাড়াতাড়ি ঘুমোয় যারা, তাড়াতাড়ি যে ঘুম থেকে উঠে, অভাব হয় না তার - স্বাস্থ্য সম্পদে”। নিত্যদিনের সঙ্গী তার বাই – সাইকেল, পরিষ্কার করেন নিয়মিত । চাকুরীর প্রথম দিকে কেনা ফনিক্স ব্রান্ডের এই সাইকেল । অনেক জায়গায় বদলি হতে হয়েছে তাকে । যখন কাঁচা পথ ও ছিল না গ্রামে , তখন তাকে লজিং থাকতে হয়েছে - স্কুলের আশে পাশে কোন গ্রামের প্রধানের বাড়ীতে । সে সময়ের কথা মনে পড়ে যায় তার- শিক্ষার প্রতি গ্রামের মানুষের তেমন কোন ঝোঁক ছিলনা । সে সময় মেয়েতো দূরে থাক, ছেলেদের ও স্কুলে দেখা যেত কম । স্কুল গুলো ছিল অনেক দূরে দূরে । সে সব দিনে অভিভাবকদেরকে বুঝাতে হত শিক্ষকদের, ছেলে – মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে । একদিন বৈঠক খানায় সবাই বসে আছে , মাতব্বর সাহেব ও আছেন । একটি প্রস্তাব সাহস করেই রাখলেন ফজু মাষ্টার, মাতব্বর সাহেবের কাছে ।
“আপনার মেয়েটাকে স্কুলে পাঠান, এতো সুন্দর ফুটফুটে মেয়েটি” – বলে ফজু মাস্টার ।
“ কি বললেন মাস্টার সাহেব, শুনতে পাই নাই ?” –হুঁকা টানতে টানতে বলেন মাতব্বর বজলে প্রামাণিক ।
“ না বলছিলাম কি ? একজন মহা মানবের কথা আছে – একজন শিক্ষিত মা দাও, শিক্ষিত জাতি দিব । তাই বলছিলাম কি আনো মা মনিকে যদি স্কুলে পাঠাতেন” – বলে ফজু মাষ্টার ।
“ দেখো বাবা, আমরা তো কৃষক মানুষ মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে কি হবে ? ১২ – ১৩ বছর বয়স হলে ওকে বিয়ে দিয়ে দেব , আমাদের বংশের রীতি আছে যত তাড়াতাড়ি পার মেয়েকে সৎ পাত্রে পাত্রস্থ করতে হবে” – বলে বজলে প্রামাণিক ।
“এখন ও তো ওর বয়স কম আছে । অন্তত ৩ থেকে ৪ ক্লাস পড়তে পারবে আর আমি নিজে দায়িত্ব নিচ্ছি সকল লেখা পড়ার জন্য” – বলে ফজু মাষ্টার ।
আচ্ছা তুমি যদি দায়িত্ব লেও তা হলে আমি চিন্তা করে দেখতে পারি - বলে বজলে প্রামাণিক ।
এভাবেই আগের দিনে ছাত্র – ছাত্রী সংগ্রহ করতে হতো ফজু মাষ্টারের মত সকল শিক্ষককে । কারন তারা জানতেন- জ্ঞানের আলো না জালালে সত্যিকার মুক্তি আসবে না জাতীয় জীবনে । যদি ও তারা শিক্ষাদানকে নিয়েছিলেন মহান ব্রত হিসেবে। আজকে যারা দেশ পরিচালনা করছে । জাতীয় আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদান রাখছে , তারা তো এই ত্যাগী, আত্ম-ভোলা মানুষ গুলোর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল । দিন বদলে গেছে- এখন লেখা – পড়ার বিষয়ে সবাই সচেতন । আজ ও ফজু মাষ্টারের দিন কাটে ছাত্রদের পড়িয়ে । আগে কাঁচা রাস্তা, পড়ে পিচ ঢালা পথে বাই- সাইকেলে চড়ে শিক্ষা দান জারি রেখেছেন তিনি । শুধু চোখে লাগিয়েছে পুরো – চশমা আর পায়ে প্যাডেল মাড়ার শক্তি কমে এসেছে । যখন কোন প্রতিষ্ঠিত ছাত্রের সাথে দেখা হয়, সালাম জানায় তারা - তখন গর্বে ভরে উঠে তার হৃদয় আর দু- চোখ বেয়ে আনন্দাশ্রু ঝরে পড়ে । মনে মনে ভাবে তার পরিশ্রম বৃথা যায় নাই । যদিও তার নিজের ঘরের খবর রাখার সময় হয়ে উঠেনি কখনও ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এফ, আই , জুয়েল # বেশ ভালো ।।
রেজওয়ানা আলী তনিমা শুভেচ্ছা ও ভোট রইলো .
Fahmida Bari Bipu Valo laglo. Vote roilo.
আলমগীর সরকার লিটন সুন্দর ফজু মাষ্টারকে শ্রদ্ধা জানাই

০৯ নভেম্বর - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৩৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪