বাবার কবুতর

বাবা দিবস (জুন ২০১৩)

মোজাম্মেল কবির
  • 0
  • 0
  • ১৮৩৭
৯ জানুয়ারী এক জোড়া কবুতর মরে পরে থাকতে দেখা গেলো। গত কালও তারা সুস্থ ছিলো। সেদিন থেকে আব্বার ঘরে আর কবুতর গুলোকে যেতে দেখিনি। এই বাসায় ওরা আর যেন শান্তি পাচ্ছে না। জোড়ায় জোড়ায় গৃহ ত্যাগ করতে থাকলো। ৮ জানুয়ারী ২০১৩ আব্বা নিজ নিকেতনে চলে যাওয়ার পর কবুতর গুলো খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিলো।
প্রায় প্রতি সপ্তাহেই আব্বা শহরের বাইরে হাটে বাজারে যেতেন। কবুতরের খাদ্য গম সরিষা ভুট্টা কিনে আনতেন। বাসার গেটে ঢুকতেই পনের বিশ জোড়া কবুতর আব্বার চার দিকে চক্কর দিতে থাকতো। আব্বা ডাকতেন। বৈদ্যুতিক তার, গাছের মগ ডাল যে যেখানেই থাকতো কণ্ঠ শোনা মাত্রই উড়ে এসে জড়ো হতো পায়ের কাছে। আব্বার শোবার ঘরে বিছানায় সব সময় বিচরণ করতে দেখা যেতো। কখনোই ঘরের মেঝে কিংবা বিছানা নষ্ট করেনি। আব্বার অবর্তমানে ওদের যত্নে অবহেলা হয়নি। মা যথেষ্ট পরিচর্যা করেন। তবুও ওরা ঘর ছেড়ে যেতে লাগলো। এক পর্যায়ে দেখা গেলো মাত্র তেরটি কবুতর আছে। ছয় জোড়া পায়রা পায়রি আর একটি মাত্র সাথী বিহীন পায়রি। এমন হওয়ার কথা নয়। তাহলে কি ওদের মধ্যে অভিমান চলছিলো? সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিলো না? নাকি পরকীয়া প্রেমে পড়ে অন্য নারীর হাত ধরে চলে গেছে পুরুষটি ? বুক ভরা কষ্টে ভাসিয়ে ছেড়ে গেছে শৈশবের সাথীকে... চলে যাওয়ার একটা ছুতো খুঁজছিলো। সুযোগটা হাত ছাড়া করেনি সে! সাত দিন পাগলিনীর মতো ছুটা ছুটি করলো পায়রিটি। আমার মা তার কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে গলায় ছুরি চালিয়ে প্রেসার কুকারে সিদ্ধ করলেন। আমরা খেলাম মজা করে। কষ্ট থেকে মুক্তি পেলো নারীটি।

পুরুষটি দুই মাস পর হঠাৎ করে গত কাল ফিরে এলো। চোখ মুখ বিধ্বস্ত। ডান পায়ে আঘাতের চিহ্ন, বেধে রাখার ক্ষত। স্ত্রীকে খুঁজছে। পরিবারের অনেকেই আছে শুধু স্ত্রী নেই। মানুষ হলে হয়তো আবেগ প্রকাশ করতো। কবুতরকে আমি কাঁদতে দেখিনি। ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আমার মনে হল সে কাঁদছে। কি জবাব দিবো তাকে। যতবার তার সামনে যাচ্ছি নিজেকে মাংসাশী হিংস্র জন্তুর মতো মনে হচ্ছে। হায়, একি হলো...!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

২৫ মে - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৪৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪