সাদা ইদুর কালো ইদুর

কৈশোর (মার্চ ২০১৪)

সৈয়দ আহমেদ হাবিব
ঘুম নিয়ে যত মুশকিল অতুলের, সেটা দিন হোক আর রাত হোক ঘুম থেকে উঠেই দেখে পরনের লুংগিটা আর নেই, কি লজ্বার ব্যাপার কেউ দেখেনিতো! কোথায় গেল লুংগিটা খুঁজেওতো পাচ্ছেনা, বালিশ কাথা সরিয়ে ব্যাডশিড অর্ধেক ঝুলছিল বাকিটাও নাড়াচড়া করে লুংগির দেখা মেলেনা, অবশেষে পাওয়া গেল খাটের নিচে, এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে অতুলের।

মাঝের মধ্যে ঘুম ভেংগে জেগে ভাবে এখন কি সকাল নাকি বিকেল! বুঝে উঠতে পারেনা, চোখ খুলে খাট ছাড়ার আগে কিছুক্ষণ চুপ মেরে থাকে সে, আর আশপাশের শব্দগুলো খেয়াল করে গভীর মনে, পাখীর কিচির মিচির কিংবা কাকের কা কা, নাকি উঠোনে ছেলে পুলের চেচামেচি, প্রথমটা হলে ধরে নেয় সকাল আর পরেরটা হলে নিশ্চয় বিকেল।

বিকেল হলে হাফ ছেড়ে বাঁচে সে, সন্ধ্যা বেলায় পড়তে বসতে হবে তার আগে এক দফা খেলাধুলা। সন্ধ্যায় পড়তে বসার আগে কিছুক্ষণ দরুদ চলে পড়ার টেবিলে, ইয়া নবি সালা মলাইকা, ইয়া রসুল সালা মলাইকা কিংবা পাঁচ কলেমা, তারপর পড়া। সব ঠিক আছে কিন্তু সাত সকাল ঘুম থেকে উঠে হুজুর এর কাছে কোরান পড়তে যাবে সেটা খুবই বিরক্তকর অতুলের কাছে, এমন মজার ঘুম ছেড়ে উঠা তার উপর খালি পেটে হুজুর এর দরবার, এটার প্রতি দারুণ অনিহা তার, দিন গুনে সে, আর মাত্র একটা বছর, ক্লাশ নাইনে উঠলে পড়ালিখার ভীষণ চাপ হবে, তারপর থেকে সে হুজুর এর কাছে কোরান পড়তে যাবেনা আর, একটু বেশী ঘুমিয়ে তারপর স্কুলের পড়া পড়বে, এমনটাই দেখে আসছে ছোটবেলা থেকে, যারা ক্লাশ নাইনে উঠে যায় তারা আর হুজুর এর কাছে পড়তে আসেনা, আর হাবভাবে সিনিয়র সিনিয়র একটা ভাব আসে, অতুলও মনে মনে ঠিক করে রেখেছে ক্লাশ নাইনে উঠে গেলে আর যাবেনা হুজুর এর কাছে।

অতুলদের পাশের বাসায় নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে, আগের ভাড়টিয়াটা খুব ভাল ছিল, খালাম্মাটা অতুলকে খুব আদর করত, এটা সেটা এনে খাওয়াতো, তাদের কোন ছেলেপুলে ছিলনা, কেন ছিলনা সেটা অতুলের জানার কথা না, সে মজার খাবার দাবার খেতে পেত তাতেই খুশী, নতুন ভাড়াটিয়া কেমন! কি জানি, কিছুদিন গেলে তারপর বুঝা যাবে।

“আপা আপনাকে দেখতে আসলাম, আপনিতো দেখতে আসলেননা আমাদের, তাই আমি নিজেই চলে আসলাম,” শব্দগুলো শুনে অতুলের ঘুম ভেংগে গেল, নিশ্চয় পাশের বাসার নতুন খালাম্মা এসেছে বাসায়, অতুলের সাথে বেশ কবার চোখাচোখি হয়েছিল তবে এখনো পরিচয় হয়ে উঠেনি তাদরে কারো সাথে, পাশের রুমে বসে গল্প করছিলেন নতুন খালাম্মাটা অতুলের আম্মুর সাথে, “আপা আমার কিচেনে যখন কেউ থাকেনা তখন এক মজার কান্ড হয়, ইদুর আসে, সাদা ইদুর, দেখতে খুব সুন্দর, আমার যখন কোন কাজ থাকেনা আমি কিচেনে কিছু খাবার দিয়ে রাখি, আর ইদুর এসে ওসব খায়, আপনাকে ডেকে পাঠাবো নেক্সটবার, আপনাকেও দেখাব” অতুলের কৌতুহল হলো খালাম্মাকে একটু ভাল করে দেখার তাই পর্দাটা সরিয়ে একটু উকি দিতে চেয়েছিল, অমনি খালাম্মা বলে উঠল, এটা অতুল না? এদিকে এসো বাবা বলে কাছে ডেকে নিল, কিসে পড়ে, রোল নাম্বার কতো এসব শেষে পাশে বসা পুতুলটাকে দেখিয়ে বলল কাল থেকে স্কুলে যাবার সময় সামিয়াকে সংগে করে নিয়ে যাবে সাথে করে, ওকে তোমাদের স্কুলেই ভর্তি করিয়েছি, সেও ক্লাশ এইটে পড়ে। অতুল সামিয়ার দিকে তাকাল, ঠিক যেন পুতুল একটা, অতুলের হার্টবিটটা বেড়ে গেল সামিয়ার দিকে তাকাতেই, আর কেমন যেন একটু লজ্বা বোধও হলো, চোখাচোখি হতেই আবার চোখ সরিয়ে ফেলে অতুল, আচ্ছা ঠিক আছে বলেই ওখান থেকে চলে আসে অতুল।

সেদিনের পর থেকেই সাদা ইদুর দেখার নেশা পেয়ে বসে অতুলের, সেইদিন রাতে তার প্রথম ঘুম
ভাংগে কালো ইদুরের উপদ্রপে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এশরার লতিফ ভালো লাগলো কৈশোরের খন্ড চিত্র।
মোঃ আক্তারুজ্জামান অনেক ভাল লেগেছে আমার, ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ জানবেন মোঃ আক্তারুজ্জামান ভাই
নাজমুছ - ছায়াদাত ( সবুজ ) ভাল লাগা রইলো ।
ধন্যবাদ জানবেন খুব করে সবুজ ভাই
মামুন ম. আজিজ কৈশোর ছোট ঘটনা ....এগিয়ে চলুন
রাজিয়া সুলতানা সুন্দর ভাবে কৈশোর ভাবটা তুলে ধরেছেন ...অনেক শুভকামনা রইলো.......আমার কবিতা পড়ারও আমন্ত্রণ রইলো.....
আপা রাজিয়া সুলতানা আপনার আমন্ত্রণে যাবনা তা কখনো হবেনা এই আসছি.... দেখ হাওয়ায় ভাসছি
তাপসকিরণ রায় কিশোর জীবনের কথা--লেখা বেশ ভাল লেগেছে।
তাপসকিরণ রায় শ্রদ্ধেয় দাদা ভাই ধন্যবাদ জানায়
ওয়াহিদ মামুন লাভলু কৈশোর বয়সে এমনই হয়। কৈশোর বয়সের নব কৌতূহল, শিহরণ। খুব ভালো লাগলো। শ্রদ্ধা জানবেন।
ধন্যবাদ রইল ওয়াহিদ ভাই

১৬ মে - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ২৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪