শহীদ মিনারে ভবঘুরে

২১শে ফেব্রুয়ারী (ফেব্রুয়ারী ২০১২)

sakil
  • ২৭
  • 0
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন তখন উত্তাল । কলেজ ভার্সিটি বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ। গ্রামের বাড়ি থেকে সবে এসেছি তাই হলে রয়ে গেলাম । চারপাঁচ দিনের মধ্যে আরো অনেকে চলে গেল । বলতে গেলে কলেজ হল খালি। আমি আমার রুমে একা । বাকীরা সকলে যে যার বাড়ীতে চলে যাচ্ছে । শহরে থাকতে অনেকেই ভয় পাচ্ছে । দেশের প্রধান দুই দলের নানা কর্মসূচীতে রাজপথ পুরো উত্তপ্ত।
সারাদিন হলে থাকি , বিশেষ প্রয়োজন না থাকলে বাইরে বেরুই না একদম। একদিন রাতে সবে মাত্র খেয়েদেয়ে শুয়েছি সেই সময় চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙ্গে গেল । পুলিশ নাকি হল ব্যারিকেড করেছে । সাত্তার ভাই এসে বললেন পেছন দিয়ে বেরিয়ে যা। এদিকটা আমি দেখছি । সাত্তার ভাই আমাদের এলাকার ছেলে । সেই সময় বি এন পি ক্ষমতায় । সাত্তার ভাই কলেজের জি এস । সুতরাং হলের পেছন দিকের চোরা গেট দিয়ে চুপিসারে বেরিয়ে এলাম । রাস্তায় কোন মানুষ জন নেই একেবারে নির্জন । সেই সময় রাস্তায় হাটাহাটি করা মোটে ও সুবিধাজনক নয় । এই যেন বাঘের সামনে থেকে বেরিয়ে সিংহের মুখে পড়লাম। কেন হলে থেকে গেলাম সেজন্য নিজেকে গাল দিতে লাগলাম আনমনে ।
সামনে পৌরসভার মাঠ। কতদিন রাতের বেলায় এই মাঠে বসে বসে বাদাম চিবিয়েছি, কাবাব খেয়েছি, ফুচকা চটপটি খেয়েছি । অথচ আজ এলাকাটা একদম শ্মশানের মত , নীরব নির্জন। শহরের কুকুর গুলো ও বোধহয় ভয় পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি বন্ধ করে দিয়েছে । মাঝে মাঝে দুয়েকটা পুলিশের গাড়ি শাঁ শাঁ শব্দ করে রাস্তা ধরে চলছে । আমি তখন কোন বাড়ি কিংবা খামের আড়ালে দাঁড়িয়ে পরি আশ্রয়ের জন্য। কোথায় যাব ঠিক করতে পারছিলাম না ।
রাস্তার অপর পাশে টাউন হল মাঠ। চারদিকে তাকিয়ে আলো আধারির মাঝ দিয়ে রাস্তা পেরিয়ে টাউন হলের মাঠে চলে এলাম । টাউন হলের একপাশে ধীরেন্দ্রচন্দ্র গনপাঠাগার রাতের নীরবতা ভেদ করে দাঁড়িয়ে আছে । এরপাশে কুমিল্লা ক্লাব , ক্লাবের সামান্য পাশে শহীদ মিনারটি উলঙ্গ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হিসাবে। অন্ধকার , শহরে বিদ্যুৎ নেই । ঝাপসা ঝাপসা আলো আধারিতে ধীর পায়ে হাঁটছি আন্দাজের উপর ভর করে। রাস্তা থেকে দুইশ মিটারের চেয়ে বেশী হবে পেরিয়ে এসেছি একেবারে শহীদ মিনারের পাশে । একেবারে অরক্ষিত শহীদ মিনার । এখানে সেখানে ময়লার স্তূপ থেকে ভেসে আসছে পচা দুর্গন্ধ । নাকে হাত দিয়ে চাপদিয়ে ধরে ও দুর্গন্ধের হাত থেকে মুক্তি মিলছে না । অবশেষে মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিলাম। দুর্গন্ধ ও আস্তে আস্তে সয়ে নিতে লাগলাম। রাস্তা দিয়ে তখনো টহল দিচ্ছে পুলিশের জীপ । রাস্তা থেকে বেশ দূরে বলে জীপের আলো এখানে পৌছায় না। শহীদ মিনারের একটা সিঁড়িতে ধপ করে বসে পড়লাম। হাপাচ্ছি , গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে অজানা ভয়ে । একগ্লাস পানির খুব প্রয়োজন , কিন্তু এই বিপদের রাত্রে পানি কোথায় পাব?
যেখানে বসে ছিলাম সেখানটা কেমন ভেজা ভেজা লাগছে হাত দিয়ে স্পর্শ করে বুঝলাম পিচ্ছিল কিছু , ভয় পেয়ে গেলাম রক্তের মত লাগছে । পকেটের গ্যাস লাইটার টা সাবধানে জ্বালালাম ।
উহ! যা দেখলাম তাতে আমার অবস্থা বেশ কাহিল হয়ে গেল। রক্তে মাখামাখি হয়ে এক বৃদ্ধ পড়ে আছে শহীদ মিনারের পাদদেশে। কাঁধে ছোট একটা ঝোলা । মাথার চুলে জট ধরা । পরনে জীর্ণ শীর্ণ একটা মলিন কোট । শরীরের সাথে লেফটে আছে । ধীরে ধীরে হাত রাখলাম বৃদ্ধের উপর ঠাণ্ডায় জমে গেছে , সম্ভবত গুলি লেগেছে । হাতের শিরা পরীক্ষা করলাম। না জীবিত নেই । কৌতূহল বশত থলের মাঝে হাত দিলাম । কাপড় দিয়ে পেছানো একটি ডায়েরী । আর বেশ কিছু ছেড়া কাগজ , পুরানো কাপড়। ডায়েরিটা মনের অজান্তেই নিয়ে নিলাম। এখানে বেশীক্ষণ থাকা আর নিরাপদ নয় মনে করে আবার রাস্তায় এলাম । পূবালী ব্যাঙ্কের সামনের মোড় টা চুপিসারে পেরিয়ে সোজা ঠাকুর পাড়ার দিকে হাটতে লাগলাম । তবে থেমে থেমে। সামনে মসজিদে আজানের ধ্বনি ভেসে এল । কিছু না ভেবে সোজা মসজিদে ঢুকে গেলাম । মসজিদের বাথরুমে ঢুকে পানি দিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নামাজ আদায় করে বাইরে বেরিয়ে এলাম । রাতের তাণ্ডবের কোন চিহ্ন এখন আর নেই । সবকিছু কেমন শান্ত । খাজা গার্ডেন হোটেলে গিয়ে দেখি সকালের নাস্তা বানাতে সকলে মহা ব্যাস্ত। আমাকে দেখে কেউ একজন বলে উঠল ভাইজান এত সকালে –
হ্যাঁ , ঘুম আসছিল না । খিদে লেগেছে তাই এলাম।
বসেন ভাই । কয়েক মিনিটের মাধ্যেই নাস্তা রেডী হয়ে যাবে।
চুপচাপ নাস্তা করে বিল মিটিয়ে সোজা টমছম ব্রীজ বাস ষ্টেশনে এসে বড়ুরার টিকিট কেটে বাসে উঠলাম। এদিকে যক্ষের ধনের মত আগলিয়ে রেখেছি ডায়রিটা। একসময় বাস বড়ুরার উদ্দ্যেশ্য ছুটল। আমি ঘুমিয়ে পড়লাম ক্লান্ত দেহ নিয়ে।

আমি তখন আমের আচার বিক্রি করি ঢাকার শহরে । সারাদিন যা বেচাকেনা হয় তাতে আমাদের বেশ ভালো চলে যায়। আমাদের মানে আমার আর আমার স্ত্রী এবং ছেলে রুমানের। আমার স্ত্রী নিজের হাতে আচার বানায় আর আমি স্কুল কলেজে গিয়ে ফেরী করে করে বিক্রী করি। এক পয়সা দুইপয়সা করে ভালোই বিক্রি হয়।
ব্রিটিশের কাছ থেকে ভারত পাকিস্তান আলাদা হয়েছে । কিন্তু কলকাতা ভারতেই রয়ে গেছে । দেশ ভাগের আগে আমি প্রায় কলকাতা যেতাম । কিন্তু দেশ ভাগের পর এখন আর যাওয়া যায়না। পাকিস্তানের সাথে আমাদের পূর্ব বাংলাকে ও দিয়েদিয়েছে মুসলমান বলে । আর ভারতের সাথে কলকাতাকে রেখে দিয়েছে হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ঠ দেখে । আসলে বাংলাদেশ আর কলকাতা মিলে একটি দেশ হতে পারত , সেটা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ যেমন জানত , গান্ধী জী ও তেমনি জানতেন । আর সেই কারনে একটি দেশকে দুই ভাগে দুই দেশের মাঝে ফেলা হল । কলকাতা চুপ থাকল কিন্তু আজকের বাংলা দেশ তথা পূর্ব পাকিস্তান চুপ রইল না । আসলে দাঙ্গার শুরু উনিসশো সাতচল্লিশ সাল থেকে । পূর্ব পাকিস্তান ভারতের এক পাশে পশ্চিম পাকিস্তান অন্য পাশে । এভাবে কিভাবে একটি দেশ পরিচালনা করা যায় ।
সাতচল্লিশের পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী প্রথম আঘাত হানল আমাদের ভাষার উপর । ঘোষনা করল এই পাকিস্তানের রাস্ট্র ভাষা হবে উর্দু । পূর্ব পাকিস্তানের আপামর জনগন এই ভাষণ শুনে বিদ্রোহে ফেটে পড়ল । সেইদিন কোন নেতা ছিল না , কোন নেতার দরকার ছিল না । নিজের মায়ের ভাষা রক্ষা করার জন্য সবাই একত্রিত হল । আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হল । আমি তখন আচার বিক্রি করি স্কুলে স্কুলে। আমার ছেলে রুমান তখন ক্লাস নাইনে পড়ে । একদিন খাবার খেতে বসে তাকে ও দেখলাম এই বিষয়ে কথা বলছে । বলছে আমাদের মুখের ভাষা বাংলা নাকি বন্ধ করে দেওয়া হবে । আমাদের ভাষা কেড়ে নেওয়া হবে । উর্দু ভাষায় আমাদের কে কথা বলতে হবে । তাদের স্কুলের ছেলেরা ও নাকি আন্দোলন করবে । আমি বললাম বাবা আমরা আমরা গরীব মানুষ আমাদের এসব ঝামেলার মধ্যে যেতে নেই । ছেলে কি সেইদিন আমার কথা শুনেছিল । না শুনেনি । মায়ের ভাষা রক্ষার জন্য নিজের রুমে বসে পোস্টার বানাচ্ছিল কালি দিয়ে । আমি দেখে ও না দেখার ভান করলাম ।
দেখতে দেখতে একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি এল ।
প্রতিদিনের মত আচার নিয়ে আমি ঘুরছি স্কুলের ক্যাম্পাসে । প্রত্যেক ক্যাম্পাসে অন্যরকম উত্তেজনা। মিছিল স্লোগান – রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই। মোদের গরব মোদের আশা আমরি বাংলা ভাষা ।
আচার বিক্রির চেয়ে আমি সকলের সমল্লিত আন্দোলন দেখে মহা খুশি । গত পরশু থেকে রুমান বাবা আমার বাসায় নেই । তার মাকে বলে গেছে এই কয়দিন তাদের অনেক কাজ । তাই এক বন্ধুর বাসায় থাকবে । আজ কোথায় আছে কেমন আছে কে জানে । আচার বিক্রির ফাকে ফাকে আমি এই ডায়রি লেখি । অনেক ছেলে মেয়ে এসে জিগ্যেস করে কি লেখেন ভাই এতে । আমি বলি এই তোমাদের কথা দেশের কথা । সবাই আমাকে জিগ্যেস করে আমি কতদুর লেখাপড়া করেছি । আমি বলি এইতো ক্লাস এইট পর্যন্ত বাবারা । তারা তখন আরেকটু আচার চায় । আমি সেটুকু বিনা পয়সায় দেই ।
একের পর এক মিছিল তখন রাজপথে স্লোগান মুখর । রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই । ছাত্রদের সাথে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ হাত মিলিয়েছে । কামার , তাতী রিকশাচালক , গৃহবধূ , চাকুরী জীবি থেকে শুরু করে সাধারন শ্রমিক সকলেই একাত্ততা জানিয়েছে আজকের কর্মসূচিতে । চারদিকে শুধু একটাই রব শুনা যাচ্ছে –রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই ।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটা মিছিলের উপর পাক হায়নার দল গুলি ছুড়ে । সেই গুলিতে তৎক্ষণাৎ মৃত্যের কোলে ঢলে পড়ে সালাম , বরকত, রফিক , জাব্বার এবং আরো নাম না জানা অনেকে । তরুন ছাত্রদের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ। এরপর ও চলে গুলি । অজানা অচেনা অনেক লোক সেই মিছিলে শহীদ হয় কিছু লাশ পাক হায়নারা নিয়ে যায় । কিছু লাশ নিয়ে ছাত্র জনতা আবার মিছিলে নেমে পড়ে । পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন হায়না বাধ্য হয় তার মত পরিবর্তন করতে । রাষ্ট্র ভাষা বাংলার নব জন্ম হয় শহীদদের তাজা রক্তের বিনিময়ে । রুমানের জন্য তখন আমার চিন্তা হয় । আচারের গাড়ি ফেলে আমি বাসায় ছুটি । রোমান তখন ও ফেরেনি । এক দিন দুই দিন করে মাসের পর মাস রুমানের কোন খোজ খবর পাইনি ।
ধীরে রোমানের শোকে তার মা পাগল হয়ে যায় । আমি তখন ও লিখি তবে পুরো পুরি পাগল হয়নি । শহীদ মিনারে ছুটে যাই । সেখানে বসে বসে কাঁদি। লোক আমাকে দেখলে পাগল বলে তাড়িয়ে দেয় , কিন্তু আমার ছেলের খবর কেউ দেয়না । এরপর আমি আর বাড়ি ফিরি না । একের পর এক শহীদ মিনারে রুমানকে খুঁজে ফিরি । আর সেই সাথে শহীদ মিনারেই শুয়ে থাকি ।
এরপর ডায়রির পাতায় বেশ কিছু আঁকিবুঁকি আকা । আর কোন লেখা নাই । কোন তারিখ নাই । একজায়গায় শুধু সন লেখা ছিল তা মনে হয় ১৯৫৮ হবে। এরপর আর কিছু নেই । একনাগারে ডায়রিটা পড়ছিল মিঠু। কখন যে ঘুমিয়ে যায় টের পায়না মিঠু । মায়ের মৃদু ধাক্কায় টের পায়।
কি হয়েছে মা।
কিরে গতকাল রাতে কুমিল্লায় নাকি এক বৃদ্ধকে গুলি করে মেরেছে পুলিশ । তিনি নাকি আওয়ামীলীগের লোক ছিল ।
মায়ের কথায় সব মনে পড়ে যায় । হায়রে বৃদ্ধ মরে ও শান্তি পাচ্ছে না । একদিকে আওয়ামীলীগ অন্যদিকে বি এন পি বলছে তাদের দলের লোক । আন্দোলনে ইস্যু বানানোর জন্য নাকি বিরোধী দল এমন করছে । পুরো শহর জুড়ে অস্থির অবস্থা । দেশে এমনিতেই চলছে অসহযোগ আন্দোলন । ধিক আমাদের এমন রাজনীতিকে , যে রাজনীতি মানুষকে ভালোবাসতে না শিখিয়ে অমানুষ বানায় । জনগনের স্বার্থের কথা বলে যারা জনগনের সম্পদ লুটে নিজের সম্পদের পাহাড় বানায়।

আগামীকাল একুশে ফেব্রুয়ারি। সেই উপলক্ষ্যে শহীদ মিনারের চারপাশ পরিস্কার পরিছন্ন করা হচ্ছে । চারদিকে রঙ্গে রঙ্গে রঙ্গিন করে তলা হচ্ছে । কার্টুন পেস্টুনে ছেয়ে গেছে শহীদ মিনার । বছরে এই একটা দিনই শুধু শহীদ মিনারের কথা আমাদের মনে পড়ে ভাবে মিঠু ।
সারা বছর শহীদ মিনারে গরু ছাগল কুকুর বিড়ালের মলমুত্র শহীদ মিনারকে গোচারন বানিয়ে দেয়। শহীদ মিনারের বেদিতে কেউ মরিচ শুকায় , কেউবা ধান শুকায় । শহীদ মিনারের ওয়ালে কাথা শুকাতে দেওয়া হয় দেখে মিঠুর খুব খারাপ লাগে । কিন্তু কাকে বলবে । এটা কাউকে বলে কয়ে করানোর কাজ নয় । এরজন্য দরকার সচেতনতার। সেই সচেতনতার অভাবে আজ অনেক কিছুই খারাপ কিংবা ধংস হতে চলেছে।
গত কয়েকমাসে এই নিয়ে বেস কিছু মিটিং করেছে । দেশের প্রধান দুই দলের অনেকের চোখের চক্ষুশুলে পরিনত হয়েছে ইতিমিধ্যে । থানার ওসি সাহেব সেদিন ডেকে নিয়ে বেশ শাসিয়ে দিয়েছেন । বলেছেন
ভালোয় ভালোয় এসব ছেঁড়ে দাও । নয়তো কোন বড় দলে যোগ দাও । অন্যথা তোমার বিপদ হতে পারে। নুরু মিয়ার ডায়রী দিয়ে একটি বই লিখবে বলে এক প্রকাশককে দিয়েছে । কিন্তু তিনি কেন জানি এমন বই ছাপাতে রাজি নয় । এরপর বেশ কয়েকটি প্রকাশনির মালিকের কাছে গেছে সকলের একই কথা এই বই ছাপানোর সময় এখনো দেশে আসেনি । আপনি রেখে যান সময় এলে আমরা সানন্দে প্রকাশ করব।
মিঠুর খুব কষ্ট লাগে সেই সব ভাষা শহিদদের জন্য , যাদের প্রানের এবং মহান আত্নত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই ভাষা , দেশ । সেই দেশে ভাষার মত প্রকাশে এখনো বাধা আছে অনেক । সকলেই বলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা অনেক কিন্তু সত্যিকার অর্থে কতটুকু স্বাধীনতা আছে তা কেবল ভুক্তভোগীরাই জানেন।
না এত সহজে হাল ছাড়বে না সে , ভাবে মিঠু । দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্যে কিছু তাকেই করতে হবে নিজের জমানো সকল টাকা দিয়ে নুরু পাগলার ডায়রীর উল্লেখযোগ্য অংশ এবং নিজের মতামত নিয়ে সুন্দর একটা লিফলেট বানায় সে । একুশের ফেব্রুয়ারীতে সকলের হাতে একটি করে কপি সে দিবে মানুষ পড়ুক জানুক কিছু ইতিহাস। ভাবতে ভাবতে মিঠু বাড়ির পথে হাটতে থাকে ।
বাড়ীর কাছাকছি রাস্তায় একদল পুলিশ তার পথরোধ করে দাড়ায় । ব্যাগ থেকে লিফলেট গুলো নিয়ে ছিড়ে ফেলে পায়ের তলায় পিষতে থাকে । অসহায় মিঠুর চেয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না । এরপর কয়েকজন পুলিশ হথাত করে চড়াও হয় তার উপর। অনেকক্ষণ পর অর্ধমৃত মিঠুকে ফেলে যায় রাস্তার পাশে ।
পুলিশ তখনো জানেনা এই লিফলেটের বাকী অর্ধেক তখন বিলি হচ্ছে শহরের শহীদ মিনারে। তার বন্ধু রাজা সেগুলো বিকালেই নিয়ে গেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ।
রাত বারোটা বাজতে সামান্য বাকী । দলে দলে লোক শহীদ মিনারের দিকে ছুটে যাচ্ছে ফুল হাতে নিয়ে । অসহায় মিঠু তখন জীবন মৃত্যের মাঝে বেঁচে থাকার জন্য চেষ্টা করছে , রাস্তার পাশে। ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায় মিঠু । ওয়াক করে বমি করে । একদলা রক্ত বেরিয়ে আসছে মুখ দিয়ে । মুড়ির ঠোঙার সাদা কাগজে নিজের রক্ত দিয়ে লিখতে থাকে অ,আ,ই,ঈ ।
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটতে থাকে শহীদ মিনারের দিকে । হাতে ধরা সেই কাগজটা পাশের শিশুটার হাতে দিয়ে দেয় ।পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া সেই ছোট একটি শিশু বাড়িয়ে দেয় একটি গোলাপ ফুল তার হাতের দিকে । সবার অগোচরে সেই ফুল দিয়ে প্রভাত ফেরী করে মিঠু।
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো ,মহান একুশে ফ্রেব্রুয়ারী । আমি কি তোমাকে ভুলিতে পারি”
এরপর থেকে আরকোন দিন মিঠুকে দেখা যায় না সেই এলাকায় । হয়তো নুরু পাগলার মতই পড়ে আছে কোন অচেনা শহীদ মিনারে ভবঘুরের মত ।হয়তো অচেনা অন্য এক মিঠু খুঁজে পাবে তাকে । তার চেনা শহীদ মিনারের পাদদেশে । ভাষা আন্দোলনের শহীদরা হাত ভুলিয়ে দেবে মিঠুর মাথায় অন্য সকলের অগোচরে ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রওশন জাহান শাকিল ভাই, গল্পের কাহিনী এবং লেখনী অনেক মানসম্মত হয়েছে। এরকম লেখা আশা করি সামনেও।
আপুনি কোথায় থাক আজকাল তোমাকে পাই না গল্প কবিতায় . চেস্টা করছি তোমাদের দোয়াতে নিজের মোট করে লিখতে . বাকি টুকু তোমরাই বলবে . তুমি বলে বলে রাগ করনা আপুনি
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন . . . . . . . . . গল্পটা ভাল লেগেছে। কয়েকটা চিত্রকে যুক্ত করেছেন। মনে হয় আরো একটু ঘষামাজা করলে আরো ভাল হত। শুভেচ্ছা রইল।
ভালো লাগেনি ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
আগামীতে সেই চেস্টা থাকবে ভাই
ভালো লাগেনি ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
নিলাঞ্জনা নীল সুন্দর গল্প.......কাহিনীটা মন কে নাড়া দিয়ে গেল.....
ভালো লাগেনি ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম
ভালো লাগেনি ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
মামুন ম. আজিজ একটা ক্ষোভ ঝরে পড়ল যেন । একটা কাহিনি বিনাস হয়েছে বেশ।
ভালো লাগেনি ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
ধন্যবাদ ভাইয়া . শুভকামনা রইল
ভালো লাগেনি ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
রোদের ছায়া অনেক তথ্য নির্ভর কাহিনী .........সুন্দর গল্প ...ভালো লাগলো/
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
rOder chaya aponake o onek dhonybad
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
তানি হক সারা বছর শহীদ মিনারে গরু ছাগল কুকুর বিড়ালের মলমুত্র শহীদ মিনারকে গোচারন বানিয়ে দেয়। শহীদ মিনারের বেদিতে কেউ মরিচ শুকায় , কেউবা ধান শুকায় । শহীদ মিনারের ওয়ালে কাথা শুকাতে দেওয়া হয় দেখে মিঠুর খুব খারাপ লাগে । কিন্তু কাকে বলবে । এটা কাউকে বলে কয়ে করানোর কাজ নয় । এরজন্য দরকার সচেতনতার। সেই সচেতনতার অভাবে আজ অনেক কিছুই খারাপ কিংবা ধংস হতে চলেছে। ..ভাইয়ার গল্পে অনেক শিক্ষনীয় ..কিছু শিখলাম ...ধন্যবাদ ভাইকে
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
dhonnobad tani kosto kore golpo pore tomar mulloban montoby prodan koray
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
তানজির হোসেন পলাশ valo legechhe.
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
khushi holam
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
মিজানুর রহমান রানা বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। আপনার গল্পে গ্রামীণ আবহ সুন্দরভাবে ফুঠে ওঠে সব সময়। এটা একটা মৌলিক দিক। শুভ কামনা।
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
doya korben vai
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
সেলিনা ইসলাম একটা বাস্তব চিত্র বেশ সুন্দর ভাবেই লেখনির মাধ্যমে জীবন্ত করে তুলেছেন -খুব ভাল লাগল শুভেচ্ছা ও শুভকামনা চিরন্তন
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
aponar jonno O shuvokamona chirnton
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি গল্প বেশ ভাল লাগল| তবে, গল্পে উল্লেখিত পাঠাগরটির নাম 'ধীরেন্দ্রচন্দ্র গনপাঠাগার' নয় | তত্কালীন ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজ বীরচন্দ্র মানিক্য ১৮৮৫ সালে কুমিল্লার প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়ে ১০ বিঘা জমির উপর নিজ অর্থায়নে "বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন নির্মান করেন; যা কুমিল্লা টাউন হল নামেই অতি পরিচিত|
ভালো লাগেনি ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
sothik tothyer jonno onek dhonnobad
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

১৯ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী