মধ্যরাত্রির বোবাকাহিনী

মাঝ রাত (সেপ্টেম্বর ২০১৮)

জসীম উদ্দীন মুহম্মদ
  • ১০১৩
০১
রাত তখন সবেমাত্র পাকতে শুরু করেছে। কয়টা বাজে কি বাজে না, কিছুই আমার ঠাহরে নেই। হাতে কোনো হাতঘড়ি নেই। দেয়ালেও কোনো ওয়ালঘড়িও নেই। আমার চারপাশে কেবল সুনশান কিছু নীরবতা আছে। আমার রুমমেট ফরহাদ, আতাউর, শাহজাহানের শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দযোগে অসম প্রতিযোগিতা আছে। আর আছে অকালে যৌবন খোয়ানো আমার এই সময়ের শ্রেষ্ঠ প্রেমিকা নরসুন্ধা। সে ঘুমিয়ে আছে, না জেগে আছে কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। উঠতি শীতের রাত্রি হওয়ায় হালকা কুয়াশার ধুয়াশা আছে। আর যাদের কথা না বললেই নয়, উনারা হলেন আকাশের কিছু মিটিমিটি নক্ষত্ররাজি। উনাদের কেউ কেউ হাসছে। কেউ কেউ জোনাকির সাথে পাল্লা দিয়ে গাইছে।
ছাত্রাবাসে আমার পড়ার সিস্টেমটা কিছুটা ব্যক্তিক্রম ছিল। আমার রুমমেটরা যখন পড়তো, তখন আমি চুপচাপ শুয়ে থাকতাম। ওরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন স্টাইলে জোরে জোরে পড়তে পছন্দ করতো। পড়তে পড়তে ওদের মুখ দিয়ে ফেনা ছুটতো। একই লাইন বারবার তোতাপাখির মতো মুখস্ত করতো। যদিও ওদের পড়তে মোটেই বিরক্ত লাগতো না, তবে শুনতে আমার বেশ খারাপ লাগতো। তবুও তখন আমি অসীম ধৈর্যের পরিচয় দিতাম। অতঃপর ওদের পড়া যেখানে শেষ হতো, সেখান থেকেই আমার পড়া শুরু হতো। আমি একটি বই সামনে নিয়ে বসে বসে অথবা শুয়ে রিডিং পড়তাম। এই পড়ার কোনো শব্দ নেই। এমন কি আমার ঠোঁট দুটি পর্যন্ত নড়তো না। আমার চোখ দেখে আর আমার মন পড়ে। অতঃপর পরীক্ষার খাতায় আমি আমার মতো করে নিজের ভাষায় লিখি। এই হলো আমার চিরায়ত প্রথা বিরুদ্ধ পড়ার রীতি।।
যে বীজতলা সময়ের কথা বলছি, তখন আমি গুরুদয়াল সরকারী কলেজে একাদশ শ্রেণির সিঁড়ি ডিঙাতে ব্যস্ত। আজ বাদে কাল এগজামিন। কলেজের ওয়াসিমুদ্দিন মুসলিম ছাত্রাবাসের ৫ নং কক্ষে আমরা এই চারজন থাকি। আমার সিটটি একেবারে নরসুন্ধার বুক ঘেষে। আমি আর নুরসন্ধা যখন খুশি ইচ্ছে মতো কথা বলি। সুখ-দুখ ভাগাভাগি করি। হঠাৎ কী মনে করে তিন আঙুল সময় আগে বন্ধ করা জানালাটি খুলে দিলাম। খুলে দিতেই শীতল হওয়া আর নরসুন্ধার চাঁদ মুখ। কেন জানি না একলাফে আমার চোখ নরসুন্ধার বুক বরাবর গিয়ে থামল। এরপর যা দেখলাম, তখন আমি বিশ্বাস কিংবা অবিশ্বাস কিছুই করতে পারলাম না। ভয়ে যত দ্রুত পারি জানলাটি নিঃশব্দে বন্ধ করে দিলাম।

০২
আমার চোখকে ছানাবড়া করে দিয়ে নরসুন্ধার ঠিক মাঝ বরাবর থেকে তিন কি চারজন অথবা পাঁচজন মানুষের সমান একজন মানুষ নদীর ভেতর থেকে উঠে এলেন। গায়ে জামা আছে কি নেই, চোখ দুটি আগুনের মতো লাল কি কয়লার মতো কালো...এতোটা দেখার মতো সময় আমি পাইনি। কেবল এইটুকু দেখেছি উনি পানির উপর দিয়ে শান্ত,পদবিক্ষেপে আমার ছাত্রাবাসের দিকে ধীরেধীরে ধাবিত হচ্ছেন। এই জাতীয় অনেক রমরমা ঘটনা, দূর্ঘটনা কেবল লোকমুখে বয়ান শুনেছি। কিন্তু কোনোদিন স্বচক্ষে দেখার মতো সৌভাগ্যি আমার হয়নি। অতঃপর মনকে পাষাণে বেঁধে শপথ নিলাম, হিমালয় পর্বত ভাঙে ভাঙুক, আমি এর শেষ দৃশ্য পর্যন্ত অবলোকন করবো।
তখনো আমার জানা ছিলো না ছাইচাপা করে যেমন আগুন নিভানো যায় না, চোখ বন্ধ করলেই যেমন বিপদ দূর হয়ে যায় না, তেমনি আমি জানলা বন্ধ করেও তাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারিনি। তবে আমি তখনো চেয়ারে বসা। সামনে খোলা বই। বুকের ভেতর একটা টোলপড়া ভাব। পড়বো কি পড়বো না, জানলা আবার খুলবো কি খুলবো না.. সিদ্ধান্ত নিতে না নিতেই আমার জানলায় ঠক ঠক করে সাড়ে তিনবার আওয়াজ হলো। কিছু বুঝতে বাকি থাকবে এতোটা গাধা আমি নিজেকে মনে করিনা। ভয়ে আমার জীবন নদী শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যাচ্ছিলো। পা থেকে মাথা পর্যন্ত আজন্ম পিপাসা। তবুও আমি অসীম সাহসিকতা দেখিয়ে চেয়ার থেকে একচুলও নড়লাম না।
জানলার বাইরে থেকে আর কোনো সাড়া শব্দ পেলাম না। এতক্ষণ যা দেখেছি, যা শুনেছি... এসব কিছুকে মনের ভুল বা হ্যালোসিনেশন ভেবে উড়িয়ে দিবো বলে যখনই ঠিক করলাম, ঠিক তখনি আমার কাছে মনে হলো কেউ যেনো জানলার পাশ থেকে সরে যাচ্ছে। তবে অবশ্য-ই সে সরে যাওয়া শব্দহীন, নৈঃশব্দের বাতিঘরের মতো। বুঝা যায় কিন্তু ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। অনুভবের সিঁথিতে সাঁতার কাটা যায়। তবুও আমার মন থেকে আচ্ছন্ন আচ্ছাদন বিদূরিত হলো না। কেবল মনে হতে লাগলো, এখানেই শেষ নয়। খেলা সবে শুরু।

০৩
আমার জানলার পাশ থেকে কয়েকটা রুম ঘুরে দরজায় আসতে মিনিট দুই মতো লাগার কথা। অথচ ঠিক ১১ সেকেণ্ড এর মাথায় রুমের দরজার আবার সেই সাড়ে তিনবার ঠক ঠক শব্দ হল। শব্দের হার্জ একই সমান। জানলায় হওয়া শব্দের চেয়ে একচুল কম বা বেশি নয়। এবার আমার পায়ের তলা থেকে নগদ মাটি সরতে শুরু করেছে। তবে এখন আর আগের মতো বুকের ভেতরের টোলপড়া ভাবের গল্পটি নেই। এই জায়গাটিতে সমস্ত আকাশ-পাতাল এসে ভর করেছে। আমার রুমমেট বন্ধুরা তখনো ঘুমের সাগর পাড়ি দিচ্ছেন। আর আমি একা একা এই শ্বাপদসংকুল পথ পাড়ি দিচ্ছি। তবুও আমি একবার সাহস করে দরজার দিকে থাকালাম। এরপরের দৃশ্য নমরুদের অগ্নিকুণ্ডের চেয়ে কম ভয়ংকর নয়। আমি একেবারে হিম হয়ে গেলাম।
আমার রুমের পাকা দেয়াল ভেদ করে একটি হাত অবলীলায় ভেতরে চলে এলো। আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার সামনে জ্বলতে থাকা একমাত্র সোডিয়াম লাইটটি ধপ করে নিভে গেলো। একলোকমা সময়ের হাজার ভাগের একভাগের চেয়েও কম সময়ে আমার সমস্ত পৃথিবীটা অন্ধকারের অতল গহব্বরে তলিয়ে গেলো। আমি সাথে সাথে ইন্না লিল্লাহহি অইন্না ইলাইহি রাজীউন পড়া শুরু করে দিলাম। বুকের ভেতরটা আয়লার মতো ধড়পড় করছিলো। বিপদের গন্ধ পেলে আমার বাম চোখ সাধারণত পিটপিট করে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এখনো সে পিটপিট করা শুরু করছে না। তবে কি এতোক্ষণ যা ঘটলো তার কিছুই ঘটেনি? সবকিছু আমার পরীক্ষা উৎকন্ঠিত মনের ভুল? আবার আমি ইন্না লিল্লাহ পড়তে পড়তে সাহসী হয়ে উঠলাম। পুরো হোস্টেল অঘোরে-বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। আমার রুমমেটের নাকডাকার প্রতিযোগিতা এখনও সমান তালে চলছে।
আমি কাউকে ডাক দিলাম না। কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে একটি পাতাঝরা সময়ের জন্য কানকাটা বন্ধ জানলাটি খুলে দিলাম। কোথাও কেউ নেই। সবকিছু স্বাভাবিকের চেয়েও একটু বেশিই স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে। শান্ত সমাহিত নরসুন্ধার টুনটুনি জল। বাইরে থেকে কিছুটা আলো এসে ডাকাতের মতো আমার রুমে ঢুকলো। সে আলোয় যেনো সমস্ত আন্ধার দুনিয়া ক্ষণিকের জন্য উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো। আমি ভয়ে ভয়ে লোমকূপ খাড়া হওয়া সময়ের পোস্টমর্টেম করছিলাম। তদুপরি একপা, একপা করে দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম। ওয়ালে কোনো ফোঁকর নেই। লাইটের সুঁইচ ঠিক ঠিক বন্ধ করা। কে বন্ধ করলো----এই সহজ প্রশ্নটি আমার কাছে এই মুহূর্তে বিশ্বজগতের সবচেয়ে কঠিন প্রশ্ন বলে মনে হতে লাগলো। তাহলে কি এতোক্ষণ যা ঘটেছে সব সত্য?

০৪
কেউ বিশ্বাস করুক আর না করুক এই জলজ্যান্ত সত্যকে অস্বীকার করার মতো বিশ্বাসঘাতক আমি নই। হয়ত কোনোদিন হতেও পারবো না। আমি জানি, এই ঘটনা অস্বীকার করা মানে তো চাঁদ, সূর্যকে অস্বীকার করা। আকাশ, বাতাসকে অস্বীকার করা। তারচেয়েও বড় কথা এই ঘটনা অস্বীকার করা মানে আমার নিজেকে অস্বীকার করা। আর কিছু সম্ভব হলেও এ আমার পক্ষে কোনোদিন সম্ভবপর নহে। কারণ এই ঘটনার সাক্ষী আমার শরীরের প্রতিটি লোমকূপ। এখনো তারা দাঁড়িয়ে অসংকোচ সাক্ষ্য প্রদান করে যাচ্ছে। কেন জানি আমার মন বলছিল এখানেই শেষ নয়। মূল দৃশ্য এখনো বাকি আছে।
দরজা খোলার মতো সাহস আমার নেই। তবুও ফাঁক ফোকর দিয়ে দেখার প্রচেষ্টা করলাম পাশের রুমের লাইট জ্বালানো কিনা। অতীব আশ্চর্যকথা ৬ নাম্বার রুম থেকে আলো আসছে। তার মানে কারেন্ট আছে। কেবল আমার রুমে নেই। সুইচটি অন করবো সে সাহস ও পাচ্ছি না। অন করলে জ্বলবে কি জ্বলবে না আমার সে বিশ্বাসে মস্তবড় একটি ফাটল ধরেছে। তবুও ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে আমার বিশ্বাসের সহিত আরো বিশ্বাস যুক্ত হল। আমি একবার পড়ার টেবিলের বসি। আরেকবার খাটে আধশোয়া হয়ে ঘুমানোর বৃথা চেষ্টা করি। অন্ধকার আমার চিরদিন ভালো লাগে, তবে সেদিনের অন্ধকার মোটেই ভালো লাগছিলো না। একেবারে বিচ্ছিরি, হতচ্ছারি এবং বিভৎস লাগছিলো। এই অজৈব অন্ধকারের সাথে আমার কোনো পরিচিতি নেই অথবা কোনোদিন ছিলও না।
এমন সময় যেমনটি আমি আশংকা করছিলাম, ঠিক তেমন কিছু ঘটার মহাসংকেত পেলাম। আশেপাশের কোথাও থেকে একটি চরম গোঙানির শব্দ ভেসে আসছে। এমন গোঙানি আমি জীবনে কোনোদিন শুনিনি। কেউ শোনেছে কিনা তাও জানি না। গোঙানিটি এমন যে, কোন মানুষ গলা কেটে হত্যা করার সময় অথবা কোনো পশুকে জবাই করার সময় যেমন ঘড়ঘড় আওয়াজ বের হয় ঠিক তেমন।

০৫
ভীষণ ভয়ে আমি কুঁকড়ে গেলাম। এবার আর একা একা সাগর পাড়ি দেওয়ার মতো দুঃসাহস দেখাতে গেলাম না। রুমমেটদের সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে তুললাম। ওরা যে আমার চেয়ে বেশি ভীতু একথা আমার জানা ছিলো না। অসমসাহসী, অকুতোভয় পালোয়ান ফরহাদ বলল,
এ নিশ্চয় কাউকে গলা কেটে হত্যা করা হচ্ছে। দরজা খুলবি না, খবরদার।
ফরহাদকে সাথে সাথে সমর্থন জানিয়ে আতাউর বলল, একদম ঠিক কথা বলেছিস। এই মধ্যরাতে ঝামেলায় জড়ানোর কোনো মানেই হয় না।
কেবল শাহজাহান, যে সাধারণত চুপচাপ থাকে; কারো সাথে কোনো বীরত্ব ফলায় না....সে বলল,
ঘটনা যা-ই হোক না কেন, আমাদের ব্যাপারটি দেখা উচিত। মানুষ হলে আমরা তা এড়িয়ে যেতে পারি না।
আমি তখন তাড়াতাড়ি করে বললাম, ঠিক বলেছিস। ভীতুর ডিমগুলো যাক আর না যাক চল আমরা দু'জন দেখি কোথাকার জল কোথা দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে।
যেই কথা সেই কাজ। শাহজাহান আর আমি দরজা খুলে তাড়াতাড়ি বের হলাম। আমাদের বের হতে দেখে ফরহাদ ও আতাউর আর নিজেদের ধরে রাখতে পারলো না। ওরাও আমাদের সাথে যোগ দিলো। তখন যে আরও রহস্য লুকিয়ে ছিলো কে জানতো?
আমাদের কাছে মনে হতে লাগলো শব্দটি ডানে, বামে, সামনে, পেছনে সবদিক থেকে আসছে। কী মহামুশকিল!
এমন গোঁলক ধাঁ ধাঁ এবং ভোজবাজির বেড়াজালে আমি জীবনে পড়া তো দূরের কথা কল্পনাও করিনি।

০৬
আমি এবার আয়াতুল কুরশি পড়া শুরু করে দিলাম। মনের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা ভয়টি এখন আর নেই। আমি ওদের পূর্বেকার কোনো কথাই বললাম না। হঠাৎ আমার কাছে মনে হলো গোঙানির আওয়াজটি ৯ নম্বর রুম থেকে আসছে। এই রুমে জুয়েল থাকে। নিকলীতে বাড়ি। আমার বাড়ি থেকে আড়াই মাইল পূর্বদিকে। হাওর এলাকা। জুয়েল ছেলে হিসাবে মন্দ না। তবে একটু বেশিই ছনমনে।
কিছুক্ষণ দরজায় ধাক্কাধাক্কি করার পর ও না খোলায় শেষ পর্যন্ত আমরা দরজা ভেংগে ফেললাম। ঘটনার নায়ক আসলেই জুয়েল। ওর সমস্ত মুখ থেকে লালা নির্গত হচ্ছে। জবাই করা পশুর মতো হাত-পা ছুড়ছে। একেবারে মারা যাওয়ার পূর্ব মুহূর্ত। এই সময়ে আমরা দরজা না ভাঙলে কি ঘটতো আল্লাহ মালুম। রুমে সে একা। রুমমেটরা কেউ নেই। আমি ওকে ছুঁয়ে দিতেই পানি পানি বলে একটা চিৎকার দিলো। ফরহাদ একজগ পানি দিলো। জুয়েল এমন ভাবে পানিটা খেলো যেনো জগে মাত্র একচুমুক পানি ছিলো। আমরা তাজ্জব বনে গেলাম। এক নিশ্বাসে পানিটুকু খেয়েই সে মরার মতো লুটিয়ে পড়লো। রাত তখন অনেকাংশ পেকে গেছে। তিন কী সাড়ে তিন হতে পারে।
কী মনে করে আমি একবার বাইরে থাকালাম। আমাদের ছাত্রাবাসের যে অংশে টি ভি রুম, তার পেছনে একটি বিশাল গাছ। গাছটির নাম আমার জানা নেই। আমার চোখ প্রথমেই সেদিকে গিয়ে চড়ক গাছে পরিণত হলো। কিছুক্ষণ আগে যিনি নরসুন্ধা থেকে উঠে এসেছিলেন, সেই তিনি তিরতির করে গাছটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। কোনোরকম হাতের ব্যবহার ছাড়াই তিনি হেঁটে হেঁটে গাছটিতে উঠে গেলেন। এরপর অদৃশ্য হয়ে গেলেন। আমি যেনো নিজের চোখকে কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কাউকে কিছু বললামও না। নীরবে-নিভৃতে সবকিছু হজম করলাম।
কিছুক্ষণ পরে জুয়েলের জ্ঞান ফিরে আসলে জানা গেলো তাকে বোবা ধরেছিলো। তালগাছের মতো লম্বা একটা লোক তার বুকের উপর চেপে বসে ধারালো ছুরি দিয়ে তার গলা কাটছিলো। এই যে সে এতো চিৎকার, চেঁচামেচি করছে গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না।

০৭
আমার গল্পটি এখানেই শেষ হতে পারতো। যদি না এ বিষয়ে আমার কোনো পাদটীকা না থাকতো। উদ্ভুত ঘটনাটি বাস্তবের কাছাকাছি নয়। একেবারে বাস্তবিক। আমি নিশ্চিত আমার স্মৃতি আমার সাথে কোনো ধরণের প্রতারণা করেনি।
এখন প্রশ্ন হলো, এই ঘটনাটির ব্যাখ্যা কী? নরসুন্ধা থেকে উনার উঠে আসা, জানলায়,দরজায় ঠকঠক শব্দ করা, লাইট অফ করে দেওয়া পুরোটাই হ্যালোসিনেশন কিংবা আমার ভ্রমদৃষ্টি? নাকি অন্যকিছু? তাছাড়া বোবাধরা নতুন কিছু নয়। আমিও বেশ কয়েকবার এর শিকার হয়েছি। এ নিয়ে সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা যেমন আছে। ভৌতিক ব্যাখ্যাও কম নেই। এই রহস্যের জট কি কোনোদিন খুলবে? হয়ত খুলবে নয়ত খুলবে না!!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আহা রুবন আমাদের একটি লিচু বাগান আছে। সেটি গ্রামের বাইরে নদী পেরিয়ে, নতুন বসতি গড়ে উঠছে চারপাশে ইদানীং। তথায় খোলা মাঠে একদম একাকী রাতে বাদুর খেদানোর অভিজ্ঞতা আছে। অথচ মাঝে মাঝে ঘরে ঘুমিয়ে থেকে এমন দুঃস্বপ্ন দেখে ভয় পেয়ে স্ত্রীর রুমে গিয়ে ওর কাঁথার তলায় ঢুকি।(আমরা অধিকাংশ সময় আলাদা ঘুমাই, কেননা আমি যখন শুতে যাই সে তখন নামাজ পড়তে ওঠে। দুজনেরই ঘুম নষ্ট হয় বলে এই ব্যবস্থা) জীবনের অনেক ঘটনারই কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। এই সন্ধ্যাতে আপনার গল্পটি পড়তে কেমন ভয় ভয় করছে। লেখার স্টাইল দৃষ্টি কাড়ে, ভক্তে পরিণত করে। তৃপ্ত! শুভ কামনা রইল।
মাইনুল ইসলাম আলিফ অসাধারণ গল্প জসিম ভাই।মনে হচ্ছে আমিও সেখানে ছিলাম।গল্প বলায় আপনি বেশ পটু বোঝা যাচ্ছে।শুভ কামনা আর ভোট রইল।আসবেন আমার কবিতার পাতায়।
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রিয়জন
ভালো লাগেনি ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
তানভীর আহমেদ চমৎকার গল্প
ভালো লাগেনি ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
মোহসিনা বেগম এমন গল্প খুব কম পড়্বছি। অসাধারণ
ভালো লাগেনি ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
ধন্যবাদ অফুরান
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
ধন্যবাদ অফুরান
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
ফেরদৌস আলম বাব্বাহ! নতুনত্বের স্বাদ। বেশ গা শিউরে উঠার মত। মাত করে দিয়েছেন ভাই। ভোট ও শুভকামনা রইল।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
ধন্যবাদ অফুরান
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী এতো চমৎকার একটি গল্প পড়তে গিয়ে নিজে-ই থমকে উঠেছি। কয়েকবার পড়লাম। গল্পের লেখা যেমন সাবলীল, অসাধারণ বুনন তেমনি চমৎকার কাহিনীও। আমরা সাধারণত যেটাকে বোবা ধরছে বলে থাকি, সেখানকার সম্পূর্ণ ঘটনাবলি যাকে বোবা ধরে তার উপরে নির্ভর করে থাকে। কিন্তু দাদাভাই আপনার গল্পতে একটু অন্যরকম স্বাদ পেয়েছি। যেমন- সবাই শুয়ে আছে, অথচ গল্পের নায়ক টেবিলে বসে পড়তেছেন, কিন্তু হটাৎ লাইট বন্ধ হয়ে গেলো এবং কেমন যেন গোঙানির শব্দ ভেসে আসা। এইটুকু আমাদের নতুন পাওয়া। হতে পারে কাহিনীটা হ্যালোসিনেশন কিংবা ভ্রমদৃষ্টি। শেষে বলবো অসাধারণ একটি গল্প পড়লাম, যা অবশ্যি পাঠকের মন কেড়ে নেয়ার মত। বরাবরের মতই শুভকামনা রইল দাদাভাই।
ভালো লাগেনি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা কবি
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা কবি
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা কবি
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা কবি
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
ব্রজলাট অসম্ভব সুন্দর।
ভালো লাগেনি ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা কবি।
ভালো লাগেনি ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
শাহ আজিজ এই মধ্যরাতে আমার সত্যিই ভয় লাগছে, এখন কি করি ??
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা কবি।
ভালো লাগেনি ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

আমার "মধ্যরাত্রির বোবাকাহিনী" গল্পটি বিষয়ের সাথে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে আমি মনে করি। কারণ এবারের বিষয় "মাঝরাত"। আমার গল্পের কাহিনীও রাতের মধ্যভাগ থেকে শুরু হয়েছে এবং মধ্যরাত ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে। আমার গল্পটি একটি সত্য ঘটনার উপর লেখা। যা আমার নিজের জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট। আমি যখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ি তখন কলেজ হোস্টেলে এক মাঝরাতে এই ঘটনাটি ঘটেছিলো। গল্পের বিষয়বস্তু মূলত ভৌতিক অথবা অতিভৌতিক অথবা আধাভৌতিক। গল্পটি পড়ে সবাই খুব আনন্দ পাবেন, থ্রিল অনুভব করবেন। সবাইকে পড়ার নেমতন্ন রইল।

১৯ ফেব্রুয়ারী - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৮০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী