কথা রাখেনি বনলতা

প্রিয়ার চাহনি (মে ২০১২)

রীতা রায় মিঠু
  • ৪৬
  • ৩৩
বেহালাতে সুর তুলেছে খুকী ‘চক্ষে আমার তৃষ্ণা,
তৃষ্ণা আমার বক্ষজুড়ে’!
সাহানা নয়তো ললিত রাগের করুন সুরে,
বিরহী প্রেমিকের বেদনায় নীল গভীর অন্তরে।
খুকীমার হাতেই বেহালা যেনো প্রাণ পায়
ছড়ের প্রতিটি টানে বেহালা কাঁদে, আমাকেও কাঁদায়।
রাগ-রাগিণী আমার চেনার কথা নয়, এসব জানতো ভালো বনলতা।
বনলতাকে আর ভোলা গেলনা, জীবনের প্রতিটি দিনের অভ্যাসে
সে লেপটে আছে, জড়িয়ে আছে প্রতিদিনের কল্পনার সুক্ষ্মজালে।

বনলতাকে প্রথম দেখেছি অহনার সাথে।
মধুদা’র ক্যান্টিনে চায়ের পেয়ালা হাতে।
কাঁধের দুপাশে এলিয়ে ছিলো অলস দুই বেণী,
বিনুনির শেষপ্রান্তে মোরগের ঝুঁটির মত করে
বাঁধা ছিল টকটকে লাল সাটিনের ফিতা।
পরনে ছিল কলাপাতা রঙ টাঙ্গাইল তাঁত।
পরিচয়ে জেনেছিলাম নাম ওর নবনীতা।

নবনীতাকে আমিই শুধু ডেকেছি বনলতা
জীবনানন্দের বনলতাই যেনো বসেছিল সেথা
পাখীর বাসার মত দুটি চোখ মেলে, আসলে নবনীতা।
আমি মনকে গেয়ে শোনালাম, ‘পাখীর বাসার মত
দুটি চোখ তোমার, ঠিক যেনো নাটোরের বনলতা সেন।

পরিচয়ের প্রথম লজ্জা কাটিয়ে দুই চোখ মেলে
ধরেছিল আমার পানে,
ও চাহনিতে যা কিছু ছিল, আমি বুঝে নিয়েছিলাম
তার সবটুকু মানে।

দেরী করিনি, বনলতাকে নিয়ে চষে বেড়িয়েছি রমনা পার্ক
থেকে সোজা সদরঘাট, নৌকায় বেড়িয়েছি বুড়িগঙ্গার
বুকে আর হেঁটেছি সবুজ ঘাসে ভরা মাঠ।
তেমন কিছুই চাওয়া ছিলনা তার, টুইশানি করা বেকার যুবকের কাছে,
তবুও লজ্জার মাথা খেয়ে চুপি চুপি বলেই ফেলেছিল সাধ একটা আছে।
“বুড়িগঙ্গার বুকে নৌকার হোটেলে খেতে সাধ হয়,
টাটকা ইলিশের ঝোল আর মোটা চালের গরম ধোঁয়া ওঠা ভাত”।
অহংকারী যুবক হাতের তুড়ি বাজিয়ে বলেছিলাম,
“এ আর এমন কি কথা!
আজই চলো এখনই চলো, মুখ ফুটে কিছু চাইলেই
যখন, শুনছিনা আর কোন কথা”।

আমার হাত থেকে আলতো করেই ছাড়িয়ে নিয়েছিল
সে তার নরম তুলতুলে হাত,
বলেছিল তার ঘরে ফেরার খুব জোর তাড়া,
দুদিন বাদেই আসবে বলে হয়ে গেলো হাতছাড়া।

বনলতা আর আসেনি, দুদিন বাদেই আসবে
বলেছিল তাই প্রথম দুদিন খুঁজিনি।
তৃতীয়াতে একে শুধোই ওকে শুধোই, বনলতাকে কেউ চেনেনা
নবনীতাই ছিল বনলতা জানতো কেবল অহনা।
অহনার কাছেই শুনেছিলাম নবনীতার কথা
প্রবাসীর হাত ধরে সে চলে গেছে বহুদূরের আমেরিকা।

কথা রাখেনি বনলতা, দুদিন বাদেই আসবে বলেছিল,
নৌকার হোটেলে ইলিশের ঝোল আর সাদা
ভাত খাবে, এমনইতো কথা ছিল।
সেদিনই যদি নৌকার হোটেলে চলে যেতাম
বনলতাকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষার তৃপ্তিটুকু পেতাম।
বনলতাকেও দুদিন বাদে ফিরে আসার
প্রতিশ্রুতি দিতে হতোনা, কথার বরখেলাপও হতোনা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
খন্দকার নাহিদ হোসেন আপনার কবিতার মাঝে বরাবরই গল্প বলার ঝোঁক! ঘটনা কি?! কবিতা বেশ। তবে কবিতা আর একটু টানটান হোক...।
পারভেজ রূপক বাহ কাব্যকাহিনী ভাল লাগল।
আহমেদ সাবের কবিতায় কেমন সুন্দর করে একটা গল্প বলে গেলেন! জানিয়ে গেলাম মুগ্ধতা।
Ruma খুব ভালো লাগলো।
আলেকজানডার কবিতাটি ভালো লিখে বেশ ফুলফুরা মেজাজে আছেন মনে হয় ?
সূর্য বৈপরিত্যও ভাবনার দূয়ার আটকাতে পারেনি। কি সুন্দর করে নারী হয়েও এক প্রেমিকের মনের ঝড় ওঠা গল্প বলে গেলেন কবিতার মাঝে। আচ্ছা দিদি নবনীতা/বনলতাকে কোথায় পাওয়া যাবে? ওকে কবিতাটা শুনিয়ে দিতাম.......
বিদিতা রানি মানুষের যত বয়স বাড়ে তত ব্যস্ততা বাড়ে। তার ফাঁকে ফাঁকে হাতড়ে বেড়ান স্মৃতিচাড়ণে। তখন হয়ে যায় গল্প বা কবিতা। আপনারা যারা লেখক তারাই ভালো জানেন। আমরা পাঠক তা শুধু অনুভব করি। আর কিছু কিছু স্মৃতি যা অনেকের জীবনেই মিলেযায়। দিদি, আপনার কবিতাটি আমার প্রথম পড়া। আগামী সংখ্যার বিষয় ''বাবা" । আপনার বাবাকে নিয়ে আপনার শৈশব স্মৃতিগুলো লিখবেন, যা এখনো আপনার মনে পড়ে।
তানি হক দারুন দিদি ! অসাধারণ একটি কবিতা উপহার দিলেন ..প্রাণ ভরা সুভেচ্ছা জানাই ..

১৯ জানুয়ারী - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৬৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪