সূতোর প’রে যে জীবন

আমার আমি (অক্টোবর ২০১৬)

রীতা রায় মিঠু
  • ১৫
  • ২৬
এ ক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি
জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
দশ মাস দশ দিন যুদ্ধশেষে
জয় পরাজয়ের টানাপোড়েনে।


এ যেন এক সরু সূতোর চিকন রেখা
সূতোর প’রে দাঁড়িয়ে থাকা
সূতোর এ পাশে জীবন, ওপাশে মরণ।
হয় জয়, নয় পরাজয়
বাঁচা মরার বাহিরে আর কিছু নয়।

জীবন মৃত্যুর বাজীখেলা জেনেও
মরতে হলে মরবো মেনেও
সৃষ্টির নেশায়, সৃষ্টির আশায়
নারী রাখিছে জীবন বাজী।
একবার নয় বহুবার,
মা হয়েছে নারী কত শতবার
মা হওয়ার গরবে নারী মরণেও
হয় রাজী।
আমিও তেমনই এক নারী
তোকে পৃথিবী দেখাবো তাই
মরণকে ধরেছি বাজী।

এ আমার দ্বিতীয় দফার যুদ্ধ,
প্রথম দফার বাজী খেলায় ছিলাম নতুন
তোর আসার প্রতীক্ষায় জেগে ছিল
সারা দেহ তনু মন।
গভীর জঠরে আরাম কোচরে
কত স্বপনে কত যতনে কত আশায়
ধরে রেখেছিলাম তোরে।

আট মাস পেরিয়ে
আর দুটো মাস হাতে ছিল,
কী জানি কি হয়ে গেলো
দারুণ ঘূর্ণিতে সব কাঁপিয়ে দিল
সময়ের আগেই সূতোর প’রে
রাখতে হলো পা।

হঠাৎই পা ফসকে গেলো
কে কোথায় ছিটকে গেলো।
চারদিক ছিল আঁধারে ঢাকা
কোথাও ছিলনা আলোর রেখা।
যখন চোখ মেলেছি
আমি কোথায় তুইবা কোথায়
চারদিকে চেয়ে তোকেই খুঁজি
একটু একটু করে সবই বুঝি
যার আসার কথা ছিল এ ভুবনে,
ফাঁকি দিয়ে সে চলে গেলো মরণে।
সরু সূতোর প’রে যে জীবন, তা
হারিয়ে যেতে লাগে কতক্ষণ!
না পেলাম তোরে, না তুই আমারে
‘মা’ হওয়ার সাধ রইলো অপূর্ণ।



দু বছর পর এ ক্ষণে
ফের দাঁড়িয়েছি জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
দশ মাস দশ দিন যুদ্ধশেষে আবারও
জয় পরাজয়ের টানাপোড়েনে।
এবার হারতে আসিনি, তোকেও হারাতে আসিনি।
সূতোর এপাশটায় জীবন, এটুকুই শুধু জানি।
আর ছাড়াছাড়ি নয়, মরণের পথেও নয়
জীবনে জড়িয়ে থাকবো দুজন।
মায়ের নয়নে থাকবি তুই, তোর নয়নে আমি
কেউ না জানুক জানবে অন্তর্যামী।

দশ মাসে্র প্রতি দিনে প্রতি ক্ষণে
তোকে নিয়ে রচেছি স্বপন ঘুমে
আর জাগরণে।
একবার হেরেছি, হারিয়েছি তোকে,
পণ করেছি লড়বো এবার, যতক্ষণ
না পেয়েছি তোকে।

এ যেন এক সরু সূতোর চিকন রেখা
সূতোর প’রে দাঁড়িয়ে থাকা, পা ফসকালেই
এদিক ওদিক।
সবই জানি তবুও জেগে রইবো আমি।

তুই আসবি তাই সেজেছে সবাই
সবুজ প্রান্তর সবুজে মাখা,
শরতের মেঘ নীল সাদায় আঁকা
কাশবন সাদা ফুলে ফুলে ঢাকা
বলাকারা সব মেলেছে পাখা।

নারী ও প্রকৃতি তৈরী, সরু সূতোটাকেও
আজ লাগছেনা বৈরী
জীবন মৃত্যুর এই বাজীখেলায়
আজ জিতবো আমি, দেখবে সবায়।
ভুবনভরা আলো দেখে তুই কাঁদবি যখন
তোর কান্নায় হাসবো আমি, হাসবে ত্রিভুবন।



আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
অবাক হাওয়া prosenjit দিদি অনেক ভাল লেগেছে
নিলয় ভূঁইয়া দিদির লেখা মানেই অসম্ভব ভালো কিছু। খুব ভালো লেগেছে।
Lutful Bari Panna দিদি বিষয়টাই ছিলো সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ক্রেডিটটুকু তোমাকে দিতেই হবে।
Rashed Chowdhury Didi Tomay ki r bolbo ............. amar ja deyar shobtuku ujar kore diyedilam. Valotheko.
জয় শর্মা (আকিঞ্চন) দ্বিতীয় দফার যুদ্ধে যেন আপনার জয় হয়। খুবই সুন্দর উপস্থাপন! শুভকামনা দিদি।
পন্ডিত মাহী মা কে নিয়ে লিখলে সেটি একটু আলাদা হবেই। তবে কবিতার দৃষ্টিকোনে, আর কাজ বাকি...
Mohammad Sharif Uddin দিদি, আপনি গল্প ও কবিতা দুটোতেই সমান পারদর্শী। আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা
কাজী জাহাঙ্গীর দিদি এবার কিন্তু খাঁটি কথা বলেছেন, একজন মায়ের কঠিন অবস্থার কথা। আর মা' তো চিরকালই শ্রদ্ধার। এবারের লিখাটা একেবারেই বাস্তব । অনেক শুভ কামনা ভোট আর আমার পাতায় আমন্ত্রন।
ইনজাম সায়েম পৃথিবীর সকল "মা" কে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা, জীবন বাজি রেখে সৃষ্টির উল্লাসে যে তোমাকেই মানায় "মা"
বিপ্লব ভট্টাচার্য দিদি তুমি গ্রেট! আমি তোমার মুগ্ধ পাঠক।

১৯ জানুয়ারী - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৬৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী