ভেলার মাঝে বসতি

মুক্তির চেতনা (মার্চ ২০১২)

সোহেল মোস্তাফিজ
  • ১২
  • 0
বাবা আমরা আর কত এই কলার ভেলা দিয়ে মাছ ধরমু নৌকা কিনবা কবে, ছোট্ট মিজান তার বাবাকে প্রশ্ন করে।
দেশ স্বাধীন হোক এর পর আমরা একটা ভাল নৌকা কিনমু. বাবার উত্তর।
বাবা পানি খুব ঠান্ডা তোমার ঠান্ডা লাগেনা বাবা , মিজান বলল
ঠান্ডা তো আমারো লাগে বাপ তয় মাছ না ধরলে দিন যাইব কেমনে, মিজানের বাবার জবাব।
মাছ ধরতে অইব যহন তাইলে কবিরের বাবার থেকে একটা নৌকা ভাড়া নিয়া মাছ ধরবা, মিজান বলল
নৌকা ভাড়া নিয়ে মাছ ধরলে মাছ বিক্রি যত টাকা পামু সব টাকা নৌকার ভাড়া দিয়ে দিতে অইব , হতাশার সাথে বলল মিজানের বাবা।

মিজান প্রতিদিন তার বাবার সাথে মাছ ধরতে সোনাবিলে আসে।মিজানের বাবার নাম তালেব মিয়া।মাছ ধরা তার পেশা। অনেকেই নৌকা নিয়ে আসে কিন্তু তালেব মিয়ার নৌকা নেই । এত দিন তালেব মিয়া ও তার এই গ্রামের আর একজন লোক যাকে মিজান মনু কাকা বলে ডাকে তারা একসাথে একটা ভাড়া নৌকা নিয়ে মাছ ধরতো । কিন্তু দিনে দিনে বিলে মাছ কমে যাচ্ছে তাই আগের মত মাছ ধরা পড়ছে না। মাছ বিক্রি করে যে টাকা আসে তা দিয়ে নৌকা ভাড়া দিলে নিজেদের ভাগে টাকা থাকে না। আর মাছ ধরে আগের মত ভাল দিন যায় না বলে মনু শহরে চলে গেছে। তাই এখন তালেব মিয়া বাচার তাগিদে ছোট মিজান কে নিয়ে মাছ ধরতে আসে। তালেব মিয়ার মিজানকে নিয়ে আসতে খারাপ লাগে। কিন্তু তাকে না আনলে মাছের জায়গা রাখবে কে ? নিজে নিজে তো আর সব কাজ করা যায় না। তবে মিজান এ নিয়ে কোন মন খারাপ করেনা তার বাবার কষ্টটা সে কিছু টা হলেও সে বুঝে তাছাড়া মাছ ধরতে তার খুব ভাল লাগে।

দেশের মধ্যে যুদ্ধ যুদ্ধ একটা ভাব পাকিস্তানিরা বাঙ্গালীর উপর যে ভাবে অত্যাচার করছে তাতে যুদ্ধ না হয়ে যায় কোথায়। আস্তে আস্তে পাকিস্তানী বাহিনী নাকি শহরে নানা অত্যাচার করছে। বাংলাদেশিরা ও এর প্রতিবাদ জানাতে শত চেষ্টা করছে । মনে হয় দেশে তুমুল যুদ্ধ হবে। এরকম নানা কথা গায়ের মানুষের আলোচনার মূল বিষয়। মাছ ধরা তালেব মিয়ার পেশা হলেও তিনি এই যুদ্ধের বিষয়ে সব রকম খবর রাখতে চেষ্টা করতো। তালেব মিয়া মনে হত দেশ স্বাধীন হলে দেশের সকলের জীবন যাত্রার মান অনেক পরিবর্তন হবে। তাই এলাকার অন্য লোকদের মত সে দেশের মুক্তি কামনা করে।কিন্তু এর মধ্যে একটা লোক ব্যতিক্রম আছে। মিজান যে তার বাবার সাথে যে কবিরের বাবার কথা বলেছিল সে, তার নাম তার হাবিব উল্লা। সে মনে করে দেশ যে ভাবে চলছে ভালই চলছে। স্বাধীন হলে যে দেশের কোন পরিবর্তন হবে তার এমন মনে হয়না। পেশা হিসেবে তেমন কিছু না অনেক গুলো নৌকা ও জমি আছে বলার মত । নৌকা ভাড়া দিয়ে দিন তার ভালভাবে চলে যায়। আর জমি তো আছে সে লোকের মাধ্যমে চাষ করে। দিনে দিনে তিনি অনেক সম্পদশালী হয়ে উঠছে। তাছাড়া এই সমাজের একজন অন্যতম গন্যমান্য লোকও তিনি।

দেশের অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হয়ে উঠছে। রেডিওর মাধ্যমে দেশের খবর পেয়ে দিনে দিনে গ্রামের লোক চিন্তিত হয়ে পরছে। পাকিস্থানী বাহিনী নাকি ঢাকা শহরে আক্রমন করছে। ঢাকা শহরে তৈরী করছে ধ্বংসলীলায়। যেখানে মানুষ দেখছে নির্বিচারে হত্যা করছে। তাই শহরের মানুষ দিনে দিনে গ্রামের দিকে আসতে শুরু করেছে । সবাই যার যার গ্রামে ফিরে যাচ্ছে। কেউবা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করছে। মিজানের মনু কাকা অর্থাৎ মনু মিয়া গ্রামে চলে এসেছে। মনু মিয়া এসেছে অন্য কারনে । কারন মনু শহরে কিছু লোকদের সাথে তার পরিচয় হয়েছিল যারা তাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করার জন্য বলেছিল। তখন সে তাদের সাথে থেকে কিছু যুদ্ধ করার নিয়ম নীতি আয়ত্ত করেছে। এখন তার অনেক লোকের প্রয়োজন তাই সে গ্রামে এসেছে লোক সংগ্রহ করার জন্য।

গ্রামে এসে মনু মিয়া সবাইকে এক সাথে একটা মিটিং এর ব্যবস্থা করল। এখানে হাবিব উল্লা, তালেব মিয়া সহ গ্রামের সবাই উপস্থিত হয়েছে। প্রথমে মনু মিয়া দেশের বর্তমান অবস্থা ও শহরের বর্তমান অবস্থা সবার কাছে তুলে ধরল। এবং তার পর নিজের কর্মকান্ডের কথা সবার কাছে খুলে বলল। তার ইচ্ছা সবাই তার মত মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করুক তা সবাইকে বলল।
হাবিব উল্লা বলল, এই সব কামে আমাগো যাইয়া লাভ কি হইবো। দেশে পুলিশ আর্মি সহ আরু কত কিছু আছে তারা যুদ্ধ করব আমরা যেমনে আছি তেমনি ভাল।
মনু মিয়া বলল,এমন হলে তো চলব না । দেশের প্রত্যেকটি মানুষ যদি দেশের এই অবস্থায় দেশের জন্য কিছু একটা না করতে পারি তাইলে এই জীবনের দাম কি ?
হাবিব উল্লা বলল, দেশের জন্য জীবন দিব আর খাইয়া কাম নাই । আমি মইরা গেলে দেশ স্বাধীন হইলেও আমার কি লাভ হইবো ?
মনু তাকে কি লাভ হইবো তা বুঝানো চেষ্টা করল। কিন্তু সে কোন বুঝ গ্রহন করল না। তাই গ্রামের অন্য লোকেরাও হাবিব উল্লার কথায় নিজেকে সামনে নিল। এসব কিছু তালেব মিয়া দেখছে সে কিছু কথা বলল না কিন্তু এখন কথা না বলে থাকতে পারল না।
তালেব বলল, কেউ না গেলেও আমি যুদ্ধ করতে যামু। আমি মইরা যদি দেশ স্বাধীন করতে পারি তাইলে আমাদের পোলাপাইন তো স্বাধীন দেশে বসবাস করতে পারব। তারা তো একদিন হলেও আমাগো কথা মনে করব। একদিন তো আমাগো মরতেই অইবো। তার চেয়ে ভালা দেশের জন্য জীবন দিমু।
সবাই অনেকক্ষণ চুপ করে রইল। তার পর সবাই বলে উঠল সবাই যুদ্ধে যামু দেশের লাইগা যুদ্ধ করমু , দেশ স্বাধীন করমু। শুধু ঐ হাবিবউল্লাহ ছাড়া। মিটিং শেষ। আগামী কাল যারা যারা যুদ্ধে যাবে সবাই এক জায়গায় মিলিত হবে আর মনু যাবে শহর থেকে একজন লোক আনতে সবাইকে টেনিং করাতে ও কিছু অস্ত্র আনতে হবে।

পরদিন সকালে। তালেবের সাথে হাবিব উল্লার দেখা।
হাবিব উল্লা বলল, কিরে কাল তো ভালই কথা কইলা। কথা কওয়া আর কাজ করা এক না। আমি কই কি এই সব চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়া একটা কাজ কর আমার যে একটা নৌকা পইরা আছে অইডা তুই চালা আমারে ভাড়া অর্ধেক দিলেই অইবো। কিন্তু কাউরে না কইলেই চলব।
তালেব মিয়া বলল, যত লোভ দেখান কোন লাভ অইবো না আমি যুদ্ধে যামুই।
হাবিব উল্লা বলল, তোর একটা পোলা তুই মইরা গেলে তোর পোলার আর বউয়ের কি অইবো।
তালেব মিয়া বলল, ওরা একটা স্বাধীন দেশে ভাল ভাবে বাঁচতে পারব।
হাবিব উল্লা বলল, একটু চিন্তা কইরা দেখ অনেক কামু লাগব।
তালেব কোন কথা না বলে চলে আসল।

গ্রামে টেনিং প্রায় শেষ এখন সবাই যুদ্ধ করার জন্য অন্য এলাকায় যাবে। তাই সবাই সবার কাছ থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছে।
তালেব মিয়া ও তার স্ত্রী ও সন্তানের কাছ থেকে বিদায় নিতে গেল।
তালেব মিয়া তার স্ত্রী কে ডেকে বলল, আমি তো যুদ্ধ করতে যাইতাছি। তুই মিজান রে খেয়াল রাখিস।
তালেবের স্ত্রী বলল, না যাইলে অয় না। আপনে গেলে আমাগো দেখব কেডা ?
তালেব মিয়া বলল, আল্লাহ তোদের দেখব। তোদের কোন ক্ষতি হইব না।
তালেব মিয়ার স্ত্রী বলল , খবরা খবর জানানোর চেষ্টা কইরেন। আর বিপদ দেখলে চইলা আইয়েন।
তালেব মিয়া বলল, তুই কি কস । আমি যদি কোন কারনে না ফিরি তবে স্বাধীন দেশে তুই বলতে পারবি তোর জামাই দেশ স্বাধীন করতে গিয়া শহীদ অইছে।
তালেবের স্ত্রী বলল, এই কথা কইয়েন না আপনি অবশ্যই ফিরে আসবেন। আমরা এক লগে স্বাধীন দেশে বাস করমু।
তালেব মিয়া বলল, এমন অইলে তো ভালই হয়। আর যদি না ফিরি তবে আমার কোন দোষ থাকলে তুই মাপ করে দিস।
তালেব মিয়ার স্ত্রী চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলল, একি কতা কন আপনে। আমার কাছে আপনার কোন দোষ নাই। আপনার মত স্বামী পাইয়া তো আমি ধন্য।
এই দিকে মিজান কাঁদছে তালেব মিয়ার চোখ পড়ল মিজানের দিকে।
তালেব মিয়া বলল, কি হইছে কাঁদছ কেন বাবা ?
মিজান বলল, বাবা তুমি যাইয়ো না ।
তালেব মিয়া বলল, আমি যদি দেশ স্বাধীন না করি তবে তোমারে নৌকা কিনন্না দিব কেডা ?
মিজান বলল, বাবা আমার নৌকা লাগব না আমি ভেলা দিয়াই মাছ ধরতে পারমু।
তালেব বলল, তুমি পারলে কি অইবো বাবা অনেকেই তো পারব না তাদের জন্য যাইতে হইবো না ?
মিজান বলল, যাও কিন্তু তাড়াতাড়ি চইলা আইসো।
আসবো বাবা বলে তালেব ছেলের মুখে দুইটি চুমু খেয়ে আর পিছনের দিকে ফিরে তাকালনা। এক নতুন পথে যাত্রা শুরু করল।

যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। চারিদিকে গুলা গুলির শব্দ। যারা মুক্তিযুদ্ধে গেছে তাদের কোন খবর মাঝে মাঝে পাওয়া যায় । এক এক বার এক এক করে সবাই এসে গ্রামের খোজ খবর নিয়ে যাচ্ছে । এবং তাদের খবর মুক্তিযোদ্ধার আত্মীয়দের কাছে দিয়ে যাচ্ছে। এই দিক দিয়ে গ্রামের অবস্থা খারাপ। গ্রামে পাকিস্থানি মিলিটারি ডুকে পড়েছে। তাদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করছে হাবিব উল্লা। সে তাদের তার বাড়িতে থাকতে দিয়েছে। তাছাড়া গ্রামের সকল তথ্য তার মাধ্যমে পাকিস্তানিদের কাছে যায় ।

ঐ দিক দিয়ে মনু মিয়া যুদ্ধ করতে করতে শত্রু“দের গুলি এসে লাগে তার পায়ে। তার সকল সহ যোদ্ধারা তাকে নিয়ে কোন রকমে নিরাপদ জায়গায় ফিরে এল। তার পায়ে লেগে থাকা গুলিটা অতি কষ্টে বের করল। তার পর তাকে সবাই তাকে বাড়ি ফিরে আসতে বলল। কিন্তু মনু মিয়া সে পাত্র না।
তাই সে বলল, আমি মরলে এখানে থেকে মরব কিন্তু বাড়ি যাব না। শুধু তালেব কে বলল যে গ্রামের খবর নিয়ে আসতে কিন্তু তার গুলি পরার খবরটা না বলতে।
পর দিন সকাল বেলা তালেব বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করল। বাড়ি ফিরে দেখে ঘরের দরজা বন্ধ। অনেকক্ষণ ডাকার পর ঘরের দরজা খোলা হল। তালেব কে দেখে স্ত্রী ও পুত্রের আনন্দ কেমন হয়েছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মত শব্দ পৃথিবীতে পাওয়া খুব কঠিন। সবার চোখে পানি আর এই পানির মধ্যেও একটা আনন্দ কাজ করে।
তালেব দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে বলল, দরজা বন্ধ রাখলা কেন ?
তালেবের স্ত্রী বলল, কাল পাকিস্থানি বাহিনী মনু মিয়ার বাড়িতে হামলা করছে। বাড়িতে আগুন লাগাইয়া দিছে। আর মনুর মা চাচিরে গুলি কইরা মাইরা ফালাইছে। আর মনুর বউ পাকিস্তানীদের হাতে লাঞ্চিত হইয়া সোনাবিলে ডুব দিয়া মরছে। তাই দরজা বন্ধ কইরা রাখছি।
তালেব মিয়া বলল, শুধু মনুর পরিবারের উপর আক্রমন করল আর তো কোন বাড়ি আক্রমন করল না ব্যাপারটা কি ?
তালেবের স্ত্রী বলল, পাকিস্তানিরা বুইঝা গেছে এই গ্রামে মুক্তিযুদ্ধা আছে আর মনু তার মূল গোরা।
তালেব বলল , কেমনে বুঝল তারা এইসব।
তালেবের স্ত্রী বলল, হাবিব উল্লা সব কইয়া দিছে। সে তার বাড়িতে সব পাকিস্থানীগো থাকতে দিছে। শুনছি এক এক কইরা হগলে মরব । যারা যুদ্ধ করত গেছে।
তালেব হাতাশার সুরে বলল, তাইলে তো তোমাগো ও সমস্যা। আইজকে তোমাগোরে মিজানের মামার বাড়ি দিয়া যামু। পরে অবস্থা ঠিক অইলে আনমু। ওই দিকে আমাগো অবস্থাও ভালা না মনুর ডাইন পায়ে গুলি লাগছে। তারে কইলাম বাড়ি চইলা আইতে । মনু বাড়ি আইল না । বাড়ি আইলেতো এহন তার বড় সমস্যা অইতো।
তালেবের স্ত্রী বলল, পায়ের বেশী ক্ষতি অইনাইতো ?
তালেব বলল বেশী ক্ষতি অইনাই তয় যদি এই পাও বেশী লড়াচড়া করা যাইব না কিন্তু তারে বুজাইবো কেডা এই পাও লইয়াও যুদ্ধ করতে চায়। পরে যহন পাও নারাচারা করতে পারবনা তহন ঝুঝব।
এই কথা বলার মাঝে হঠাৎ করে হাবিব উল্লা ডেকে বলল, কি তালেব মিয়া বাইত আইছো নি ?
এই কথা শুনার পরে তো সবাই ভয়ে কেপে উঠল। তালেব ও তার স্ত্রী দরজার ফুটো দিয়া দেখে হাবিব উল্লা সাথে আর ৫/৬ জন পাকিস্থানী সৈন্য।
তালেবের স্ত্রী বলল (আস্তে আস্তে)আপনে পিছনের দরজা দিয়া বাইর হইয়া জান। আমরা দরজা খোলার পরে সবাই যহন ঘরে ডুকব তহন আপনে পালাইয়া যাইয়েন।
তালেব বলল বুদ্ধিটা ভালাই তয় আমি না তোমরা দুজন যাও । আর আমার তো এখান থেকে বাচার সম্ভবনা কম। তুমি মিজানরে লইয়া মিজানের মামার বাড়িতে চইলা যাইয়।
তালেবের স্ত্রী বলল, আপনেরে ছাইরা যামু না মরলে মরমু।
তালেব বলল, আমি জানি তোর মনের অবস্থা কেমন কিন্তু মিজানরে বাচাইয়া রাখতে হইবো স্বাধীন দেশে গর্ব করে কওয়ার লাইগা যে তার বাপ দেশের জন্য শহীদ হইছে। চইলা যা আমার কসম। আর দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এই গ্রামে ফিরা আইস না।
বাহিরে থেকে হাবিব উল্লা বলল, কি দরজা ভাঙ্গতে অইবো নাকি।
এত ক্ষন তালেব মিজানের সাথে একটা কথা বলে নাই এখন শুধু বলল, ভালা থাইকো বাপ। তোমারে আমি নৌকা কিননা দিতে পারি নাই বলে মন খারাপ কইরো না। তয় তোমার জন্য স্বাধীন একখান আকাশ অপেক্ষা করতাছে।
মিজান কিছু বলতে পারলো না। শুধু চোখ জুড়ে সবার কন্না। পিছনের দরজা খুলে বের হতে যাবে । এমন সময় মিজান দৌড়ে এসে তার বাবাকে জড়িয়ে অনেক গুলো চুমু খেলো। যা গননা করা সম্ভব ছিল না। তার পর তালেব মিজান কে জরিয়ে আবার দুইটা চুমু খেল। তার পর তালেবের স্ত্রী মিজানকে নিয়ে বের হয়ে গেল। তালেব পিছনের দরজাটা বন্ধ করে সামনের দরজাটা খুলে দিল। হাবিব উল্লা ঘরে ডুকল তার সাথে দুইজন পাকিস্থানী সৈন্য।
হাবিব উল্লা বলল, কি তালেব তুমি বাড়িতে কবে আইছ , তোমার বউ বাচ্চা কই গেছে ?
তালেব বলল, তারা তো কাইল মিজানের মামার বাড়ি গেছেগা।
এক পাকিস্থানী সৈন্য বলল, এ কন হে ?
হাবিব উল্লা বলল, এহি স্যার মুক্তি হে । ইছকা বিবি বাচ্চা ইহাছে চালগায়ে।
পাকিস্থানি সৈন্য বলল, তুম সাচমে মুক্তি হো । বলো পাকিস্থান জিন্দাবাদ
হাবিবউল্লাহ বলল, কসনা তালেব পাকিস্থান জিন্দাবাদ।
তালেব কিছু বলল না ।
বাহিরে থেকে এক জন বলল, হারামজাদা এছে নেহি মানেগি উচকো জোরছে মারো।
তখন এক জন সৈন্য তাকে গুলির হাতল জোরে পিঠে আঘাত করল আর বলল, বল পাকিস্থান জিন্দাবাদ । বল পাকিস্তান জিন্দাবাদ।
তালেব অনেক আওয়াজ করে বলল, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
বাহিরে থেকে এক জন বলল, শালাকো মারদো।
এই কথা বলতে দেরী টানা কয়েকটি গুলির শব্দ শুনা গেল। বাহিরে থেকে তালেবের স্ত্রী মিজান কে মুখের মধ্যে চাপ দিয়ে রেখেছে। দুচোখ হতে পানি গাল গড়িয়ে মাটিতে পরতে লাগল। তালেব কাতরাতে কাতরাতে বলল, হে ভবিষ্যত বংশধর তোমাগো লাইগা একটা স্বাধীন দেশের জন্য আজ আমি রক্ত দিয়া গেলাম। তোমরা এই দেশের সঠিক মূল্যায়ন কইরো। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
এই কথা শুনার পরে তালেবের স্ত্রী মিজান কে নিয়ে ধীরে ধীরে পিছনের দিকে গিয়ে একটা ঝোপের ভিতর দিয়ে নিজের বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে চলতে লাগল পিছনে পড়ে রইলো তার সকল স্মৃতি গুলো।
এদিক দিয়ে আর এক পাকিস্থানী বলল, এ ঘার কো জ্বালাদো।
সাথে সাথে হাবিব উল্লা ঘরের মধ্যে আগুন লাগিয়ে দিল। মুহুর্তের মধ্যে পুড়ে গেল একটা ঘর সাথে একটা মুসলমানের লাস।

অবশেষে দেশ অনেক কষ্টের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হল। সবাই যার যার এলাকায় ফিরে আসতে শুরু করল।মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় আনন্দে যার যার এলাকায় ফিরে আসছে। মনু মিয়া ফিরে এসে দেখে তার বাড়ি ঘর সব পুড়ে ছাই। আর তার আত্নীয় বলতে পৃথিবীতে আর কেউ নাই। তার পা টাও একে বারে অবশ হয়ে গেছে। এখন এ পায়ে কোন কাজ করতে পারবে না। এখন হাতে তেমন কিছু নাই যে ঘরটা আবার নতুন করে গড়বে। আর ঘর তৈরী করেও লাভ হবে কি এই ঘরে থাকার মত কেউ নাই। তাই সে বাধ্য হয়ে আবার শহরে চলে আসল। ও দিক দিয়ে মিজানও তার মা তার নানাকে নিয়ে নিজের গ্রামে এসেছে । নিজের ঘর তো পুড়ে গেছে। এখন ঘর বানানোর জন্য মিজানের মা তার নানার কাছে বলল। তার নানা অবশ্য এখানে তার মেয়েকে ঘর তুলে দেওয়ার জন্য রাজি হয়নি । কারন তার একটি মাত্র মেয়ে তাই তিনি চান তার সাথেই তাদের বাড়িতে থাকুক। কিন্তু মিজানের মায়ের এক কথা তিনি তার স্বামীর বাড়ি ছাড়া অন্য কোথাও যাবেনা। তাই শেষ পর্যন্ত এখানে বাড়ি তৈরী করে দিল।মিজানের নানা মাঝে মাঝে কিছু টাকা দিত তা দিয়ে কোন রকম দিন কাটত তাদের। মিজানও লেখাপড়া করে। কিন্তু মিজানের যখন ১৬/১৭ বছর তখন হঠাৎ তার নানা মারা গেল। তাই তাদের পরিবারের খরচ চালনার সকল পথ এখন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে মিজান তার মাকে নিয়ে শহরে এসেছে কাজের সন্ধানে।

স্বাধীনতার প্রায় চল্লিশ বছর পর।
মিজান এখন শহরের রিক্সা চালক। দেশের জন্য তার বাবা যুদ্ধ করতে গিয়ে জীবন দিয়েও দেশ স্বাধীন করেছিল। কিন্তু মিজান তার বাবার ধারে কাছেও নাই সে জীবিত থেকে তার জীবন যুদ্ধে এখনও সংগ্রাম করে যাচ্ছে। কিন্তু এখন ও জয়ী হতে পারেনি।তার এখন পরিবার আছে সন্তান আছে আছে মা সবাইকে ভরন পোষন একা মিজানের পক্ষে প্রায় সম্ভব হয় না। তবু সে রাত্রিদিন কষ্ট করে যাচ্ছে ।রিক্সা চালাতে চালাতে দেখল একদিন দেখল একজন বৃদ্ধ লোককে পুলিশ পিটাচ্ছে চেহারাটা মনু চাচার মত কাছে যেতে দেখল তার ডান পা টা ঠিকই অবশ। মিজান কাছে গিয়ে এই বৃদ্ধ লোকটিকে ধরল। এবং সরিয়ে এনে বলল, চাচা আপনেরে ওরা মারে কে ?
বাজান আমি ভিক্ষা করি ভিক্ষা করা নাকি অপরাধ তাই ওরা আমারে মারল, বৃদ্ধের জবাব।
চাচা ভিক্ষা করেন কেন। আপনের পোলাপাইন নাই ? মিজান প্রশ্ন করল।
নারে বাজান এই দুনিয়ায় আমার কেউ নাই ? বৃদ্ধ বলল
চাচা আপনেরে একটা কথা জিজ্ঞেস করি, মিজান বলল।
কও কি কইতে চাও, বৃদ্ধ জবাব দিল।
চাচা আপনে কি কোন সোনাবিলে মাছ ধরতেন, মিজান বলল।
সোনাবিলের কথা শুনার পর বৃদ্ধ হঠাৎ চমকে উঠল।
আর বলল, হে বাবা কত মাছ ধরছি সোনা বিলে । তুমি কেডা বাপ ?
চাচা আমি মিজান। তালেব মিয়ার পোলা , আনন্দের সাথে বলল মিজান।
মিজান তালেব ভাইয়ের পোলা মিজান কত বড় অইয়া গেছ , মনু মিয়ার জবাব।
হ চাচা তো আপনে এহানে ভিক্ষা করেন কে ? মিজান বলল।
হে অনেক কথারে বাপ তোর অবস্থা কি ? মনু মিয়া বলল।
চাচা চলেন আমার লগে বাড়ি গিয়া সব কথা কমু। এই কথা বলে মিজান মনু মিয়াকে নিয়ে তার রিক্সা নিয়ে তার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করল।

বাড়ি আসার পর ঘরের দরজা ধাক্কা দেওয়ার পর।
ভিতর থেকে মিজানের মা বলল কে ?
মিজান বলল, আমি মা দরজা খোল।
মিজানের মা দরজা খুলতে খুলতে বলল, কিরে বাজান তোর শরীল খারাপ করছে নাকি এত তাড়াতাড়ি ফিরা আইলি।
মিজান মনু মিয়াকে দেখিয়ে বলল, দেহো কারে আনছি।
কেডা এইডা মনু মিয়ার মত মনে হইতাছে মিজানের মায়ের জবাব।
হ ভাবি আমি মনুই। আপনি কেমন আছেন ? মনু মিয়া বলল।
হ ভালায়ে ভাই তুই কেমন আসসরে ভাই ? মিজানের মা বলল।
বেশী ভালা না ভাবী কোন রকম আছি, মনু মিয়ার জবাব।
পিছন থেকে মিজানের স্ত্রী বলল বাইরে দাড়াইয়া কথা কইবেন না। না ভিতরে আনবেন।
তার পর মিজানের মা বলল ভিতরে আইয়া হাত মুখ দুইয়া লও। তার পর খাইয়া ধাইয়া কথা কমু।

খাওয়া দাওয়া শেষ হল।
মিজান, মিজানের মা, মনু মিয়া, এক সাথে বসে কথা বলতে শুরু করল।
মিজানের মা- এলাকায় গেছিছি মনু ?
মনু মিয়া- হ অনেক বার গেছিলাম কিন্তু শেষ বার যে গেছি অনেক বছর অইয়া গেছে।
মিজানের মা- আমরা তো গেছিলাম অনেক বছর অইছে। গিয়া নিজের বসত বাড়ি টা হাবিব উল্লার কাছে বেইচা আইছি।
মনু মিয়া- বসত বাড়িটা বেচলেন কে ? নিজের এলাকা স্বামীর বসত বাড়ি। না বেইচা সবাইরে লইয়া বাড়ি চইলা যাইতেন ?
মিজানের মা- বসত বাড়ি বেইচা মিজানের তিনটা রিক্সা কিননা দিছি। একটা মিজান চালায় আর দুইটা ভাড়া দিয়া রাহে । তাই কোন রহম দিন ভালাই কাডে।
মিজান - কি কও চাচা অই এলাকার নাম মুখে লইও না। হাবিব উল্লার মত রাজাকার লোক যে এলাকায় থাকব। সেই এলাকায় কেমনে থাকি কও। আমার বাবারে ও তো ওই হাবিব উল্লা মারছে। আর এহন কেমনে বুক ফুলাইয়া চলতাছে।
মিজানের মা- তোমার জায়গা কি করসছ কি আমাগো বেইচা দিছ নাকি ?
মনু মিয়া- না ভাবি আমার বাড়িডা আমি বেচতেও পারি নাই। ওই হাবিব উল্লা জমিডা দফল কইরা খাইতাছে।
মিজান- তুমি গায়ে গিয়া সালিস বহাইলে পারতা।
মনু মিয়া- সালিস তো বহাই ছিলাম । সালিসে কি অইব জোর যার মুল্লুক তার। তার উপরে কেউ হেছা কথা কওয়ার নাই।
মিজানের মা- এক রাজাকার কেমনে এত বড় সাহস পায় এত কিছু করার কেউ কি কিছু কওয়ার নাই।
মনু মিয়া- কইব কে। হাবিব উল্লা চেয়ারম্যান নির্বাচন করছে। আর পোস্টারে ছাপাইছে সে নাকি বীর মুক্তিযুদ্ধা।
মিজান- চাচা রাজাকার মুক্তিযুদ্ধা হয় কেমনে ?
মনু মিয়া- আমি এই সব বুঝি না। রাজাকার কেমনে মুক্তিযুদ্ধা হইল।
মিজানের মা- দেশে নাকি অহন মুক্তিযুদ্ধা দের লাইগা অনেক ভালা সুযোগ আছে।
মিজান- হ আমি ও হুনছি। মুক্তিযুদ্ধারা সুযোগ সুবিধা পায় লগে তার পোলা মাইয়ারাও পায়।চাচা তুমি কিছু পাও নাই।
মনুমিয়া- না পাইনাই আমি নাকি মুক্তিযুদ্ধা না আমার নাকি মুক্তিযুদ্ধার খাতায় নাম নাই।
মিজান- চাচা অহনো নাকি মুক্তিযুদ্ধার খাতায় নাম তোলা যায় তুমি একটু খোজ লইলেই পার।
মনুমিয়া- নারে বাজান আর নাম তোলা লাগব না। যেই নামের খাতায় হাবিব উল্লার মত মানুষ আছে হেই নামের খাতায় নিজের নাম না থাকলেই ভালা। আর তা ছাড়া আমি আর কয়দিন বা বাছমু।
মনুমিয়া- এই দিনের লাইগা যুদ্ধ করছিলা চাচা। এই দেশের লাইগা তোমার বউ আর মা মরছিল। আর এই দেশের লাইগা আমার বাপে জীবন দিছিল। কও না চাচা তুমি একজন মুক্তিযুদ্ধা হইয়া এহন ভিক্ষা করন লাগে। আর আমার বাপে এই দেশের লাইগা জীবন দিছে তার পরও আমি রিক্সা চালাই। আর হাবিব উল্লা যুদ্ধের সময় রাজাকার অইয়া ও স্বাধীন দেশের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধা নাম খেলাইতাছে।
মনু মিয়া চুপ করে রইল
অনেক ক্ষন ধরে সবাই চুপ। কারু মুখে কোন কথা নাই।
হঠাৎ মিজানের মা মিজানকে বলল, মিজান বাড়ি ওয়ালা আইজ কইছে সামনের মাসে এই বাড়ি ছাইড়া যাইতে অইব। এই বাড়ি ভাইঙ্গা নাকি ফেলাট বাড়ি বানাইবো।
আজ কাল এমন কম ভাড়ায় বাড়ি পাওয়া খুব কঠিন। আবার বাড়ি একটা খোঁজে বের করা অনেক কঠিন কাজ।
মনের অজান্তেই মিজান বলে উঠল , বাবা দেইখা যাও স্বাধীন দেশেও তোমার মিজান ভেলার মাঝে বাস করতাছে। তোমার রক্ত বিফলে গেল বাবা।তোমার রক্ত বিফলে গেল।

(এই গল্পের সকল চরিত্র ও কাহিনী কাল্পনিক। কোন কারনে কারো জীবনের সাথে মিলে গেলে সে হবে সম্পূর্ন কাকতলীয় ব্যাপার। আর এ ব্যাপারে লেখক কোন ক্রমে দায়ী নয়।)
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক কি বাস্তব সত্য গুলো তুলে ধরেছেন...অনেক ভালো লাগলো..শুভ কামনা.....
আপনাকে ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন।
প্রদীপ খুব, খুব, খুব ভালো লাগলো! অসাধারন!
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি Khub Khub Khub Valo akti Golpo Man sommoto Sohel Vai ke Osesh Dhonnobad....5
আহমাদ মুকুল সত্যিই খুব সুন্দর মুক্তিযুদ্ধের গল্প। সাবলীল চিত্র। অনেক হাবীবউল্লা’রা এভাবেই দাপটে আছে। কষ্টকর!
আহমেদ সাবের "আর হাবিব উল্লা যুদ্ধের সময় রাজাকার অইয়া ও স্বাধীন দেশের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধা নাম খেলাইতাছে।" - কে দেবে উত্তর? চল্লিশ বছরের অন্যায়, অবিচার। শোধরানো যাবে কি করে? ওরা যে অনেক শক্তিশালী। এমন চমৎকার একটা গল্পে পাঠক নেই বলে বেশ দুঃখ পেলাম।
মন্তব্য দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
রোদের ছায়া কল্পনা বাস্তবতাকে ছুয়ে গেছে .........তাই ভালো লাগার পরিমানটাও বেশি
মাহবুব খান অনেক ভালো /৫ দিলাম
মো: আশরাফুজ্জামান ভালো লাগলো, ধন্যবাদ ।
সালেহ মাহমুদ UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL# খুবই সত্য কাহিনী। বর্তমানে সমাজের চিত্রও তাই। যারা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করলো তারা এর কিছুই ভোগ করে যেতে পারলো না। এই না পারার জন্য দায়ী কে???????
মন্তব্য দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
মারুফ মুস্তাফা আযাদ আমি বুঝলাম না, এই লেখাটা কিভাবে সবার চোখ এড়িয়ে গেল। অন্তত আমার কাছে এই লেখাটি খুবি ভালো লেহেছে। সবাইকে পড়ার আমন্ত্রন রইল।

১৭ জানুয়ারী - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী