নিণন ন্যানো: শেষ পর্ব

সবুজ (জুলাই ২০১২)

হাবিব রহমান
  • ১৪
  • ১১
৭.

মিতসু কাওয়া আরিফের সাথে যোগাযোগ রাখছিল নিয়মিত। আরিফ তাকে আস্বস্ত করেছে কাজটা মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই সমাধা করে ফেলবে। মিতসু কাউয়া বুঝতে পারছে পেশাটা খারাপ হলেও আরিফ তার কাজে খুবই নিষ্ঠাবান। ওকে বেশ গোছান মনে হয়েছে তার। একেবারে প্রফেশনাল যাকে বলে। মিতসু কাউয়া লক্ষ্য করেছে বাংলাদেশে এই ধরণের কাজে যারা যু্ক্ত তাদের একটা করে বিশ্লেষণি নাম থাকে যেমন গালকাটা রুমি, বাট্টু সুমন...এই রকম। এরা নাটকিয়তা পছন্দ করে। কিন্তু আরিফের এই ধরনের কোন নাম নেই। কারণ সে নাটকিয়তা পছন্দ করে না, অত্যন্ত গোপনিয়তার সাথে কাজ করতে পছন্দ করে। মনে মনে এই রকম একটা লোককেই খুজছিল কাউয়া। আরিফকে খুজে বের করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাকে। তবে কাজটাকে সহজ করে দিয়েছে একজন দোভাষি যার নাম মনিরুজ্জামান। লোকটা বাঙ্গালী হলেও ভাল জাপানি জানে। এর সাথে প্রাথমিক যোগাযোগ করেই বাংলাদেশে পা রেখেছে কাউয়া। সারা পৃথিবীর আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর একটা যোগসূত্র আছে। এই বিস্তারের জাল এত শক্ত একজন সাধারণ মানুষ তা কল্পনাও করতে পারেনা। আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর লোকজনের জন্য অসম্ভব বলে কোন বিষয় নেই। কাজটা তাকে দেয়ার পর থেকে মনিরুজ্জামানের মাধ্যমেই মূলতঃ আরিফের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছিল মিতসু কাওয়া।

মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে কোন খবর না পেয়ে মুটামুটি অস্থির হয়ে গেল মিতসু কাওয়া। কোন আপডেট না পেয়ে নিজেই মনিরুজ্জামানকে ফোন করল কাউয়া। মনিরুজ্জামান তাকে যা বলল তার মর্মার্থ হচ্ছে, কাজে যাওয়ার আগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার আগে শেষ যোগাযোগ করেছে আরিফ। তার পর থেকে তার সাথে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। মনিরুজ্জামান আরিফের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। যোগাযোগ করতে পারলেই সে কাউয়াকে আপডেট করবে। মনিরুজ্জামানের সাথে কথোপকথন শেষ করে চিন্তায় পড়ে গেল মিতসু কাউয়া। যা বুঝে নেয়ার বুঝে নিয়েছে সে। আরিফের পরিনতি কি হয়েছে তার কাছে এখন তা স্পষ্ট। রাগে নিজের চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে তার। আরিফকে এই ধরনের কোন বিষয়ের জন্য সর্তক থাকার পরামর্শ দিতে পারলে হয়তো ঘটনাটা অন্যরকম হতে পারতো। কিন্তু এই ন্যানো গুলোর বিষয়ে মুখ খুলতে বারন আছে। আদতে কিছুই করার ছিল না কউয়ার। আরিফের পরিনতির ব্যপারে যা ভাবছে তা যদি সত্যিই হয় তাহলে ধরে নিতে হবে নিনণ তার ন্যানো গুলোকে ব্যবহার করছে। আর যদি তাই হয় তাহলে তাদের টার্গেট সহজ সরল ভোলাভালা কোন যুবক নয়, এখন সে এক ভয়ংকর প্রতিপক্ষ।

মিতসু কাউয়া বেশী দেরি করল না। একটা রিপোর্ট তৈরি করে এখনি পাঠিয়ে দিল তাকাসি সান বরাবর। সে জানে বিষয়টাকে সহজে নিবেনা বুড়ো। কিন্তু এইটা ছাড়া অন্য কোন রাস্তা খোলাও নেই। পরিকল্পনা “এক” ভেস্তে গেছে। এখন তার পরিকল্পনা “দুই” বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও পরিকল্পনা “দুই” টাই তার বেশী পছন্দের ছিল। তাকাসি সান অনুমোদন করেন নাই। পরিকল্পনা “দুই” এর জন্য ঝামেলা একটু বেশী হবে কিন্তু ফলাফল নিশ্চিত। এখন আর অনুমোদনের দরকার লাগবে না। তবে পরিকল্পনা “দুই” টাকেও কিছু মডিফিকেশন করতে হতে পারে। রাত এগারটা নাগাদ মনিরুজ্জামানকে ফোন করল কাউয়া।

: আরিফের কোন খবর পেয়েছ?

: কাজে যাওয়ার আগে ও তার ফোনটা বন্ধ করে হোটেলে রেখে গেছে। এখনো ফোনটা বন্ধ আছে।

: আরিফের সাথে যোগাযোগ বা ওর খোঁজ খবর নেয়ার কোন প্রয়োজন নেই।

: কেন বস্? আপনার কাছে কোন নিউজ আছে।

: সেটা নিয়ে তোমার মাথা ঘামাতে হবে না। এইটা আমি দেখছি। আমার কিছু এক্সপ্লোসিভ লাগবে ব্যবস্থা করতে পারবে?

উত্তরে জাপানি ভাষায় মনিরুজ্জমান যা বলল তার মর্মার্থ হচ্ছে অসম্ভব বলে কোন কাজ নেই।

৮.

মনিরুজ্জামান জানে তার এই জগৎটা একটা বিস্ময়কর জগৎ। তাদের প্রত্যেকের হাতে ভয়ংকর ক্ষমতা কিন্তু সবাই অদৃশ্য এক শক্তির কাছে বাঁধা। এখানে যেমন সব খবরই রাখতে হয়, তেমনি কোন কিছু নিয়ে অতি উৎসাহ দেখানো ভয়ংকর রকমের অপরাধ। আরিফের ব্যপারে তার খুব জানতে ইচ্ছে করলেও সেই ইচ্ছাকে দমিত করল মনির। আরিফ পেশাদার খুনি হলেও পুরোপুরি ভাবে আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর সদস্য ছিলনা। আরিফ সম্পর্কে সকল তথ্যই এদের কাছে আছে কিন্তু প্রয়োজন ছাড়া সেই তথ্য যাচাই করতে যাওয়া যাবেনা। তথ্য এই জগতের কঠিন এক অস্ত্র। এই শক্তির কাছে কোন কোন দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাও আস্টেপিস্টে বাধা পড়ে গেছে। তথ্যকেও তারা নিজেদের মত করে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে।

কাউয়ার চাহিদা মত এক্সপ্লোসিভ সরবরাহ করার জন্যই এখন কাজ করে যেতে হবে। সুতরাং অন্য কিছু নিয়ে ভাববার সময় নেই। একটা দোতালা বাড়ী উড়িয়ে দেয়ার মত প্রচন্ড শক্তিশালি একটা টাইম বোম দরকার কাউয়ার। কাউয়ার সাথে দেখা করে বিস্তারিত জেনে নিয়েছে। গুগোল আর্থ থেকে ক্যপচার করা বাড়ীর একটা ছবিও তাকে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাড়ীটি কোথায় তার কোন তথ্যই তাকে দেয়া হয়নি। বাড়ীর আসে পাশে কি আছে সেই সম্পর্কেও কোন তথ্য দেয়া হয়নি। কাউয়ার কথা হচ্ছে এক্সপ্লোসিভের আঘাতে বাড়ীটি ধুলিস্মাৎ হয়ে যেতে হবে। কোন প্রাণিও যাতে না বাঁচে। সবচেয়ে ভাল যদি আঘাতের পরপর আগুন লেগে ভস্মিভূত হয়ে যায়। এসব কেন দরকার তার কোন ব্যাখ্যা দিলনা কাউয়া।

কাউয়া খুবই সাবধানী লোক, পাকা খেলোয়ার বোঝাই যায়। একই জায়গায় কখনো তার সাথে দেখা করেনি কাউয়া। একেকদিন একেক জায়গায় তার সাথে সাক্ষাত করেছে। সক্ষাতের সময় কখনোই সে বেশী সময় নেয়নি। সম্ভবত সে এক জায়গায়ও থাকছে না। এসব বিষয়ে তেমন কিছুই জানেনা মনিরুজ্জামান এবং জানার বিন্দু মাত্র চেষ্টাও করেনি। কিন্তু ঘটনায় হঠাৎ মোড় নেয়ায় মনটা উসখুস করে উঠছে। জানতে খুবই ইচ্ছে করছে এটা কার বাড়ী, কিসের বাড়ী এবং এটা উড়িয়ে দেয়ার প্রয়োজনই বা কেন? মনিরুজ্জামানের কাছে মানুষ, দেশ এই সব ফালতু বিষয়। ওর কাছে জীবনটা হচ্ছে একটা খেলা। ডিসকোয়ালিফাই হয়ে যাওয়ার আগে খেলে যাও। হঠাৎ করেই তার খেলার নিয়ম ভাঙ্গার ইচ্ছা করছে কেন?

মাথা চাড়া দিয়ে উঠা আবেগকে মাটি চাপা দিয়ে দিল মনির। এক্সপ্লোসিভ এক্সপার্ট দুলুর সাথে মিট করল পুরোনো এক আবাসিক হোটেলের ছাদে। দুলুও কম ওস্তাদ না। সাক্ষাতের জন্য আজব আজব যায়গা ঠিক করে ও। পুরোনো থ্রিলার ছবির ভিলেনের মত চালচলন ওর। কাজ শেষে বাতাসে মিলিয়ে যাওয়ার অসম্ভব ক্ষমতা আছে তার। দুলুর টিকির খবর অন্ধকার জগতেরও খুজে পেতে কষ্ট হয়। দুলু সব শোনার পর এবং গুগল আর্থ থেকে ডাউনলোড করা ছবিটা দেখে মাথা ঝাকিয়ে বোঝাল কোন ব্যপার না। কেবল জানতে চাইল, কোথায় এবং কখন? স্বাক্ষাত শেষে দুলু হাই কমান্ডের কাছ থেকে পাওয়া একটা ফাইল মনিরুজ্জামানের হাতে তুলে দিল। কিন্তু ফাইলটা সম্পর্কে সে কিছু বলল না। আদতে সে কিছু জানেও না। নিজের আস্তানায় এসে ফাইলটা আদোপান্ত পড়ে নিল। এটা একটা গোয়েন্দা কর্মকর্তা অতনু বিশ্বাসের ফাইল। ফাইলটা ভাল করে পড়ার পর অতনু তার বস, রাহাত, ন্যানো রবোটক্স সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং এর সাথে মিতসু কাউয়া সম্পর্কে সম্পৃক্ততা সম্পর্কে ধারনা করতে পারল। এই ধরনের তথ্য হাই কমান্ড কি ভাবে পায় তা ভেবে বিস্ময় বোধ করলনা মনির। এসব দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। ফালইলটা তাকে কাজ সম্পর্কে সাবধান হতে পাঠানো হয়েছে।

দুইটা বিষয় নিয়ে জরুরী কথা বলা দরকার কাউয়ার সাথে। তার সাথে যোগাযোগ করেতেই দেখা করতে চাইল মনির। এবারও অন্য একটা জায়গা সাক্ষত করল যেখানে আগে কখনই সাক্ষাত করেনি তারা। দেখা হতেই কাউয়া জানতে চাইল, টাইম বোমের ব্যবস্থা হয়েছে কিনা? এইটা মনিরের আলোচনার একটা বিষয় কিন্তু অন্য বিষয়টা আগে জানাল সে। সে বলল, “হাই কমান্ড আমার কাছে একজন গোয়েন্দার ফাইল পাঠিয়েছে। আমি ফাইলটা পড়েছি।“

: কি আছে ওতে? জানতে চাইল কাউয়া।

: সে প্রায় স্ব উদ্যেগেই একটা কেইস নিয়ে কাজ করছে এবং সেই কেইসের সাথে হয়তো তোমার, আমার সম্পর্ক আছে।

: নাম কি তার?

: অতনু বিশ্বাস।

: তোমাদের এখানে তো প্রায় সবাই অসৎ। কিছু পয়সা দিয়ে ধামাচাপা দিয়ে দাও।

: লোকটা পাগলাটে আর সৎ এটাই হচ্ছে সমস্যা। কিন্তু তার বস বিণয় দাস একবারে ধামাধরা। পারলে ড্রেন থেকে টাকা তুলে খায়। বলে বিশ্রী ভাবে হাসল মনির।

: টাকা কোন বিষয়ই না ব্যবস্থা কর।

: তবু আমাদের সাবধান হতে হবে। এটাই তোমাকে জানানো দরকার ছিল।

: আমি সাবধান আছি। আমার সাথে এখন কারো কোন কন্টাক্ট নেই। কোন ভাবেই আমাকে ট্রেস করা যাবে না। ফাইলটা থেকে আমার সংশ্লিষ্টতা তুমি ধারনা করতে পেরেছ নিশ্চই এবং তুমি নিশ্চই বুঝতে পারছ পুরো বিষয়টা অতন্ত্য গোপনীয়?

: হ্যাঁ তা তো নিশ্চই। ফাইলটা পড়ে নিণন রহমান নামে একজন ইঞ্জিনিয়রের সম্পর্কে কিছুটা জানতে পেরেছিল মনির কিন্তু কাউয়ার স্পষ্ট সাবধান বানীতে যা বোঝার বুঝে নিল।

খুবই অল্প সময়ের মধ্যে কাউয়া তার পরিকল্পনা “দুই” ব্যাখ্যা করল। সব ব্যবস্থা করে দিতে হবে মনিরুজ্জামনকে কেবল সে চায় নির্ধারিত তারিখে ঠিক মাঝ রাতে যাতে বাড়ীটি ধুলিস্মাৎ হয়ে যায়।

৯.

বিনয় দাসের রুম থেকে বের হয়ে নিজের ডেস্ক্সে এস বসল অতনু। অত্যন্ত বিরক্তি নিয়ে তার অফিসের চারদিকে তাকিয়ে মনটা আরো বিমর্ষ হয়ে গেল। এটা কোন অফিস? দেখে মনে হবে যেন আস্তাকুড়। ফেন্সিডিল আর ইয়াবা বরি ধরার জন্য এখানে ওখানে ছুটা আর সরকারী দলের আজ্ঞাবহ হয়ে বিরোধী দলের লোকদের উপর নজরদারী আর টিকটিকি গিরি করতে করতে নিজের প্রতি ঘেন্না ধরে গেছে। ইয়াবা বা ফেসিন্সডিলের যে ছোট ছোট চালান গুলো ধরা হচ্ছে তা আসলে বলতে গেলে চালানকারীরাই ইচ্ছে করে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে। বড় বড় চালান ঠিকই চলে যাচ্ছে জায়গামত। এই সকল অপরাধী চক্রের কাছ থেকে মাসোহারা নিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের কৃত কলাপ প্রলেপন দেয়ার জন্যই যেন তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ঝাড়ুদার থেকে এক্কেবারে প্রধান পর্যন্ত ভাগাভাগি চলে এই মাসোহারা। তাই অপরাধীরাও আর পাত্তা দেয় না ওদের। এদের সাথেই উঠাবসা, হরদম। অপরাধীদের সাথে থাকতে থাকতে তার সহকর্মীদের চেহারাও কেমন যেন ওদের মত হয়ে যাচ্ছে। আর শালা বিনয়, সে তো এই কাজে একে বারে সিদ্ধ হস্ত। সরকারের অনেক উপরের মহলের সাথে তার সরাসরি লেনদেন। তাই তার ক্ষমতার দাপটও মাত্রাতিরিক্ত।

টেবিলে রাখা কম দামি মোবাইল সেটটা ঝুমঝুম কেপে উঠল। অফিসের অন্য সকলের হাতেই দামি দামি মোবাইল সেট। অতনুরও খুবই ইচ্ছা করে ভাল একটা মোবাইল সেট কিনতে। কিন্তু যে বেতন পায় তাতে হিমসীম খেয়ে উঠছে। ভাবে ঠিকই কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেনা হয় না। শুধু মনে মনে চাইলেই একটা দামী সেট তার টেবিলে চলে আসতে পারে কিন্তু নিজের মনকে কোন ভাবেই সায় দিতে পারে না অতনু। মোবাইলটাতে হাত দিতে ইচ্ছে করছে না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওটাকে তুলে কে ফোন করেছে না দেখেই কলটা বুঝে নিয়ে বিরক্তির সাথে বলল, অতনু বলছি?

: সে তো আমি জানি তুই অতনু। আমি রাহাত, আবার বলিস না রাহাত কে?

: সরি দোস্ত মেজাজ টা বিগরে আছে।

: আমার নাম্বার তোর মোবাইলে সেভ করা নাই?

: আছে কিন্তু খেয়াল করিনি।

: আমার কেইসের কি খবর?

: আরে সেইটা নিয়ে কথা বলতে গেছিলাম আমাদের গর্ধবটার সাথে। গলা নিচু করে বলল অতনু। তারপর আস্তে করে আরো বলল, শালা বলে কি আমি নাকি অযথাই সময় নষ্ট করছি। আমি যতই বুঝানোর চেষ্টা করি বিষয়টা সিরিয়াস। দেশের নিরাপত্তার ব্যাপার। শালা শকুনের মত হেসেই উড়িয়ে দিল। সারাক্ষণ থাকে টাকার ধান্ধায়। তবে তুই চিন্তা করিস না। ও ব্যটা যাই বলুক আমি এর পিছনে আছি। এর শেষ দেথে ছাড়াব।

: আজ বিকালে ব্যস্ত আছিস? চল আড্ডা মারি। অনেকদিন আড্ডা মারা হয় না। এক্কেবারে বোর হয়ে গেছি।

: ঠিক আছে আয়। বলে ফোনটা রেখে দিল অতনু।

রাহাতের কাজটার জন্য বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের একজন প্রফেসার এর সাথে দেখা করেছিল অতনু। রাহাত যে ন্যানোটা দিয়ে ছিল সেটা দেখাতেই প্রফেসারের চোখ একেবারে ছানাবড়া। জিজ্ঞেস করেছিল আপনি এটা কোথায় পেয়েছেন? কথা বাড়ায়নি অতনু। প্রফেসারকে অনুরোধ করেছে, স্যার এটা একটা গোপন অনুসন্ধান। আপনি শুধু বলুন এটার অরিজিন কোন দেশ হতে পারে। প্রফেসার তার ড্রয়ার থেকে খুবই শক্তিশালি একটি আতশি কাচ বের করলেন। ন্যানোটাকে টেবিলে রেখে বিভিন্ন ভাবে নাড়িয়ে চাড়িয়ে দেখলেন। অনেকক্ষণ পর মাথা উচুকরে তাকালেন অতনুর দিকে বললেন, বলা কঠিন। তবে নির্মাণ শৈলী দেখে মনে হচ্ছে জাপান হতে পারে। এর পরবর্তী সম্ভাবনা হচ্ছে জার্মানি।

প্রফেসাররে সাথে সাক্ষাত শেষে সে রাহাতের সাথে যোগাযোগ করেছিল। অনেকক্ষণ ধরে জেরা করেছিল রাহাতকে। যেহেতু মাছি গুলো বিমান বন্দর থেকে বের হয়েছে তাই ধরে নিতে হবে কেউ বিমানে করে ন্যানো গুলো নিয়ে এসেছে। রাহাতের কাছ থেকে ঐদিনের ফ্লাইট সিডিউল এবং ঐদিনের সাতদিন আগে এবং পরে জাপানি এবং জার্মানি নাগরিকের বাংলাদেশে আগমনের একটা তালিকা সংগ্রহ করে নিয়েছে। জার্মানিদের তালিকায় ১২ জন এবং জাপানিদের তালিকায় ছিল ১৭ জন পুরুষ মহিলা। জার্মানিদের তালিকা থেকে ১ জন বাদে বাকি সবার নাম প্রথম যাচাইয়েই বাদ দিয়ে দিয়েছে। যে একজন আছে তাকেও আসলে বাদ দেয়া যায় তবে আরেকবার নিশ্চিত হতে হবে। জাপানিদের তালিকা থেকে সবাইকে ট্রেস করতে পারলেও একজনকে এখনো ট্রেস করতে পারিনি। পাসপোর্টে লোকটার নাম মিতসু কাউয়া। আজকে সকালে তালিকাটা আবারও ভাল ভাবে যাচাই বাছাই করে এই নামটার পাশে মার্ক করে আলাপ করতে গিয়েছিল তার বস বিনয় দাসের সাথে। শালা মেজাজটা খারাপ করে দিয়েছে। বারবার মনে করিয়ে দিয়েছে, নিজের দায়িত্ব পালন করার জন্য। আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বিবিধ টানাপোড়েন চলছে বলে বিদেশিদের উপর অযথা নজরদারি সরকারকে চটিয়ে দেয়ার সামিল, ইত্যাদি ইত্যাদি বিবিধ নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছে। সারাদিন কোন কাজে মন বসাতে পারলনা অতনু।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় টিএসসির চত্ত্বরে ছিল তাদের আড্ডা। সেই আড্ডায় এখনও কেউ কেউ আসে, দেখা স্বাক্ষাত করে। তবে দিনদিন আড্ডাবাজের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। রাহাত বা অতুনুও এখন নিয়মিত নয় একেবারে। আসলেও ফোন করে নিশ্চিত হয়ে তবেই আড্ডায় আসে ওরা। এখন আড্ডায় কাজের কথাই হয় বেশি। অতনু টিএসসি চত্ত্বরে পৌছে দেখল রাহাত বসে আছে।

: এত দেরি করলি? একটু আগে ভাবছিলাম চলে যাব। একা একা বসে থাকা যায়?

: রাস্তা ঘাটের নমুনা যেন তুই জানিস না? আচ্ছা শোন কাজের কথাটা সেরে নেই আগে। তোকে জাপান থেকে আসা একজন লোকের ছবি জোগার করে দিতে হবে।

: সে দেয়া যাবে, ডিজিটাল পাসপোর্ট আসার পর থেকে এটা খুবই সোজা হয়ে গেছে। তুই আমাকে তার নাম আর আসার তারিখটা দিয়ে দে।

অতনু মিতসু কাউয়ার তথ্যটা দিতে দিতে বলল, লোকটাকে ট্রেস করা যাচ্ছে না। এটা সন্দেহ জনক কিন্তু দূর্বল দিকটা হচ্ছে সে ঘটনার তিনদিন পর বাংলাদেশে এসেছে। ঘটনার দিন যারা এসেছে তাদেরকে সন্দেহ করার কোনই কারন খুজে পাইনি আমি। তোর কেইসটা নিয়ে এখন পর্যন্ত জটিলতা টুকু হল এই।

কাগজটা ভাজ করে পকেটে নিতে নিতে রাহাত বলল, তুই কেন কেবল মাত্র জাপান বা জার্মানীদের নিয়ে আগাচ্ছিস সেটা আমাকে বলেছিস্ কিন্তু অন্যকোন দেশের লোক যে ওটা করছে না তাই বা নিশ্চিত হচ্ছিস কিভাবে?

: হতে পারে। কিন্তু এটা ক্লু নিয়ে তো আগাতে হবে।

আচমকা কি মনে হতেই, রাহাত বলল, “আচ্ছা তোকে তো একটা কথা বলাই হয়নি। যেদিন ঘটনটা ঘটে সেদিন এটকা বাংলাদেশী ছেলে জাপান থেকে এসেছিল। ছেলেটাকে আমি সন্দেহ করেছিলাম। কিন্তু তার সাথে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে, ছেলেটা একজন ইঞ্জিনিয়ার।“

: ইঞ্জিনিয়ার? বিষয়টা আমাকে আগে বললে পারতি। ছেলেটার ছবি এবং বিস্তারিত আমাকে দিবি।

: আচ্ছা ঠিক আছে। ধূর! কাজের কথা বাদ দেতো। বল, তোর খবরা খবর কি?

: আর বলিস না দোস্ত, শালা বিনয় গর্ধবটার জন্য কাজ করে কোন শান্তি পাচ্ছি না।

: নাহ্ কাজ ছাড়া আজকাল তুই কোন কথাই বলতে পারিস না।

শেষ মেষ সেই দিনের আড্ডাটা জমেছিল বেশ। আরও তিনজন বন্ধু জুটেছিল আড্ডায়। অনেকদিন পর তুমুল আড্ডাবাজি চলল। চা, সিগারেট, হাসাহাসি। অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা মেরেছিল অতনু। রাহাতের কাছ থেকে মিতসু কাউয়া এবং অদ্ভুত নামে এক যুবকের ছবি এবং আরও কিছু বিস্তারিত তথ্য পেয়েছে গতকাল। মিতসু কাউয়ার ছবিটাকে বেশ কিছু কপি করে গুলশান এবং বনানীর গেষ্ট হাউস গুলোতে পাঠিয়ে দিয়েছে অতনু। এই চেহারার কেউ থাকলে তারা যেন তাকে জানায় এমন নির্দেশনা দেয়া আছে। এবার আশা করছে মিতসু কাউয়াকে সে ট্রেস করতে পারবে। ডেস্ক্সে বসে নিণনের ছবিটা ভাল করে দেখল অতনু। কেমন সহজ সরল, শান্ত শিষ্ট অবয়ব। এর সাথে ন্যানো রবোটিক্স এর সম্পর্ক কি হতে পারে। ছেলেটার স্থায়ী ঠিকানাটা দেখল। রাজশাহী রিজিওনের মফস্বল একটা শহরে থাকে ছেলেটা। ছেলেটা সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য যোগার করতে হবে। বুয়েটে তার সম্পর্কে জানতে চেয়ে একটা মেইল করেছে অতনু। জার্মানীর যে লোকটাকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছিল তার বিষয়টাও নিশ্চিত করা গেছে। এই ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ত থাকার সম্ভাবনা কম। লোকটা গার্মেন্টস্ এর বায়ার, বাংলাদেশে আরও কয়েকবার ভিজিট করেছে। ভাল বায়ার হিসাবে তার সুনাম আছে।

রাহাতের কেইসটাতে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারছে না অতনু। তার হাতে যে এসাইনমেন্টটা আছে সেটাও দেখা শোনা করতে হচ্ছে। কিন্তু এটা আসলে কোন কাজই না। লোকাল থানার একজন সাব-ইন্সপেক্টরই এই কাজ করতে পারে। ওদের কে এই সব ছোট খাট কাজে লাগান হয়। নাই কাজ তো মুড়ি ভাজ টাইপ কাজ। কাজটা নিয়ে ফালতু কিছু পেপার ওয়ার্ক করতে করতে বিকাল হয়ে গেল। বিকালের দিকে রাহাতের ফোন আসল।

: দোস্ত খবর বল, একটু আয়েসের সাথে বলল অতনু।

: আসল খবর হচ্ছে, তোমার ক্লু উড়াল দিচ্ছে।

: মানে কি?

: মিতসু কাউয়া কিছুক্ষন পর জাপানের উদ্দেশ্যে ফ্লাই করছে।

: বলিস কি?

: হ্যাঁ। সে চেক ইন করেছে। ওর নামে কোন রিপোর্ট নাই সুতারাং তাকে আটকানো ঠিক হবে না। আটকাতে পারি কিন্তু কিছু প্রমান করতে না পারলে আমি বিপদে পরব। কি করব বল?

: আর কি বলব, শালা গর্ধবটাকে কত করে বললাম। পাত্তাই দিলনা। যাক কি আর করার আছে। বিষয়টা তোর আর আমার হাতে নেই। ছেড়ে দে।

রাহাতের কেইসটা বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল। কিন্তু মাঝ পথে গুবলেট লেগে গেল বলে মনটা বিষিয়ে রায়েছে অতনুর। হাতের কাজটা কোন রকমে শেষ করে কম্পিউটারটা বন্ধ করতে গিয়ে মেইলটা দেখল। আধা ঘন্টা আগে মেইলটা এসেছে বুয়েট থেকে। যে তথ্য এসেছে তাতে দেখতে পাচ্ছে ছেলেটা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্ট থেকে গ্রাজুয়েশন করে এম.এস করছিল। জাপানের একটি প্রতিষ্ঠানের স্কলারশিপ নিয়ে জাপানে চলে যায় রবোটিক্সের উপর উচ্চতর পড়াশোনা করার জন্য। অত্যন্ত হাই প্রোফাইল একাডেমিক কেরিয়ার ওর। মেইলটা পেয়ে নড়ে চরে বসল অতনু। তবেকি নাটের গুরু, নিণন? ন্যানো রবোটিক্সের সাথে তার কেরিয়ারের প্রচন্ড মিল। মিতসু কাউয়া চলে গেলেও কেইসটা তাহলে শেষ হচ্ছে না। বাসায় ফিরতে ফিরতে বিষয় গুলো আবার খুটিয়ে খুটিয়ে চিন্তা করল অতনু।

নাস্তা করার আগে দ্রুত একবার পত্রিকার পাতা গুলোতে চোখ বুলিয়ে নেয়ার অভ্যাস অতনুর। সে শুধু মাত্র হেডলাইন গুলো পড়ে। প্রয়োজন মনে হলে বিস্তারিত। আজকে পত্রিকাটি হাতে নিয়ে প্রথম পাতাতেই চোখ আটকে গেল। রাজশাহীর একটা মফস্বল শহরে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরনের খবর শিরোনাম করেছে পত্রিকাটি। খবরটি খুটিয়ে পড়ে শিউরে উঠল অতনু। খবরটা পড়ে যা জানল তা হচ্ছে বিস্ফোরনে একটা বাড়ী সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে এছাড়া আসে পাশের বাড়ীর কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোন হতাহত হওয়ার তথ্য নেই। যে বাড়ীটি বিধ্বস্ত হয়েছে সেই বাড়ী থেকে পুলিশ কোন মৃত দেহ উদ্ধার করতে পারেনি। তবে ধারনা করা হচ্ছে বাড়ীর মালিক গোলাম আজম, তার স্ত্রী মিতা বেগম, ছেলে নিণন রহমান এবং তার এক আশ্রিত কন্যা সবাই বোমা বিস্ফোরনে নিহত হয়েছেন । পুলিশ এখন পর্যন্ত ঘটনার সাথে কে বা কারা সংশ্লিষ্ট তা বলতে পারেনি। তবে ধারনা করছে বাড়ীর ইঞ্জিনিয়ার ছেলের কোন এক্সপিরিমেন্টের ফলে এমন বিস্ফোরণ হলেও হতে পারে। গতকালকে গভীর রাতে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে পত্রিকায় বিস্তারিত খবর নেই। অতনু নিউজ চ্যানেল খুলে খবরটা ভাল ভাবে জেনে নিল। নিউজ চ্যানেল গুলো বিধ্বস্ত বাড়ী গুলো দেখানো হয়েছে। বাচাল রাজনৈতিক নেতাগুলো যারা টিভির সামনে মুখ দেখাতে পছন্দকরে তারা এটাকে বিরোধিদলের সেবোট্যাজ বলে এর বিরুদ্ধে জনগনকে রুখে দাড়ানোর আহ্বান করছে।

অতনুর সব রাগ গিয়ে পড়ল শালা বিনয়ের উপর। এখন খুব সহজেই দুই এ দুই এ চার মেলানো যাচ্ছে। নিণনই আসলে এনেছিল ন্যানো গুলো। আর সেই জন্যই তাকে মরতে হল। তার এই মৃত্যুর সাথে মিতসু কাউয়ার হাত থাকলেও থাকতে পারে। ওর কথা শুনলে নিশ্চিত এই ঘটনাটা এড়ানো যেত। এখন ফাইলটাকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোন কিছু করার রইল না অতনুর।

১০.

তাকাসি সান ভাল ইংরেজী জানেন। তিনি বসে আছেন তার হোটেলের কামড়ায়। তার সামনে চারজন বিদেশী নর নারী। তাদের মধ্যে বয়স্ক লোকটা বলল, আপনাকে খুব আনন্দিত মনে হচ্ছে?

: হ্যাঁ আমি খুবই আনন্দিত। কারণ শেষ অব্দি আমি সফল হয়েছি।

: কিন্তু আপনিতো অন্যভাবেও এটা করতে পারতেন?

: কোন উপায় ছিল না। নিণন আমার প্রচুর ব্যবসায়িক ক্ষতি করায় আমি প্রচন্ড ভাবে রেগেছিলাম। কিন্তু এক সময় অনুধাবন করলাম, সম্পদের চাইতে জ্ঞান অনেক প্রয়োজনীয়। প্রথম পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পর শর্ত ছিল দ্বিতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় আমি আর আমার এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করতে পারবো না। তাই আমি মিতসু কাউয়ার সাথে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। তাই আপনাদের সবাইকে অবগত করে সেখান থেকে সরিয়ে ফেলা ছাড়া আমার আর কোন পথ খোলাছিল না। এইজন্যই আমাকে বাংলাদেশে চলে আসতে হয়েছে।

: কিন্তু বাড়ীটা ধ্বংস হয়ে গেল। আসে পাশের বাড়ীরও মানুষ জনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারতো? আজম সাহেবের কন্ঠে ক্ষেদ টের পেলেন তাকাসি সান।

: যা ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত আজম সাহেব। আমার হাতে সময় এত কম ছিল যে, আপনাদের সরিয়ে নেয়া ছাড়া অন্যকিছু করার ছিল না। তবে আমি এই ক্ষতি পুষিয়ে দেব। তারপর নিণনের দিকে ঘুরে তাকিয়ে বললেন, নিণন আমি জানিনা কেন? তোমার সারল্য আমাকে রূপান্তরে সহায়তা করেছে। আমি কোন ভাবেই তোমার মৃত্যু মেনে নিতে পারছিলাম না। শেষ মেষ আমার মনের সাথে যুদ্ধ করে, আমার মনে হয় অবশেষে আমি জয়ি হয়েছি। আমি আমার শেষ সময়টুকু আর সব সম্পদ মানুষের জন্য ব্যবহার করতে চাই। তুমিকি আমার সাথে থাকবে?

নিণন বিস্ময়কর বুড়োটার দিকে তাকিয়েই ছিল। তাকাসি সানকে কখনোই তার খারাপ লাগতো না। কখনোই মনে হতো না লোকটা শুধুমাত্র টাকার জন্য এত কিছু করতে পারে। প্রথম অভিজ্ঞতাটা এমন যে এখন তাকে বিশ্বাস করা কঠিন। যদিও তার জন্যই এতকিছু আবার লোকটা তাদের সবাইকে যে ভাবে রক্ষা করল তা এক বিস্ময়। একবারের জন্যও সে ন্যনোগুলোর কথা জিজ্ঞাস করেনি। এমনকি এখনো জানতে চায়নি ন্যানোগুলো কোথায়? সে যদি শুধু মাত্র ন্যনোগুলোর জন্যই তাদেরকে রক্ষা করে থাকে তবে তাদের সাথে ন্যনোগুলোকেও রক্ষা করার চেষ্টা করতো। লোকটা কি তবে শুধু মানবিক টানেই তাদেরকে উদ্ধার করল? নিণন কোন জবাব দেয়ার আগে তার মায়ের দিকে তাকালো। মিতা বেগমের চোখে সংশয়। একই দৃষ্টি আরতির চোখে। নিণন চোখে চোখে জবাব চাইল বাবার কাছে। আজম সাহেব মাথা নড়িয়ে সায় দিলেন। নিণন তাকাসি সানের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে জানাল সে আছে তার সাথে।

বুড়োর চোখে পানি এসে গেল। আজম সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলল, আপনার সোনার টুকরো ছেলে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
পন্ডিত মাহী বিদুৎ এর কারনে তিন দফায় গল্পটি পড়লাম। চমৎকার গল্প। তবে 'কাউয়া' নামটি পড়ে মনে হচ্ছিল কাউকে দুষ্টামি করে 'কাক' থেকে কাউয়া বলছেন।
সিয়াম সোহানূর অনেক সুন্দর কল্পকাহিনী। ভাবনা বিস্তারে সহায়তা করে। ধন্যবাদ ভাই হাবিবুর রহমান।
মিলন বনিক এর আগের সংখ্যাও পড়েছি...ধারাবাহিকতা এবং কাহিনী বিন্ন্যাসে গল্পের চরিত্র রুপায়ন আমার কাছে অসাধারণ মনে হলো...সাই ফাই আমি ভালো বুজিনা...কিন্তু আনন্দ পেয়েছি অনেক..অনেক অনেক শুভ কামনা...ভালো থাকবেন...
স্বাধীন অনেক ভাল লাগল। বিশেষ করে জল্লাদই(তাকাসি সান) যখন ত্রাতার ভূমিকায়। কিন্তু এক সময় অনুধাবন করলাম, সম্পদের চাইতে জ্ঞান অনেক প্রয়োজনীয়---------- চমৎকার একটা বাক্য অনেক দিন মনে রাখার মতো।
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ বরাবরের মতই বিস্মিত নয়নে পড়েছি। ভাল লেগেছ। ধন্যবাদ।
মাহবুব খান অনেক বড় গল্প / পড়ে রহসসের আবেশ রযে গেল /ভালো
আহমাদ মুকুল তৃপ্তি নিয়ে পাঠ করলাম আপনার ‘নিণন ন্যানো’। ‘শেষ পর্ব’ বলেই দিয়েছেন, এটার ব্যাপারে আর নাছোড়বান্দা হতে পারলাম না। তাই বলে এরকম আরো গল্প চাইতে তো আপত্তি নেই....!
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন .....................কী বলব, চমতকার গোয়েন্দা কাহিনী! খুব ভাল লাগল। শেষটা তাড়াহুড়া করে শেষ করেছেন, আগামীতে এই অধ্মদের কথা চিন্তা করে দয়া করে তা না করার চেষ্টা করবেন। শুভেচ্ছা রইল।
শফিক হাবিবুর ভাই আপনার গল্পটি একটানে পড়ে শেষ করলাম। খুব ভালো লাগল অসাধারন ভিন্ন সাধের গল্প। ধন্যবাদ আপনাকে........................
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি মামুন ভাইয়ের মেতা আমি সায়েন্স ফিকশন বুঝিনা তাই সে ভাবে মন্তব্যও করতে পারব না । তবে গল্পটা পড়ে আমার ভাল লেগেছে.....ধন্যবাদ হাবিবুর ভাই আপনাকে..........

১৬ জানুয়ারী - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৩২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪