যে কথা এখনো বলা হয়নি

বাবা (জুন ২০১২)

তানজির হোসেন পলাশ
  • ১৩
  • ১১৩
২০০৮ সালের ৩ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার। সন্ধ্যার পর টাইমস নামের সমিতি অফিস কক্ষে বসে আছেন এলাকার ব্যস্ততম এবং জনপ্রিয় শিক্ষক মো. তরিকুল ইসলাম। সবাই তাঁকে তারেক স্যার বলেই জানে। লম্বাটে ফর্সা গড়ন, চোখে চশমা পড়েন প্রায়ই। চুলগুলো বেশ বড় বড়। চেহারা দেখে কেউ তাকে শিক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দেবে এরকম লোকের সংখ্যা খুবই কমই পাওয়া যাবে। সাহিত্যের পাগল, দার্শনিক, আর্ট শিল্পী বা মিডিয়াজগতের একজন কর্মী হিসেবে এক দর্শনে স্বীকৃতি মিলবে তাঁর। গণিতের শিক্ষক হলেও সাহিত্য জগতে তাঁর পদচারণা অনেক আগেই হয়েছে। অবশ্য তাঁর এই চুল বড় করার কারণ কেউ অনুধাবন করতে পারেনি বিন্দুমাত্র।
তারেক সাহেবের এক সময়ের ছাত্রী এসে বলল,
: স্যার, আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ এনেছি।
কিছুটা অবাক হলেন তারেক স্যার। তারপর কাজলের দিকে তাকাতেই ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে হালকা সবুজ বর্ণের এক টুকরা কাগজ স্যারের হাতে দিল। যা ছিল একটি স্কুলে চাকুরির বিজ্ঞপ্তি। সেখানে লেখা -
ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (সৃজনশীলতাই যার একমাত্র লক্ষ্য)
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে বিভিন্ন পদে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। আগামী ৪ জানুয়ারি সকাল ১০টায় সরাসরি দরখাস্ত দিতে হবে। বিজ্ঞপ্তি দেখে অবাক হলেন তারেক স্যার। এই বিজ্ঞপ্তি কাজলের মা পাঠিয়েছেন নিশ্চয়। কারণ তিনি ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে চাকুরী করেন। হঠাৎ মাথায় আইডিয়া এল ইন্টারভিউ দিবেন তারেক স্যার। কিন্তু একা একা ইন্টারভিউ দিতে যাবেন কি করে? সঙ্গে সঙ্গে আগের স্কুল অর্থাৎ আইডিয়াল ক্যাডেট একাডেমীতে একত্রে কাজ করা আরো দু’জনকে ফোন করলেন। তাঁরা ইন্টারভিউ দিতে রাজি হলেন।
রাতে বাসায় ফিরে দরখাস্ত লেখা শুরু করলেন তারেক স্যার। অনেক রাত পর্যন্ত চোখে ঘুম এল না। মাথার মধ্যে দুইটা দুশ্চিন্তা ঢুকলো। প্রথমত: দীর্ঘ আট বছর আইডিয়াল ক্যাডেট একাডেমীতে কাজ করার পর তা ছেড়ে চলে যেতে খুব খারাপ লাগবে। পারবে তো ছাড়তে? দ্বিতীয়ত: যদি পরীক্ষা দিয়ে চাকুরী না হয়, তবে ঐ স্কুলে মুখ দেখাবে কি করে? এসব ভাবনায় সকালের সূর্যটা আলো বিকিরণ শুরু করেছে চতুর্থ তলার ফ্লাটের জানালা দিয়ে।
শুক্রবার। ৪ জানুয়ারি। ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে একটি রিক্সা এসে থামল। যাত্রী তিনজন। সবার উদ্দেশ্য একই। ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ইন্টারভিউ দিবে। কিন্তু দু:খজনক হল পরীক্ষার বিষয় তিনজনেরই ভিন্ন। অথচ তাঁরা একই স্কুলে চাকুরী করেন। ছয় তলা ভবন বিশিষ্ট ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের নিচ তলায় কাগজ পত্র জমা দিলেন তিনজন। তারপর অপেক্ষার পালা। কিছুক্ষণের মধ্যেই সিঁড়ি দিয়ে উঠলেন সবাই। ভিন্ন ভিন্ন তলায় তিনজনের সিট পড়েছে। ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অনেকেই তারেক সাহেবের দিকে তাকিয়ে আছে। বিশেষ করে তার চুলের দিকে। একজন তো বলেই ফেললেন এ পাগল পরীক্ষা দিতে এসেছে কেন? এ তো পরীক্ষার আগেই বাদ পড়বে। তিনি অন্যদের ডেকে দেখালেন তারেক সাহেবকে। অবশ্য এ দৃশ্য চোখে পড়েনি তারেক সাহেবের। অনেকেই ভেবেছিল তিনি হয়ত ড্রইং বিষয়ে পরীক্ষা দিবেন। অথচ সবাইকে অবাক করে দিল যখন তাকে দেখা গেল গণিত বিষয়ের কক্ষে। এও কি করে সম্ভব? এত বড় আধ্যাত্মিক ধরনের চুল ওয়ালা লোক কি করে গণিতের হাতে পারে। অবশ্য এ প্রশ্ন সকলের ঐ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল যখন তাকে দেখা গেল ভাইভা বোর্ডে।
১৩ জানুয়ারি। ভাইভা পরীক্ষা। ডাক পড়ল মো. তরিকুল ইসলাম সাহেবে। খুব ভয়ে ভয়ে তিনি গেলেন ভেতরে। কিন্তু কি আশ্চর্য তাকে কেউ চিনতে পারল না। শুধু একজন বললেন, আপনি তো আমাদের প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার উদ্দেশ্যে অনেক বড় Sacrifice করেছেন। আপনার অনেক বড় চুল ছিল। নিশ্চয়ই অনেক শখ করে রেখেছিলেন। তিনি আরো বললেন, আমার বিশ্বাস আপনি পারবেন। আপনার সে যোগ্যতা নিশ্চয় আছে। আমাদের এখানে কাজ করে আপনি নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন। তাঁর এই কথাগুলো তারেক সাহেবের খুব ভাল লাগল। তিনিই ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কর্ণধার। পদাধিকারবলে বর্তমানে মহাপরিচালক। অবশ্য প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। অত:পর চার দিন Demonstrative ক্লাস করার জন্য বলা হল তারেক সাহেবকে। কিন্তু তারেক সাহেবের আপত্তিতে দুই দিনের Demonstrative ক্লাস করার অনুমতি দেওয়া হল তাকে।
১৬ ও ১৭ তারিখ তারেক সাহেবের Demonstrative ক্লাস হবে ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। তিনি আইডিয়াল ক্যাডেট একাডেমী থেকে ছুটি নিলেন দুই দিনের। ডেমো. ক্লাস পছন্দ হল কর্তৃপক্ষের। ১৮ তারিখে আবার সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হলেন তারেক সাহেব। সেদিন মহাপরিচালক স্যারের সাথে একান্তে কথা হল। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপচারিতার পর নিয়োগপ্রাপ্ত হলেন তারেক সাহেব। চাকুরীতে যোগদান করতে হবে ১৯ তারিখ। এবারও আপত্তি জানালেন তিনি। কারণ তিনি এই মুহূর্তে একটি প্রতিষ্ঠানে আছেন। তাদের সময় না দিয়ে চাকুরী ছাড়া ঠিক হবে না। তারপরও সেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে আছেন। তবে আরো একদিন সময় নিয়ে ২১ তারিখ যোগদানের কথা বললেন তারেক সাহেব।
১৯ জানুয়ারি। আকাশ যেন হালকা মেঘে আবৃত ছিল। শুধু এক কোণায় উজ্জ্বল সূর্যের কিরণ দেখা যাচ্ছিল। আইডিয়াল ক্যাডেট একাডেমীতে ঢুকলেন তারেক স্যার। ইতোমধ্যে অনেকেই জেনে ফেলেছেন তিনি চলে যাচ্ছেন এই বিদ্যাপীঠ থেকে। সুতরাং তিনি বিদ্যালয়ে ঢোকামাত্রই উৎসুক দৃষ্টি প্রশ্ন করল কি খবর স্যার? সহাস্য তাঁর জবাব ভাল। এর পর একে একে বিভিন্ন ক্লাসে গেলেন এবং ঘোষণা করলেন আগামিদিন থেকে তিনি আর আসবেন না। তাঁর চলে যাবার খবর সকলের মধ্যে ক্রন্দনের বিহঙ্গ তৈরি করল। বেদনার্ত পরিবেশ সৃষ্টি হল আইডিয়াল ক্যাডেট একাডেমী প্রাঙ্গনে। বিদায়ের সুর যত কঠিন হোক না কেন, বিদায় তো নিতেই হবে। এই মানসিকতা তৈরি করেই গিয়েছিল তারেক স্যার। সুদীর্ঘ আট বছর যে প্রতিষ্ঠানে সময় দিয়েছেন, যার সুখে-দু:খে দিন কেটেছে তাঁর। চাকুরী জীবনের শুরুটা হয়েছে যে স্কুলের মাধ্যমে তার মায়া ছেড়ে চলে যাওয়া তো এত সহজ কাজ নয়। অবশ্য এর আগে তারেক স্যার বহুবার চেষ্টা করেছে অন্য কোথাও চাকুরী করার। কিন্তু পারেননি স্কুলের মায়ায়। এবার আরপিছে ফেরার কোন পথ নেই। কিছু দূষিত হাওয়া স্কুলটাতে প্রবেশ করে পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে। শিক্ষক প্রতিনিধি ছাড়া কমিটি নামক কিছু অবাঞ্চিত লোক স্কুলের কার্যক্রমে পান্ডিত্য প্রকাশ করে স্কুলের মর্যাদা নষ্ট করছে বলে তারেক স্যারের এই হঠাৎ সিদ্ধান্ত। এই জন্যই মন মায়া কাটতে পেরেছে। শেষ পর্যন্ত বিদায় দেওয়া হলতারেক সাহেবকে। তবে আনুষ্ঠানিক বিদায় হয়নি। হয়তবা হবে ভবিষ্যতে।
২১ জানুয়ারি। তারেক সাহেব যোগদান করলেন ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। শুরু হল নতুন সংগ্রাম। নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চার হল। সব কিছুই নতুন তারেক সাহেবের কাছে। সব অপরিচিত। অথচ সবাই খুব আন্তরিক। সকলেই আন্তরিকতার সাথে নতুনদের গ্রহণ করল। কেবলমাত্র ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া। কারণ কোন শিক্ষার্থীই চায় না তাদের এতদিনের পরিচিত শিক্ষক চলে যাক। যেমনি চায়নি আইডিয়াল ক্যাডেট একাডেমীর শিক্ষার্থীরা। তারা চায় না তাদের অতি প্রিয় তারেক স্যার হারিয়ে যাক তাদের মধ্য থেকে। অনেকেই অবশ্য স্যারের কারণে ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ভর্তি হয়েছে। তারা মনে করে স্যার যেখানে নেই কি করে সেখানে লেখাপড়া করবে? অথচ তাদের কি দুর্ভাগ্য, তারেক স্যারের কোন ক্লাস নেই তাদের। তবুও সান্ত্বনা এই ভেবে যে, স্যারের স্কুলে পড়ছি।
বেশ কয়েকদিন হল তারেক সাহেব যোগদান করেছেন ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। এখানের সব কিছুর সাথে মোটামুটি মানিয়ে নিয়েছেন তিনি। ক্লাস রুটিনও পেয়েছেন। অবশ্য তাঁর প্রিয় বিষয়ের ক্লাস একটাও পাননি বলে কিছুটা মনে কষ্ট। তারপর নিজেকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। সেদিন ছিল সোমবার। রুটিন অনুযায়ী ৪০৮ নং কক্ষে দশম শ্রেণির উচ্চতর গণিত ক্লাস। জনাকয়েক ছাত্রী গন্ডগোল করছে। অন্যভাবে বলা যায়, অপেক্ষা করছে স্যার আসার। তারা তখনো জানে না কোন স্যার ক্লাস নিবেন। তবে এটা জেনে ফেছেন নতুন শিক্ষকদের মধ্যে কেউ আসবেন তাদের ক্লাসে।
৪০৮ নং কক্ষে ঢুকলেন তারেক সাহেব। দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক বেশ কিছু খারাপ মন্তব্য শুনেছেন তারেক সাহেব। যেমন তারা দুষ্টামী করে। নতুন শিক্ষককে সহজে গ্রহণ করতে পারে না। এর সত্যতা বুঝতে সময় লাগল না তারেক সাহেবের। তবে তিনি প্রথম দিন শেষে বুঝতে পারলেন এদেরও গ্রহণ করার ক্ষমতা আছে। তবে তাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে সময় লাগবে। প্রথম ক্লাস ভেবে তারেক সাহেব তাদের উদ্দেশ্যে কিছু নীতিকথা শোনালেন। কে কার কথা শোনে। যার যার মত সেই সেই। এই বাস্তবতাকে বিশ্বাস করতে পারেননা তারেক সাহেব। তিনি মনে করেন তাঁর আদর্শে অন্যদের তাঁর মনের মত গড়তে পারবেন। এই ব্যাপারে তিনি ততটা সফল না হলেও একেবার ব্যর্থ হননি।
বুধবার। ঐ সপ্তাহের শেষ ক্লাস তারেক সাহেবের সাথে দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের। বিগত দিনের পড়া আদায় করতে হবে এই মানসিকতা নিয়ে শ্রেণিতে প্রবেশ করলেন। সকলেই যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করল। তারপর অমনোযোগি। ইতোমধ্যেই ওদের নাম জেনে নিয়েছে তারেক স্যার। অনামিকা ইংরেজি খাতা খুলে কি যেন লেখছে। তারেক সাহেব নিষেধ করলে অনামিকা বলল,
স্যার, আর এক মিনিট লাগবে।
বেশ কিছুটা সময় কেটে গেল। তবুও ইংরেজি খাতা বন্ধ করল না অনামিকা। মেজাজ খুব খারাপ হল তারেক সাহেবের। এটা আবার কেমন অভদ্রতা। উচ্চতর গণিত ক্লাসে ইংরেজি বের করে কাজ করা। তাহলে উচ্চতর গণিত থেকে ইংরেজিটাই জরুরী ওর কাছে। নিজেকে অপমানিত বোধ করলেন তারেক সাহেব। তারপর সকলের কাছে বাড়ির কাজ দিতে বললেন। কেউ কাজ করে আনে নাই। কিন্তু সবাই বলল, স্যার আপনি তো কাজ করতে দেন নাই। এই কথা শুনে মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেল তারেক স্যারের। ক্লাসের ফাস্ট গার্ল স্বর্ণালী স্যারের ভাবমূর্তি বুঝে বলল,
হ্যাঁ, মনে পড়েছে। আপনি আমাদের অংক করতে দিয়েছিলেন। কিন্তু অংকগুলো তো পারি না স্যার।
বাহ্ চমৎকার কথা সাজিয়েছো। এতক্ষণ তো মনেই ছিল না। এখন আবার বলছো হ্যাঁ দিয়েছিলেন স্যার। বেশ পারো। তোমাদের লেখাপড়া হবে না কোনদিনই।
এতক্ষণ চুপচাপ থাকা উর্মি নামের মেয়েটি বলল,
আসলে স্যার, আমাদের ..........।
উর্মি আরো কিছুই বলার আগেই তারেক স্যার অনামিকার একই অবস্থা দেখে প্রচন্ড রাগান্বিত হয়ে বললেন
চুপ কর। থাপরা সবগুলো দাঁত খুলে ফেলা দরকার। কি সব বেয়াদব মেয়ে গো, একটু চিন্তা করতে পারে যেহেতু বাসায় অংকগুলো করিনি; এখন একটু চেষ্টা করি। তা না করে ইংরেজি লেখে। কত বড় সাহস। (অনামিকার দিকে তাকিয়ে) বন্ধ কর তোমার খাতা।
অনামিকা বলল,
স্যার আপনি এত রেগে যাচ্ছেন কেন? অংক তো করেছিই। এই যে দেখুন।
অনামিকা ব্যাগের মধ্যে হাত দিয়ে কয়েকটা খাতা বের করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বলে,
ও স্যার, ভুল করে বাসায় রেখে এসেছি।
স্বর্ণালী অনামিকাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
তুই চুপ কর অনামি।
তারেক স্যার আর কোন কথা বলেনি সেদিন ক্লাসে। ওদের কারো দিকে তাকায়নি। শুধু আসার সময় এক নজর তাকাতেই তিনি লক্ষ্য করলেন উর্মির চোখে অশ্রু। তখন তিনি রাগে টগবগ করছেন। ওর চোখের জল তার মন কাড়তে পারে নাই।
উর্মির কান্না কেউ থামাতে পারছে না। স্বর্ণালীসহ সকলেই ওকে সান্ত্বনা দিলেও কোন কাজ হচ্ছে না। ওর চোখ দিয়ে অঝর ধারায় পানি গড়িয়ে পড়ছে। উর্মিও কিছুতেই নিজেকে বোঝাতে পারছে না। কেন স্যার আমাকে রাগ করল? আমি তো তেমন কিছু বলিনি। স্বর্ণালীও এই কথাই ওকে বলে তুই তো কিছুই করিস নি, সব দোষ ঐ অনামিকার। নতুন স্যার তাঁর সাথে এমনটা না করলেই পারতি। অংক করিসনি ভালকথা। অস্বীকার করলি কেন? এটা ঠিক করিসনি অনামিকা। এভাবে অনামিকাকে যাচ্ছেতাই ভাবে বকাবকি করল সবাই। কিন্তু উর্মিকে বোঝাতে পারল না কেউ। চোখের অশ্রুতেই স্কুলের সময়টা অতিবাহিত করল উর্মি। স্যারের ঐ কথাটি ওর সারাজীবনের প্রথম প্রাপ্ত শাস্তির মত মনে হল। কিছুতেই ঐ মুহূর্তের কথা ভুলতে পারলো না উর্মি। স্যারের ঐ রাগান্বিত মুখোদর্শন তার জীবনে যে আর কখনো না ঘটে।
স্কুলের ক্লাস শেষে বাসায় ফিরে সারাটা দুপুর ভাবে আজকের উচ্চতর গণিত ক্লাস নিয়ে। কেন শিক্ষার্থীরা তার সাথে এমনটি করল। তারপর হঠাৎ অন্তর্দৃষ্টিতে এল উর্মির চোখের কয়েক ফোঁটা অশ্রু। ভাবনায় এল উর্মি। কেন মেয়েটাকে এভাবে বলতে গেল। আসলে সমস্যা ঐ অনামিকা। মেয়েটা বড্ড বেশি কথা বলে। আসলে ও মানুষকে রাগাতে ওস্তাদ। তবে শিক্ষক হিসেবে ওদের আরো সহনশীলভাবে গ্রহণ করা উচিৎ ছিল তারেক সাহেবের। কিন্তু কিভাবে যে এ রকম হয়ে গেল তা বুঝতে পারল না তারেক সাহেব। শিক্ষকতা জীবনের এই দীর্ঘ সময়ে কখনো এ রকম সমস্যায় পড়তে হয়নি তারেক সাহেবকে। মনে মনে ভাবল পরবর্তী ক্লাসে ওদের সাথে একটা কম্প্রোমাইজ করে নেবে। ওরাও নিশ্চয় বুঝে নিয়েছে স্যারের সাথে এমনটি করা উচিৎ হয়নি।
তারেক সাহেব অপেক্ষা করলেও সময় তার কাজের জন্য তাগিদ দেয়। বের হয় শিক্ষার্থীদের বাসায় পড়াতে। সাধারণত রাত ৮ টার দিকে তারেক স্যার পড়াতে যান সিনতাহাদের বাসায়। কিন্তু সেদিন কেন জানি মনের অজান্তেই কলিং বেলের শব্দ সৃষ্টি করলেন সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে। দরজা খুলে তো সিনতাহা অবাক। এই অসময়ে স্যার এসেছেন। সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত সিনতাহা। আরো অবাক হওয়ার বিষয় ঘরে উর্মি এসেছে। সিনতাহা অবশ্য আগেও উর্মিকে জানিয়েছে ও তারেক স্যারের কাছে পড়ে। কিন্তু স্যার জানে না উর্মির সাথে তার এভাবে দেখা হবে। দরজা খুলে হা হয়ে থাকে সিনতাহা।
ওর এই অবস্থা দেখে তারেক সাহেব বলেন,
কি ব্যাপার মা, ভেতরে ঢুকতে দেবে না?
আপনি এই অসময়ে? জিজ্ঞাসু মনে বলে ফেলে সিনতাহা।
ভেতরে প্রবেশ করেন তাকের স্যার। দাঁড়িয়ে সালাম দেয় একটি মেয়ে। যাকে দেখে অবাক হয় তারেক স্যার। এমন কি বিশ্বাস করতে পারে না উর্মি এখানে আসতে পারে। তবুও সত্যি। তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে উর্মি নামের সেই মেয়েটি। যে কিনা ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে দশম শ্রেণির উচ্চতর গণিত ক্লাসের সেই মেয়েটি। যার চোখের অশ্রু এখনো জলজল করছে হয়ত। এ অশ্রু একজন শুধু দেখতে পারছে। তারেক স্যারের সাথে সেদিন অনেক আলাপ হয় উর্মির। উর্মির প্রতি স্যারে অবিচারের কথাও বলেন। কিন্তু সব কিছুই অনামিকার কারণে হয়েছে। উর্মির কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন অনামিকা সবার সাথেই ওরকম করে। কেউ কিছু বলে না তাই। স্যারের সাথে কথা বলে সকল অভিমান দূর হল উর্মির। তার প্রতি আর কোন রাগ রইল না। বরং স্যারের প্রতি এক ধরণের মায়া জন্মে গেল। কেন জানি তাকে অতি চেনা এবং অতি আপনজনদের একজন ভাবতে শুরু করল উর্মি। অবসান হল স্নেহের দূরত্বের।
উর্মির সাথে আর প্রতিনিয়ত দেখা হয় না তারেক সাহেবের। মাঝে মাঝে সিনতাহার কাছে উর্মির খবরাখবর জানতে পারে। সেদিন সিনতাহাকে বললেন উর্মিকে দেখা করতে সেই হাস্যোজ্জল মুখ নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে উর্মি বলল,
কেমন আছেন স্যার?
মৃদু হেসে তারেক স্যারের জবাব
ভাল। তুমি ভাল তো?
জ্বী। লেখাপড়া কেমন হচ্ছে?
আপনার দোয়ায় ভাল। স্যার আমাদের ডেকেছিলেন কেন?
তোমাকে দেখার জন্য, তোমার খোঁজ নেওয়ার জন্য।
সত্যিই।
হ্যাঁ কেন বিশ্বাস হয় না?
তা নয়। ভাবছি এত বড় সোভাগ্য আমার।
আসলে তা নয়। তোমাকে একটা জিনিস দেবার জন্য।
তারেক স্যার ড্রয়ার থেকে একটা বড় আকারের ছবি বের করে উর্মির দিকে এগিয়ে দেয়। উর্মির উৎসুক চোখ জানতে চায় ছবিটি কার। তারেক স্যারের ছোট জবাব ছিল আমার মেয়ের। উর্মি খুব খুশি হয়। একজন ছাত্রী ছবিটা কার জানতে চায়লে উর্মি নি:সংকোচে উত্তর দেয় আমার আমার ছোট বোন। অবাক বিস্ময়ে উর্মির দিকে তাকিয়ে থাকে তারেক সাহেব। সেই দৃষ্টি কতক্ষণ স্থায়ী ছিল তা জানা নেই কারোর। তবে আজীবন থাকবে সেই স্নেহের দৃষ্টি তার মেয়ে উর্মি।
প্রায় এক মাস যাবৎ দশম শ্রেণির কোন ক্লাস নেন না তারেক স্যার। শনিবার দশম শ্রেণির সাধারণ গণিত ক্লাস। নির্ধারিত শিক্ষক ছুটিতে থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই দায়িত্ব বর্তায় তারেক স্যারের উপর। ক্লাসে যান তিনি। পূর্বের স্যারের নির্দেশ মোতাবেক কয়েকটা অংক করতে দেন শিক্ষার্থীদের। কয়েকজন দেখাতে সক্ষম হয়। বাকিরা ব্যর্থ। তবে যারা অংক করতে পারে তাদের মধ্যে উর্মিও ছিল। কিন্তু সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতি ছিল যা সকল শিক্ষক এড়িয়ে চলেন। তারেক স্যার মনে করেন ভাল শিক্ষার্থীদের এ সম্পর্কে ধারনা পাওয়া দরকার। তাই তিনি সকলের উদ্দেশ্যে খুঁটিনাটি বিষয়গুলো দেখাতে শুরু করলেন। ইতিমধ্যে স্বর্ণালী বলল,
স্যার এগুলো না করলে কোন সমস্যা হবে কি?
না না কোন সমস্যা নেই। তবে এ জন্য নম্বর কাটলে কিছুই করার নেই।
অনামিকার সেই বেশি বলার তালে স্যারকে উদ্দেশ্য করে বলা
তাহলে তো দেখছি আপনার কাছ থেকে এখন আবার নিয়ম শিখতে হবে।
তারেক স্যার কথাটি শুনেছেন। তবে না শোনার ভান করে ক্লাস শেষ করে এসেছেন। রাগ হয়েছিল। কিন্তু উর্মির উদ্দেশ্যে নিয়ম দেখালেন বিধায় অনামিকাকে কিছুই বলেননি তারেক স্যার। বুঝতে পেরেছিলেন অনামিকা তাকে সহ্য করতে পারে না। হয়ত একদিন পারবে। অপেক্ষার সেই প্রহর কবে শেষ হবে তার প্রতীক্ষা করবেন তারেক সাহেব।
স্যার বের হওয়ার পর দশম শ্রেণিতে শুরু হল প্রচন্ড মল্লযুদ্ধ। উর্মির চিৎকারে সবাই স্তম্ভিত হয়ে গেল। অনামিকার সাথে তো উর্মির প্রচন্ড ঝগড়া। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছে না। এমন কি এই যুদ্ধে স্বর্ণালীও যোগ দিল। একে একে ক্লাসের সকল মেয়েরা যোগ দিল। বিষয়টা পাশের ক্লাসের মেয়েদের মধ্যেও জানাজানি হয়ে গেল। ঝগড়ার ধরনটা ছিল ঠিক এ রকম -
উর্মি বলে
স্যারের সাথে এভাবে কথা বলা তোর ঠিক হয়নি অনামিকা।
ঠিক বেঠিক তোর থেকে কম বুঝি না।
বেশি বুঝিস বলেই তো তোকে এসব বলা বাদ দিতে হবে।
স্বর্ণালী বলে
তোকে স্যারের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তোর দরকার হলে তুই যাবি। আমি এর কোন প্রয়োজন মনেকরি না।
উর্মি উত্তেজিত হয়ে বলে
তোর মত অভদ্র বাজে মেয়ে আমার জীবেন দেখিনি। কেন যে তোর সাথে বন্ধুত্ব হয়েছিল?
বন্ধুত্ব না রাখলে না রাখবি।
দরকার নাই তোর সাথে বন্ধুত্ব।
অত দেমাগ দেখাস না উর্মি। স্যার তোর কি হয়? দরদ উথলে ওঠে। তার জন্য তোর অত দরদ কিসের?
স্যার আমার অনেক কিছু হয়।
তোর অনেক কিছু হয় তুই ক্ষমা চেয়ে নিস। আমার যার তার সাথে অত সম্পর্ক দরকার নেই।
চিৎকার দিয়ে উর্মি বলে
খবরদার অনামিকা যার তার বলবি না।
কেন উনি কি তোর বাপ লাগে?
হ্যাঁ, লাগে। তাতে তোর কি?
তাহলে তুই যা। তোর বাপের কাছে তুই ক্ষমা চেয়ে আয়।
বেশ তাই যাচ্ছি। স্বর্ণালী যাবি আমার সাথে?
স্বর্ণালী ও উর্মি ক্লাস থেকে বের হয়ে যায় তারেক স্যারের খোঁজে। চার তলায় শিক্ষক মিলনায়তনে গিয়ে জানতে পারে তারেক স্যার কোন কাজে বাইরে গেছেন। ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে উর্মি ও স্বর্ণালী। মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় উর্মির।
গত দিনের ঘটনা সারারাত বাসায় ভেবেছে অনামিকা। তারপর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর এ রকম আচরন করবে না তারেক স্যারের সাথে। পরদনি স্কুলে এসে তারেক স্যারকে হন্য হয়ে খুঁজেছে। এখনো আসেননি তিনি। উর্মি ও স্বর্ণালীকে বলে তোমরা কি তারেক স্যারকে দেখেছো। উনার কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নেবো। আসলেও আমার এ রকম করাটা ঠিক হয়নি। অনামিকার কথায় খুব খুশি হয় উর্মি। নিজেকে ধন্য মনে করে। উর্মির মনে হয় এই মুহূর্তে যদি স্যারকে বাবা বলে ডাকতে পারতাম! যদি বলতে পারতাম দেখো বাবা তোমার মেয়েরা তোমার আশির্বাদ নিতে এসেছে! ওদের ভাবনায় বাঁধা দিতে এল হাঁফাতে থাকা সিনতাহা। উর্মি বলল
কি রে সিনতাহা, এত হাঁফাচ্ছিস কেন? কি হয়েছে?
সিনতাহা হাঁফাতে হাঁফাতে বলে
তাড়াতাড়ি চল। সবাই বড় রাস্তার দিকে যাচ্ছে।
অনামিকা বলে
কেন?
তা জানি না। তবে শুনলাম, আমাদের স্কুলের কে যেন এ্যক্সিডেন্ট করেছে।
সবাই তাড়াতাড়ি ছুটে চলল বড় রাস্তার দিকে। রাস্তায় প্রচন্ড ভীড়। বন্ধ হয়ে আছে যান চলাচল। উত্তেজিত জনতা বেশ কয়েকটা গাড়িও ভাংচুর করেছে। সমস্ত এলাকা জুড়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী দলের লোকজন কর্তব্যরত আছে। রাস্তার চারিদিকে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকবৃন্দ। দুর্ঘটনা কবলিত স্থান ঘিরে রয়েছে সকল জনতা। ভীড় ঠেলে যাওয়ার মত কোন পরিস্থিতি নেই। পেছনে দাঁড়িয়ে আছে ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থীবৃন্দ। তাদের এক পাশে উর্মি, অনামিকা, স্বর্ণালী, সিনতাহা। ওরা চারজন চুপচাপ। এখনো জানতে পারে নাই কে এ্যক্সিডেন্ট করেছে। মহাপরিচালক স্যার এসে বললেন তোমরা কি দেখেছো? ওদের না জবাবে তিনি দেখার জন্য সুযোগ করে দিলেন। সবাই যাচ্ছে লাশ দেখতে। কিন্তু উর্মির পা কেন জানি চলছে না। ওর গা শির শিরিয়ে উঠছে। সারা শরীর যেন মুহূর্তে ঠান্ডা হয়ে গেছে। চোখ বন্ধ করে আছে উর্মি। অনামিকা, স্বর্ণালী ও সিনতাহা ওকে এক প্রকার টেনে নিয়ে আসে লাশের কাছে। উর্মিকে বলে চোখ খুলতে। উর্মি চেষ্টা করছে আপ্রাণ। কিন্তু পারছে না কিছুতেই। কানে একবার শব্দ এল তারেক স্যার নামটি। উর্মির কান যেন বধির হয়ে যাচ্ছে। ও আর কিছুই শুনতে চায় না। বান্ধবীরা আবার উর্মিকে চোখ খুলতে বলে। উর্মি তো পারবে না চোখ খুলতে। ও চোখ যে স্নেহের ছায়ায় বাঁধা পড়ে আছে। উর্মির চোখ থেকে অশ্রু বেরিয়ে এসে ওর ওষ্ঠে মৃদু আঘাত করে বলে ও মুখের ভাষা কি বোবা হয়ে গেছে? তোমার বাবাকে ডাকবে না? সে যে চলে যাচ্ছে দূরে। তোমার জীবন থেকে সে হারিয়ে যাচ্ছে। তাকে ফেরাতে ডাকবে না তুমি? উর্মির ঠোঁট দুটো মূহূ মূহূ বিশ হাজার কম্পাঙ্কের উপরে শব্দ করে ডাকছিল বাবা.. আ ... আ...। কেউ শুনতে পায়নি সে শব্দ্ শুনবেও না কোনদিন। যার শোনা উচিত ছিল সে তো মিশে গেছে রাস্তার পিচের সাথে রক্তাক্ত হয়ে।
উর্মির অশ্রু তারেক সাহেবের রক্তের সাথে মিশে লুটোপুটি খেল। তৎক্ষনাৎ কেঁপে উঠল সারা পৃথিবী। মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল পাখিদের কলরব, আকাশের মেঘেরা ছুটে এল সূর্যের অহমিকা নস্যাৎ করতে। প্রকৃতির নিরবতায় সাড়া দিয়ে বৃষ্টির বারতা জানিয়ে দিল উর্মি তুমি কেঁদো না। তোমার শব্দ কেউ না শুনলেও বিধাতার রাজ্যের সকল বাবারা বুঝতে পেরেছে। সকলে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। কিন্তু উর্মি কি করে ফিরবে? কি করে তাঁকে রেখে যাবে, যাঁকে এখনো বলা হয়নি সেই কথাটি; বাবা। পারবে না বলতে আর কোনদিন। কখনো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি besh sundor golpo ...valo legechhe...............dhonnobad polash vai apnake.......
মামুন ম. আজিজ একটু ঢিলেতালে এগিয়ে গেলেও লেখনি ভাল
মোঃ আক্তারুজ্জামান প্রচন্ড আবেগ দিয়ে লেখা সুন্দর গল্প|
সূর্য চমৎকার একটা গল্প। বেশ ভালো লাগলো।
স্বাধীন কিশোর আবেগের সুন্দর গল্প, আর ছোট ছোট বাক্যে একেবারে ক্লাশের পরিবেশটা জীবন্ত হয়ে উঠেছে। তারেক স্যার এর চরিত্রটা আরেকটু পরিস্ফুটিত হওয়ার সুযোগ ছিল।
মাহবুব খান অনবদ্য / বেস ভালো আপনার গল্প
আহমেদ সাবের ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের এই অবক্ষয়ের যুগে এ গল্পটা বাতিঘরের মতই উজ্জ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। গল্পকারকে অভিনন্দন এমন একটা সুন্দর গল্প উপহার দেবার জন্য।
জাকিয়া জেসমিন যূথী খুব সুন্দর একটি লেখা। গল্পেও টেনে এনেছেন ভিন্নতা। ভালো লাগলো।
কবিতার ভীড়ে গল্পের হারিয়ে যাচ্ছে . তবুও আপনি কষ্ট করে পড়েছেন বিধায় আপনার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি জুইফুল.
বিষণ্ন সুমন খুব সুন্দর গল্প ! গুরু তথা শিক্ষক হচ্ছেন দ্বিতীয় জন্মদাতা! কাজেই শিক্ষকের প্রতি এমনতর ভালবাসা ও শ্রদ্ধা অবশ্যই থাকা উচিত ! ওরা চারজনের শিক্ষকের প্রতি ভালবাসার পথে মনস্তাত্ত্বিক চিন্তা চেতনা অনেক ভালো লেগেছে ! আহা এমন করে যদি সবাই ভাবত ! ধন্যবাদ লেখককে !
আমার গল্প পড়ার সময় যারা পাবেন না তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন কেন যে কথা এখনো বলা হয়নি. আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সুমন ভাই.

২২ নভেম্বর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪