আবু মিয়ার বয়স এখন চল্লিশ পেরিয়েছে। নিত্যদিনের মত আজও কারণে, অকারণে তার বৌ , বাচ্চাকে পিটাচ্ছে। এ যেন তার জীবনের এক রুটিনওয়ার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাড়াময় অস্থির করে তুলেছে। জীবনের উদ্দেশ্য ঠিক নেই, নেই কোন কর্ম করে উপার্জন করার ক্ষমতা। সংসারে অভাব-অনটন, মেজাজ খিটখিটে, অস্থির, হতাশ ! শর্টকাট ব্যবস্থায় বৌ এর বাপেরটা জোর করে আনা ছাড়া তার আর কোন গতি নেই।
চমকে উঠলাম ! তাকিয়ে দেখি, আমাদের দেশটার বয়সও এখন ৪০!
প্রশ্নবোধক চিহ্নটা আমার মাথাটায় একটা চাটি মেরে বলল, এত ভাবছিস কি রে !
-এটাই তোর পরিপূর্ণ সোনার বাউলাদেশ।
না, না, এটুকু সব নয় ।
-বোকা, কোথাকার। মাথাটাই সব । অন্যান্য অর্গানের আর কি কিচ্ছু করার আছে ?
নাহ! প্রশ্নবোধক চিহ্নগুলোকে ঝেড়ে ফেলে দিলাম। আমি ২১০০ সালের বাউলাদেশের শিশুদের জন্য এসব নেগেটিভ ইতিহাস লিখতে কলম ধরিনি। আমি জানি, আমার গোবরসর্বস্ব মাথায় সব সময় “পজিটিভ” ভাবনাটাই আগে আসে। কাংগালের ভাবনা তো ! তাই সব ভাবনাগুলো এলোমেলো হয়ে শেষে কর্পুরের মত উদ্বায়ী হয়ে যায়।
অনেকদিন যাবৎ বিচিত্রধরনের প্রশ্নবোধক চিহ্ন মাথার চারপাশে উঁকি ঝুঁকি মারছে আর খালি গোবরপূর্ণ মাথাটার উপর চাটি মারছে । স্বাধীন দেশটার যৌবন পার হয়ে চল্লিশে ঠেকেছে । আমার দেহটাকেও এনে দিয়েছে যেন প্রৌঢ়ত্বের দ্বার প্রান্তে। খবরের পাতা যে এত বিভৎসভাবে আয়নার মত চোখের সামনে ভেসে উঠতে পারে, ভাবতেও গা শিউরে ওঠে ! আর্কাইভে সংরক্ষিত গত ৪০ বছরের অধিকাংশ পত্রিকার ৪৮ থেকে ৪৫০ ফন্ট সাইজের সাদা, কালো, লাল, নীল, সবুজ নানা রঙ-বেরঙের হরফে লেখা লোম হর্ষক শিরোনামগুলো এখানে তুলে ধরলে কয়েকশত পৃষ্ঠার মজাদার একটা বই হয়ে যেত। খুব পাবলিসিটি পেতাম হয়তো। এত বেশী নেগেটিভ শিরোনাম ! ! ! বিবেক বিরুদ্ধচারণ করে বসে।
আমার ঘুমন্ত বাচ্চাটার দিকে পলকহীন তাকিয়ে আছি । এ কোথায় জন্ম হল ওর ! বাচ্চার মা একটা ধাক্কা মেরে আমাকে বলল,
-কী হ্যাংলাপনা ! এভাবে কেউ বাচ্চার দিকে চেয়ে থাকে ? এতে বাচ্চার ক্ষতি হয় ।
আমি তার এ কথার কোন জবাব দিলাম না।
আচ্ছা এমন হলে কেমন হত ? আজ থেকে খবরের কাগজে নেতিবাচক শিরোনাম এর ফন্ট সাইজ হবে “৮” থেকে “১২” এবং অতি নগন্য হলেও যে কোন ইতিবাচক খবরের শিরোনাম “৪৮” থেকে “৪৫০” সাইজের।
সহকর্মী কথাটা শুনেই বলল,
-মহা পাগোল ! এডিটরের কানে গেলে হয়, চাকরীটা হারাবে বাপ ধন ।
এরকম একটা সতর্কবাণী আমার কোন অনুভূতিতে সাড়া সাড়া জাগাল না । কম্পোজারকে বললাম,
আমার রিপোর্টগুলো অন্তত এভাবেই করা হোক। তিনি বললেন,
-এডিটরের এ্যাপ্রুভাল লাগবে।
গেলাম সাহস করে । এডিটর সাহেব আমার দিকে চোখ বড় বড় তাকালেন । রাগে ফোঁস ফোঁস করছেন। কিছুক্ষণ পরে একধরনের চারাপেয়ে প্রাণীর মত দাঁতগুলোর প্রদর্শনী করলেন। গাঢ় খয়ের রঙের তেতুলের বিচির মত দাঁতগুলো খিচিয়ে বললেন,
-এটা একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আপনার মামু বাড়ি না। মিয়া, বেতনটা যে পান, কোত্থেকে আসে, তা ভাবেন কখনো ? যত্তসব ! যান, যেভাবে কাজ করছিলেন, করেন। ভাল না লাগে, সরে পড়েন। ডিসটার্ব করবেন না।
অনেক রাত অব্দি দু’চোখের পাপড়ি একে অন্যের সাথে আলিংগন করলনা। অন্ধকারে মশারীর ছাদের উপর এডিটরের দাঁতগুলো যেন নানা রকম অংগভংগিমায় আমার দিকে তেড়ে আসছে । ক্লান্তি এসে ভর করেছে সারা দেহ জুড়ে। আজ এত হেটেছি যে, পুরো শরীর প্রচন্ড ব্যাথা করছে । মনে হচ্ছে যেন দেহের উঠোনে এক হালি গরু ঘুরে ঘুরে ধান মাড়াই করছে। ঘুমের রাজা বরাবর আবারো বিনীত প্রার্থনা জানালাম ।
ব্যাপার কি ! এ কোন দেশ ?
-কেন ? চিনতে পারছিস না ? এটাই তো আমাদের সোনার বাউলাদেশ ।
দুত্তরি । কি যে বল না, তুমি ? এই বুঝি আমাদের সেই বাউলাদেশ!
-আরে, হ্যা ।
কি করে বিশ্বাস করব, বল ? যান যট নেই। রাস্তা বন্ধ করে নেতাদের মিছিল , মিটিং নেই। মানুষের এত কোলাহল নেই। সবাই কেবল কাজ আর কাজ করে যাচ্ছে। কেউ কারো সাথে কথা বলার সময় পাচ্ছেনা। জাপানের মত মনে হচ্ছে। এতদিন হয়ে গেল একটা হরতাল হল না। টি, ভির সব চ্যানেল একযোগে যেন পাল্লা দিয়ে সরকারী খবর পড়ছে। কে, কতটা স্তুতি গাইতে পারে- এ যেন তারই প্রতিযোগীতা চলছে। বিরোধী দলকে ঠেংগানোর কোন খবর নেই, বিরোধী দলের সরকারকে টেনে নামানোর কোন প্রোগ্রাম নেই । এ তুমি আমায় কোন দেশে নিয়ে এলে ?
-কেন ? জাপান পারে , মালয়েশিয়া পারে, আর আমরা পারি না ? আমরা কি বদলে যেতে পারি না ? আমরা বদলে গেছি তো ।
বিশ্বাস হচ্ছে না।
-আমাদের এ ঘরটা দেখেও কি তোর বিশ্বাস হচ্ছে না ?
ওহ ! তাইতো। এই তো, আমার সেই পড়ার ঘরটা । আগের মতই আছে। আসলে চারদিকে এত সব চমক দেখে না, সত্যিই আমার মাথাটা আউলা ঝাউলা হয়ে গেছে । আচ্ছা, কি করে এটা সম্ভব হল ?
-কি করে আবার ! মানুষের চিরদিন এক রকম যায় না কি ? জাপান, মালয়েশিয়া পারলে আমরা কেন পারব না ? আর সবচেয়ে বড় কথা মানুষকে আল্লাহ যেভাবে দুনিয়া করতে বলেছেন, মানুষ এখন তা বুঝতে শিখেছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে ।
কে সে অভিভাবক ?
-অভিভাবক ? মানে ?
মানে , কে সেই নেতা ? যিনি আলাদীনের চেরাগটা দিয়ে তোমাদের এভাবে বদলে দিয়েছেন ?
-কে আবার ? আমরা সবাই । আমাদের এখন মূলত একক কোন অভিভাবক নেই। রাষ্ট্র পরিচালনায় একজন চালককে বসতে হয় তাই । এখন আমরা যোগ্য , শক্ত , সামর্থ একজনকে বসিয়ে দেই জোর করে ।
জোর করে কেন ? ইলেকশন হয় না ?
-না। সিলেকশন হয় । এখনকার যে সিষ্টেম , তাতে সহসা কেউ রাষ্ট্র পরিচালনায় যেতে চায়না।
এখানে সবাইকে যার যার কাজ করে খেতে হয়। তাই রাষ্ট্র চালানোর মত এতবড় আমানতদারী কাজ করতে এখন অনেকেই ভয় পায়। তবে যাই বলিশ, আমরা বেশ আছি ।
কী যে বলনা, এটা কি ছেলে ভুলানো গল্প বলছ ?
-তুই নিজেই দেখ দেশটাকে ঘুরে ঘুরে ।
তাইতো । আচ্ছা, কিভাবে সম্ভব হল ?
-কেন, তুই কি পড়িসনাই ? “ যে জাতি তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করে না, আল্লাহ কখনো তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেন না। ”
হ্যা , এতেই ? এটাতো আমাদের দেশে কেবল অফিস আদালতে ষ্টিকার সেটে দেয়া দেখা যেত, আর দেখতাম টিভি স্ক্রীনে। কিন্তু পরিপূর্ণ হুকুমতো কেউই পালন করত না। আর পরিপূর্ণ হুকুম পালনে ব্যর্থ মানুষরা তো কখনোই স্বার্থক হতে পারে না।
-সেটিই তো তোকে বলছি। তুই কি এখনো সে ব্যর্থতা এখানে দেখতে পাচ্ছিস ?
না, তা পাচ্ছি না।
-ব্যাস, তাহলে তোর সব প্রশ্নের মিমাংসা হয়ে গেল, কি বলিস ?
কিন্তু আর একটা প্রশ্ন রয়ে গেল যে ?
-বল ।
এখানকার মানুষগুলোর আকৃতি আগের চেয়ে অনেক ছোট মনে হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে, এটা বাউলাদেশ নয়।
-এটা কত সাল , জানিস ?
কত ?
-২১০০ সাল ।
তার মানে ?
আবির , এই আবির, আবির ? ওঠ, বাবা, কি হল ? কি সব বিড় বিড় করছিস ? ওঠ, সেহ্রী খাবার আর বেশী সময় নেই , ওঠ ?
আরো কিছুক্ষণ আলসে দেহটা বিছানায় এলিয়ে স্বপ্নটা মনে কের আনমনে বেশ খানিকটা হেসে নিলাম ।
সেদিনই রেজিগনেশন লেটারটা জমা দিয়ে ঘাড় থেকে যেন কয়েক টন বোঝা নামাবার আনন্দ পেলাম। জার্ণালিজমের উপর একটা স্কলারশীপ পেয়ে অনিচ্ছাস্বত্তেও অন্যের দেশে পাড়ি জমাতে বাধ্য হলাম।
---------------------------
দেশের মাটিতে পা রাখার একটা স্বাদই আলাদা। কিন্তু ইমিগ্রেশনের লোকজনের চেহারা সুরত আর তাদের কাজকর্ম দেখে কেমন যেন সন্দেহ হল, এটা আমাদের বাউলাদেশের রাজধানী তো ?
ওহ! কোনদিকে তাকানোর আর সময় নেই। চিত্রা এক্সপ্রেস বিমানবন্দর রেল ষ্টেশনে এসে দাঁড়াবে আর মাত্র পনের মিনিট পরেই। দ্রæত চলে এলাম ।
কিন্তু অবাক হয়ে গেলাম। এসব কি দেখছি ! যেদিকে তাকাই শুধু কংকাল আর কংকাল ! সন্দেহ হল। সত্যিই এটা আমাদের সেই রাফা শহর তো ? হ্যা, এইতো সাইনবোর্ডে লেখা রাফা বিমান বন্দর ষ্টেশন । তাহলে-----?
এরা সব আমার দেশের মানুষ ! না কি সুমালিয়ার মানুষ এদেশে চলে এসছে ! মাথাটা একটা ঝাকি মেরে সোজা হয়ে আবার দেখলাম।
ভুল দেখছি নাতো ? তবে কি, মোতিভ্রম ঘটল আমার !
সাদা, দামী, চকচকে পিরান পরিহিত সুঠামদেহী এক বয়োজ্যেষ্ঠকে জিজ্ঞেস করলাম,
আচ্ছা, আংক্ল, এটা রাফা বিমান বন্দর ষ্টেশন তো ?
চশমাটা একটু নাকের ওপর দিকে ঠেলে দিয়ে আমাদের স্কুলের পন্ডিত স্যারের মত চোক পাকিয়ে বললেন,
-দেকে তো মনে হয় ছিক্ষিত। একানে লেকা আচে , দেখতে পাচ্চেন না ?
ভাষাটা আমাদের প্রতিবেশী দেশের মেদিনি রাজ্যের মত । পোষাকের ধরন আর চেহারা সুরতের ভিন্নতা দেখে আগেই কিছুটা অনুমান করেছিলাম।
পন্ডিত স্যারের হাক ডাক শুনে যেমন পিলে চমকে যেত, ঠিক আর একবার যেন সেই ক্লাশের ছাত্র হয়ে গেলাম। একটু ভড়কে গেলাম। আর কোন কথা বললাম না।
যুবক কাউকে দেখতে পাচ্ছিনা। যা দেখছি তা সবই কেমন কংকালসার ক্ষুদ্রাকায় মানুষ, ঠিক সুমালিয়ার মানুষদের মত ।
সেরকমই একজনকে বললাম,
আপনি কি বাউলাদেশের মানুষ ?
অনেক কষ্ট করে আমার দিকে তাকিয়ে নির্জীব প্রাণীর মত মৃদৃস্বরে খাঁটি বাউলা ভাষায় বললেন,
- হ্যা ।
এটি কি সত্যিই রাফা শহর ?
বেচারা আমার দিকে বোকার মত কিছুক্ষণ চেয়ে থাকল । আমি ভাবছি সে বোকা। কিন্তু সে আমার কথার আর কোন উত্তর না দিয়ে প্রমাণ করল, আমার মত বেকুবের সাথে সে আর কোন কথা বলতে আগ্রহী না।
সাহস করে বয়োবৃদ্ধ আর একজন লোকের কাছে বিনয়ের সাথে জানতে চাইলাম,
আচ্ছা, এ অবস্থা কেমন করে হল ?
-কর্মুফল ! কর্মুফল ! বুঝলেন ? যেমুন কর্মু , তেমুন ফল ।
কর্মফল ? তার মানে ?
-মাইনে আবার কি ? আমরা যেমুন কর্ম কইরছি, তেমুন ফল পাইছি। বাপু, আপনের সাথে কথা কওনের সুমায় নাই, কামে যামু।
আপনার শরীরের এ অবস্থা ! এরকম শরীর নিয়ে আপনি কাজ করতে পারেন ? কি কাজ করেন ?
-ভদ্দুল্লুকদের “গু ” সাফ করি।
মানে ? সুইপার ? আপনি পারেন, এই শরীর নিয়ে ?
পারি, বাপু, পারি। পারতি হয় । না পাইরলে খামু কি ?
***
বাউলাদেশের অহংকার ময়না ব্রীজ ক্রস করার সময় টর্চটা জ্বালিয়ে নদীর বুকে মারলাম। দেখে অবাক হয়ে গেলাম! এত বড় বিশাল নদী ! কোথায় গেল ? পুরো সমতল ভূমি । ব্রীজের দু’পাশ ঘেষে ঘনজনবসতি। হায় ! এ কি !
আমার সন্তান যদি এখন আমার সাথে থাকতো, তাহলে সে নির্ঘাত আমাকে প্রশ্ন করত ,
আচ্ছা, বাবা, আগের দিনের মানুষ এত বোকা ছিল ?
কেন, বলতো ?
কেন আবার ? এই শুকনো মাটিতে এত টাকা খরচ করে ব্রীজ বানিয়েছে কেন ?
বোকার মত চেয়ে থাকলাম ধু-ধু বালু চরের দিকে ।
মা-বাবার কবর জিয়ারত করে দ্রæত ফিরে এলাম রাফায়। রুপমন্ডি, পরিধারা, দিলশান, চিনানী সহ সব অভিজাত আবাসিক এলাকায় আমাদের দেশীয় লোকজন খুব একটা দেখা গেল না। পরিচিতজন কাউকে পেলামনা। বাউলায় যারা কথা বলছেন তারা প্রায় সবাই সুমালিয়ানদের মত কংকাল । কোনরকম জীবন প্রদীপ জ্বলে আছে। শুকনো বিস্কুট, চিড়ে আর পানির বোতল নিয়ে জাতিসংঘের গাড়িগুলো এলেই এরা ঝাপিয়ে পড়ছে। একটু ছিটে ফোটা যদি পাওয়া যায় । এই কি আমার সেই বাউলাদেশ ! এ আমি কি দেখছি ! না, না, এ হতে পারে না। আমি বোধহয় ভুল করে সুমালিয়ায় ল্যান্ড করেছি।
কিন্তু---- ।
আমার কি মতিভ্রম হল ?
ইত্তেহাদ পত্রিকা অফিসের আর্কাইভ রুমে গেলাম।
“দেশের রাজনীতিদিরা এখনো ঘুমিয়ে ?”
“নিজ দেশে জংগীবাদের বিস্তার এবং আন্তর্জাতিক জংগীবাদের পৃষ্ঠপোষন করার দায়ে জাতিসংঘের অনুমোদন নিয়ে যৌথবাহিনী কর্তৃক বাউলাদেশে আজ থেকে সেনা মোতায়েন করা হল। শীঘ্রই এখানে একটা অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। ”
“যৌথবাহিনী কর্তৃক বাউলাদেশে সেনা মোতায়েন করায় কয়েকজন বিশিষ্ট প্রবীন রাজনীতিবিদ স্বপরিবারে আত্মহত্যা করেছেন ।”
আজ বাউলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলগুলো নিয়ে গঠিত“ড্রিমল্যান্ড” স্বাধীন হল। বর্তমান দুনিয়ার একমাত্র মোড়ল রাষ্ট্র মুক্তরাষ্ট্র এবং প্রতিবেশী দেশ ইংলিয়া প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছে।
“ পুরো দেশে এখন আর কোথাও নদীর অস্তিত্ব নেই। বিশেষজ্ঞরা অনুসন্ধান করছেন, নতুন এ মরু অঞ্চলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে সোনা এবং তেলের খনি মিলবে। ”
সম্পাদক সাহেবকে জিজ্ঞেস করলাম, একটা জাতি এত অল্প সময়ে এরকম একটা কংকাল জাতিতে পরিণত হয়ে গেল ?
সম্পাদক বিরক্ত হয়ে বললেন, আপনি কোত্থেকে এস্ছেন, হে ? এটা কত সাল জানেন ?
কত?
২১০০ সাল ।
অ্যা ! আমার বয়স তাহলে ১৫০ বছর !
না ,---- না,------ না ---- এ হতে পারে না। এ হতে পারে না -- ।
চিৎকার শুনে মা আমার কামরায় ঢুকে অস্থির হয়ে বললেন, কি রে, আবির ? কি হয়েছে , তোর ? কোন দুঃস্বপ্ন ?
আমি ফ্যাল ফ্যাল করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম মায়ের মুখের দিকে ।