তিন টি সেকেন্ড ও দেড় বছরের শিশু

গর্ব (অক্টোবর ২০১১)

md. eahia sarkar
  • ১৯
  • 0
সেদিন ছিল মঙ্গল বার। রোজার মাস। সামনে সবে কদর। তাই ঢাকা শহরে অতিরিক্ত লোকের চাপ। ফলে বাসে মানুষ ধরে না। প্রতিদিনের মত সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল সেরে অফিসে রওনা হলাম। রোজার দিনে ঘুম থেকে উঠা বেশ কষ্ট। তারপরও অফিসে যেতে হয়। তবে মেয়ে মানুষের জ্বালা পোহাতে হয় না। ঘরে আমার কেউ নেই। একাই থাকি। সবাই বলে বিয়ে করো না ভাই। বিয়ে করলে নাকি কষ্ট বেশী মেয়েদের উৎপাত সহ্য করতে হয়। হারিতে হয় স্বাধীনতা। অফিস শেষেই বাড়ী ফিরতে হয়। দেরি হলে কৈফিয়ত দিতে হয়। বিয়ে মানেই একটা জেল খানা। যেখানে নিজের ইচ্ছে মত কিছু করা যায় না। অবশ্য আমি এ কথা বলি না বিবাহিত মানুষের অভিজ্ঞতা এ কথা বলে। আমি ত জানি মেয়ে সাথী না থাকলেই নাকি স্বর্গও ভালো লাগে না। কিন্তু আমার আসের পাশের লোকজন যা বলে তাতে মনে হয় যদি তুমি কর বিয়ে যেতে হবে জেল খানায়। অবশ্য আমার দেখা এক বন্ধু আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস মেটদের কোন পাত্তাই দিত না। আর মেয়ে হলে ত কোন কথাই নেই। তাদের তাকিয়ে দেখত না। সে মাঝে মাঝে বলত তোরা আমার বন্ধু। সত্যিকার অর্থে সে প্রমাণ করেছে আমরা তার বন্ধু না। বিয়ের সময় কোন বন্ধুকে বলেনি। ক্লাসমেটদের সাথে মিশত না বলে যে নারীর প্রতি আকর্ষণ ছিল না তা নয়। একাধারে একই ক্যাস্পাসে দুটো প্রেম চালিয়ে যেত। অসাধারণ ক্ষমতা তার। খুব ভোর মানে কাক ডাকা ভোরে যেত একজনের সাথে ডেটিং করতে। দুই ঘণ্টা তার সাথে কথা সে করে চলে আসত আটটার আগে। কেউ জানেতেও পারত না সে কোথায় প্রেম করছে। আর একজনের সাথে করত বিকালে। অল্প হলে অনেকে জানত ওর সাথে ইয়ে আসে। এই ভাবে দিনের পর দিন মাসের পর মাস বছরের পর বছর প্রেম করে যেত । সেই বন্ধুটির অবশ্য বাস্তব জীবনের কোন মেয়েকে বিয়ে করা হয়নি। প্রকৃত পক্ষে যে মেয়েটিকে সে ভালোবাসতো শেষ পর্যন্ত ওকে ফাকি দিয়ে সে তার জুনিয়র একটি ছেলে বিয়ে করে। তারপর বন্ধুর আর দীর্ঘদিন বিয়ের পিরিতে বসা হয়নি। বিয়ের পরে স্ত্রীর এমন বস হলো চোখে না দেখলে বুঝা যাবে না। একদিন তার সাথে কথা বলছিলাম। অনেকদিন পর দেখা তাই একটু জমিয়ে কথা বলার ইচ্ছে । হঠাৎ একটি ফোন এলো ব্যস আড্ডা খতম। আমাকে বলল দোস্ত তোর ভাবীর ফোন আর দেরী করতে পারছি না। মনে হলো অফিসে বড় বস ফোন করেছে। সে আর এক মিনিটও সময় দিল না। আমি তার যাওয়া দেখে হাসলাম। আর ভাবলাম যে মেয়েদের কোন পাত্তাই দিতো না সেই ছেলে এখন মেয়ের ডাকে দৌড়। আমার সেই ভয়ে হয়ত আমার বিয়ে হয়ে উঠেনি। যদিও কোন মেয়ের দেখা পাইনি। আগ্রহ করে বলেনি এসো প্রিয় মোর এসো আমার ঘরে। বাসা থেকে বের হয়ে হাটতে হয় ৭ মিনিট। স্বাভাবিক নিয়মে হেটে চলে গেলাম ভিক্টোরিয়া পার্ক। থাকি পুরান ঢাকায় তাই সুন্দর রাস্তায় হাটার সুযোগ হয় না। পাতলা খান লেন দিয়ে সোজা ভিক্টোরিয়া পার্কে কাছে গিয়ে ৪/এ বাসে দৌড়াদৌড়ি ঠেলা ঠেলি করে বাস উঠলাম। একটা সিট অতি কষ্টে পেলাম। রায় সাহেব বাজার পার হয়ে তাতী বাজার বা বংশালের কাছে এলো গাড়ী। গাড়ী ভর্তি লোক উঠল। দাড়িয়ে লোক মনে হয় বেশী হবে বসার চেয়ে। ফুলবাড়িয়া এসে দাঁড়ালো গাড়ী । যাত্রী নামতেই আস্তে আস্তে চলছে। আমি বাহিরে তাকিয়ে আছি। তিন সেকেন্ডের একটি ঘটনা চোখে পড়ল। অবাক না হয়ে পারলাম না। প্রথমে দেখতে পেয়েছিলাম একটি দম্পতি রাস্তার পাশে পুলিশ বক্সের সামনে দিয়ে হাঁটছে। আমাদের গাড়ীটা ছিল ডানের দ্বিতীয় লেনে। দেখতে পেলাম মা পিছনে যাচ্ছে আর বাবা সামনে ছোট দেড় হতে দুই বছরের শিশু বুকে করে যাচেছ। ছেলে পিছনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমাদের গাড়ী ডানে থাকায় বামে কোন গাড়ী ছিল না আর আমি ঐ দম্পতি কে দেখতে পাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম বাম লেনে ৪/এ এর আরেক টা গাড়ী আমাদের গাড়ী ওভারটেক করার জন্য দ্রুত আসছিল। দেড় বছরের সেই শিশুটি বাবার কোলে থাকে হঠাৎ হাতের আঙ্গুল উঁচু করে মায়ের দিকে নির্দেশ করল। আমি দেখতে পেলাম মায়ের পিছনে একটি গাড়ীটি এসেছে গেছে। মাও শিশুটির হাতের নির্দেশ দেখে পিছনে তাকিয়ে দেখল গাড়ী। সাথে সাথে সরে দাঁড়াল। আমি দেখে অবাক। মনে হয় ঘটনাটি তিন সেকেন্ডের মধ্যে ঘটে গেল। আমার তখন গর্ব হলো। ঐ ছেলেটি জন্য যে তার মাকে বাঁচালো। আর একটু হলেই মাটি গাড়ীর সাথে ধাক্কা খাচ্ছিল। দেড় বছরের শিশুটিও বুঝতে পারছিল ঐ গাড়ীটি মাকে মেরে দিবে। হারাবে তার মাকে তাই আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল মা তোমার পিছনে গাড়ী। ততক্ষণে আমাদের গাড়ী টান দিয়ে সামনে এসেছে। আমি আর দেখতে পাইনি। গর্ব আমার ঐ সন্তানের জন্য। যে তার মাকে বাঁচালো। সে মৃত্যু কি জিনিস বোঝে না তার পর সে তার মাকে সর্তক করল মা তোমার পিছনে বাস। আমার মন গর্বে ভরে উঠল। এই ঘটনা টি আমি ছাড়া আর পৃথিবীর কেউ সাক্ষী নেই। বাবাও বুঝতে পারেনি ঘটনা কি ঘটেছে। আমার স্মৃতির পাতায় আজীবন ঐ শিশুটি মনে থাকবে। দোয়া করি ঐ শিশু যেন বড় হয়ে দেশ মাকে তার নিজের মায়ের মতই বাচায়। হে বাংলা মানুষ তোমরাও ঐ দেড় বছরের শিশুর মত তোমার দেশ নামক মাকে বাচাও যেমন ঐ শিশুটি তার মাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচালো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
প্রজাপতি মন আমীন। আপনার সাথে আমিও দোয়ায় শরীক হলাম।
মনির খলজি নিজস্ব জীবন অভিজ্ঞতার আলোকে মাকে ও একটি ছেলের তার মাকে বাঁচানোর আকুতি সুন্দর উপস্থাপনার লিখাটি বেশ ভালো লাগলো ....শুভো কামনা রইল !
সূর্য প্রকৃত পক্ষে যে মেয়েটিকে সে ভালোবাসতো শেষ পর্যন্ত ওকে ফাকি দিয়ে সে তার জুনিয়র একটি ছেলে বিয়ে করে >> এ বাক্যে পুরো অর্থ করলে লেখক যা বুঝাতে চাইছে তা কিন্তু আসে না। তারচেয়ে [প্রকৃত পক্ষে যে মেয়েটিকে সে ভালোবাসতো, শেষ পর্যন্ত ওকে ফাকি দিয়ে ওর চেয়ে জুনিয়র একটি ছেলেকে বিয়ে করে সেই মেয়েটি।]] পুরো লেখাটায় বাক্য বিন্যাসে এমন ত্রুটি বিদ্যমান। আর একটু মনযোগ প্রয়োজন ভাইয়া।
ফাতেমা প্রমি এইটা কি হইল!!! ''তবে মেয়ে মানুষের জ্বালা পোহাতে হয় না। ঘরে আমার কেউ নেই। একাই থাকি।''...। আজব, উদ্ভট এরকম কিছু কথার কি অর্থ আল্লাহ্‌ই জানেন! শেষের সাথে শুরুর কোন যোগসূত্র পাওয়া গেল না...।
জাকিয়া জেসমিন যূথী সত্যি অবাক করা! আল্লাহ শিশুটির মধ্যে মা'কে বাঁচানোর ক্ষমতা দিয়েছেন।
আহমেদ সাবের শিশুটা অবশ্যই গর্বের। লেখক গল্পের আঙ্গিকের দিকে একটু নজর দেবেন, আশা করি।
sakil সুন্দর শিক্ষনীয় কাহিনী
মিজানুর রহমান রানা চমৎকার লিখেছেন। তবে প্যারা করে লিখলে পড়তে আরামবোধ হতো। পরবর্তীতে তা করবেন। ধন্যবাদ।

১৩ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী