আমরা পারি।

বাংলা ভাষা (ফেব্রুয়ারী ২০১৩)

মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন
  • ১৫
  • 0
বাড়িটা নেহাত ছোট নয়।
গড়ান কাঠের খুঁটি সাজিয়ে তার উপরে মোটা করে মাটির প্রলেপ দিয়ে দেওয়ালগুলো বানানো হয়েছে। গোলপাতার ছাউনি। ভিতরে দুটো বড় আর একটা ছোট ঘর। ভিতরের কোন ঘরের দরজায় কপাট নেই, এমনকি পরদাও না।

বাড়ির সামনে পিছনে- পুব আর পশ্চিমে বাড়িটার সমান আয়তনের দুটো বারান্দা। সামনের রাস্তা থেকে গাছপালার ফাঁক দিয়ে দেখতে পাওয়া যায়- বারান্দার ডান দিকে বিশাল একটা কাঠের চৌকি- সেটাতে অবশ্য বিছানা পত্তর দূরের কথা, একটা মাদুরও পাতা নেই। সামনের একটা আমগাছের কারণে সেখানে রোদও নেই।

বামদিকে বারান্দার মাটির মেঝেতে একটা মাদুরে বসে ছোট একটা গামলা ঘিরে গুড় আর মুড়ি দিয়ে সকালের নাস্তা করে চলেছে তিনজন। তাদের সবার গায়েই চাদর জড়ানো- খাওয়ার চেয়ে তারা যেন শীতের সকালের রোদটাকে বেশী উপভোগ করছে।

রজব আলী মাষ্টার, বয়স চৌষষ্টি বছর, আজ প্রায় বারবছর ধরে মানময়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধানত অংক শিখিয়ে আসছেন। পাঁচফুট ছয় গাট্টাগোট্টা শ্যামলা মানুষটাকে একটু বেঁটেই বলা যেতে পারে। নিঁখুত ভাবে গোঁফদাঁড়ি কামানো মুখের ভাব শরীরের গঠনের তুলনায় অবাক হবারমত কোমল। মাথার চুলগুলো প্রায় সব সাদা।

তার গায়ের সাথে লেগে থাকা তিন বছর বয়সের মনি তার মেয়ে। আর তার কাছ থেকে সামান্য একটু দূরে বসে থাকা আট বছরের ছেলেটা মনির ভাই, আনিস। সে তার বাবার স্কুলের ছাত্র, মাস খানেক পরেই হয়তো ফাইবে উঠবে।

তাদের পিছনের বাঁশের চটার দরজাটা ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দে খুলে গেল। তিনজনে ফিরে তাকাল।
‘মা...।’ মুখ ভরা মুড়ি আর হাসি নিয়ে বলল মনি। মেয়েটা একটু ট্যারা, লক্ষ্মী ট্যারা । মায়ের মুখেও হাসি ফুটল।
‘এই নাও।’ সে এগিয়ে এসে রজব আলীর পাশে চটের ব্যাগে মোড়ানো বোতল আর টাকা রাখল। ‘মাছ এনো।’ ফিরে যেতে যেতে বলল।
‘আচ্ছা।’
আর ঠিক তখনই গাছপালার ফাঁক দিয়ে একজন যুবককে তাদের বাড়ির সীমানায় ঢুকতে দেখা গেল। ব্যাগ কাঁধে কাল চামড়ার স্যান্ডেল পায়ে যুবকের পরনে সাদা শার্ট আর কাল প্যান্ট। চুল ছোট করে ছাঁটা।
‘আস সালামু আলাইকুম, মাষ্টারসাহেব।’ তার দিকে তাকাতেই সে বলল।
‘ওয়ালাই কুমাস সালাম।’ হাসি মুখে জবাব দিল তার মাষ্টার।
‘কবে এলে? বসো, মুড়ি খাও।’ সে এগিয়ে এসে খুঁটির গোঁড়ায় ব্যাগটা নামিয়ে রেখে নিচেই দাঁড়িয়ে থাকল।

‘এইতো ট্রেন থেকে নেমে ভাবলাম আপনাকে একটা সালাম দিয়ে যাই।‘
‘বস।’ অনেকটা আদেশের স্বরে বলল। সারা রাত যাত্রা করে তাকে সালাম দেওয়ার জন্য তাকে অন্তত আধা মাইল পথ বেশি হাটতে হচ্ছে। এটা তার ভাল লাগেনা, কিন্তু ছেলেটা এই রকমই, অনেকবার বলেও কোন লাভ হয়নি।
‘যা তো আনিস, মুড়ি গুড় আর এক জগ পানি নিয়ে আয়। একটু চায়ের কথাও বলিস।’
মুড়ি বলতে গেলে আর ছিলই না। আনিস কোন কথা না বলে পাত্রটা নিয়ে ভিতরে গেল, তার পিছুপিছু গেল তার বোন।

‘...মাষ্টারসাহেব...।’
তার কাছে মনে হচ্ছে এই যেন সেদিনের কথা। হারুন মাঝি এই বাড়িতে এসে অনুনয় করেছিল।
‘আমার ছোট ছেলেটার লেখাপড়ার ভারী ইচ্ছা। বড়টাকে তো আমার কাজে লাগিয়ে দিয়েছি। এখনো পাকা মাঝি হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ছোটটা...।’
‘ঠিক আছে, ওকে স্কুলে ভর্তি করে দাওনা কেন।’ মাষ্টারসাহেব কিছুটা বিরক্ত হয়েই বলেছিল। এদের আবার লেখাপড়া। কদিন পরেই হয়তো আবার জাত ব্যবসায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
‘হায়! হায়!! আমার কি সেই কপাল আছে?’ সে নিজের কপালে চাপড় মেরে বলল। ‘আমাদের এক বেলা জোটে তো আর এক বেলা জোটেনা।’
‘খরচপাতি তো কিছু করতেই হবে। বেতনটা না হয় মাপ করিয়ে দিতে পারব, কিন্তু অন্যান্য খরচ আর বই খাতাপত্র? আমাদের স্কুলের অবস্থা যা, আমাদের বেতনটাও ঠিকমত ওঠেনা...।’
কিন্তু সে আর কিছু বলতে পারল না। চরম হতাশায় যেন লোকটার মুখ কুঁচকে গেল।
‘রাগের মাথায় ওকে আমি মার লাগিয়েছি।’ সে বলল। ‘গরীবের আবার ঘোড়ারোগ? কিন্তু তারপর ছেলেটার অবস্থা দেখে আমার...। মারখেয়ে বাড়ি থেকেই চলেগেল..।’
‘ঠিক আছে, ওকে স্কুলে আমার সাথে দেখা করতে বোল। কাল সকালের দিকে।’

...সেই ছেলের লেখাপড়া এখন শেষ পযার্য়ে। এম বি এ করছে।

‘তোমাদের ভারসিটি তো মাস কয়েক ধরে বন্ধ?’
‘কয়েকটা টিউশনি আছে,’ সে মৃদু হেসে বলল। ‘ওদের পরীক্ষা শেষ না করে...।’
‘তা ঠিক।’ মাষ্টার সাহেব কিছুটা আনমনে বললেন।

...সাড়েবারটা বেজে গেছে। স্কুল ছুটি হয়েছে আধাঘণ্টা আগে, এতক্ষণে রজব আলী মাষ্টারের চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু মাষ্টার কেরানি দফতরির কেউই যায়নি। চেয়ারম্যানের বাড়িতে আজ স্কুলের সবার- ছাত্রদের ছাড়া- দুপুরে খাওয়ার নেমন্তন্ন। মানুষটা খান্দানি- যে কোন একটা উপলক্ষ পেলেই তাদেরকে খাইয়ে থাকেন। আর যা কিছু হোকনা কেন, এই স্কুলের ব্যাপারে তার সম্ভবত কিছুটা মায়া আছে- কারণটা যদিও কারো জানা নেই। প্রথম দিকে স্কুলের দুর্দিনের সময় বলতে গেলে তিনি একাই এটাকে টিকিয়ে রেখেছিলেন।

উত্তরমুখি স্কুলটার সামনের দিকে মাঝারি ধরণের একটা খেলার মাঠ। তারপরেই স্কুলের সমান্তরালে ধূলায় ভরা পথটা আধা মাইল দূরের স্টেশনের বড় বাজারে গিয়ে উঠেছে। যার আরো সিকি মাইল দূরে রজব আলী মাষ্টারের বাড়ি।

টিচারস রুমের জানালার সামনে বসে সেদিকে তাকিয়ে কী যে ভাবছিলেন তিনি, তা হয়তো নিজেও জানেন না। কাজেই হঠাৎ যখন রাস্তার মাঝখানে হাঁটু পযর্ন্ত ধূলা ভরা পায়ে উঁচু করে পরা লুঙ্গি আর যেমন তেমন একটা জামা পরে বগলে কাপড়ের একটা থলে নিয়ে যে যুবকটা স্কুলের সামনে দিয়ে হনহন করে হেটে যাচ্ছে, তাকে তাঁর চিনতে পারা উচিৎ কি না তা নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে অজান্তেই মুখ হা করে ফেললেন। আর যুবকটা তখনই পাশ ফিরে এদিকে তাকাল।

মাঠের ভিতরে দুটো গরু চরছে আর সেগুলোর কাছেই গোটা পাঁচেক কাক কি যেন খুঁটে খাচ্ছে। মাঝেমাঝে কাকের ডাক ছাড়া কোথাও আর বিশেষ কোন শব্দ নেই, কিন্তু স্যারের হাঁ করা মুখ দেখে তার মনে হল, স্যার নিশ্চয় তাকে ডেকেছেন। সে বিব্রত ভাবে বামদিকে ঘুরে স্কুলের দিকে এগিয়ে চলল।

রজব মাস্টার উঠে দাঁড়ালেন। রুমের চারিদিকে একবার চোখ বোলালেন।
হেডস্যার তার নিজের টেবিলে খাতাপত্র নিয়ে ব্যস্ত। তাকে সাহায্য করছে এসিস্ট্যান্ট স্যার। আজাহার স্যার একটা ইংরেজি পেপার ব্যাক পড়ছেন। এই মানুষটা মাত্র আঠাশ বছর বয়সেই একজন তুখোড় শিক্ষক। বাকি দুজন কোনারদিকে টেবিলে মাথা রেখে ঝিমাচ্ছে।
তিনি রুম থেকে বের হয়ে মাঠে নেমে এলেন। ভালই হল, ঘণ্টাখানেক সময় পার করতে হবে, তার কিছুটা নাহয় এর সাথেই কাটানো যাক। অবশ্য এর যদি তাড়া না থাকে।

‘তা এই অসময়ে বাজারে চললে?’ সালামের জবাব দেওয়ার পরে স্যার জিজ্ঞাসা করলেন।
‘বাড়িতে ভাল লাগছিল না,’ একটু থেমে বলল। ‘খবর পেলাম মতিন মিতা এসেছে। ভাবলাম, তার সাথে একটু দেখাও করে আসি।’
‘তাকে তো আজ আর পাবেনা,’ মাষ্টার সাহেব বলল। ‘আজ সকালে তার সাথে বাজারে দেখা হয়েছিল। বলল, রাজিবপুর যাবে, ওর ভাবিকে নিয়ে আসবে।’
‘ওহ!’
‘তোমার বিশেষ কাজ না থাকলে একটু বসে যাও, কথাবার্তা বলি।’
‘না, কাজ আর কী?’
সে মাষ্টারসাহেবের পিছুপিছু হেটে বারান্দায় উঠল। বারান্দার এক প্রান্তে দেওয়ালের সাথে একটা বেঞ্চি পাতা আছে, স্যারের লক্ষ সেদিকে। কিন্তু তত দূর যাওয়ার আগেই নযরে পড়ল, ক্লাস থ্রির দরজাটা খোলা।
‘এখানেই বসা যাক,’ স্যার সেদিকে এগিয়ে যেতে লাগল।
‘মাষ্টারসাহেব,’ যুবকটা একটু ইতঃস্তত করে বলল। ‘আমি হাতপাগুলো একটু ধুয়ে আসি।’
‘যাও।’
স্কুল বিল্ডিংয়ের পশ্চিম দিকে টিউবয়েলের দিকে এগিয়ে গেল সে, আর প্রায় একই সময়ে টিচারস রুমের দরজা দিয়ে আজাহার স্যার বেরিয়ে এলেন। তাকে সালাম দিল যুবক।

…চেয়ারে বসেছেন মাষ্টারসাহেব। স্যার একটা বেঞ্চ টেবিলের কাছে টেনে নিয়ে তাতে বসেছেন। আর যুবকটা তাদের সামনের একটা বেঞ্চে।
দুটো জানালা খোলা। স্কুলের পিছন দিকের সীমানার পরে আমকাঁঠালের বাগান। তারপরে কয়েকটা বাড়ি। সেগুলোর ফাঁকফোকর দিয়ে ধানের খেত দেখা যাচ্ছে। তারপরে নদী, কিন্তু তার একটা বিন্দুও এখান থেকে দেখতে পাওয়া সম্ভব নয়।

‘তারপর মতিন, তোমাদের লেখাপড়া চলছে কেমন?’ মাষ্টারসাহেব তার দিকে তাকিয়ে বলল। বাড়ি তো খুব কম আসছো...।’
‘সেশন জটটা যদি না থাকত…,’ মতিন মুখ নিচু করে বলল। ‘…তাহলে কবেই আমরা আপনাদের কাছে ফিরে আসতাম।’
‘ফিরে আসতে মানে?’ মাষ্টারসাহেবকে সত্যিই বিস্মিত দেখাল। ‘এতগুলো পাশ দিয়ে দিয়ে গ্রামে এসে কী করবে?’
‘মাষ্টারসাহেব, আমি রাজশাহী যাওয়ার সময়ই মনেমনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যদি লেখাপড়া শেষ করতে পারি তাহলে গ্রামে ফিরে এসে আপনাদেরমত মাষ্টারি করব। আর যদি শেষ না করতে পারি আমি আর গ্রামে মুখ দেখাতে আসব না।’
‘বল কী?’ মাষ্টারসাহেব হেসে ফেলল। স্যার তার দিকে তাকালেন। তার মুখেও হাসি। ‘গ্রামের কোন্ ‘শিক্ষিত’ মানুষটা গ্রামে পড়ে আছে, আমাকে দেখাও। কী আছে এখানে?’ তার মুখে বেদনার ছায়া। ‘আমরা নিতান্ত ‘অশিক্ষিত’ মানুষ, কোন কিছু করার ক্ষমতা নেই। এই কাজটা না পেলে হয়তো হালচাষ করতে হত। এই মানুষটা ঠ্যাকায় পড়ে এখানে আছে।’ স্যারের দিকে হাতের ইশারা করে বলল। ‘তুমি কী বল, আজাহার?’
‘সেটা ঠিক।’ স্যার বলল। ‘বাবা হটাৎ মারা গেলেন। আমি পড়াও শেষ করতে পারলাম না। সত্যি বলতে কি, গ্রামে আসলে আমার মন কখনই টেকেনি।’ স্যার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। ‘মা অবশ্য বলেছিল, ‘তুই পড়াটা শেষ করে আয়, আমাদের যা হবার তা হবে।’ কিন্তু এই বিশাল সম্পত্তি? আমার ভাইবোনদের লেখাপড়া? না, আমার জন্য এটাই ভাল।’

মতিন মুখ তুলে তার দিকে তাকাল। ‘আমরা দুই ভাই এক বোন। বোনের বিয়ে হয়েগেছে। বাবা আর নৌকা চালায় না, বয়স হয়েছে। সংসারের জন্য যা করার তা করছে আমার ভাই। সে বিয়ে করেছে। বাবার কথা ভেবে আমিই করিয়েছি। আমি যা পারি দিই। আমার কাছে তাদের কোন চাহিদা নেই। বাবা বরং বলে, ‘তোকে আমি একটা বইখাতাও কিনে দিতে পারিনি, তোর কাছ থেকে আমি কোন মুখে কিছু চাইতে যাব?’ কাজেই আমি এখান থেকে যা রোজগার করতে পারব, সেটাই তাদের পিছনে খরচ করলেই চলবে।’
‘কিন্তু তোমার পড়ালেখার জন্য তো অনেকেই অনেক কিছু করেছে, তাদের কাছে তোমার দেনা…?’
‘আমি আয় করে সেই দেনা শোধ করতে গেলে তাঁরা সেটা নিতে রাজি হবেন?’
‘কেন হবে না?’
‘আমার প্রথম দেনা বাবার কাছে।’ মতিন মুখ নিচু করল। ‘দ্বিতীয় আপনি, আর তারপরে চেয়ারম্যানসাহেব…।’
‘আমার কাছে আবার কিসের দেনা?’ মাষ্টারসাহেবের মুখ লাল হয়ে উঠল। ‘আমি আবার কী এমন করতে পেরেছি?’
‘আপনার দেনা আমি শোধ করতে শুরু করেছি।’ মাষ্টারসাহেবের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে মতিন বলে যেতে লাগল। অপর দুজনে অবাক হয়ে তার দিকে তাকাল। ‘রাজশাহীতে আমি প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের খরচ চালাচ্ছি আর বাড়িতেও কিছু পাঠাচ্ছি। পার্ট টাইম চাকরীর অফার পেয়েছি, কিন্তু তা করার সময় পাচ্ছি না।’
‘কেন?’ দুজনেই একসাথে বলে উঠলেন।
‘কয়েকজন বন্ধু পেয়েছি। আমরা একটা চালাঘর ভাড়া নিয়ে একটা স্কুল খুলেছি। বেতন ছাড়া। বই খাতা কলম আমরাই দিই। ছাত্রছাত্রী মোট আঠারজনের মত। কমছে বাড়ছে- আসা যাওয়ায় কোন বিধিনিষেধ নেই।’
‘কোন্ ক্লাস পযর্ন্ত?’ মাষ্টার সাহেবের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, কিন্তু প্রশ্ন করল স্যার।
‘কোন ক্লাস নয়।’ মতিন বলল। ‘যে যেটুকু পারে, আমরা তাদেরকে তার চেয়ে আরো একটু এগিয়ে দিচ্ছি।’
‘কিন্তু এটা চলবে কতদিন? তুমি চলে এলে…?’ মাষ্টারসাহেব বললেন।
‘যে-ই চলে আসুক না কেন, আর একজনের উপরে ভার দিয়ে আসবে।’
‘দারুণ!’ স্যার বলল। ‘এখানেও এটা করা যেতে পারে।’
‘হ্যা,এখানেও এটা করা যেতে পারে।’ মতিন বলল। ‘চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে আমার কথা হয়েছে।’
‘এই ধরণের কাজের জন্য?’ স্যার জানতে চাইলেন।
‘না। গ্রামে দুটো প্রাইমারি স্কুল আছে। তিনি বলেছেন একটা সরকারী হাইস্কুল করার জন্য যা কিছু করা দরকার তার সব কিছু তিনি করবেন। আমি এখানে থিতু হয়ে বসে তারপরে আমারটা শুরু করব।’
‘হ্যা, একটা হাইস্কুলের দরকার। মাষ্টারসাহেব বললেন।’ এতবড় একটা গ্রামে একটা হাইস্কুল নেই।’ একটু থেমে আবার বললেন,‘ভাল কথা, তোমার সেই স্কুলের কথা আরো একটু বল শুনি। এমন হিজিবিজি ধরনের ছাত্র, তাদের সুবিধা অসুবিধাগুলো…।’
‘বেতন লাগে না, বই খাতা কলম যথাসাধ্য আমরা ম্যানেজ করে দিই…।’
‘না, মানে এদের শেখার ব্যাপারে যে সমস্ত অসুবিধা…।’
‘আমরা ইংরেজি অংক আর বাংলা বই থেকে পড়াই। অন্যান্য বিষয়গুলো গল্প আকারে। পড়ার ব্যাপারে যে কোন ধরণের প্রশ্ন করার ব্যাপারে আমরা তাদেরকে উৎসাহ দিয়ে থাকি।’ একটু থেমে হাসতে হাসতে বলল,‘দুনিয়ার এমন কোন বিষয় নেই, যা তাদের প্রশ্নে থাকেনা। আমাদেরকে মাঝেমাঝে বোকা বানিয়েও ছাড়ে।’
‘ভাল।’ মাষ্টারসাহেব বললেন। ‘ইংরেজিটা এদের বোধহ্য় শিখতে একটু সমস্যা হয়?’
‘না, মাষ্টারসাহেব।’ মতিনের মুখে হাসি ফুটে উঠল। ‘যার যেমন মেধা সেই অনুসারে তাদের জন্য সবচেয়ে সহজ প্রথমে অংক, তারপরে ইংরেজি আর তারপরে বাংলা। আমরা প্রথমে তাদের সমস্যা বোঝার চেষ্টাকরি…।’
‘বল কী?’
‘এদের পড়াতে গিয়ে বাংলার কিছু বিষয় আমার কাছে জটিল মনে হয়।’
‘বাংলায় আবার জটিলতা কী?’
‘বানান।’
‘বলতে চাচ্ছ, শব্দ গঠন?’
‘সেটাই বলা যেতে পারে।’ মতিন বলল। ‘আমার কাছে মনে হয়, আমরা বাংলায় অপ্রয়োজনে কিছু অক্ষর বয়ে বেড়াচ্ছি।’
‘বল কী হে?’
‘আমাদের পঞ্চাশটা বর্ণের ব্যবহারের সত্যিই কি প্রয়োজন আছে?’
‘বাহ্, লেখার ক্ষেত্রে উচ্চারণ ঠিক রাখার জন্য বর্ণের প্রয়োজন হবেনা?’
‘ঈ আর ঊ আমরা কত জনে উচ্চারণের সময় কাজে লাগাই?’
‘ব্যকরণগত দিক দিয়ে আমরা ভুল করি, যেটা আমাদের করা উচিৎ নয়।’
‘আমাদের ভাষার জন্য ব্যকরণ, নাকি ব্যকরণের জন্য ভাষা?’
‘অবশ্যই ভাষার জন্য ব্যকরণ। ভাষাকে শুদ্ধ রাখার জন্যই ব্যকরণ।’
‘ভাষার একটা গতি আছে, এর পরিবর্তন আছে?’
‘অবশ্যই আছে। ব্যকরণও সেই সাথে পরিবর্তিত হয়ে আসছে।’
‘কিন্তু যতটা প্রয়োজন ততটা নয়। আমরা যেটা উচ্চারণ করিনা সেটা লেখার জন্য বর্ণ লিখে আসতে হচ্ছে। আমরা বলছি ‘হটাৎ’ কিন্তু লিখতে হচ্ছে ‘হঠাৎ’।’
‘নিয়ম কানুন তো মানতেই হবে।’ মাষ্টার সাহেব কিছুটা বিরক্ত ভাবে বললেন। ‘তা যদি আমরা না মেনে যার যা ইচ্ছা তাই করতে শুরু করি, তাহলে হয়তো এক সময় দেখা যাবে যে বাংলাভাষাটা একটা জগাখিঁচুড়ি ভাষায় রূপান্তরিত হয়েছে।’
‘নিয়ম কানুন অবশ্যই মানতে হবে, এর বিরোধিতা করার প্রশ্নই ওঠেনা।’ মতিন কিছুটা বিব্রত ভাবে বলল। ‘আমি বাংলাভাষার কোন পণ্ডিত বা বিশেষজ্ঞ নই। এই ভাষার ব্যাপারে আমার কোন সমালোচনা করার যোগ্যতা আছে বলে আমি মনে করিনা। আমি আজ আবধি কারো সাথে এই বিষয়ে একটা কথাও বলিনি। শুধু পরীক্ষায় পাশ করার মত ব্যাকরণ জ্ঞান আমার আছে বলে মনে করি। আমি যে বাচ্চাদের পড়াই তাদের কথা উঠল- তাদের দিক দিয়ে আমার মনে একটু ক্ষোভ আছে, সেই কারণেই আমার এইসব বলা…।’
‘কথাগুলো একেবারে ফেলে দেওয়ারমত না।’ আজাহার স্যার চিন্তিত ভাবে বললেন। ‘ইংরেজিতে এলফাবেট আছে ছাব্বিশটা। তার ভিতের আবার একটা বর্ণ খোঁড়া, অপর আর একটার সাহায্য ছাড়া কোন শব্দ গঠন করতে পারে না- কিউ।’ তারপর মাষ্টার সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আপনার কি মনে হয়, ইংরেজির শব্দভান্ডার বাংলার চেয়ে কম?’
‘অনেক বাংলা শব্দ আছে যার উচ্চারণ ইংরেজি অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করা যায় না।’ সরাসরি জবাব না দিয়ে মাষ্টারসাহেব বললেন।
‘অনেক ইংরেজি শব্দ আছে, বাংলা বর্ণ দিয়ে যার উচ্চারণ প্রকাশ করা যায়না।’ স্যার সাথেসাথে বলে উঠলেন। ‘শুধু তাই নয়, অনেক বাংলা শব্দও আছে যার উচ্চারণ বাংলা অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করা যায়না।’
‘আছেই তো।’ মাষ্টার সাহেব হাসতে হাসতে বলল। ‘তার কারণ কি, জান তো?’
‘নানান দেশের ভাষা থেকে শব্দ এসে বাংলা শব্দ ভান্ডারে জমা হয়েছে?’
‘হ্যাঁ। আর সেগুলোকে আমরা আমাদেরমত করে নিয়েছি। কাজেই, আমাদের তাদের জন্য আর বর্ণের কথা ভাবতে হচ্ছে না।’
‘আমরা ‘এ্যাক’ লিখছি ‘এক’, ‘ম্যারামত’ লিখছি ‘মেরামত’?’
‘জটিলতা এড়ানোর জন্য এটা করা হচ্ছে। এতে আমাদের বুঝতে তো আর অসুবিধা হয়না।’
‘তাহলে আমরা যদি সব শব ষব বা ছব লিখি তাহলেও তো আমরা বুঝে নিতে পারি।’
‘এটা কেমন কথা বললে আজাহার? প্রথম শব্দ দুটোর অর্থ আলাদা, আর পরের দুটোর কোন অর্থ আমার জানা নেই।’ মাষ্টার সাহেব হাসতে হাসতে বললেন।
‘সব কিছুই আমাদের জেনে নিতে হয়েছে। যারা জানানোর দিকটাতে আছেন, তার একটু অন্য ভাবে ভাবলে আমাদের জানাটা সহজ হয়। ভারতীয় একজন লেখক ছিলেন, শিবরাম চক্রবর্তী। তিনি ছোটদের জন্য হাসির গল্প লিখতেন। কিন্তু ছেলে-যুবক-বুড়ো সবাই তার গল্প পড়ে মজা পায়। তাঁর একটা গল্পে আছে- একজন হবু লেখক লিখতে গিয়ে একটা শব্দে এসে আটকে গিয়ে তার কাছে বানান জানতে চেয়েছেন- সাবাস নাকি শাবাশ হবে। শিবরাম তাকে জানালেন- ‘স শ ষ’ সবগুলো উঠিয়ে দিয়ে ‘ছ’ বসিয়ে দাও।’ আজাহার স্যার হো হো করে হেসে উঠলেন। তারপর হাসি থামিয়ে বললেন, ‘রম্যরচনা। কিন্তু আমি হাসতে পারিনি। আমার মনে হল, তিনি আমাদরকে কিছু একটা জানাতে চাইছিলেন। সমচ্চারিত চারটে বর্ণের বদলে কেন একটা দিয়েই আমরা কাজ চালাই না? ইংরেজিতে সেটাই করা হয়ে থাকে।’
‘তাতে অর্থের হেরফের হয়ে যাবে।’
‘অর্থ যদি বুঝতে না পারেন তাহলে কীভাবে বানান ভুল ধরবেন? আর বুঝতেই যদি সমস্যা না হয় তাহলে খামাখা বানান নিয়ে এত ঝামেলা পোহানো কেন?’
‘ভাল। তোমার হিসাবমত শ=স=ষ হলে ‘শব’ এর অর্থ কী হবে? মৃতদেহ নাকি সকল?’

‘মাষ্টার সাহেব…।’ মতিন বলে উঠল। ‘বাচ্চাদের পড়ানোর পর থেকে এটা নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি।’ সে বলতে লাগল। ‘এককভাবে একটা শব্দ সাধারণ অবস্থায় বিশেষ কোন ভাব প্রকাশ করেনা। কখনো কখনো একটা পুরো বাক্যও সেটা করতে অক্ষম, অন্তত মনের ভাব প্রকাশ করার ক্ষেত্রে।’
‘বুঝিয়ে বল।’ মাষ্টার সাহেব বললেন; কিন্তু তার মুখে হাসি।
‘১.সব। ২.সব মাছ খাবি খাচ্ছে।’ এখানে ১ বা ২ এর মানে হয়? আবার- খালের শব (ষব সব বা ছব) মাছ... বললে বুঝবেন না?’ মতিন জবাবের অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকল, কিন্তু কোন জবাব এলোনা। ‘আপনার ‘বুঝিয়ে বল’ বাক্যটার মানে হয়েছে এই কারণে যে, সেটার সাথে আমার তার আগের বাক্যটা অদৃশ্যভাবে জুড়ে আছে।’
‘বর্ণমালা যা আছে থাক না, আমরা তো এতে অভ্যস্থ হয়েগেছি।’ মাষ্টারসাহেব বললেন। ‘তাছাড়া এগুলো তো আমাদের ভাষার এক একটা রত্ন।’
‘ষোল কোটি মানুষের দেশে কতজন অভ্যস্থ হয়েছে, মাষ্টারসাহেব?’ মতিনের কন্ঠে হতাশার রেশ। ‘আর রত্ন? সম্ভব হলেও উঠোন ঝাঁড়ু দেওয়ার বা জমি চাষ করার সময় কত জনে রত্ন পরে থাকে? আর সেজন্য সমাজপতিরা কি তাদের ছিঃছিঃ করেন? আমরা প্রশ্নের উত্তর নিয়ে মাথা ঘামাব, নাকি বর্ণ নিয়ে ধস্তাধস্তি করতে থাকব? তৎসম শব্দের জন্য ণ আর ষ দুটো বর্ণ আর ণত্ব ষত্ব বিধানও আমদানি করতে হয়েছে যা বাংলা ভাষার নয়। দুনিয়ার নানান ভাষার শব্দ এসে বাংলা হয়ে চলছে, আর কোন এক গুরু ভাষা গুরুতর হয়ে আমাদের মাথায় খামাখা চেপে বসেছে! এগুলোকে আমার কাছে মনে হয়, আমাদের সমাজের তথাকথিত ক্ষমতাধর শিক্ষিতজনের উন্নাসিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। মাষ্টারসাহেব, আমরা ভুল করলে সেটা হয় ভুল, আর তেনারা ভুল করলে হয় ব্যতিক্রম। এটাই যে তাঁরা নিজের অহংকারের দুর্গে বসে আছেন। সাধারণ মানুষের কথা ভেবে তাঁরা কি কখনো একমত হয়ে ভাষার জন্য কিছু করেছেন?’
‘ভাল।’ মাষ্টারসাহেব হাসতে হাসতে বললেন। ‘আমাদের এখন উঠতে হবে, চেয়ারম্যান সাহেবের বার্তাবাহকের কথা শুনতে পাচ্ছি। তা তুমি কী চাইছ সেটা শোনা যাক, বল।’
‘সমচ্চারিত আর প্রায় সমচ্চারিত বর্ণগুলোর মাত্র একটা করে থাকবে। আর যে ভাষা থেকেই শব্দ আসুক না কেন, তাকে বাংলা করে রাখতে হবে। এতে হয়তো কারো কারো সাময়ীক অসুবিধা হবে, কিন্তু আমাদের ভাষার ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা হবে।’
‘আমার আপত্তি নেই; কিন্তু সেটা আমার ক্ষমতার বাইরে।’ মতিন কিছু বলতে গেল, কিন্তু মাষ্টারসাহেব উঠতে উঠতে তাকে বাধা দিয়ে বলতে লাগলেন, ‘পরে আবার কথা বলা যাবে। আজাহার, এই বাচালটাকে সাথে নিয়ে গেলে চেয়ারম্যান সাহেব কি কিছু মনে করবেন?’
‘কিছু না কিছু না।’ এরা দুজনেও উঠে দাঁড়িয়েছে। ‘মনে হয় খুশিই হবেন। খরচ না বাড়িয়েই অতিরিক্ত একজনকে খাওয়াচ্ছেন। তাদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। ‘খাবার যদি কম পড়ে আমরা না হয় একটু কমিয়ে খাব।’
‘চলে এসো হে।’
মাষ্টারসাহেব মতিনের পিঠে হালকা চাপড় দিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ আক্তারুজ্জামান এবারে গল্প কবিতা দুটোতেই একই রকম অর্থবোধক, গুরুত্ববাহী দুটো লেখা দিয়েছেন| এবং খুব সফল ভাবেই তা করেছেন| আপনার ভাবনা সার্থক হোক- অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা|
ভালো লাগেনি ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। সবাই মিলে লেগে থাকলে আজ হোক কাল হোক একটা কিছু হবেই। আপনার প্রতিও শুভ কামনা।
ভালো লাগেনি ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ ছোটখাট বিষয় এত নিখুঁতভাবে আসে আপনার কলমে , সত্যি অসাধারণ ! ধন্যবাদ ওয়াহিদ ভাই ।
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
কীজানি ভাই কেমন লিখি, তবে আপনাদের ভাল লাগলেই সেটা আমার আনন্দ। পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
Lutful Bari Panna আপনার কবিতা ও গল্প দুটোই এবার একই বিষয় নিয়ে লেখা। আমিও একমত।
ভালো লাগেনি ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। লেখাটা যারা পড়েছেন, তাদের বেশীরভাগেরই সম্ভবত সমর্থন আছে। গ.ক'র যদি সমর্থন থাকে তাহলে আমরা দুয়েক সংখ্যা পাগলামো করে দেখিনা কেন। গ.ক'র মতটা দেখেন তো জেনে নিতে পারেন কি না। কী বলেন?
ভালো লাগেনি ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
Sisir kumar gain সুন্দর গল্প
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
মামুন ম. আজিজ আসলে কি এটা সমস্যা খুব?...বানান রীতিটা সহজ করলেই হয়.....ই --ঈ ্গুলো বাহুল্য ধরা যা্য়, ণ , ন বাহুল্য মানা যায়, ছ , স < শ ঠিকাছে...ইংরেজীতে এসএইচ যোগে শ বানায় , আমাদের ভাষায় এক বর্ণেই হয়.....যাক ..গল্পটা শুরু হয়েছিল..শেষে কিন্তু প্রবন্ধের ষ্টাইলে ঢুকে গেলো। অভিনন্দন।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। সবিনয়ে বলি, শেষের টুকুই ছিল আসল লক্ষ, প্রথমটুকু ভওতা। আমার মনে হয় এটা সমস্যা নয়, অহেতুক জটিলতা।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
ইংরেজীতে শ=sh , খ= kh, বানাচ্ছে (মনে হয়, তারা নয় আমরা বানাচ্ছি)। কিন্তু a দিয়ে অ, আ, এ্যা ইত্যাদিও বানাচ্ছে। g = জ,গ , c = ক,চ। তাদের প্রায় সমচ্চারিত বর্ণ ধরা যেতে পারে b আর v। আর আমাদের শ,স,ষ আবার সেই সাথে ছ। যে কোন একটা দিয়েই আমাদের অন্তত তিনটের কাজ চলে যেতে পারে।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ একটা গল্প আমিও লিখতে চেয়েছিলাম ভাইজান ; কিন্তু প্লট খুঁজে পেলাম কৈ ! চমৎকার সাজিয়েছেন গল্পটি । অনেক অনেক ভাল লাগলো ।
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। লিখে ফেলেন। যত বেশীজনে লিখবে, তত বেশিজনে পড়বে। তার ফলে সঠিক জিনিসটা বের হয়ে আসবে। আবেগের কিছু চাইনা, আমি চাই সঠিক জিনিসটা।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
মিলন বনিক ভালো কিছু সৃষ্টির জন্য দরকার পরিবর্তন...আপনার সুন্দর গল্প আর উপস্থাপনা সর্বোপরি যুক্তি বিন্যাস অনেক ভালো লাগলো...চমত্কার একটা বিশ্লেষনধর্মী গল্প...খুব ভালো লাগলো দাদা...অনেক শুভ কামনা....
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। লেখাটা লিখে এখন বুঝলাম আপনারা অনেকেই এটা নিয়ে চিন্তা করেছেন। ভাল লাগল।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
বশির আহমেদ নদীর গতি পথের মত ভাষাওতো পরিবর্তনশীল । বাঙলা ভাষায় এত বর্ণ বাহুল্যতার প্রয়োজন কি আদৌ আছে ? আপনার সঙ্গত যুক্তির সাথে সহমত পোষন করি । গবেষনা ধর্মী গল্পের জন্য ধন্যবাদ ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। পরিবর্তন কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না। তবে সেটা সময়মত হলেই ভাল।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
ওবাইদুল হক সুন্দর গল্প লিখেছেন আশা করি আরো ভাল করবেন আগামীতে । ধন্যবাদ ।
ভালো লাগেনি ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
গল্প সুন্দর হয়েছে বলছেন? অনেক ধন্যবাদ। চেষ্টা করব আরো ভাল করার, কতটা পারব জানিনা। দোওয়া করবেন। আপনার প্রতি শুভেচ্ছা ।
ভালো লাগেনি ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
তাপসকিরণ রায় হ্যাঁ,দীর্ঘ গল্পটি পড়লাম--সময়ের সঙ্গে এই কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনটা ঠিক মনে হল।কিন্তু কারা এগিয়ে আসবে এতা করতে?এর মধ্যে তর্কবিতর্ক,আলোচনা সমালোচনা অনেক কিছুই থাকবে।এও এক ক্রান্তিকারি পরিবর্তন বলতে হবে। দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ-- বর্তমান হাজারো সমস্যা জড়িত দুর্দিনে কে চাইবে এ পরিবর্তনের দায়ভার বহন করতে?আপনার এ ধরনের ভাবোদয় ভালো লাগলো--গল্পটিও সে দিক থেকে অনেক স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন,ভাল লাগলো আপনার এই রচনা শৈলী।আন্তরিক ধন্যবাদ রইল,ভাই!
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
এগিয়ে আসবেন আপনি, এগিয়ে আসব আমি। এদেশের দশ কোটি মানুষ মানুষ সাথে পাবেন, সেটা নিশ্চিত। আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমার ভাল লাগল। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

০৪ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী