মাস্টার সাহেব।

বৃষ্টি (আগষ্ট ২০১২)

মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন
  • ১৪
সকাল এগারটারমত বাজে। চৌকিতে হাত পা ছড়িয়ে চিত হয়ে শুয়ে আছে মাসুদ। মাস্টার সাব- তথা কথিত।
কাঠা পাঁচেক প্রায় বর্গাকার একটা জমির দক্ষিণ-পূর্ব কোনা ঘেসে একটা টিনের ঘর। আট হাত ছয় হাত। উপরে সীমানা দেওয়াল থেকে নেমে আসা ঢেউতোলা টিনের সামান্য ঢালু চাল। কাঠের দরজা আর জানালা না থাকলে এটাকে বিশাল একটা টিনের বাক্স ছাড়া আর কিছু বলে মনে হত না।

চোখ বুঁজে শুয়ে আছে সে, কিন্তু ঘুমাচ্ছে না। হঠাত করেই চোখদুটো বড় বড় করে খুলে সোজা উপরের দিকে তাকাল, তার মাথার প্রায় সোজাসুজি থাত দুয়েক উপরে তারের মাথার ঝুলে থাকা বাতি। তার মনে হয়েছে, সন্ধ্যার আবছা অন্ধকারে ঘরের বাতি নিভিয়ে দিলে যেমন আধাঁর হয়ে আসে, সেই রকম হঠাত করে আধাঁর নেমে এসেছে। ডান দিকে কাত হয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল। অপর প্রান্তের চার হাত উঁচু পাঁচিলের উপর দিয়ে দেখা যাচ্ছে, কাল মেঘে আকাশ ছেয়ে গেছে। সেই মেঘের ভিতরেই যেন আরো কাল মেঘের দংগল মোচড় খেতে খেতে ঢুকে যাচ্ছে। সেগুলোর ভিতরে ছোট ছোট আকারের বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।

সে মনে মনে ভাবল- যা তোড়জোড় শুরু হয়েছে, দেশটাকে কি ভাসিয়ে নিয়ে যাবে? আর ঠিক তখনই একটা দমকা বাতাশ বয়ে গেল, তার পিছুপিছু এল বড়বড় ফোঁটার বৃষ্টি। সচ্ছ কাঁচের দানারমত ঝকঝকে পানির ফোঁটাগুলো যেন একটার পিছনে আর একটা সারি বেধে আকাশ থেকে নেমে আসছে। মাটির উপরে আছড়ে পড়ে গুঁড়ো হয়ে চারি দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। মাত্র মিনিট বিশেক, বৃষ্টি থেমে গেল। আকাশ কিন্তু মুখ ভার করেই রইল। তবে মেঘের ধাক্কাধাক্কি বন্ধ হয়েছে।

'মাস্টার, ও মাস্টার,' পাঁচিলের বাইরে শোনা গেল। তারপরে গেটের জন্য ফাঁকা করে রাখা পাঁচিলের অংশে একটা মাথা আর বুকের কিছুটা অংশ দেখা গেল মানুষটার। মাসুদ উঠে বসল। জানালা দিয়ে তাকে দেখতে পেয়ে আগন্তুকের খোঁচাখোঁচা দাঁড়ি ভরা কাল মুখে হাসি ফুটে উঠল। 'ঘরে আছ দেহি,' লোকটা বলল। 'চলো দেহি একটু কাজ করতি হবে।'
'চলেন।' চৌকি থেকে নেমে সেটার নিচে রাখা স্পঞ্জের স্যান্ডেলের ভিতরে পা গলাতে গলাতে বলল। কী বা কোন ধরণের কাজ এসব যেন তার কোন জানার বিষয় নয়। সে বের হয়ে এসে দরজার পাল্লাদুটো টেনে বন্ধ করে কড়ায় তালা লাগাল, চাবিটা বুক পকেটে ফেলল। বয়সের ভারে বাঁকা হয়ে যাওয়া পাল্লা দুটো যেন একে অপরের সাথে শত্রুতা দেখানোর জন্য ভিতরের দিকে ঝুঁকে বিশাল একটা ফাঁকার সৃষ্টি করল।

'কতক্ষণ লাগবে?' মাসুদ সাবধানে কাদা বাঁচিয়ে হেটে বাইরে লোকটার পাশে এসে জানতে চাইল। তার গোসল, জোহরের নামাজ, দুপুরের খাওয়া আর তারপরে আছে ছাত্র পড়ানো। ফাঁকেফোঁকে বা ছুটির দিনগুলোতে সে শ্রমিক বা সহকারীর কাজ করে থাকে। এক মাস একজন ছাত্র পড়িয়ে সে যা পায়, তিন বা চার দিনের কাজে আয় হয় তার চেয়েও বেশি। তার ব্য়স তেপান্ন বছর, কিন্তু সে তুলনামূলকভাবে একজন দুর্বল মানুষ। বেশি পরিশ্রম করলে সে হাঁপিয়ে ওঠে। কাজেই ছাত্র পাড়ানোটা তাকে চালু রাখতে হবে। যদিও ছাত্র পড়ানোর সূত্রপাত এই শ্রমিকের কাজ থেকেই...।

...এখন থেকে বছর তিনেক আগে, তার এখানে আসার বছর খানেক পরে সে যখন এই ধরণের কাজে অভ্যস্ত হয়ে গেছে, সেই রকম এক সময়ে তাকে একবার মজুর হিসাবে এক ঘরের মালপত্র অন্যঘরে সরিয়ে রাখার কাজে, মতিন সাহেবের বাড়ি যেতে হয়, একা।
লোকটার নিজের দোকান আছে, মোটামুটি পয়সাওয়ালা। তার চার বাচ্চা- চৌদ্দ, এগার, আট, ছয়- মেয়ে, ছেলে, ছেলে, মেয়ে। সবার নামই স্কুলের খাতায়, কিন্তু যখন তখন দোকানের কাজে লাগাতে থাকার কারণে বড় ছেলের লেখা পড়া শিকেই উঠেছে। দোকানের কাজ না থাকলে স্কুলের পথে রওনা হলেও বেশিরভাগ দিনই সেখানে পৌঁছানো তার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনা।

বারটার দিকে কাজের অগ্রগতি দেখার জন্য তিনি এলেন, সাথে নিয়ে এলেন চা, বিস্কুট আর পানি। কাজ দেখে অখুশি হলেন না।
'দেখেন তো, আমার ছেলেমেয়েদের জন্য একজন মাস্টার যোগাড় করে দিতে পারেন নাকি,' সে দু'চার কথার পরে মাসুদকে বলল। এর সাথে তার আগেই কিছুটা জানাশোনা ছিল। 'একজন এদের পড়াত, কিন্তু এখানে এসে পড়াতে তার নাকি সমস্যা হয়, আর পড়াতে পারবেনা।'
মাসুদ তার দিকে মুখ তুলে তাকাল। এই এলাকায় বাড়ি ঘরের সংখ্যা খুই কম, আর একেবারে কোন স্কুল নেই। কাজেই বাড়িতে পড়ানোর শিক্ষক পাওয়া একটা কঠিন ব্যাপার। 'আমার তো জানাশোনা কেউ নেই,' সে বলল। 'ওদের স্কুলের কোন মাস্টার...?'
'ধুর!' বিরক্তিতে মুখ বাঁকাল। 'একজনও না। যে পড়াত, সেও বাদ দিল।' একটু থেমে বলল,'পরীক্ষাও এসে যাচ্ছে।'
কয়েক মুহূর্ত মাটির দিকে তাকিয়ে চুপচাপ চায়ে চুমুক দিল মাসুদ। 'ঠিক আছে,' তারপর সে সোজাসূজি মতিন সাহেবের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, 'কয়েকটা দিন আমিই পড়িয়ে দিই। তারপরে ভাল একজন মাস্টার ঠিক করবেন, সে পড়াবে।'
কিছুক্ষণ কিছুই বলল না কেউ।
'ঠিক আছে,' তারপর মতিন সাহেব বলল। 'আজ সন্ধ্যা থেকেই পড়ানো শুরু করেন, আমি বলে রাখব।' সে উঠল। ডুবতে থাকা মানুষ হয়ত খড়কুটো ও আঁকড়ে ধরতে চায়। সে এখনো তাদের পড়াচ্ছে।

...'দুই আঢ়াই ঘণ্টা লাগবেনি, বেশি না।' লোকটা পিছন ফিরে হাটতে হাটতে বলল। আবার টুপটাপ করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করল, কিন্তু এরা সেটাকে উপেক্ষা করে হাটতে লাগল। 'রবিউল সাহেবের রান্নাঘরের মেঝেটা ঠিক করা লাগবি।' সে মুখ ফিরিয়ে মাসুদের দিকে একবার তাকিয়ে বলল। 'সব ঠিক করা আছে, মাল বানায়ে রাখছি, তুমি শুধু ভেতরে নিয়ে দেবা।'

সে কোন স্কুলে শিক্ষকতা না করেও এদের মাস্টার। এদের ছেলেমেয়েদের মাস্টার, বাপেদের ্সাহায্যকারী। কিন্তু সে রাজমিস্ত্রির করে রাখা জঞ্জালে ঝাড়ু চালাক বা যোগানদার হিসাবে মাল বা ইঁট মাথায় তুলুক, একে তারা সবাই সমীহ করে থাকে। সবচেয়ে কম খাটনির কাজটা এর উপরে চাপানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়ে থাকে। কাজের বিরতিতে যে কেউ নিজের মুখে চায়ের কাপ তোলার আগে এর হাতে চা বিস্কুট তুলে দেবে। কারণ- যে কোন কাজ হোকনা কেন, এর আন্তরিকতার কোন অভাব থাকে না। আর টাকা পয়সা দিয়ে হয়ত নয়, কিন্তু সাধ্যমত গায়ে খেটে বা পরামর্শ দিয়ে কারো উপকার করার ব্যাপারে তাকে কখনো রাজি ছাড়া নিমরাজিও হতে দেখা যায়নি। সবচেয়ে বড় কথা, সবাই জানে, যে সাহেবের জমির 'দেখাশুনাকারী' হিসাবে সে এখানে এসেছে, সে এখানে আসার আগে সেই সাহেবের বন্ধুর দুই ছেলেকে পড়িয়ে কলেজে পড়ার উপযুক্ত করে তুলেছিল। কিন্তু তার এভাবে এখানে এসে থাকার কারণ, আর তার আপন জন কেউ আছে কিনা সে বিষয়ে এখানকার কারো কোন পরিষ্কার ধারণা নেই। মানুষটা নিজের সম্পর্কে কথা বলে খুবই কম।

পৌনে দুটোয় সে ছাড়া পেল। সারা গায়ে সিমেন্ট বালি আর কাদার দাগ। তাড়াতাড়ি ঘরে গিয়ে লুংগি গামছা আর মগ বালতি নিয়ে বের হল। জমির শেষ প্রান্তের কোনার দিকে একটা চাপাকল ঘিরে বেড়া দিয়ে কোন ভাবে একটা স্নানের ঘর খাড়া করা হয়েছে। এক পাশে রান্নাঘর, অপর পাশে পায়খানা।

ঘরে ঢুকেই বাম দিকে জানালার সাথে ছোট একটা টেবিল, যার উপরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বেশ কিছু বাংলা ইংরেজি বই, খাতাপত্র, কলম-পেন্সিল, মুছুনি, আর আরো হিজিবিজি অনেক কিছু। দুটো বইয়ের ফাঁকে একটা মোবাইলের কিছুটা অংশ দেখা যাচ্ছে।
টেবিলের সাথে প্রায় ঠেকিয়ে রাখা চৌকিটার অপর পাশ ঘরের অপর পাশের দেওয়ালে ঠেকে আছে। সেদিকে চৌকির সমান্তারালে দেওয়ালে হাত খানেক চওড়া একটা তাক, যেটার প্রায় সবটুকুই নানান ধরণের বই, পত্রিকা আর খাতা পত্রে ভরে আছে, সেটার সমান্তরালে নিচেই চিকন লোহার তার টাঙ্গিয়ে রাখা হয়েছে। সেটাতে ঝুলছে, গোটা তিনেক জামা, দুটো প্যান্ট, দুটো লুংগি আর একটা ছাই রংগা গ্রম কাপড়।

খাটের নিচে বালতি আর মগ ঢুকিয়ে রেখে ভিজে লুংগি আর গামছা তারে মেলে দেওয়া হল। জামা গায়ে চড়িয়ে খাটের পায়ের দিকে মেঝেতে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়ে নিল। সারা ঘরে এতটুকুই শুধু খালি আছে। এবার খাবার পালা। সকালে পড়াতে যাবার আগে চাল-ডাল-আলু একসাথে করে খিঁচুড়ি পাকিয়ে রেখেছিল, বাকি অংশ এখন কাজে লাগবে।

দ্বিতীয় দফার প্রথম ছাত্রের বাড়িতে এল তিনটে বাজার মিনিট চারেক আগে। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। ইংরেজি আর অংক করাতে হয়। বাকিগুলো তার মা সামলাবেন, এটাই কথা ছিল-উচ্চ মাধ্যমিক পাশ মহিলা কেন যে সে দুটোও নিজের ঘাড়ে নিয়ে সংসারের 'দুটো' পয়সা বাঁচানোর চিন্তা করলেন না, সেটা একটা চিন্তার বিষয়। সচ্ছলদের তো আরো সচ্ছলতার দরকার।

'...তবে, মাস্টার সাব,' মহিলা প্রথম দিন বলেছিল, 'সমস্যা হলে অন্যগুলোও একটু দেখিয়ে দেবেন।' সেটা মাসুদকে প্রায়ই দেখিয়ে দিতে হয়, যেটা তার জন্য কোন সমস্যা সৃষ্টির কারণ নয়। সমস্যাটা অন্যখানে। সে সবখানে নিজেরমত করে পড়ায়। কিন্তু এখানে এই মহিলা নিজে কোন ঘোড়ার ডিম পড়ান কে জানে, কিন্তু প্রায়ই তার পড়ানোতে নাক গলান। মাঝে মাঝে তার কাছে এটা একটা অত্যাচারেরমত মনে হয়। কয়েকবারই সে পড়ানো ছেড়ে দিতে চেয়েছে, কিন্তু তার প্রতি ছেলেটার আন্তরিক ভক্তি তাকে সেটা করতে দেয়নি।

অনেক দিন পরে আজকে ভিতর থেকে চা এল। শুধু চা? তাই সই। মনে মনে খুশি হয়ে সে চায়ের কাপে চুমুক দিল। পরিশ্রমের পরে চা'টা টনিকের কাজ করবে। কিন্তু সে জানেনা, কুরবানি করার আগে পশুকে গোসল করানো হচ্ছে।

তার পড়ানো প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। দুটো অংক বাকি, তারই একটা করছে ছেলেটা। চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে নামিয়ে রাখার প্রায় সাথে সাথেই ভিতরের দিকের দরজার পরদা সরিয়ে এসে দাড়াল মহিলা।
'মতি, মাস্টারকে বাংলা খাতা দেখাইছ? মতি খাতা থেকে মুখ না তুলে মাথা নাড়ল। মহিলা এগিয়ে এসে খাতার স্তুপ থেকে একটা খাতা টেনে বের করে খুলে কয়েক পাতা উল্টিয়ে একটা পাতা বের করে তার সামনে বাড়িয়ে ধরল, 'দেখেন তো, মাস্টার সাব, মতি কাল আপনারে এইটা দেখাইছিল...।'
'আহ, মা,' মতি বিরক্তির সাথে তাকে বাধা দিয়ে বলে উঠল। 'পড়ার সময় কী লাগাইলা?'
'তুই থাম তো,' তাকে ধ্মক দিয়ে তার মা বলল। 'দেখেন তো।' সে খাতাটা বাড়িয়ে ধরল। মাসুদ সেটা নিজের হাতে নিল। দেখল, নদী আর দক্ষিণ শব্দ দুটোতে লাল কালির বৃত্ত। কারণ লেখা হয়েছে নদি আর দক্ষিন। কাল এটা দেখে সে ছেলেটাকে বানান ভুলের কথা বলেছিল। পরে হয়ত ছেলেটার আর মনে ছিল না। 'আপনি এভাবে পড়ালে ও পাশ করতে পারবে কীভাবে?'
ছেলেটার মুখ বিকৃত হয়ে উঠল, সে হাতের কলমটা খাতার উপরে ছুড়ে মেরে শক্ত হয়ে বসে থাকল।
প্রথমে রাগে মাসুদের কান ঝাঁঝাঁ করতে শুরু করল। এই মহিলা নিজে কী করেছে? তারপরে তার মনে আশ্চর্য একটা নির্লিপ্ত ভাবের উদয় হল।
'আমি একটা লেবার মানুষ, আমি কি আর অত বানান টানান জানি?' সে বলল। মতির মা কিছু বলার জন্য মুখ খুলল, কিন্তু সেখান থেকে কোন শব্দ বের হবার আগেই মাসুদ বলে উঠল,'ভাল কথা, কাল থেকে আমার সারাদিন লেবারের কাজ করা লাগবে, আমি আর পড়াতে আসতে পারবনা।' মহিলা আবার হা করল। 'আজ বার তারিখ,' মাসুদ তাকে কথা বলার কোন সুযোগ দিতে রাজি নয়। 'এই বার দিনের কোন বেতন আমাকে দিতে হবেনা।' সে উঠে দাঁড়াল। হতভম্ব মহিলাকে মুখ হাঁ করা অবস্থায় দাঁড় করিয়ে রেখে সে সেখান থেকে বের হয়ে এল। পিছনে ছেলেটার যন্ত্রনা কাতর আর্তনাদ শুনল, স্যার! সে এক মুহূর্ত ইতস্তত করে সামনে এগিয়ে গেল। বার দিনের পড়ানোর মজুরি, এক কাপ চা। কিন্তু তাকে আরো এক কাপ চা খেতে হল। হিসাবের বাইরে।

হাতে পনের মিনিটেরমত সময় আছে। এবার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। তবে এখানে কোন ঝুট-ঝামেলা নেই। সে কখন আসলো, কখন গেল, কী পড়াল না পড়ল কেঊ উকি মেরেও দেখতে আসবেনা। কাজের মেয়ে এসে এক কাপ চা, এক গ্লাস পানি আর কয়েকটা বিস্কুট বা চানাচুর রেখে যাবে। তবে মেয়েটার পড়ায় মন আছে। পড়ায় নিজের কোন সমস্যা থাকলে বলবে, নয়তো তাকে যা করতে বলা হবে, চুপচাপ বসে বসে তাই করবে। মেয়ে মন দিয়ে পড়ছে আর পড়াশুনায় আগের চেয়েও ঊন্নতি হচ্ছে, এতেই তারা খুশি। তাদের পছন্দের অনেক গৃহ শিক্ষককেই মেয়ে বাতিল করে দিয়েছে। মাসুদকে নয়, যদিও প্রথম দিন তাকে দেখে মেয়েটা বিরক্তির ভাব দেখিয়েছিল।

ছাত্রের অভিভাবক কী ভাবল না ভাবল, রেজাল্ট কী হল না হল এসব নিয়ে সে মাথা ঘামায় না। এমনকি, মাঝে মাঝে তার এটাও মনে থাকে না যে, যাকে সে পড়াচ্ছে সে কোন শ্রেণির ছাত্র। প্রথমেই সে দেখে নেয় সমস্যাটা কোথায়। প্রয়োজনে উপরের শ্রেণির ছাত্রকেও সে দুই-তিন-চার-পাঁচের নামতা পড়া দেয়, ভগ্নাংশের হর লব যোগ বিয়োগ শেখায়। তারপরে স্কুলের পড়া। এভাবে হলে পড়াব, না হলে অন্য কাউকে দিয়ে পড়ান। তার কথা, খাল থেকে ক্ষেত পর্যন্ত পানির নালা গেছে। কিন্তু নালায় পানি নেই। পানির জন্য ক্ষেতের কাছে খোঁচাখুঁচি করলে লাভ নাও হতে পারে। দেখতে হবে সমস্যা কোথায়, খালে নাকি নালার কোন অংশে।

মেয়েটার বেশ কিছু সমস্যা ছিল। পড়তে বসলেই মাথা ব্যাথা, দাঁত ব্যাথা বা মাথা ঘোরা কিছু না কিছু একটার কথা বলত। বাড়ির সবার কথা, না পড়ার ছুতো। মার দেবেন, ঠিক হয়ে যাবে। নিজেরা মার তো দুরের কথা, তাকে একটা কড়া কথাও বলত না। আদুরে মেয়ে, কিন্তু অবাধ্য নয়।
'আগে চোখের ডাক্তার দেখান,' মাসুদ বলেছিল।
'এই বয়সে?'
'হ্যা। ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নেন।'
তারা তাই করেছিল। তাকে চশমা নিতে হয়েছিল। ডাক্তার বলেছিল, অনেক আগেই তাদের সেটা করা উচিত ছিল।

গলিটা একটু এগিয়েই প্রধান শড়কে পড়েছে। সেখানে বেশ কিছু দোকানপাট আছে। এটা ধরে ডান দিকে মিনিট পাঁচেক হাটলেই তার অপর কর্মস্থল, কিন্তু সে দশ মিনিট আগে সেখানে যেতে চায়না। কী করবে এই ব্যাপারে মন স্থির করতে পারার আগেই দেখল, সামনের চায়ের দোকানের কাছ থেকে হারুন সাহেব হাত ইশারায় তাকে ডাকছে। সে এগিয়ে গেল।

'চা খান,' সে বলল। মাসুদের মুখ থেকে কিছু বের হওয়ার আগেই কাঁধে চাপ দিয়ে দোকানের সামনের বেঞ্চে বসিয়ে দিল। 'দুটো চা।' তারপরই নিজে তার পাশে বসতে বসতে বলল,'আমার মেয়েটাকে তো পড়ালেন না, ওতো ইংরাজিতে ফেল করে বসল। আবার ওকে ইংরাজি পরীক্ষাটা দিতে হবে। এবার আপনি একটু পড়ান।' তার কন্ঠে অনুনয়ের সুর।
মাসুদ বিব্রতভাবে তার দিকে তাকাল। উচ্চমাধ্যমিকের কাউকে পড়াতে হলে নিজেকেও পড়তে হবে। সেই ঝামেলায় যাবে না বলে সে এইটের উঁপরে পড়ায় না। বাড়িয়ে ধরা চায়ের কাপ নিয়ে চুমুক দিল।
'ওদের কলেজের স্যারের কাছে পড়াননা কেন?' সে জানে, প্রাইভেট পড়ানোর ক্ষমতা এর আছে।
'পড়ালাম তো,' তার কন্ঠে হতাশা। 'পাশ করাতে পারল কই?' তারপর একটু থেমে বলল,'এবারও পাঠালাম, এক সপ্তাহ পরে বলল, সময় নাই, পড়াতে পারবেনা। এটা কেমন কথা? মাস দেড়েক পরে পরীক্ষা।'
মাসুদের এর জবাব জানা নেই। সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
'ঠিক আছে,' সে নিজেকে বলতে শুনল। 'কাল থেকে আমি পড়াব। সকাল সাড়ে এগারটার দিকে। আপনি ঐ সময় একটু থাকতে পারবেন?' একজন শ্রমজীবী উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রীকে ইংরেজি পড়াবে! মেয়েটা না আবার লাঠি নিয়ে তাড়া করে।
'হ্যা,' তাকে কিছুটা ভারমুক্ত বলে মনে হল। 'আরো দুটো দিন বাড়িতে আছি, তারপর চিটাগাং যাব ব্যবসার কাজে।'

পাঁচটার একটু পরে সে নিজের গলির ভিতরে ঢুকতেই সুশান্ত স্যারের মুখোমুখি পড়ে গেল। সে মাস্টারস পাশ সত্যিকারের একজন স্যার। দুই কি.মি. দুরের বাণীনগরে থাকে। আগে এখানকার কয়েকজন ছাত্র পড়াতো, তখন থেকে মাসুদের পরিচয়। দূর হয়ে যায় বলে এখন আর এদিকে পড়ায় না।

'আরে, মাসুদ ভাই?' মুখে হাসি ফুটিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল। 'পড়ানো শেষ, নাকি এখন আরো আছে?'
'না, সন্ধ্যার পরে আছে।' মাসুদ হাত মিলিয়ে বলল। 'হঠাত এদিকে কী মনে করে, স্যার?'
'রবিউল সাহেবের কাছে এসেছিলাম,' সে বলল। 'একটা চাকরীর ব্যাপারে একটু সুপারিশের ইয়ে আরকি।'
'কাজ হল?'
রান্নাঘরের কাজের কথা মনে পড়ল। লোকটা সচিবালয়ে কাজ করেন, মানুষজনের সাথে খুব একটা মেশেন না, কিন্তু ব্যবহারে কোন দাম্ভিকতার চিহ্ন নেই। বাড়ির অবস্থা দেখলে মনে হয় না তিনি অতিরিক্ত অর্থ আয় করেন।
'না। বাড়িতে নেই, ঘণ্টা খানেক পরে আসবে।'
'তাহলে?' মাসুদ তখনো তার হাত ধরে আছে।
'ঘুরে ফিরে সময় কাটাই, তারপরে আবার যাব।'
'আমার ওখানে চলেন,' মাসুদ তাকে হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে চলল। 'আপনার কাছে কিছু কথা জানার আছে।'

...এক ডাকেই হারুন সাহেব বের হয়ে এসে তাকে নিয়ে ড্রয়িং রুমে বসালো। ঘরটা গুমোট।
'মণি, মা, তোর স্যার এসেছে।' তারপর জানালার কাছে গেল। 'জানালাটা খুলে দিই, দেখেন, কী সুন্দর বাতাশ।'
সেটা খোলা হতেই সত্যিই সুন্দর বাতাশে ঘর ভরে গেল। মাসুদ বাইরে তাকাল। এদিকটাতে ছোটখাট একটা বাগান। শাকশব্জী, দুটো নারকেল আর কয়েকটা পেয়ারা গাছ। আষাঢ় মাস, আকাশ কাল হয়ে আছে, কিন্তু বৃষ্টির নামগন্ধ নেই।

'আসসালামু আলাইকুম, কাকা,' মণি এসে ঢুকল। হাতে বই, খাতা আর কলম।
'ওয়ালাই কুমাস সালাম। বসো।'
'মা, তুই পড়, আমি একটু চায়ের কথা বলে আসি।' হারুন সাহেব বের হলেন।

'কী পড়বে, বের কর।'
'আপনি যদি এই মডেল্গুলো করিয়ে দেন,' মণি বই খুলতে খুলতে বলল। 'এতে চল্লিশ মার্ক, আমি পাশ করে যাব।'
'আমি তোমাকে কিছু করিয়ে দিতে পারবনা।' মণি ঝট করে মুখ তুলে তাকাল। সে শঙ্কিত হয়ে উঠেছ। কিন্তু পরের কথায় তার মুখে হাসি ফুটে উঠল। 'সব কিছু তুমি করবে, আমি তোমাকে সাহায্য করব।' সে বইটা মণির দিকে ঠেলে দিল। 'তোমাকে যা করতে হবে,' সে বলল। 'এখন তুমি প্রথমে প্যাসেজটা পড়বে, বাংলা অর্থ করবে। প্রতিটা শব্দের অর্থ। যে শব্দের অর্থ পারবেনা, সেটা খাতায় লিখবে, আমি উচ্চারণ আর অর্থ বলে দেব। তোমার বাড়ির পড়া থাকবে, শব্দের অর্থ মুখস্থ করা, প্যাসেজটাকে বাংলায় অনুবাদ করে সেই অনুবাদটাকে আবার ইংরেজি করা। বাকি সব তারপরে।'
'কাকা...স্যার, সেটা তো আবার এটাই হবে।'
'তুমি যদি সেটা না দেখে পার, তাহলে তোমার পক্ষে ইংরাজিতে ফেল করা অসম্ভব।' মেয়েটা খুশি হল।

মণি শুরু করল, আর সে সেটা করল মাসুদকে স্তম্ভিত হয়ে এটা দেখানোর জন্য যে, তার ইংরেজি জ্ঞান একজন পঞ্চম-ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর চেয়েও কম! কলেজের শিক্ষকের সাত দিনের ধাঁধাঁর উত্তর।

খাতায় লেখা হল পঁয়ত্রিশটা শব্দ। মাসুদ সেগুলোর উচ্চারণ আর অর্থ বলে দিল, মেয়েটা খাতায় লিখে নিল।
'এগুলো মুখস্থ করতে হবে। কালকে আমি চাই। সবগুলো না পার, বিশটা দশটা যা পার।
'সবগুলো পারব, স্যার।'
'চিন্তার কিছু নেই,' মাসুদ বলল। 'পরের বারে দেখবে, অনেক কম শব্দ মুখস্থ করতে হচ্ছে। বেশিরভাগ শব্দই বারবার আসতে থাকবে।'
'আমি পারব, স্যার।' তার কন্ঠস্বরে আত্মবিশ্বাসের সুর।

মেয়েটা পারল। এক সপ্তাহের ভিতরেই সে মাসুদকে তৃপ্ত করল। মাসুদের কাজ হল আসা যাওয়া আর মঝেমাঝে কিছু দেখিয়ে দেওয়া।

...শুক্রবার। মণিকে পড়ানো শুরু করার পর থেকে সে শুক্রবার ছাড়া আর কোন দিন কাজ করতে যায় না। তার পরীক্ষার পরে আবার হয়ত শুরু করবে। সেখানে সে সামান্য কিছু পারিশ্রমিক পেতে পারে, কিন্তু তার কাছে সহানুভূতির মূল্য অর্থের চেয়েও বেশি। অর্থ পিপাসা বাড়াতে পারে, সহানুভূতি বাড়াতে পারে তৃপ্তি- অন্তত তার ক্ষেত্রে।

বারটার একটু আগে সে কাজ শেষ করে ফিরে আসছে। গলিটা থেকে সে সবেমাত্র বামে নিজের আস্তানার দিকে পা ফেলবে, একটা আলোর ঝলক গলির মুখের দিক থেকে এসে তাকে অতিক্রম করে এগিয়ে গেল। সে সেদিকে তাকাল। সেখানে একটা ঝকঝকে মটর গাড়ি এসে থেমেছে। এই গলিতে গাড়ি ঢুকতে পারেনা। এখানে এমন কোন বাড়ি নেই, যেখানে এই ধরণের গাড়িতে চড়ে বেড়ানো কোন মানুষের আগমন ঘটার সম্ভবনা থাকতে পারে।

গাড়ি থেকে প্রথমে নামল পঁচিশ-ত্রিশ বছর বয়সের এক তরুণ। ছিপছিপে লম্বা তরুণের ঝকঝকে পোশাক যেন আলো ছড়াতে থাকল। পিছন ফিরে গাড়ির ভিতরের কাউকে কিছু বলে সোজা হয়ে সরে দাড়াল। তার দৃষ্টি মাসুদের দিকে। তার পাশ দিয়ে নামল দশ এগার বছর বয়সের একটা মেয়ে। দুজনের দৈহিক গড়নের মিল চোখে পড়ারমত। এত উজ্জ্বল হয়ে উঠল জগতটা, আকাশের সব মেঘ কি কেটে গেছে? সে সেটা দেখার জন্য মুখ তুলে তাকাতে পারলনা, সম্মোহিতেরমত সে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকল।

ইঁটের খোয়ার রাস্তায় জায়গায় জায়গায় পানি জমে আছে, তরুণটার পায়ে দামী চামড়ার ঝকঝকে জুতা, কিন্তু তাকে মনে হলনা সেটা নিয়ে সে চিন্তিত। মেয়েটাও না। সামান্য পথ, মুহূর্তেই তারা মাসুদের সামনে এসে দাড়াল।
'সালামালেকুম, দুলাভাই।' মৃদু হাসল সে। মতিন কোন জবাব দিতে পারলনা, সে তার পাশে, সামান্য একটু পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটাকে দেখছে। দেখছে, দেখছে আর দেখছে...। এত সুন্দর মেয়েটা!
সে মুখ তুলে আকাশের দিকে তাকাল। আবার মেঘ জমতে শুরু করেছ। বৃষ্টি যেন না হয়- সে মনে মনে বলল। সুন্দর মেয়েটা তাহলে ভিজে যাবে।
মেয়েটাও মুখ তুলে আকাশের দিকে তাকাল। যেন ঝমঝম করে বৃষ্টি হয়- সে মনে মনে বলল। বাবাকে তাহলে আর গোসল করতে যেতে হবেনা। আর আমিও মজা করে ভিজতে পারব। মা আমাকে একফোঁটা ভিজতে দেয়না।

'বাবা,' মেয়েটা দু'পা সামনে এগিয়ে এসে দুই হাত দিয়ে মাসুদের ঝুলে থাকা সিমেন্টের ছোপ লাগা বামহাতের কব্জির কাছটা ধরে সামনে টেনে আনল। টপটপ করে ঝরতে থাকা পানির ফোঁটা তিনটে মুঠিকেই ভেজাতে শুরু করল। বৃষ্টি কিন্তু শুরুই হয়নি।
'আমরা তোমাকে বাড়ি নিয়ে যেতে এসেছি। মা গাড়িতে আছে...।'

আশা আর নিরাশায় ভরা ম্লান হাসি নিয়ে সে তার মামার দিকে তাকাল, তার মামার মুখে এক মুহূর্তের জন্য হাসি ফুটেই মিলিয়ে গেল, কিন্তু সেখানে খুশির আভা...।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন ...........................আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমার মান্ধাতার আমলের মেসিন আমার ইচ্ছামত চলতে চায়না। সবাইকে ধন্যবাদ।
মামুন ম. আজিজ ফিনিশিং চমঃকার, তবে মাঝখানে একটু ঝূলে গেছে ....
.................ধন্যবাদ। এর কারণ, ছেঁটে ফেলা ডালের গোঁড়া থেকে গেছে। শুভেচ্ছা।
ফয়সাল বারী গল্প পরে ভালোলাগার একটা ব্যাপার থাকে, এখানে তা সিল puropuri
.........আপনার ভাল লাগারমত কিছু দিতে পেরেছি জেনে ভাল লাগল। অনেক ধন্যবাদ।
মো. ইকবাল হোসেন খুব সুন্দর গল্প।কিছু কিছু উপমা আছে অসাধারণ।গল্পের জন্য ধন্যবাদ।
...............সাধারণ কথার মোড়কে মোড়া উপমাগুলো কীভাবে খুঁজে পেলেন? আপনার ধন্যবাদ প্রাপ্য। আর, ৫ নিয়ে বসে আছি, কিন্তু আপনার লেখা কই? এবার পাচ্ছি তো?
সাধারণ কথার মোড়কেই কিছু অসাধারণ উপমা পেয়েছি। এবার নিশ্চিত আমার লেখা পাবেন ।পড়বার আমন্ত্রণ রইল।
তানি হক দারুন লাগলো গল্পটি ..শেষের দিকে এসে আবেগ ছুয়ে গেল ..অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর লিখাটির জন্য ...
.........এটা পড়েছেন বলে খুব খুশি হলাম। আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
নিলাঞ্জনা নীল খুব ভালো লাগলো......
..........ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। অনেক ধন্যবাদ।
মিলন বনিক আঁচ করা যাচ্ছিল না..শেষের দিকে কি হবে--গল্পের স্বাভাবিক গতিই পাঠককে ঠেনে নিয়ে গেছে গল্পের জগতে..খুব ভালো লাগলো দাদা...অনেক শুভ কামনা...ঈদ মুবারক....
.........পড়ার জন্য ধন্যবাদ আর আপনার প্রতিও অনেক শুভ কামনা।
Lutful Bari Panna ওফফফ! কি জানি কেন, চোখে পানি এসে গেল। আমার বাবা একজন শিক্ষক ছিলেন। আর বাম রাজনীতি করতেন। এলাকাভিত্তিক বড়সড় একটা পদও ছির পার্টির। ছাত্ররা জোর করে তার কাছে এসে ইংরেজী পড়ত। আর তারপরও তিনি রীতিমত একজন শ্রমিকের মত আমাদের ক্ষেতে কাজ করতেন। নিজের ক্ষেতেই করতেন তবু তাকে একজন শ্রমিকের মতই কাজ করতে দেখতাম। আপনার গল্পটা পড়তে পড়তে মনে পড়ে যাচ্ছিল সব। তিনি বেচে নেই। আপনার গল্পের টুইষ্টটা দারুণ ভাল লাগায় ভরিয়ে দিল।
.........এই জাতীয় মানুষ আমার কল্পনার নায়ক। এরা যে শুধু কল্পনার নয়, বাস্তব সেটার প্রমাণ আপনার বাবা। আর তার খোঁজ দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এমন একজন পিতার সন্তান হতে পারাটা গর্বের বিষয়।
শাহ আকরাম রিয়াদ দারুন গল্প! ভাল লাগল।
.........ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। ধন্যবাদ আর সেই সাথে অভিনন্দন।
sakil ekebare ghorpalano manusher jiboner golpo.ortho moho ke pechone thele kichu manush beche thake beche thakte shikhay. Besh valo laglo apnar lekha shuvo kamona roilo.
........পড়েছেন বলে ধন্যবাদ। আপনার প্রতিও শুভ কামনা রইল।

০৪ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪