পাথরের পৃথিবী

কাঠখোট্টা (মে ২০১৮)

সেলিনা ইসলাম
  • ১৩
  • ৭৬
বাইরে ভীষণ ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। চুপচাপ বসে বসে নানা কথা ভাবছি। ইলেক্ট্রিসিটিও নাই। টিমটিম করে মোমবাতিটা জ্বলছে। এমন সময় বাসার কলিং বেলটা বেজে উঠতেই আমার ভীষণ বিরক্ত লাগল। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত দশটা!
-ধ্যাত এই অসময়ে আবার কে আসবে? দরজা খুলে দেখি একটা বাইশ তেইশ বছরের যুবক।
-জ্বী,কাকে চাই?
-এটা কী বশীর সাহেবের বাড়ী?
-জেনে শুনেই তো জায়গা মত এসেছেন। তাহলে আবার জিজ্ঞেস করছেন কেন?
-না মানে শিওর হচ্ছি আর কী।
ছেলেটার কাঁধে একটা ব্যাগ। আর হাতে হুইল ঠ্যালা একটা সুটকেস। ছেলেটা কৈফিয়ত দেবার মত করে বলল-
-আসলে আমরা তিন বন্ধু মিলে এই বাসার একটা রুম ভাড়া নিয়েছি। টেলিফোনেই সব কথা সেরে নিয়েছি। আপনার সাথেই তো মনে হয় কথা হয়েছে?
-হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক আছে...ঠিক আছে। আসুন ভীতরে আসুন। আমি দরোজা থেকে সরে দাঁড়ালাম। ছেলেটা ঘরে ঢুকে একটা চেয়ার টেনে বসলো। বলল
-আমি জামাল,সজল আর শিমুল আসেনি এখনও? আমি ওর কথার জবাব না দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম-
-কী খাবেন? ঠাণ্ডা না গরম?
-জ্বী বৃষ্টিতে ভিজে একটু ঠাণ্ডাই লাগছে। গরম হলে ভালো হয়। আমি টেবিলে থাকা ফল কাঁটার ছুরিটা হাতে নিয়ে ভীতরে চলে গেলাম। কাঁপে করে র'চা এনে জামাল ছেলেটার সামনে রেখে বললাম-
-সরি দুধ চিনি কিছুই নেই। র'চা খেতে হবে।
-অসুবিধা নেই...। গরম চাতে চুমুক দিতে দিতে বলল কথাটা। আমি মৃদ্যু হেসে চুপ করে রইলাম।জামালই নিরাবতা ভাঙল
-শুনেছি এই বাসায় নাকি কোন ভাড়াটিয়া থাকতে চায় না। বলবেন কী কেন?
-আপনি কী সত্যিই শুনতে চান কেন থাকতে চায় না?
-জ্বী যদি আপনি কিছু মনে না করে বলেন। ছেলেটা খেয়াল করলো না আমি এই ঘটনা বলতে কতটা খুশি হয়েছি। সেই খুশি খুশি ভাব নিয়ে বলতে লাগলাম-
- এই বাড়িটা বশীর সাহেব অনেক কষ্ট করে করেছিলেন। দুই ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে ছিল বশীর সাহেবের পরিবার।বশীর সাহেবের বড় ছেলে রশিদ। সে একদিন তার বাবা মাকে একটা মেয়ের কথা বলে। মেয়েটার নাম মৌরি। রশিদ মেয়েটাকে পাগলের মত ভালোবাসে। সে ঐ মেয়েকে বিয়ে করবে। কিন্তু ওর বাবা মা ভাইবোন কেউই এই মেয়েকে রশিদের বউ করতে রাজি না। কারণ মৌরির কোন বাবা মায়ের পরিচয় নেই। সে একটা এতিম খানায় বড় হয়েছে। কিন্তু রশিদ একগুঁয়ে স্বভাবের। সে কারো কোন কথাই শুনতে রাজি নয়। একদিন মৌরিকে বউ করে বাড়িতে এনে হাজির। বাবা বশীর ছেলের এই গোঁয়ার্তুমি মেনে নিতে পারলেন না। "মান সম্মান সব গেলো গেলো!" বলে চিৎকার করতে না পেরে,দম বন্ধ হয়ে মারা গেলেন। তাঁর এই মৃত্যুর জন্য সম্পূর্ণ দায়ভারও এলো মৌরির উপর। মৌরির রূপ আর গুণ বাসার কারোর মন জয় করতে না পারলেও,ছোট ভাইয়ের নজর কাড়ল ঠিকই।
- কী বলেন বড় ভাইয়ের বউয়ের সাথে...
-জামাল সাহেব চা শেষ করেন। আমাকে বলতে দেন। না হলে গল্প বলার খেই হারিয়ে ফেলব।
বেশ বিরক্তি নিয়েই কথাটা বললাম। সত্যি সত্যিই ছেলেটা চুপ হয়ে গেলো। সে আগের থেকে অনেক বেশি মজা নিয়ে গল্প শুনার জন্য অপেক্ষা করছে। ভাবখানা এখানে বড় ভাবির সাথে দেবরের পরকীয়ার কোন রসালো স্বাদ পাবে। মনে হচ্ছিল ছেলেটার কানের নীচে কষে একটা চড় মারি! উফঃ…
যাইহোক,তারপর আমি আবার বলতে শুরু করলাম-
- ছোট ভাই ভাবির প্রতি বাসার অন্যদের ব্যবহারে কষ্ট পেলেও। কোন প্রতিবাদ করার সাহস পেলো না। মায়ের কড়া আদেশ-"এই অপয়া,অলক্ষ্মী মেয়েকে কেউ আমার ঘরের বউ বলবে না। সে কোনদিন এই বাসার কারোর আপন হতে পারবে না! এই মেয়ে জন্ম নিয়েই নিজের বাবা মাকে খায়ছে।এই বাড়িতে ঢুকেই খায়ছে আমার স্বামীকে! এই মেয়ে আমার সংসার শেষ করে ছাড়বে! রাক্ষুসি নারী সে!" ব্যস কারো বাপেরও সাধ্যি নেই মায়ের কথার অবাধ্য হয়। একজন মানুষের সাথে কীভাবে মানুষ এত কঠিন হৃদয়ের হতে পারে। তা সত্যিই চাক্ষুষ না দেখলে বিশ্বাস হত না। বাসার সবাই মৌরিকে এক রকম ঘরের কোণে বন্দী করে রাখলেন। কেউ ওর সাথে কথা বলে না। ও ঘরের বাইরে আসুক তাও কেউ চায় না। এভাবে ছয়মাস থাকার পর একদিন মৌরি অসুস্থ হয়ে পড়লো। রশিদ ওকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে ছুটে গেলেন। ডাক্তার জানালো মৌরি চার মাসের গর্ভবতী! এই খবরে রশিদ এবং মৌরি অনেক খুশি হল। বাসায় সবাই খবরটা জেনে তারাও খুব খুশি হলেন। সবাই মৌরিকে কিছুটা পছন্দ করতে লাগলো। কিন্তু মৌরি তাদের এই পছন্দকে অপছন্দ করলো। তাদেরকে পাত্তা না দিয়ে নিজেকে নিজের ঘরেই আগের মতই বন্দী করে রাখলো। সে রশিদকে বলল "আমাকে নয় আমার সন্তানকে মেনে নিয়ে এই পছন্দ। আমার সন্তানকে আমার কাছ থেকে দূর করতেই এই ষড়যন্ত্র!" রশিদ মৌরিকে কিছুই বলতে পারেনি।
মৌরি এই বাসার খাবার খেতেও ভীষণ ভয় পেতে লাগলো। ওর মনে একটা ভয়ই ঢুকে গেলো ওর সন্তানকে ওরা মেরে ফেলবে। মৌরির ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে রশিদ দয়ামায়াহীন হয়ে গেলো। সে মৌরি ছাড়া আর কাউকেই বিশ্বাস করতে পারলো না!
একদিন সন্ধ্যায় রশিদ বাসায় ফিরে দেখে মৌরি বিছানায় শুয়ে আছে। অনেক ডাকাডাকি করার পরও ওর ঘুম ভাঙল না। রশিদ ওকে নিয়ে আবারও ছুটে গেল ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার মৌরিকে মৃত ঘোষণা করলো। এটাও বলল বিষক্রিয়াই এই মৃত্যুর কারণ।
-কী বলেন,এত নিষ্ঠুরতা! একজন গর্ভবতী নারীকে কেউ মারতে পারে?
-জামাল সাহেব আপনি কিন্তু আবারও আমার গল্প বলায়…
-সরি সরি আর ভুল হবে না।
আমার বিরক্তি দেখে ছেলেটা ঘাবড়ে গেলো। কয়েক মুহূর্ত চুপ থেকে আমি আবারও বলতে শুরু করলাম।
- মৌরির মৃত্যু রশিদ মেনে নিতে পারলো না। বাসার সবাই বলল মৌরি নিজেই আত্মহত্যা করেছে।কিন্তু রশিদ কারো কথাই বিশ্বাস করে না। সেদিন অফিসে যাবার সময়ও মৌরি ওর অনাগত বাচ্চাকে নিয়ে কত সুন্দর সুন্দর স্বপ্নের কথা রশিদকে বলেছে। সেই মৌরি কোনো ভাবেই নিজের সন্তানকে মারতে পারে না। সে আত্মহত্যা করতেই পারে না।

কেন যেন রশিদের আশে পাশের কোন মানুষকেই আর ভালো লাগে না। মনে হয় আশে পাশের মানুষগুলো সব আবেগহীন স্বার্থপর। সবার মন নিস্তেজ হয়ে শুধু নিজের স্বার্থকেই বড় করে দেখে। রশিদ যখন ওর চারপাশে তাকায়,হাজারও মানুষের ভিড় দেখতে পায়! কিন্তু মানবিক মানুষ একজনকেও দেখতে পায় না! কারো প্রতি আর বিশ্বাস আস্থা কিছুই ফিরে পায় না। তার জীবন অর্থহীন মনে হয়। ওর যে কী হয়! একদিন রশিদ বাইরে থেকে বাবা মা ভাই বোনদের পছন্দের সব খাবার কিনে আনে। মোগলাই,কাবাব,চটপটি,ইত্যাদি। যে খাবারগুলো মৌরিরও অনেক প্রিয় ছিল। রশিদ বাসায় এসে সবাইকে নিয়ে সেই খাবার খেয়ে নেয়। খাবারগুলো খেয়ে সবাই যার যার ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে যায়। সেই ঘুম আর কোনদিন ভাঙ্গেনি!
এইটুকু বলে আমি চুপ করে যাই। জামাল কিছুক্ষণ নড়ে চড়ে বসে। ও যে ভয় পেয়েছে তা একেবারেই স্পষ্ট। তারপর বলে-
-আর রশিদ? রশিদ ওকি ঘুমাই গেছিল?
-না সে ঘুমাইনি। এই ঘরের সিলিঙ ফ্যানের সাথেই মৌরির শাড়িতে নিজেকে ঝুলিয়ে দিয়েছিল।
-এ এ এই ঘরের ফ্যানে? তোতলাতে তোতলাতে জামাল সিলিঙের দিকে তাকায়। আমি মৃদ্যু হেসে বলি-
-জ্বী এই ঘরেই
-এইটা কতদিন আগের ঘটনা?
-তা পাঁচ বছর হবে! কথাটা শেষ হতেই ঘরের লাইট জ্বলে উঠে। জামাল প্রথমেই তাকায় চায়ের কাঁপের দিকে।
-এইটা কী খাওয়াইছেন এ তো রক্ত...। কাপটা উঁচু করে ধরে বলে কথাটা।
-হা হা হা দেখলেন তো দেখার পার্থক্য-র'চা রক্ত মনে হয় লাইটের আলোতে? জামাল সাহেব আপনার বন্ধু শিমুল পাশের রুমেই আছে।
জামাল কিছু না বলেই মোহিত হবার মত পাশের রুমে যেতে যেতে অস্ফুটে জিজ্ঞাসা করে-
-আপনি কে?
-আমি? আমি হলাম এই বাসার বড় ছেলে রশিদ। ঠিক সেই সময়েই কলিং বেলটা বেজে উঠলো। একটা তৃপ্তির হাসি দিয়ে বলে উঠি-
-জামাল সাহেব আপনার বন্ধু সজল এসেছে। আমি দেখছি...।
-আ আ আ...! দরজা খোলার আগেই জামালের চিৎকার ভেসে আসে। সম্ভবত শিমুলকে দেখে উনি জ্ঞান হারিয়েছেন। শরীর থেকে গলা আলাদা করে র'চা সংগ্রহ করেছি। কজনে অমন দৃশ্য দেখতে পারে? দরোজা খুলতেই ঘরে এলো সজল। কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে জিজ্ঞাসা করলাম-
-কী খাবেন? ঠাণ্ডা না গরম? আজ তৃতীয়বারের মত আমার ভালোবাসা মৌরিকে নিয়ে আবার বলতে হবে। আহহঃ কী দুর্দান্ত প্রশান্তি।


আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মোখলেছুর রহমান সব কথাই তো শেষ,শুধু ভাল লাগাটুকু জানালাম।
অমিত কুমার দত্ত বাস্তবতা ও নাটকীয়তার সংমিশ্রণে কঠোরতারর অপূর্ব উপস্থাপন। বিষাদময় গল্পটি পাঠ করে ভাল লাগল। ভাল থাকবেন কবি।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী এ ধরনের গল্প তেমন পড়া হয়নি, পড়ে আমি খুব আনন্দিত হলাম এবং নতুনত্বের অনেক স্বাধ উপলব্ধী করলাম। বরাবরের মত শুভকামনা রইল আপু....
প্রজ্ঞা মৌসুমী ইলেকট্রিসিটি বা কলিংবেল বলায় মনে হয়েছিল বাড়িটা ভৌতিক হয়ে উঠে নি।আর রশীদকে অনেকটা জুড়ে মানুষ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা ছিল। ছেলেটার কড়া নাড়াটাই স্বাভাবিক ছিল। অবশ্য সেলিনা দি আপনিও ঠিক। আমার কাছে মনে হয়েছে এটা মর্মান্তিক ঘটনা। অবশ্য গল্প বলা যদি নেশাই হয় তাহলে কলিং বেলের শব্দ শুনে বিরক্ত না হয়ে ও তো খুশি হতো। এবাড়ির সবকটারই বোধহয় ভৃত হবার কথা। বাকিগুলো অন্তত মৌরীকে নিয়ে আসলে পাথরের পৃথিবী নিয়ে একটা সান্ত্বনা হতো। সে যাক শুভকামনা দিদি
পুরো গল্পটাই একজন ভূতে অনুভূতি। সে নিজেকে ভূত মনে করে না। আর প্রথমেই যদি গল্পে বুঝিয়ে দেয়া হয় যে গল্পটা আসলে কী তাহলে গল্পের চমক কোথায় থাকলো! গল্পের চমকটা শেষে রেখেছে যা পাঠককে ভাবিয়ে তুলবে। গল্পের প্রথম দিকে কী ধরণের গল্প হতে পারে তার কিছুটা আঁচ রাখা হয়েছে। আর ভৌতিক বাড়ি বা বাড়ীর সবাই ভৃত দেখালে গল্পটা পুরাই ভূতের গল্প হয়ে যেত। যা লেখার উদ্দেশ্য ছিল না। একজন মানুষ কতটা হৃদয়হীন হলে স্ত্রীর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে নিজের বাড়ির সবাইকে খুন করে। এবং তারপর নিজেকে শেষ করে দেয়। হৃদয়হীন মানুষ মরে গেলেও শান্তি পায় না। রক্ত যে বেঁচে থেকে ঝরায় সে মরেও রক্তের নেশায় থাকে। কাঠখোট্টা স্বভাবের হওয়া ভালো নয়। তাদের পরিণতিও ভালো হয় না। এই ম্যাসেজটা দেয়ায় গল্প লেখার মূল উদ্দেশ্য ছিল। ভৌতিক গল্প লেখা নয়। আশাকরি আমার লেখার সফলতা বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। গল্প সফল হল কিনা জানিনা। হলেই লেখা সার্থক! শুভকামনা নিরন্তর আপু।
কাজী জাহাঙ্গীর আসলেই গল্পে ভালই চমক আছে। একটা কথা বলি, গল্পের এই ‘সেল্ফ এক্সপ্লেনটরি’ টাইপটা আমার বেশ পছন্দ কিন্তু কেন জানি কেউ কউ বলতে থাকেন এভাবে নাকি গল্প হয়ে উঠেনা । সবসময় ‘জামাল সাহেব বাজারে গেল ঢাউস সাইজের আলুর দাম শুনে তার চোখগুলো যেন আরে ঢাউস হয়ে গেল।’ এভাবে না লিখে আমি যদি সেল্ফ ডেস্ক্রীপটিভ ধারায় বলি ‘বাজারের মুখে জঠলা ঠেলে ভিতরে ঢুকলাম, বেশ ঢাউস সাইজের আলু দেখে ভাল লাগল কিন্ত দাম শুনে আমার চোখগুলো যের আরো বেশি ঢাউস সাইজের হয়ে গেল’ লেখার এধারাটার ব্যাপারে আপনার পরামর্শ চাইছি আর গ/ক’তে সেঞ্চরী করায় অভিনন্দন জানাচ্ছি।
গল্প কখনো কোন বর্ণনাকারীকে(narrators) দিয়ে বলানো হয়। আবার কখনো গল্পের চরিত্রকে(character) দিয়ে। চরিত্র যখন নিজেই গল্পটা বলে তখন তা আত্মকাহিনীর মতই লাগে। যা আমি লিখেছি। কাহিনী হচ্ছে প্রচারের মত-কখনো কাউকে দিয়ে প্রচার করা হয়। আবার কখনো কখনো স্বয়ং ব্যক্তিই প্রচার করে। (আমি যা বুঝেছি তাই বললাম।) আমার কাছে মনে হয় গল্প নিজে বললে তার আবেদনটা বেশিই প্রকাশ পায়। দ্বিমত থাকতেই পারে। কিন্তু আমি এভাবে লিখে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। অনেক অনেক আন্তরিক ধন্যবাদ। শুভকামনা নিরন্তর।
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ এটা কী বশীর সাহেবের বাড়ী? -জেনে শুনেই তো জায়গা মত এসেছেন। তাহলে আবার জিজ্ঞেস করছেন কেন? -------অসাধারণ একটি গলপ।।
অনেক ধন্যবাদ শুভকামনা রইল।
প্রজ্ঞা মৌসুমী শুরু তো হলো খটকা দিয়ে- ইলেকট্রিসিটি না থাকলে কি কলিং বেল বাজে? আর শেষটা দিয়ে তো এই মাঝরাত্রিরে দিলেন ভয় পাইয়ে। ভৌতিক হলেও সমাজের অনেক ক্লেশ এনেছেন। রশীদ দু এক জায়গায় বললো- গল্প বলার খেই হারিয়ে ফেলব / আমার গল্প বলায় - গল্প শব্দটা কানে লাগলো। বাদবাকি বরাবরের মতো ভালোলাগা
প্রথমেই আন্তরিক ধন্যবাদ সময় নিয়ে মনোযোগ দিয়ে গল্প পড়ার জন্য। "ইলেকট্রিসিটি না থাকলে কি কলিং বেল বাজে?" ভূতের কাছে কলিং বেলের শব্দ শোনার জন্য ইলেক্ট্রিসিটির দরকার আছে কী? দীর্ঘ পাঁচ বছর একই ঘটনা বলতে বলতে এখন রশিদের কাছে গল্পই মনে হয়। যা একধরণের নেশা তৈরি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে মানুষের প্রতি ঘৃণা এবং খুন করা নেশা হয়ে গেছে। নেশা মেটাতেই গল্প বলা-যত তাড়াতাড়ি বলা শেষ হবে তত তাড়াতাড়ি নেশা মেটাবে। মাঝখানে কেউ কথা বললে স্বাভাবিকভাবেই সে বিরক্ত হয়েছে। শুভকামনা নিরন্তর।
মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া আপনার কয়েকটি গল্প আমি পড়েছি। কয়েকটি গল্পে আপনার মনোজগতের বিশ্লেষণ পাঠককে নিশ্চয়ই ভাবিয়েছে। এবারের গল্পেও পাথরের পৃথিবীতে ফুল ফোটানোর আশা করেছেন। যারা মানুষকে যন্ত্রনা দেয় তাদের জন্য জীবিত বা মৃত অবস্থা মূখ্য নয়। সব অবস্থাতেই এরা পীড়াদায়ক। আশা করি আপনার গল্পটি থেকে কেউ কেউ শিক্ষা নেবে, হয়তঃ কারো কারো মনে মানবিকতাও জন্ম নিবে। ভালো লাগল গল্পটি। পছন্দ ও ভোট রইল। দোয়া করবেন।
সময় দিয়ে গল্প পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। শুভকামনা নিরন্তর।
Fahmida Bari Bipu গকতে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন। অভিনন্দন আপা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Fahmida Bari Bipu ওরে বাবা, গল্পের শেষে তো কঠিন চমক! ভালো লাগলো। ভৌতিক সংখ্যাতে এই গল্প পেলে আরো বেশি ভালো হতো হয়ত। ভোট রইলো।
"ভৌতিক সংখ্যাতে এই গল্প পেলে আরো বেশি ভালো হতো হয়ত।" এমন কোন নিয়ম কোথাও লেখা নেই,যে বিষয়ে উল্লেখ করে দেয়া হবে সেই বিষয়ের মাঝে অন্য কোন বিষয় এনে লেখা যাবে না। আমার তো মনে হয় - বরং অন্য বিষয়ের মাঝে উল্লেখিত বিষয় তুলে এনে লেখাই অনেক বেশি চ্যালঞ্জিং।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

গল্পের বিষয় কাঠখোট্টা/কাটখোট্টা যার অর্থ হল রসহীন, নির্দয়, নিষ্ঠুর, শুষ্ক, গোঁয়ার; রুক্ষপ্রকৃতি; কঠিনহৃদয়,দয়ামায়াহীন,দুঃসাহসী,উদ্ধত,দুর্ধর্ষ,হঠকারী। আমার গল্প "পাথরের পৃথিবী"-তে চরিত্রগুলো প্রায় সবাইই দয়ামায়াহীন,রুক্ষ গোঁয়ার স্বভাবের(কাঠখোট্টা)। রশিদের পরিবার ওর স্ত্রী এতিম বলে তাকে মেনে নিতে পারেনি! কতটা হৃদয়হীন(কাঠখোট্টা) হলে কেউ এমনটা করতে পারে? রশিদের স্ত্রী মৌরি গর্ভবতী হলে যখন বাসার সবাই ওর প্রতি নমনীয় হয়। তখন সে একেবারেই রুক্ষ(কাঠখোট্টা) আচরণ করা শুরু করে। এদিকে স্ত্রীর প্রতি পরিবারের কঠিন আচরণ (কাঠখোট্টা) রশিদকেও দয়ামায়াহীন (কাঠখোট্টা) করে দেয়। যে প্রতিশোধ নিতে পরিবারের সবাইকে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করে। তারপরও সে স্বভাব পরিবর্তন করে না। তার হৃদয় এতোটাই নির্দয়,নিষ্ঠুর(কাঠখোট্টা)পাথরের মত হয়ে গেছে। মানুষের প্রতি তার কোন দয়ামায়া (কাঠখোট্টা) নেই। সে একের পর এক খুন করে যায়। গল্পে দেখানো হয়েছে ভালোবাসার মানুষের প্রতি নিষ্ঠুর (কাঠখোট্টা) পরিণতি একজন মানুষকে কতটা নির্দয়(কাঠখোট্টা) করে দেয়! দয়ামায়াহীন (কাঠখোট্টা)মানুষগুলোর পরিণতি কোনদিন ভালো হয় না। তারা মরে গেলেও শান্তিতে থাকতে পারে না। বরং আরও বেশি রুক্ষ,নিষ্ঠুর(কাঠখোট্টা)স্বভাবের হয়ে যায়। সুতরাং বেঁচে থাকতে মানুষের প্রতি মানুষের দয়ামায়া ভালোবাসা থাকতে হবে। না হলে তার নিষ্ঠুরতা ছিনিয়ে নেবে হাজারো প্রাণ।

২৭ মে - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১২০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪