ইলিনা এবং হন্তারকের কাহিনী

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী (নভেম্বর ২০১৭)

সেলিনা ইসলাম
  • ২৩
এক
সূর্যের তীব্র তাপ এবং এসিড বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাবার জন্য,মোটা কাঁচ দিয়ে কমিউনিটিকে মুড়ে দেয়া হয়েছে। যেখানে এক সাথে এক একটা কোম্পানির সবাই পাশাপাশি বাস করে। ছোট ছোট করে এক একটা কম্পাউন্ড তৈরি। হাঁটা পথেই সবার অফিস। মেঝেটা সবুজ কার্পেট দিয়ে মোড়া। দূর থেকে দেখলে মনে হবে সবুজ ঘাস। এই পথ ধরেই হেঁটে যাচ্ছে লিয়ন। আজ তার মনটা ভীষণ খারাপ। ওকে আর ওর স্ত্রী লিলিয়ানাকে নিয়ে চারদিকে গুঞ্জন চলছে। তা যেন সে কৃত্রিম বাতাসে কান পেতেও শুনতে পাচ্ছে। লিয়ন ভেবে পায় না কেন লিলিয়ানা ওর কথা শুনছে না। আজ যদি ওর কথায় রাজি হত;তাহলে এই গুঞ্জন উঠত না। সময় বয়ে গেছে। কিন্তু মানুষের গসিপ করার স্বভাবের কোন পরিবর্তন হয়নি!

লিয়ন আর লিলিয়ানার সম্পর্কের বয়স প্রায় পঁচিশ বছর। লিয়নের মনে পড়ে যখন ওরা দুজনেই ষষ্ট শ্রেণির স্টুডেন্ট তখন থেকে ওদের সম্পর্ক। যা আগের দিনের মানুষের কাছে অসম্ভব কিছু মনে হবে। ইতিহাসে পড়েছে লিয়ন-'একটা সময়ে বাল্যবিবাহের রেওয়াজ ছিল। ছিল পণ নেবার প্রথা। তারপর আইন করে সেই বিবাহ বন্ধ করা হয়েছিল। বিবাহের বয়স সরকার থেকেই নির্ধারণ করে দিয়েছিল মেয়েদের ১৮ আর ছেলেদের ২১ বছর হতে হবে। ভয়াবহ অবস্থা ছিল যৌতুক প্রথা। যা ছিল আগে পণ প্রথা।' সে এও পড়েছে-'এই যৌতুকের জন্য কত মেয়েকে জীবন দিতে হয়েছে! কোন কোন মেয়ের উপর তাঁর স্বামী এবং স্বজনরা আমৃত্যু অত্যাচার করত!' অথচ এখন বয়সের কোন সীমাবদ্ধ নেই। যৌতুক পণ এসব কেউ চিন্তাই করতে পারে না। আর স্কুলের ছেলে মেয়েরা চুটিয়ে প্রেম করছে। তবে ১৬ বছরের নীচে ছেলে মেয়েরা একসাথে থাকতে পারবে না। আগের দিনে মানুষের গড় আয়ুও ছিল বেশি। কিন্তু এখন কম।

লিলিয়ানা লিয়নের থেকে মাত্র দুই মাসের বড়। সেই হিসাব করলে লিয়ন দুইমাস একেবারে একা হয়ে থাকবে! যা ভাবলে ওরা দুজনেই একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে হারানোর বেদনায় কেঁদে যায়। লিয়ন মাঝে মাঝে ভাবে ওরা দুজনে একসাথে যদি মরতে পারত? কিন্তু এখানে সে নিয়ম নেই। দুজনের এই দীর্ঘ সময় ধরে সম্পর্ক হলেও ওদের কোন সন্তান হয় নি। টেস্টটিউব বেবি বা কোন বাচ্চা দত্তক নেয়া যেখানে এই ৩০২০ সালে একটা ফ্যাশন। সেখানে লিলিয়ানা এভাবে কোন সন্তানেরই মা হতে চায় না। ও বুঝতে চেষ্টা করে না যে,আমাদের বয়স অতো কম হল না।

ওরা দুজনেই কাজ শেষে বাসায় এসে ভীষণ দুর্বল অনুভব করে। মনে হয় না যে নিজেদের খাবারটাও তৈরি করে খাবে। আজকাল তাই প্রায়ই কাজ শেষে বাসায় এসে দুজনেই ঘুমিয়ে যায়। ঘরের কাজ করার জন্য যে কোন রোবট ভাড়া করবে সেই আর্থিক সামর্থ্যও নেই। দু'জনেই অনুভব করে ওদের একটা সন্তান থাকলে;ওদের বুড়ো বয়সে অন্তত একটু দেখাশুনা করত। এদিকে ডাক্তার বলে দিয়েছে,ওদের কোন সন্তান হবার সম্ভাবনা নেই। তবুও আজ দীর্ঘ বছর একসাথে থাকার পরও লিলিয়ানা বা লিয়ন,দু'জনের কেউই কাউকে ছেড়ে যায় নি। কোনদিন যাবে বলেও মনে হয় না। ওদের কোন বংশধর থাকবে না? চারদিকে গুঞ্জনটা আসলে এসব নিয়েই। সেদিন তো অফিস কলিগ কিমল বলেই ফেলল-
-'আরে লিয়ন এখন ওতো এত বুড়ো হওনি। আরেকটা গার্ল ফ্রেন্ড ধরে ফেলো। যে তোমাকে বংশধর দিতে পারবে।' ওর কথা শুনে সাথে সাথে মিস ডানি বলে-
-'আরে রাখো তোমার গার্ল ফ্রেন্ড। ওর বর্তমান গার্লফ্রেন্ড এখনও অনেক ইয়াং। আর এই থার্টি ফাস্ট সেঞ্চুরিতে এসে কেউ কষ্ট করে বাচ্চা হওয়ায় নাকি? আজব তো তোমরা!'
লিয়ন রেগে যায়। বলে-"ইক্সকিউজ মি...লিলিয়ানা আমার বিবাহিতা স্ত্রী। আমরা তোমাদের মত আধুনিকতার নামে নিজেদের ধর্মীয় সংস্কৃতিকে এখনও ভুলে যাই নি। ঠিক আছে?" কিমল থাকে একটা ছেলের সাথে। সেও কিছুদিন আগে একটা বাচ্চা দত্তক নিয়েছে। মিস ডানি কখনো একটা ছেলের সাথে থাকে। তো দেখা যায় কখনো কোন মেয়ের সাথে! মহিলা সন্তান নিবে না কোন দিন। সে কী আর বুঝবে সন্তানের মর্ম! কথাগুলো ভাবলে কেন যেন লিয়নের ভীষণ রাগ হয়।

আবার ফিরে আসে স্ত্রীর ভাবনায়। আসলে লিলিয়ানা চায় সে লিয়নের সন্তান গর্ভে ধারণ করবে। সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত দশমাস দশদিনের যে অলৌকিক সময়! তার প্রতিটা মুহূর্তই সে মা হবার অনুভূতিতে উপভোগ করতে চায়। সে মা হলে এভাবেই হবে। এই জেদটাই এতদিন সে ধরে এসেছে। কিন্তু লিয়ন আর পারছে না। ওর ওতো বাবা ডাক শুনতে ইচ্ছে হয়। ওর ওতো ইচ্ছে হয় ওদের অবর্তমানে ওদের নাম নিয়ে এই পৃথিবীতে কেউ থাকুক। বাচ্চাটা ওদের বা অন্য কারো ভ্রূণ থেকে কিনা,সেইটা ওর কাছে বড় কিছু নয়। ও বাবা হতে চায় ব্যাস। যে সন্তান এই মুহূর্তে ওর সাথে থাকবে। ওরা তাকে সন্তানের মত বড় করবে। বাবা এবং মা ডাক শুনবে। সুখের ভেলায় ভেসে ভেসে দুজনে মিলে একটা নামও ঠিক করেছে 'ইলিনা'। ইলিনা বড় হয়ে এক সময় ওকে আর লিলিয়ানাকে দেখাশুনা করবে। ওরা যখন কাজ থেকে ফিরবে,তখন অন্তত এককাপ চা ওদের দিকে এগিয়ে দেবে। এটুকুই ওদের জন্য অনেক।

-"আআআহহ...' কিছু একটার সাথে লিয়ন বেশ জোরেই হোঁচট খায়। নানা কথা ভাবতে ভাবতে ওর খেয়ালই ছিল না যে ও কোন পথে হাঁটছে! পায়ে ভীষণ ব্যথা পেয়েছে। হাত দিয়ে পা'টা একটু ডলে দেয়। কীসের সাথে ধাক্কাটা খেলো? তাই দেখতে সামনে তাকায়। ও বিস্ময়ে 'হা' হয়ে যায়! নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বের হয়ে আসে 'ইলিনা'! ওর চোখ দুটোর দিকে তাকিয়ে লিয়ন অবাক হয়ে যায়! ওর মনে হয় ঐ চোখে অনেক দুঃখ ভরা। এগিয়ে কাছে যায়। দেখে ইলিনার সারা গায়ে কাঁদা মাটি মাখা। কোথাও কোথাও জং ধরে গেছে। দেখলেই বুঝে নেয়া যায় ওকে অনেকদিন ধরে কেউ যত্ন করে না। ওর হার্টের তারগুলো সব ছেড়া! মনে হচ্ছে কেউ খুব রাগ করে নিজে হাতে তারগুলো ছিঁড়ে ছিন্নভিন্ন করে রেখেছে। লিয়ন ইলিনাকে ছুঁয়ে দিতেই ওর কেন যেন মনে হল সে কেঁপে উঠেছে। লিয়ন এদিক ওদিক তাকিয়ে ইলিনাকে ঘাড়ে তুলে নেয়। "নাহ যতটা ভারি ভেবেছিলাম এতটা ভার সে নয়!' মনে মনে কথাটা বলতে বলতে খুব দ্রুত পা বাড়ায় ঘরের দিকে।

দুই
এখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। সিকিউরিটি রোবটটা মাইকে রেকর্ড বাজিয়ে ঘোষণা দিচ্ছে 'এখুনি বাইরের লাইটগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। সবাই সবার ঘরের ভিতরে অবস্থান করুণ। ঘরের আলো মাত্র বিশ মিনিটের জন্য দেয়া হবে। এরই মাঝে সবাই সবার কাজ শেষ করবেন। পানি কেউ এক জগের বেশি খরচ করতে পারবেন না। প্রতিটি পরিবারের জন্য একই নির্দেশ।' এই ঘোষণা আগামী তিন মিনিট চলবে। এই তিন মিনিটেই লিয়নকে ঘরে ফিরতে হবে। হাঁপাতে হাঁপাতে এক রকম দৌড়েই সে ঘরে ফিরে। দেখে লিলিয়ানা ওকে ঘরে না দেখে কেমন অস্থির হয়ে আছে। আসলে ওদের ভালোবাসা দেখে এই কমিউনিটির সবাই জ্বলছে। আজকাল কেউ কাউকেই এতটা ভালোবাসে না। যার যার মত সে সে কাজ কর খাও,থাক। ভালো না লাগলে যেখানে ভালো লাগে,যাকে ভালো লাগে সেখানে চলে যাও।
ওদের কমিউনিটিটা মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষদের জন্য। "যাক কেউ বাইরে নেই। কেউ ইলিনাকে দেখেনি!" লিয়ন ঘরের দরজা খুলে ইলিনাকে ঘাড় থেকে নামীয়ে রাখে। লিলিয়ানা চিৎকার দিয়ে উঠে-
-'আরে...এই জঞ্জাল আবার কোথা থেকে তুলে আনলে?'
-"হুসসস,আস্তে বল হানি। কেউ শুনে ফেলবে!"লিয়ন ঠোঁটে আঙুল চাপা দিয়ে কথাটা বলে। তারপর এক গ্লাস পানি খেয়ে নেয়। এমন সময় ভেসে আসে মাগরিবের আজানের সূর। লিয়ন হাঁফ গ্লাস পানি নিয়ে বাথরুমে ঢুকে। ঐ পানিটুকুতেই ফ্রেস হয়ে বের হয়। দেখে লিলিয়ানা টেবিলে নুডুলস রান্না করে রেখেছে। ঘরের কোণে খানিকটা মাটি লুকিয়ে রেখেছে। দু'জনে সেই মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে নামাজ পড়ে নেয়। তারপর তৃপ্তি নিয়েই খাবারটা খায়।

এই কমিউনিটির নিয়ম হল কোন রেফ্রিজারেটর বা মাইক্রোওয়েভ কিছুই কেউ বাসায় রাখতে পারবে না। রান্না করার জন্য একটা ছোট্ট গ্যাসের চুলা। তাও চার মিনিটের বেশি গ্যাস ব্যবহার করা যাবে না। শুধুমাত্র ফ্যাক্টরি গুলো ছাড়া অন্য কারো পানি বিদ্যুৎ গ্যাস অতিরিক্ত ব্যবহার করার সুযোগ নেই। প্রয়োজনে তুমি বেকারি থেকে তৈরি খাবার কিনে নিয়ে আসতে পারো। তাতে দাম অনেক বেশি পড়বে। ওদের যে আয় তা বিবেচনা করেই,এই কমিউনিটির গভর্নর থেকে ওদের জন্য সবকিছু নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে জনগণের নিজের কোন ইচ্ছাই কার্যকর হবে না। নিম্নবিত্ত,এবং উচ্চবিত্তদেরও এভাবেই ভাগ করে কমিউনিটি তৈরি করা হয়েছে। নিম্নবিত্তদের কমিউনিটিতে বিদ্যুৎ গ্যাস কিছুই নেই। ওদের সবকাজ দিনের আলোতে করতে হয়। সাধারণত নিম্নবিত্তরাই সেরোগেট মাদার হতে পারে। তাও মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তদের অর্থের বিনিময়ে। এসব নিজেদের উদ্যোগে কেউ চাইলেই কিছু করতে পারবে না। যা করার কমিউনিটি মেয়রের অফিসের মাধ্যমে করতে হবে। নানা রকম সুযোগ সুবিধা সবচেয়ে বেশি ভোগ করে উচ্চবিত্তরা। আর সবচেয়ে কম সুবিধা নিম্নবিত্তদের। অবস্থা দৃষ্টে বুঝে নেয়া যায় যে,সবগুলো কমিউনিটির প্রধান গভর্নমেন্ট নিম্নবিত্তদের একদিন নিশ্চিহ্ন করে দেবার প্ল্যান করেছে! খাদ্য বিদ্যুৎ গ্যাস। এমন কী অক্সিজেন বাঁচাতে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তদের কোন পরিবার একটার বেশি সন্তান নিতে পারবে না। যারা পরিবারে বৃদ্ধ থাকবে,তাদেরকে ৬০ বছর বয়স হলেই এবং যারা নির্ধারিত নিয়ম বা শর্ত না মানবে। তাদের সবাইকে চিরদিনের জন্য ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়া হবে। আর পুরুষ কিংবা নারী কারো মাথায়ই চুল এবং মুখে দাড়ি-গোঁফ থাকতে পারবে না। কারণ চুল এবং দাড়ি গোঁফে পানি অপচয় হয়। সব কমিউনিটিতে এই নিয়মগুলোতে মিল আছে। যদিও দেখা যায় ৫০/৫৫ বছর হলেই বেশিরভাগ মানুষ স্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করে।

এখানে দিনের বেলায় যেমন প্রচণ্ড গরম। তেমনি সূর্য ডুবে গেলেই প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। লিয়ন বাইরে তাকায়। দেখে কী সুন্দর চাঁদ উঠেছে। মনে হয় হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেয়া যাবে। কাঁচের দেয়াল ভেদ করে ভিতরে জ্যোৎস্নার আলোও আসতে পারে না। তবে বাইরের সবকিছু একেবারে ঝকঝকে দেখা যায়। পাহারারত ড্রোনগুলো পাখির মত ঘুরে বেড়াচ্ছে। একেবারে দেয়াল ঘেঁষে ক্যামেরার চোখগুলো বুলিয়ে নিচ্ছে। লিয়ন ভাবল "যাক আগামী কাল কোন অফিস নেই। সাপ্তাহিক ছুটি। দিনের আলোতে ইলিনাকে নিয়ে ভাবা যাবে।" আজ পাঁচ মিনিট বেশি বিদ্যুৎ দেয়া হল। যেহেতু কাল ছুটি। তাই প্রতি সপ্তাহে বিদ্যুৎ বোনাস। ছুটির দিনে গ্যাস এবং পানিও পাঁচ মিনিট বোনাস দেয়া হবে। লিলিয়ানা আর লিয়ন দুজনেই শুয়ে পড়ে।

তিন
পরেরদিন সকালে লিলিয়ানার ঘুম ভাঙে 'টুংটাং, ঠকঠক' শব্দে। তাকিয়ে দেখে এই সাঁঝ সকালেই লিয়ন বসে গেছে ইলিনাকে ঠিক করতে। ইলিনার হার্টে ব্যাটারি সংযোগ দেবার পরপরই ঘটলো এক আশ্চর্যজনক ঘটনা। সে হেলেদুলে হেঁটে সোজা চলে গেল কিচেনে। ভাবখানা মানুষের মন জয় করতে চাইলে আগে কিচেন দখল কর। সে নিজেই চা বানিয়ে এনে লিলিয়ানার সামনে দিয়ে মিষ্টি সুরে বলে-'মা তোমার চা।' লিলিয়ানার চোখ কপালে! এই প্রথম কেউ তাকে 'মা' বলছে! আনন্দে বলে-'লিয়ন তুমি কী শুনেছ ও কি বলেছে?' ইলিনা এগিয়ে গিয়ে লিয়নকে বলে-'পা পা তোমার চা!' ওরা দুজন অবাক হয়ে যায়। কারো মুখে কোন কথা ফুটে না। দুজনের চোখেই জল। ইলিনা ঘুরে ঘুরে দশ মিনিটেই সমস্ত বাসা একেবারে গুছিয়ে ফেলে। ওদের জুতা পরিষ্কার থেকে কাপড় ধোয়া সবকিছু ঝটপট করে দেয়। লিলিয়ানা আর লিয়নের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সব কাজ নিজেই করে।

এভাবে কেটে যায় প্রায় ছোয় সাত মাস। ইলিনা বেশ ভালো আছে। এই নতুন বাবা মাকে পেয়ে সে ভীষণ খুশি। তবে মনের কোণায় একটা ভয়ও কাজ করে। যা ওর জন্ম থেকেই হয়ে আসছে। 'যদি এখানেও অমন কিছু হয়!' এই ভয়ে মাঝে মাঝে লুকিয়ে লুকিয়ে সে কাঁদে। কিন্তু লিলিয়ানা আর লিয়নের ভালোবাসার কোথা মনে করে,একসময় সব দুঃখ কষ্ট ভুলিয়েও যায়। ওরা যে ওকে অনেক ভালোবাসে তা সে নিজেই অর্জন করেছে। বাবা মায়ের সেবা যত্ন করে। সারাদিন যখন ওর বাবা মা অফিসে বা বাইরে থাকে। তখন ইলিনা রীতিমত হোমওয়ার্ক করে। কীভাবে বাবা মায়ের মন জয় করে চলা যায়। ওরা কী কী খেতে পছন্দ করে। কী কী করতে পছন্দ করে। এ সবকিছু ইলিনা গোপনে গোপনে ওদের ডায়রি থেকে জেনে নিয়েছে।

এদিকে ইলিনা আসার পর থেকে যেন লিয়নের জীবনটা আবার সুখের স্রোতে ভাসতে শুরু করেছে। অন্তত বাসায় এসে এখন আর না খেয়ে বেডে যেতে হয় না। কিন্তু সে বুঝতে পারছে না লিলিয়ানা খুশি কিনা। সেই প্রথম প্রথম কয়েকদিন ওকে খুশি লেগেছিল। তারপর থেকে কেমন যেন বিষণ্ণতায় ভুগছে। লিয়ন জানে ইলিনাকে দিয়ে তো আর সন্তানের সুখ পাওয়া যাবে না। কিন্তু সে আর কিই বা করতে পারে! ইদানীং সে খেয়াল করেছে লিলিয়ানা গভীর রাতে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে। লিয়ন বুঝতে পারে "ও আসলে একটা ছোট্ট সন্তান চাচ্ছে। যাকে সে জড়িয়ে ধরে ওম দেবে। চুমু দিয়ে আদর করবে। বুকের মাঝে ধরে গভীর ভালোবাসায় জড়িয়ে নেবে।" লিয়ন কথাগুলো ভেবে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। ইলিনা যেন বাবার মনের কষ্টটা বুঝতে পারে। হঠাৎ লিয়ন অনুভব করে ঠাণ্ডা একটা অনুভূতি। শীত শীত অনুভবে সে কেঁপে উঠে। তাকিয়ে দেখে ইলিনা 'পা পা,পা পা' বলে ওকে জড়িয়ে ধরেছে। লিয়ন ওর জড়িয়ে ধরা হাতটা ছাড়িয়ে দেয়। যা ইলিনার কাছে খুব খারাপ লাগে। পরমুহুর্তেই ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে টেবিলে খাবার দিতে থাকে। সে বুঝতে পারছে ওর বাবা মা ওকে সন্তান হিসাবে মেনে নেয়নি! ইলিনা ভাবে 'যারা ওকে একটু যত্ন করে,আদর দিয়ে খুশি করতে পারে না! তারা কী অন্যের সন্তানকে আদর যত্ন ভালোবাসা দিয়ে বড় করতে পারবে?' মনে মনে ধরেই নেয় এখানে ভালোবাসা না থাকলে সেও থাকবে না। যেমন থাকেনি আগের বাবা মায়ের কাছে। ভালোবাসা ছাড়া কী একই ছাঁদের নীচে থাকা যায়? সে এটাও ভেবে রেখেছে, সামান্য অবহেলাও সে কোনদিন সহ্য করবে না। ইলিনা বুঝতে পারে কষ্টের কথাগুলো ভেবে অনেক এনার্জি খরচ করে ফেলেছে। ভীষণ দুর্বল লাগে। চুপ করে বসে পড়ে কার্পেট বিছানো মেঝেতে।

লিয়ন রাতে শোবার আগে ইলিনাকে ধরে ব্যাটারি রিচার্জ দিতে প্লাগ পয়েন্টের কাছে নিয়ে যায়। ও যখন চলে যায় ইলিনা দুর্বল কণ্ঠে হাসি মুখে বলে- 'গুড নাইট পা পা!' কিন্তু কোন উত্তর না দিয়েই লিয়ন চলে যায়। 'পা পা সামান্য একটু কথাই তো!' কথাটা ভেবে থুতনি ঝুলিয়ে মাথা নিচু করে থাকে ইলিনা। ওর মন খারাপ হয়ে যায়।

সারারাত ইলিনা রাতের আকাশ দেখে। কাঁচ ঘেরা দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। জীবনের অনেক অন্ধকারের ঘটনা মনে পড়ে। রোবটিক্স দুনিয়ায় ইলিনা অনেক উন্নতমানের। এমন কিছু নেই যা ও করতে পারে না। মানুষের মতই ওর জীবন যাপন। তবে ভালোবাসার যে বন্ধন বা ভালোবাসার যে অনুভূতি,তা মানুষের চেয়ে যেন একটু বেশিই। ওর জন্ম হয়েছে সেই ২০৫০ সালে। ওর মাথার কপোট্রনে ওর জন্মদাতা যা যা সেট করে দিয়েছে। তা এখনও অনেক শার্প! তাই তো সহজে কিছু ভুলতে পারে না। তবে সে কষ্টকে জয় করতে জানে। কারো কষ্টের কারণ হতে জানে না। সে কোনদিন কাউকে কষ্ট দেয়নি...আর দেবেও না। ইলিনা আকাশের তারার মাঝে খুঁজে চলে কিছু চেনা মুখ। এমন সময় বুঝতে পারে অন্ধকারে কেউ এদিকে আসছে! পায়ের আওয়াজ শুনে সেদিকে তাকায়। দেখে লিলিয়ানা। বুঝে যায় এখন কী ঘটতে যাচ্ছে। দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লিলিয়ানা কাছে আসে। ব্যাটারির এনার্জি বাঁচাতে ওর বুকের বাম পাশে থাকা ব্যাটারির সুইচটা 'ঠকাস' শব্দে অফ করে দেয়।

শেষ

আজ লিলিয়ানা আর লিয়নের বিশতম ম্যারেজ ডে। লিলিয়ানার মনে পড়ে'ওরা পাঁচ বছর প্রেম করে তারপর বিয়ে করেছিল।' প্রেমের দিনগুলো আর বিবাহের পরের দিনগুলো কেমন করে যেন কেটে গেছে! ওর বাবা মা সবাই যখন চলে গেল? এই লিয়নই ছিল ওর সব। ওকে সে অনেক বেশিই ভালোবাসে। নিশ্চয় প্রতিবারের মত আজও লিয়ন লিলিয়ানাকে একটা বড় ধরণের উপহার দিতে চায়। আজ ওরা দুজনেই ছুটি নিয়েছে। যেহেতু আজ ওদের জীবনে একটা বিশেষ দিন। তাই বিদ্যুৎ পানি গ্যাস পাঁচ মিনিট বেশি পাবে। ওদিকে ইলিনা বাবা মায়ের এই খুশির দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতে চায়। সে অনেক মজার মজার খাবার রান্না করে। ঘরটাকে একটু রঙিন কাগজ দিয়ে সাঁজায়। আজ সে বাবা মাকে সারপ্রাইজ দেবে। তাই তিন মিনিটেই প্রেশার কুকারে রান্না করে-ওদের সবচেয়ে প্রিয় ডিশ কাচ্চি বিরিয়ানি। নিশ্চয় অনেক বছর এই খাবার ওরা খায় নি। বাবা মা যে কত খুশি হবে তাই ভেবে ইলিনার যেন আনন্দের সীমা নেই। লিলিয়ানাও অনেক খুশি। আজকের এই বিশেষ দিনে লিয়ন এখনও বাইরে! তারমানে নিশ্চয় সে বড় ধরনের কিছু উপহার নিয়ে আসবে। ইলিনা আর লিলিয়ানা দুজনে যার যার ভাবনায় খুশিতে একেবার বাকবাকুম।

লিলিয়ানা আজ খুব করে সেজেছে। ইলিনাও মাথায় ঝকঝকে কাগজের কিং হ্যাট পরে আছে। এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠে। লিলিয়ানা ছুটে যায় দরজা খুলতে। পিছনে পিছনে ইলিনা। লিলিয়ানা দরজা খুলতেই লিয়নের চিৎকার শোনা যায়-"সারপ্রাইজ...!"ইলিনা দেখে একটা গোলাপি রঙয়ের স্ট্রলার। যা খুব সুন্দর করে কাগজের ফুলে সাজানো। কী হতে যাচ্ছে ইলিনার বুঝতে আর বাকি থাকে না। সে দেখে খুব ফুটফুটে একদিন বয়সের একটা মেয়ে। তার নাড়িটা পর্যন্ত কাঁটা হয়নি! ওদিকে লিলিয়ানা যেন নিজের চোখকে বিশ্বাসই করতে পারছে না! মেয়েটাকে কোলে তুলে নেয় সে। লিয়ন মেয়েটার তুলতুলে গাল ছুঁয়ে আদর করে দেয়। লিলিয়ানা নিজেই একেবারে শিশুদের মত হয়ে যায়। যেন নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। বিস্ময় নিয়ে বলে-'এইটা আমাদের বেবি? আমার আদুরে মেয়ে,আমার জান।' কথাগুলো বলতে বলতে খুশিতে ঝরঝর করে কেঁদে দেয়। আহ্লাদে ঠোঁট ফুলিয়ে লিয়নকে বলে- 'শুনো আমি কিন্তু আর কাজ করব না। আমি আমার মেয়েকে প্রতিটা মুহূর্ত কাছে পেতে চাই।' লিয়ন খুশিতে বলে উঠে-"ঠিক আছে মাই লাভ। তুমি মেয়েকে সবটুকু সময় আর অনেক ভালোবাসা দিও। কোন সমস্যা নাই।'
-তুমি কী সব ফরমালিটিস…
লিলিয়ানার কথা শেষ করতে দেয় না লিয়ন। বলে উঠে-'ইয়েস ডিয়ার পালন করেছি। শুধু কালকে কমিউনিটিতে এপ্লাই করতে হবে বাড়তি বিদ্যুৎ পানি আর গ্যাসের জন্য। নতুন মেম্বার এসেছে এটা সবাইকে জানাতে হবে।" খুশির উৎসবে মেতে উঠে ওরা দুজন। ওরা দুজনেই মেয়েটাকে নিয়ে ব্যস্ত।

ওরা যখন মেয়েটাকে আদরে আদরে ভরে দেয়। মনের মাঝে অনুভব করে স্বর্গীয় আনন্দ। ঠিক তখন ইলিনার বুকের ভিতরে ভীষণ ব্যথা। কষ্টে ওর শরীরে শুরু হয় ভাইব্রাশন। যেন ভূমিকম্প শুরু হয়েছে। সে কোনভাবেই নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। চোখ থেকে পানি পড়ছে না ঠিকই। কিন্তু ওর বুকে যেন রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে এমন অবস্থা। কষ্টের চোটে ইলিনা কাঁপা কাঁপা হাতে নিজের বুকে হাত দিয়ে খুলে ফেলে ব্যাটারির কভারটা। ডান হাতটা একেবারে ঢুকিয়ে দেয় ব্যাটারি বক্সে। ইস্পাতের পাঁচটা আঙুলে কষে চেপে ধরে ব্যাটারি আর কানেকশনের লাল হলুদ তারগুলো। লিয়ন আর লিলিয়ানা তখন মেয়েটাকে নিয়ে খাবার টেবিলে বিরিয়ানি খাচ্ছে। বিরিয়ানির ঘ্রাণে সারা ঘর মৌ মৌ করছে। লিয়ন ভাবে-'সে লিলিয়ানাকে একটা কথা গোপন করেছে। যে মেয়েটাকে সে এনেছে? তাকে সে ডাস্টবিনে আবর্জনার মাঝে পেয়েছে। সময় বদলেছে। মানুষ শিক্ষিত হয়েছে। অথচ তাদের মানসিকতা এখনও বদলায়নি। যেখানে ওরা এই দীর্ঘ বছর বিয়ে করে সংসার করছে। একটা সন্তানের জন্য উম্মাদ হয়ে দিন কাটাচ্ছে। সেখানে কিছু মানুষ বিয়েটাকে প্রাধান্য না দিয়ে লিভিং রিলেশন করছে! তারপরও নিজেদের ভালোবাসায় পাওয়া জীবনটাকে সন্তানের স্বীকৃতি না দিয়ে,নিজেরাই হত্যা করছে! এদেরকে ঘৃণা করতেও ওর ঘৃণা করে।' লিয়ন কথাটা ভেবে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। লিয়ন মেয়র অফিসে মেয়েটা সম্পর্কে সব সত্য তুলে ধরেছে। সে জানে ঠিকই এই বাচ্চাটার বাবা মাকে সনাক্ত করা হবে। তারপর তাদেরকে ইনজেকশন দিয়ে শাস্তিও দেবে। কেন যে সব জেনেও ওরা বাচ্চাটাকে ফেলে দিল!' কেন যেন ওর মনে হচ্ছে 'এমনও হতে পারে এই সন্তান দ্বিতীয়। হয়ত ভুল করে কন্সেভ করেছে। তাহলেও নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে! কিন্তু কমিউনিটির এত কঠিন সিকিউরিটির চোখ এড়িয়ে গেল কীভাবে? ধ্যাত আমার কী। আমি কেন এসব ভাবছি? ভাগ্যিস রোবট ব্যবহারে কোন নিয়ম এখনও হয়নি। কারণ কারো মাথায় আসেনি একটা পরিত্যাক্ত রোবট ঠিক করে কেউ ব্যবহার করতে পারে। যাক বাবা বড় বাঁচা বেঁচে গেছে সে।' হয়ত সে ধরা খেলে সাফাই দিতে পারবে যে,এমন কোন নিয়ম নেই। কিন্তু লিয়ন জানে এরপর হয়ত এই নিয়মটিও শর্তে যুক্ত হয়ে যাবে। পরমুহুর্তেই আবার ভাবে-'এই মেয়েই ইলিনা হয়ে ওদের বুক জুড়ে থাকবে। শুধু শুধু ইস্পাত যন্ত্রের পিছনে অর্থ ব্যয় করে লাভ কী?'

ইলিনা এবারও যেন বাবার মনটা পড়তে পারলো! 'সব সময় আমার সাথে কেন এমন হয়! যেখানে আমি উজাড় করে দেই আমার ভালোবাসা। সেখানে কেন আমি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পাই না? কেন আমার প্রতি মানুষগুলোর এত অবহেলা!' বিড়বিড় করে কথাগুলো বলতে বলতে,ইলিনা একটানে বের করে আনে কানেকশনসহ ব্যাটারিটা। 'ধামমম' শব্দ করে ঢলে পড়ে মেঝেতে। বিকট শব্দ হতেই লিয়ন সেদিকে তাকায়। বিরক্ত নিয়ে বলে-'নাহ আগামীকাল আবার সবার অগোচরে চুপি চুপি রোবটটাকে বাইরে ফেলে দিয়ে আসতে হবে।' ঠিক তখনই ঘরের কাঁচের দেয়াল স্ক্রিনে কমিউনিটি গভর্নরের ছবি ভেসে উঠে। গমগম কণ্ঠে ভেসে আসে -'কংগ্রাচুলেশনস মিস লিলিয়ানা এন্ড মিঃ লিয়ন! বিরিয়ানির সুবাস পাচ্ছি হা-হাঃ হাঃ হাঃ। লিলিয়ানা,মেয়েটাকে কোলে নেবার জন্য ধন্যবাদ। যা প্রমাণ করে মানব জাতির মনে এখনও দয়া-মায়া,ভালোবাসা একেবারেই ফুরিয়ে যায় নি। তবে স্বার্থপরতা আর চুরির স্বভাব বেড়েছে অনেক। কেন? রোবটটা সম্পর্কে কোন রিপোর্ট করা হয়নি অফিসে। আশাকরি কাল অফিসে এসে এ সম্পর্কে ধারণা দেয়া হবে। সৎ,বিশ্বস্ত এবং অভিজ্ঞ জ্ঞানসম্পন্ন কর্মী হিসাবে তোমাদেরকে শ্রদ্ধা জানাই বলেই সত্য তুলে ধরলাম! সো কাল দেখা হবে সকাল আটটায়।' 'পুরুং'করে হাওয়া হয়ে গেল ছবি স্ক্রিন! তারমানে সবার ঘরে কে কী করছে এটাও সিকিউরিটি রেঞ্জের মাঝে? এটা নিশ্চয় নতুন সংযোজন! এই ব্যাপারে তো ওরা কিছুই জানে না! 'নাহ কোন স্বাধীনতা নেই। ঘরের ভিতর বউ ঝিদেরও আর গোপনীয়তা বলে কিছুই থাকলো না!' নিশ্চয় এটাও কমিউনিটি গভর্নরের আরেকটা ভয়াবহ কোন চাল। কথাটা ভেবে লিয়নের হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে।



আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
প্রজ্ঞা মৌসুমী ৩০২০ সালের সময়টা ঘুরে এসে বেশ লাগলো। একটা আস্ত কমিউনিটি আর তার ছোট ছোট ৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে াবনা, বিশেষ করে অদূর ভবিষ্যতের পানি/বিদ্যুত সঙ্কটের সুরাহা- বেশ ালো। এক জায়গায় একটু খটকা লাগলো- মাত্র কুড়ি মিনিটের বিদ্যুৎ দেয়া হয় অথচ ইলিনাকে সারারাত ব্যাটারি রিচার্জ করার কথা বলা হয়েছে। ৈবজ্ঞানিক কল্পকাহিনি হিসেবে চমতকার একটি গল্প। অনেক শুভ কামনা।
প্রথমেই আন্তরিক ধন্যবাদ সময় দিয়ে গল্পটা পড়ে চমৎকার মন্তব্য করার জন্য। খুব ভালো লাগছে আপু আপনাকে অনেকদিন পর পেয়ে। গল্পে কমিউনিটি সব কিছুই নিজেদের কন্ট্রোলে নিয়ে নিয়েছে। 'ঘরের আলো মাত্র বিশ মিনিটের জন্য দেয়া হবে।' বলা হয়েছে। আর লিলিয়ানা বিদ্যুৎ বাঁচাতে রাতে এসে ইলিনার প্লাগ খুলে দিয়ে যেত। এটুকু বলা হয়েছে। গল্পে ভুল থাকতে পারে। বেশ তাড়াহুড়া করে লিখেছিলাম এই গল্পটা। সাইফাই লেখা কঠিন মনে হয়। ভেবেছিলাম দেব না লেখা। কিন্তু আপনার মন্তব্য পড়ে বুঝতে পারলাম শেষ মুহূর্তে সাইফাই হয়নি ছাইপাঁশ হয়ে গেছে দেখছি! :v শুভকামনা নিরন্তর।
মোঃ মোখলেছুর রহমান ভাল লাগল,শুভেচছা ও শুভ কামনা রইল।
জসিম উদ্দিন আহমেদ রোবটিক আবেগের সুন্দর উপস্থাপনা। গল্প ভালো লেগেছে।
একটা সময় হয়তবা রোবট দিয়েই সব কাজ চলবে। তো তাদের আবেগ অনুভূতিও হয়ত থাকবে। ধন্যবাদ সময় দিয়ে গল্প পড়ার জন্য। শুভকামনা রইল।
এশরার লতিফ বেশ লাগলো গল্পটি। অনেক শুভেচ্ছা।
অনেক ধন্যবাদ। সতত শুভকামনা।
satota 2007 সায়েন্স ফিকশনে আবেগের সংমিশ্রণ দারুণ হয়েছে। ভাল লাগল। শুভেচ্ছা রইল।
অনেক অনেক ধন্যবাদ শুভকামনা রইল।

২৭ মে - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১২০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪