আবু ওসমান ও পরি হিনা (চতুর্থ ও শেষ পর্ব )

দেশপ্রেম (ডিসেম্বর ২০১১)

হোসেন মোশাররফ
  • ৬৮
দিন যায়, মাস যায়, বছরও পেরুল প্রায় আবু ওসমানের ............. এরই মাঝে অনেক পরিবর্তন এসেছে তার জীবনে। দেশে-বিদেশে এখন তার অনেক বন্ধু-বান্ধব আর শুভাকাঙ্ক্ষী, কিন্তু কেউ জানে না আবুওসমানের অতীত ইতিহাস। ইতোমধ্যে পারস্যের এক জাহাজ ব্যবসায়ীর সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠেছে। খোশ-আমুদে এই ব্যবসায়ী আবুওসমানের মন জয় করে নিয়েছে অল্পদিনের মধ্যেই। এবার সে বায়না ধরেছে আবুওসমান কে নিয়ে সমুদ্রে প্রমোদ ভ্রমণে বের হবে। তার ধারণা দু'দিনের এই পৃথিবীতে অর্থ-সম্পদ শুধু উপার্জন করে রেখে যাওয়াটা বোকামি। তা ভোগ বিলাসে ব্যয় করতে না পারলে জীবনটাই বৃথা।

দু'দিনের এই জীবন নিয়ে চিন্তা কত-শত
সবই ভুলে কেউবা আছে ভোগ-বিলাসে রত।
বিদায় বেলায় কাঁদবে সবাই ছোট্ট শিশুর মত
পড়বে মনে সেদিন সবার ভুল করেছে যত।

আবুওসমানের বন্ধুর ছিল বিশাল এক প্রমোদ তরি। সেখানে আনন্দ উপভোগের জন্য যা যা দরকার সবই আছে। সুরা থেকে নারী। আরো আছে ক্রীতদাস, খানসামা, চাকর-বাকর,আর হুকুম দাস। এক কথায় খাওয়া-দাওয়া আর ফুর্তি মারার সব উপকরণই মজুত আছে জাহাজে। নেই শুধু তার উপযুক্ত একজন বন্ধু। ফুর্তি মারতে চাইলেও তো উপযুক্ত একজন বন্ধু চাই। আবুওসমান কে পেয়ে তার সেই অভাব এতদিন পর পূরণ হয়েছে। কিন্তু আবুওসমান তার সাথে সঙ্গ দিতে নারাজ। সে তাকে বলল, 'খোদা আমাকে অত্যন্ত সামান্য অবস্থা থেকে আজ এত ধন-সম্পদের মালিক করেছে। এভাবে ফুর্তি মেরে সব উড়িয়ে দিলে ধর্মে তা সহ্য হবে না।'
পারস্যের সেই বন্ধু তাকে বলল, 'তোমার কোন চিন্তা নেই। খরচ পাতি যা সব আমিই করব। তুমি শুধু আমার সঙ্গী হবে।'
আবুওসমান তবুও বলল, 'কিন্তু জীবনটা তো শুধু ভোগ-বিলাসে কাটিয়ে দেয়ার জন্য খোদা আমাদের উপহার দেয়নি।'
বন্ধু কিন্তু তার কথা শুনতে মোটেও রাজি হল না। বলল, 'তুমি সাধু মানুষ, তাই। কয়েক দিনের জন্য জীবনটা একটু উপভোগ করলে তাতে এমন কিছু যায় আসে না, কিংবা খোদাও তাতে নারাজ হবে না। তুমি খুশি মনে রাজি হয়ে যাও, মাত্র ক'টা দিনই তো-

বন্ধু ভাল হোক কিংবা খারাপই হোক, তার কথা মানুষ যতটা শোনে আর কারো কথায় ততটা কর্ণপাত করেনা। আবুওসমান রাজি হয়ে গেল। সে মনে মনে ভাবল এমন মওকা হয়তো আর নাও মিলতে পারে। তাছাড়া জীবনটা শুধু নিরামিষ ভাবে কাটিয়ে না দিয়ে একটু আনন্দ উপভোগেরও দরকার আছে। সেজন্য চাই উপযুক্ত বন্ধুও। কাজেই সুযোগটা এই বেলা ছেড়ে দিলে বাকি জীবনটা শুধু আফসোস করেই বেড়াতে হবে; মওকা আর মিলবে না।

আবুওসমানদের প্রমোদ তরি সমুদ্র যাত্রা শুরু করল। আবুওসমান তার হুকুম তামিল করার জন্য একজন মাত্র অনুগত দাস সঙ্গে নিলো। তার সদ্য কেনা দাস সেই ওমরআলি কেই সে পছন্দ করল সঙ্গে করে নিয়ে যেতে। পরী হিনাও সঙ্গে যেতে চেয়েছিল কিন্তু আবুওসমান তাকে নেয়নি। বরং সরল মনেই তাকে সে বুঝিয়ে দিয়েছে, 'বাড়িতে থেকে তোমার বাড়ি পাহারা দেওয়াই বরং বুদ্ধিমতীর মতো কাজ হবে। কেননা বাড়িতে রেখে গেলাম অনেক ধন-সম্পদ আর তোমার মালিকিন কে, যদি খোদা না খাস্তা ডাকাত হানা দেয়; তবে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। একেবারে নিঃস্ব হয়ে যাব আমি।'
আবুওসমানের কথা শুনে হিনাও আর আপত্তি করেনি। আবুওসমানের ভাল ছাড়া সে খারাপ চায়নি কখনো। আজও সে আবুওসমানের কথা ফেলতে পারল না। দু'দিন কেটে গেল। ওমর আলি কে নিয়ে প্রমোদ তরি তে আবুওসমানের সময় ভালই কাটছিল। এমন আমোদ ফুর্তিতে সে জীবনে আর কখনো কাটায়নি। নীল নদের মোহনা ছেড়ে পাল তোলা মাঝারি জাহাজটা ধীরে ধীরে সমুদ্রে এসে পড়ল।
এদিকে পরী হিনার সময় মোটেও ভাল কাটছিল না। আবুওসমান কে দেয়া কথা রাখাই তার জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়াল। কেননা এভাবে সে এর আগে আর কখনো বন্দি জীবন কাটায়নি। শেষ পর্যন্ত তার মুক্তি মিলল মালিকিনের কথায়। আবুওসমানের রওনা হওয়ার দু'দিনের মাথায় পরী হিনাকে সে বলল, 'একটা কথা বলি বলি করে আর বলা হচ্ছে না তোমাকে....কী জানি, তোমরা আবার এসবে বিশ্বাস কর কিনা।'
'কি কথা মালিকিন্?' অনেকটা আশ্চর্য হয়েই জানতে চাইল পরী হিনা।
মালিকিন তখন তাকে বলল, 'তোমার মালিক এবার সমুদ্র যাত্রায় রওনা হওয়ার পর থেকেই আমার বাঁ চোখটা বার বার কাঁপছে। খোদা না খাস্তা এ যাত্রায় তার কোন বিপদই হয় কিনা...? তাই বলছিলাম তুমি যখন পরী, তোমার তো আর কোথাও যেতে বাধা নেই। একবার উড়ে গিয়ে তোমার মালিকের খবরটা নিয়ে এলেও অনেকটা আশ্বস্ত হওয়া যেত.....'
অনুমতিটুকু পেয়ে খুশিতে গদ গদ হয়ে পরী হিনা বলল, 'এ আর এমন কী, আমি এখুনি যাচ্ছি। তুমি কোন চিন্তা করোনা।'

আবুওসমান আর তার ব্যবসায়ী বন্ধু জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করছিল। এমন সময় পরী হিনা উড়ে এসে একেবারে তাদের সামনেই নামল। ব্যাপার দেখে বন্ধু তাজ্জব হয়ে গেলেও আবুওসমান মোটেও ঘাবড়াল না। বরং স্বাভাবিক গলায় বলল, 'তোমাকে নিষেধ করিনি এখানে আসতে? '
পরী হিনা আমতা আমতা করে বলল, 'মালিকিনের অনুমতি নিয়ে তবেই না এসেছি।'
'বেশ করেছ।' বলল তাকে আবুওসমান।
ইতোমধ্যে বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে উঠে বন্ধু তাকে বলল, 'মনে হচ্ছে তোমাদের মধ্যে আগে থেকেই জানাশোনা।'
সুযোগ পেয়ে আবুওসমান তার বন্ধুকে বলল, 'শুধু কী জানাশোনা, রীতিমতো ও আমার মেয়ে। ওর নাম হিনা, পরী হিনা।'
নাম শুনে বন্ধুর চোখের মণি দু'টো সামান্য কেঁপে উঠল। তারপর বিস্ময়ের সাথে বলল, 'পরী তোমার মেয়ে হল কেমন করে? '
'সে অনেক কথা...' বলল আবুওসমান। তারপর আবার বলল, 'তবে ও ভাল নাচতে পারে, আজ রাতে আমরা না হয় ওর নাচই দেখব। আগে ওর নাচ দেখ তারপর ওর কাহিনী সব খুলে বলব তোমাকে।'
বন্ধুও এতে রাজি হয়ে গেল। বলল, 'বেশ তবে তাই হোক, আগে আমোদ-ফুর্তি তারপর গল্প শোনা।'
আবুওসমান পরী হিনাকে বলল, 'আজ সারারাত নাচতে হবে তোমাকে, আর সে নাচ এমন নাচ যা বন্ধুকে খুশি করে দেবে। যাও এখন বিশ্রাম নাওগে-'
পথ অতিক্রমণের ক্লান্তিতে বেশ ঘুম পেয়েছিল হিনার। ঘুমানোর জন্যে একটা নিরিবিলি জায়গা দরকার তার। আর তা হবে এমন জায়গা যা মোটেও ঘুম ভাঙিয়ে দেবেনা তাকে। খুব ঘুম পাতলা মেয়ে পরী হিনা। শেষ মেশ খুঁজে পেতে একটা নিরাপদ জায়গা খুঁজে বের করল হিনা; যেখানে সে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে।
মাল রাখার গুদাম ঘরের পাশে একটা খালি জায়গা পড়েছিল। জায়গাটা বেশ নিরিবিলি আর কোলাহল মুক্ত। পরি হিনা সেখানেই একটা পিপের আড়ালে শুয়ে পড়ল। সমুদ্রের অশান্ত-উদাসী বাতাসে অল্প কিছুৰণের মধ্যেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল হিনা।
হঠাৎ কারো গলার শব্দে ঘুম ভেঙে গেল হিনার। মনে হল কেউ যেন খুব কাছেই খ্যাস্ খ্যাসে গলায় কারো সাথে কোন বিষয়ে সলা-পরামর্শ করছে। হিনা একটা পিপের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে ফেলল। লোক দুটো কথা বলতে বলতে পিপের খুব কাছাকাছি এসে একজন অপর জনকে বলল, 'আমরা যা ভেবেছিলাম তা ঠিক না, আবুওসমান না জাদুকর না অন্যকিছু। আমরা ইচ্ছা করলে তাকে এতদিনে খতম করে দিলেও তার কিছুই করার ছিল না। সব ৰমতা ঐ হিনার, হিনা মানুষ না পরী; সেইজন্যই আবুওসমানের এত জাদুকরী ৰমতা। হিনা খতম তো খেল খতম....হেঁ হেঁ...' তারপর একটু থেমে থেকে লোকটা আবার বলল, 'তো যে ভাবে বললাম সে ভাবেই তৈরি থাকবি.....' তারপর আবার কিছুৰণ চুপচাপ। হঠাৎ গুরু-গম্ভীর শব্দে লোকটা যেন দাঁতে দাঁত চেপে উচ্চারণ করল, 'আবুওসমান আজ তুই আমার হাতের মুঠোয়, পালাবার সব রাস্তা আজ তোর বন্ধ। আগে হিনাকে খতম করা হবে তারপর তোকে তিলে তিলে হত্যা করব আমরা।'

পরী হিনার আর বুঝতে বাকি রইল না তার মালিকিনের ধারণাই সত্য। আবুওসমান গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্যে বন্দি। যার শেষ পরিণতি মৃত্যু ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না।
লোক দুটো চলে যাওয়ার পর পরই হিনা আড়াল থেকে বের হয়ে এলো। সময় হাতে খুবই অল্প। ছদ্মবেশ ধারী ব্যবসায়ী বন্ধুই যে ডাকু সর্দার তা অনুমানে বুঝতে আর বাকি নেই হিনার। দস্যুটা ছদ্মবেশ ধরে ব্যবসায়ী সেজেছে। আজ রাতেই তাদের শেষ খেলা। হাতে আছে শুধু একজন তার, সে ওমর আলি। যে করেই হোক, তাকে এখনই খুঁজে বের করা দরকার।

ওমর আলির সাথে দেখা করতে হবে গোপনে, সলা-পরামর্শ যা তার সাথেই করবে হিনা। কিন্তু যেন কেউ ঘুণাৰরেও টের না পায়। কেননা ডাকাতদেরই জাহাজ এটা। একবার টের পেলেই ওরা নিশ্চয় ওমর আলি কে ধরে বন্দি করে রাখবে কিংবা সমুদ্রে ফেলে হত্যা করবে। তাই আর দেরি করল না পরী হিনা; নিজেকে অদৃশ্য করে ফেলল। তারপর ওমর আলিকে খুঁজে বের করতে দেরি হল না তার। নিরীহ ওমর আলি জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের অশান্ত ঢেউ দেখছিল। এমন সময় কেউ তার হাত ধরল। আশপাশে তাকিয়ে কাওকে দেখতে না পেয়ে ভয়ে চেঁচিয়েই উঠেছিল প্রায়। পরী হিনা যদি না সময় মতো তার মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরত। দিন দুপুরে এমন কাণ্ড ঘটতে দেখে যারপরনাই ভয় পেল ওমর আলি। পরী হিনা মুখ ছেড়ে দিলে ওমর আলি শুধু একটা কথাই বলল, 'এ্যঁ যা- এ্যঁ যা ভূত আমারে খেয়ে ফেলল রে.....এ্যঁ যা-এ্যঁ যা ভূত আমারে খেয়ে ফেলল; আমি আর নেই , আমি মরে গেচি; আমি আর নেই....' তারপর বার দুই হেঁচকি তুলে ভূত...ভূত...ভত.. বলতে বলতে জ্ঞান হারাল সে।

ইতোমধ্যেই হিনা তাকে ধরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা কয়েকটা খালি পিপের পিছনে গোপন করে ফেলল। তারপর চোখে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে আনল ওমর আলির। ততৰণে হিনা অদৃশ্যের খোলশ ছেড়ে বের হয়ে এসেছে। দিনদুপুরে তাকে চাক্ষুষ দেখেও ভয় কাটল না ওমর আলির। সে বার বার বলতে লাগল, 'ভূতে ধরেছে আমাকে, হেঁ হেঁ....'.... হিনা তাকে আশ্বস্ত করে বলল, 'তোমাকে ভূতে ধরেনি, আমি হিনা। আমিই ধরেছি তোমাকে।' তবুও ওমর আলির সন্দেহ কাটল না, সে আরও উত্তেজিত হয়ে বলতে লাগল, 'এখানে হিনা কোত্থেকে আসবে, সেতো আছে বাড়িতে...'
'ভারি মুসকিলে পড়া গেল দেখছি,...বিরক্ত হয়ে বলল হিনা। তারপর ভর্ৎসনা করে বলল, 'এই তোমার সাহসের বহর হল? ভেবেছিলাম তুমি সাহসী, এখন দেখছি মেয়ে-মানুষেরও অধম তুমি। সময় শেষ তাই এখন বেশি কথাও বলা যাবে না আবার গোপন রেখেও আর লাভ নেই; তাহলে আজ শুনেই নাও আসল কথা। আমি মানুষ না পরী, পরী.... পরীহিনা।'
হিনার কথা শুনে ওমর আলি এবার প্রকৃত জ্ঞান ফিরে পেল; আমতা আমতা বলল সে, 'পো...পো..পরী হিনা?'
'হাঁ গো, হাঁ ...খ্যাস খ্যাসে গলায় বলল হিনা। তারপর আবার বলল সে, 'এখন এখানে মোটেও নিরাপদ নই আমরা; আমরা এখন ডাকাতদের জাহাজে বন্দি হয়ে পড়েছি। তবে শোন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই; বাঁচতে হলে এখন হয় মারতে হবে নয়তো নিজেরা মরতে হবে।'
হতাশ হয়ে ওমর আলি বলল, 'তাহলে এখন উপায় কী হবে আমাদের? চারদিকে সমুদ্র.... পালাবো কোনদিক দিয়ে?'
পরী হিনা এবার আফসোস করে বলল, 'আশ্চর্য! তুমি যে শুধু ভিতু তাই না, রীতিমতো বোকাও। পালাবে কেন, মরতে কী খুব বেশি ভয় তোমার? একবার তো মরেছিলে, এবার না হয় আবার একবার মরে দেখ কেমন লাগে?'
ওমর আলির মনে পড়ল এর আগে পরী হিনার কথামতো আবুওসমান সেজে মরতে তার বেশি অসুবিধে হয়নি। তো পরী হিনা যখন আছেই এবার মরতেও নিশ্চয় বেশি বেশি বেগ পেতে হবে না তার। তাই আর দেরি না করে পরী হিনার এক কথায় মরতে রাজি হয়ে গেল সে।
পরী হিনা তখন বলল, 'তাহলে এখন থেকে আমি যা যা বলব ঠিক তাই তাই করতে পিছপা হবে না, ঠিক আছে? '
ওমর আলি আমূল ঘাড় কাত করে বলল, 'আলবত ঠিক আছে।'

পরীহিনা আবার অদৃশ্য হয়ে গেল। তারপর সে আবুওসমানের ব্যবসায়ী বন্ধুর পিছু নিল। কেননা তার পিছনে লেগে থেকে যা যা গোয়েন্দা তথ্য সে সংগ্রহ করতে পারবে; সারাদিন পর তার উপরই নির্ভর করবে তার যুদ্ধ জয়ের সফলতা। কৌশলই হল যুদ্ধ জয়ের সবচেয়ে কঠিন অস্ত্র। আর ডাকাতরা সাধারণত ডাকাতির আগে তাদের মধ্যে সলা-পরামর্শটা যে সেরে নেয় তাও ছিল পরী হিনার জানা। শেষ পর্যন্ত তার গোয়েন্দাগিরি কাজে লাগল। আবুওসমানের ধুরন্ধর বন্ধু অনেক সাবধানে আর খুবই সতর্কতার সাথে চারদিকটা ভাল করে দেখে নিয়ে জাহাজের পিছনে চলে গেল। আবার একবার ভাল করে দেখে নিল কেউ তাকে দেখে ফেলল কিনা। তারপর জাহাজের পাটাতনের একটা কাঠ তুলে খোলের মধ্যে নেমে পড়ল। পিছন পিছন পরী হিনাও নামল। ভিতরে পাওয়া গেল একটা ছোট-খাট লোহার দরজা। সেটাতে বার দুয়েক টোকা দিতেই ভিতর থেকে খ্যাস খ্যাসে গলায় কেউ বলল, 'সর্দ্দার!'
আর ওমনি গুরু-গম্ভীর স্বরে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা তার সর্দ্দার তখন বলল, ' দরওয়াজা খোল্।'
পরী হিনার আর বুঝতে বাকি রইল না ছদ্মবেশ ধারী আবুওসমানের বন্ধুই ডাকুসর্দ্দার। ডাকুসর্দ্দার ভিতরে ঢুকতেই হিনাও ঢুকে পড়ল ভিতরে। ডাকাতের পুরো দলটাকেই খোলের মধ্যে সুকৌশলে লুকিয়ে রেখেছে সর্দ্দার। শুরু হল ওদের সলা-পরামর্শ। সর্দ্দার তাদের প্রথমেই জানাল, 'শুনে রাখ্ তোরা, আবুওসমান জাদুর জ'ও জানেনা । জাদু যা জানে সব ঐ পরী হিনা, সুতরাং তাকেই আগে খতম করতে হবে।'
ওদের সিদ্ধান্ত হয়ে গেল কিভাবে খেল্ খতম করা হবে। ওদের দলের একজন লোক বাইরে থাকবে সময় মতো সর্দ্দারের আদেশ পৌঁছে দেয়ার জন্য। বাকিরা ভিতরেই তৈরি হয়ে থাকবে। তারপর সবাই বাইরে এসে অতর্কিতে হামলা চালাবে পরী হিনার উপর। পরী হিনা কে হত্যার পর পরই সর্দ্দার নিজ হাতে আবুওসমানের প্রাণ নেবে। যার উপর বাইরে থাকার দায়িত্ব অর্পিত হল তাকে ভাল করে দেখে নিল পরী হিনা।

বেঁটেখাটো এই লোকটা সর্দ্দারের পিছন পিছন বের হয়ে এলো। ওদের পিছন পিছন পরী হিনাও বেরিয়ে এলো। তারপর জাহাজের খোলে ঢোকার গোপন দরজাটা বন্ধ করে দিল ওরা। সর্দ্দার চলে যাওয়ার পর তার চেলাটা সেখানেই দাঁড়িয়ে চারদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে লাগল। নির্জনতার এই সুযোগে পরী হিনা ওর উপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে পিছন থেকে দুই হাত পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলল। ডাকাতটা পিছন ফিরে কাউকে দেখতে না পেয়ে ভয়ে 'কে রে-?' বলে চেঁচিয়ে উঠতে যাচ্ছিল প্রায়। কিন্তু পরী হিনা সময় মতো ওর মুখটা বেঁধে না ফেললে বিষয়টা ফাঁস হয়ে যেত সন্দেহ নেই। তারপর স্বমূর্তিতে ধারণ করে পরী হিনা বলল, ' আমিই পরী হিনা, তোমার সর্দ্দারের মা-বাবা। দাঁড়াও এখনই তোমাকে দেখাচ্ছি মজা।'
ডাকাতটাকে ওখানেই ফেলে রেখে হিনা এবার ওমর আলিকে খুঁজে নিয়ে এলো সেখানে। তারপর দু'জনা মিলে পাঁজাকোলা করে ধরে সমুদ্রে নিৰেপের আগে পরী হিনা বলল ওকে, 'যাও বাছাধন, এতদিন ছিল তোমার একটা সর্দ্দার, এবার পাবে অনেকগুলো সর্দ্দার। তোমাকে দিয়ে তাদের ভূরিভোজটা আজ রাতে ভালই জমবে।'
কথা শেষ করা মাত্রই দু'জনা ওকে দু'বার দোল খাইয়ে যতটা সম্ভব টেনে ছুঁড়ে ফেলল পানিতে। অনতিদূরে ভারি জিনিস পানিতে পড়ার মতো ধপাস করে শব্দ হল শুধু। তারপর পানিতে বুদ বুদ উঠে তলিয়ে গেল লোকটা।
এবার পরী হিনা ওমর আলি কে সেখানে দাঁড় করিয়ে রেখে তেল ভর্তি একটা পিপে খুব সাবধানে সেখানে গড়িয়ে আনল। ওটার মুখ খুলে একটা লম্বা দড়ির একপ্রান্ত ওটার মধ্যে ঢুকিয়ে দড়ির অপর প্রান্তে চকমকি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিল। দড়িটা আস্তে আস্তে পুড়তে লাগল আর আগুনটা পিপের দিকে ক্রমশ এগুতে লাগল। তারপর ওমর আলিকে বলল হিনা, 'এখানে রয়েছে একটা গোপন দরজা। ওটা আমি খোলার ব্যবস্থা করছি। আর দরজা খোলা মাত্রই তুমি এক ধাক্কায় পিপেটা দরজার ভিতরে ফেলে দেবে। তারপর যা হয় আমিই করব।'
তারপর চারদিকটা একবার ভাল করে দেখে নিয়ে পাটাতনের কাঠটা তুলে খোলের ভিতরে নেমে পড়ল ওরা দু'জন। পিপেটাও টেনে নামাল, দড়ির আগুন ততৰণে পিপের কাছাকাছি প্রায় পেঁৗছে গেছে। আর মোটেও দেরি করা যায় না। লোহার দরজায় গোটা দুই টোকা দিতেই ভিতর থেকে কেউ একজন চাপা গলায় বলল, 'সর্দ্দার!'
পরী হিনা এবার দরজার সাথে মুখ লাগিয়ে খ্যাস্ খ্যাসে পুরুষালি গলায় বলল, 'দরওয়াজা খোল্।'
আর ওমনি কেউ একজন ভিতর থেকে দরজা খুলে দিয়ে বলল, 'সর্দ্দার!'
আর যাই কোথায় একান্ত বাধ্যগত অনুগত দাসের মতোই ওমর আলি পরী হিনার আদেশ অৰরে অৰরে পালন করল। জ্বলন্ত আগুন সহ পিপেটা খোলের দরজা দিয়ে ভিতরে গড়িয়ে পড়তেই মুহূর্তেই ছোটখাটো একটা বিস্ফোরণ হয়ে আগুনটা ছড়িয়ে পড়ল। ভিতরে চিৎকার চেঁচামেচিও শোনা গেল। কিন্তু কেউ বের হওয়ার আগেই পরী হিনা লোহার দরজটা বাইরে থেকে আটকে শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলল। ডেকের উপর ততৰণে নাচ গান আর হৈ হুল্লোড় চলছে। আমোদ-ফুর্তির ফোয়ারার মধ্যে ছোট খাট শব্দ কারো কানে গেল না।
ঘটনার আকস্মিকতায় ওমর আলি কিছু না বুঝে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে রইল ওখানেই। পরী হিনা এবার ওমর আলির একহাত ধরে হেঁচকা এক টান দিয়ে বলল, 'পরী হিনার নাচ দেখতে হলে তাড়াতাড়ি এসো এবার আমার সাথে।'

পরী হিনার এমন নাচ এর আগে কেউ কখনো আর দেখেনি। আরব্য রীতি অনুযায়ী আপাদ-মস্তক অবগুণ্ঠিত হিনা দুই হাতে দু'টো চোখাল ছুরি নিয়ে জাদুকরী নাচ শুরু করল। তার নাচের ঠমকে উপস্থিত সবাই মোহিত-বিমোহিত হয়ে গেল। এদিকে যতই সময় পার হতে লাগল আবুওসমানের ব্যবসায়ী বন্ধুও ততই উদ্বিগ্ন হয়ে তার চেলা কে খুঁজতে শুরু করল। কিন্তু চেলাকে তো পাওয়া গেলই না কিছুৰণ পরেই 'আগুন-আগুন' বলে কেউ চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দিল। ততৰণে সর্বনাশ যা হওয়ার তা হয়েই গেছে। পুরো জাহাজে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। সর্দ্দার আর দেরি করল না বিপদ বুঝে জীবনের শেষ ইচ্ছাটা পূরণ করার লৰ্যে কোমরে বাঁধা তলোয়ারের খাপে হাত দিল। এই সময়টার জন্য পরী হিনা প্রস্তুতি আগে থেকেই নিয়ে রেখেছিল। আর একটুও দেরি করল না সে; খাপ থেকে তার তলোয়ার বের হওয়ার আগেই পরী হিনার একহাতের ছুরি আমূল গেঁথে গেল ডাকাত সর্দ্দারের বুকে। তারপর বলল পরী হিনা, 'একেই বলে খেল্ খতম।'
এক হাতে ৰতস্থান চেপে ধরে অন্য হাত দিয়ে তলোয়ার খাপমুক্ত করে ফেলল সর্দ্দার। কিন্তু ততৰণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। খুব সহজেই হিনা তার হাত থেকে তলোয়ার কেড়ে নিয়ে ফেলে দিল ছুড়ে। ছদ্মবেশের খোলস ছেড়ে সর্দ্দার এবার বেরিয়ে পড়ল বাইরে। দাঁতে দাঁত চেপে আবুওসমানের দিকে চেয়ে বলল, 'তোকে আমি ছাড়ব না ওসমান। তুই আমার লুটের মালে হাত দিয়েছিস।'
জবাবটা আবুওসমানের হয়ে পরী হিনাই দিয়ে দিল। বলল, 'হাঃ হাঃ হাঃ সর্দ্দার? এখন তোর সব শেষ ; ধরলেই কী আর ছাড়লেই কী? তবে মৃত্যু এখন আর ছাড়বে না তোকে।'
উপায় না দেখে সর্দ্দার এবার তার চেলাদের নাম ধরে একে একে ডাকতে শুরু করল। পরী হিনা এবার বলল, 'একজন কে শুধু সমুদ্রে ফেলেছি। বেচারা এতৰণে নিশ্চয় মাছের পেটে আছে। আর বাকিরা? সব এতৰণে কয়লা, তোর কথা এখন আর কেউ শুনতে পাবে না। আছে শুধু এখন তোর হুকুম দাস-দাসী আর চাকর নকর। তবে তারা সবাই এখন নিজের নিজের জান বাঁচাতে ব্যস্ত। তোর ডাকে এখন ওরাও কেউ আর সাড়া দেবে না।'
সর্দ্দারের রাগ তবুও পড়ল না। রাগে কাঁপতে কাঁপতে বলল এবার, 'হিনা তুই সীমা অতিক্রম করেছিস্।'
মুচকি হেসে পরী হিনা বলল, 'সীমা কোথায় অতিক্রম করলাম? নাচ দেখতে চেয়েছিলি, নাচ দেখালাম, তোর অসৎ সঙ্গী-সাথিদের খতম করেছি আর চাকু দিয়ে সামান্য আঘাত করে আরও একটা অপকর্মের পাপের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিলাম তোকে। আমার নাম পরী হিনা, ভাল ছাড়া কারও ৰতি করিনা।'
সর্দ্দারের রাগ তাতে মোটেও প্রশমিত হল না, রক্ত ৰরণ উপেৰা করে আবার জ্বলে উঠে বলল, 'আজ আমার হাত থেকে বড় বাঁচা বেঁচে গেলি তুই , যা কেউ আজ পর্যন্ত পারেনি।'
সর্দ্দারের কথায় মোটেও বিচলিত না হয়ে বলল হিনা, 'গোস্তাকি মাফ করলে একটা কথা বলি সর্দ্দারজি, আমার মতো ভাল এর আগে আর কেউ করেনি তোর। এখন বল্ আর কী কী খেদমত করতে পারি তোর?'
ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া সর্দ্দার বুঝল পরী হিনার কৌশলের কাছে হেরেই গেছে সে। এখন যতই বক্ বক্ করা যায় ততই তার বোকামিই প্রকাশ পায়। অগত্যা আবুওসমানের দিকে চেয়ে বলল সে, 'পরী হিনা ছিল বলেই আজ তুই আমার হাত থেকে বেঁচে গেলি ওসমান।'
'উঁহু, উঁহু...আবারও ভুল বললি সর্দ্দার, পরী হিনা নয় বল্ খোদা বাঁচিয়ে দিয়েছে।' ভর্ৎসনা করে বলল পরী হিনা । তারপর একটু থেমে আবার বলল সে, 'তবে তুই এত সহজে মরবি না। তোর জান শক্ত। তোকে যে মারবে, সে ঐ আসছে ধেয়ে.........' আগুনের দিকে ইশারা করেই পরী হিনা দেখাল সর্দ্দার কে।
ততৰণে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে জাহাজের উপরের অনেক অংশে। একদিকে পালেও আগুন লেগে পুড়ছে। তবে জমা করে রাখা তেলের পিপে পর্যন্ত এখনো পৌঁছেনি আগুন। ওগুলোতে ধরলেই আর রৰা নেই কারো। দাস-দাসীদের অনেকেই ভয়ে সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে পড়তে লাগল। আগুনের প্রভাবে বাতাস এলোমেলো প্রবাহিত হয়ে ঘুর্ণিবর্তের সৃষ্টি করল সমুদ্রে। ফলে জাহাজটা এবার প্রচণ্ড গতিতে দুলতে শুরু করল। আর দেরি করল না হিনা , তার পাখার একদিকে আবুওসমান অন্যদিকে ওমর আলিকে তুলে নিয়ে আলতো করে ভেসে উঠল বাতাসে। তারপর একটানে উঠে পড়ল অনেকটা উপরে। যেখানে আকাশের নীল সাদায় মাখামাখি করে এক মায়াময় শান্ত পরিবেশ তৈরি করে নিয়েছে। নিচে তেলের পিপেয় আগুন লেগেই সম্ভবত বিস্ফোরণের মতো একটা শব্দ হল। তারপর সমুদ্রের উপর জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হল ওটা। উড়তে উড়তে পরি হিনা বলল, 'শুধু নিরীহ দাস-দাসীদের জন্যেই যা একটু খারাপ লাগছে কিন্তু ওদের বাঁচানোর মতো কোন উপায় আমার জানা ছিল না। প্রাণ ভয়ে ওদের অনেকেই সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েছে , খোদা চায় তো কেউ না কেউ হয়তো বেঁচেও যেতে পারে। কথায় বলে অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ, সে সর্বনাশই হয়েছে ওদের। তবে ডাকাত সর্দ্দার... তার দলবল কে নিয়ে যে আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়েছে তাতে আর কোন সন্দেহ নেই। এখন ওরা মৃত; হারিয়ে যাওয়া এক মরু দস্যুদের নিষ্ঠুর আর করুন ইতিহাস।'
পরী হিনা ফিরে এসে দস্যুদের গোপন আস্তানা থেকে আরো অনেক ধনরত্ন এনে দিল আবুওসমান কে। কিন্তু আবুওসমান সেসব দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে বলল, 'দেশের মানুষের সম্পদ দেশের মানুষের কাছেই আবার ফিরিয়ে দিলাম।'
এরপর পরী হিনা আর বেশিদিন থাকেনি আবুওসমানের সাথে। সে তার কাছ থেকে বিদায় নেয়ার সময় বলে গেল, 'সৎ মানুষদের সাহায্য করাই আমার কাজ। এখানে আমার কাজ শেষ তাই আমি এখান থেকে এখন চলে যাচ্ছি। সম্পদ যদি তোমাকে বিপথে নিয়ে না যায় তো বিপদের সময় এমনি ভাবে আমাকে আবার পাবে। আর সম্পদের মোহ যদি তোমাকে সব ভুলিয়ে দেয়, করে তোলে অহংকারী,অত্যাচারী; তাহলে তোমার অবস্থাও হবে ঐ ডাকাত সর্দ্দারের মতোই। আমাকেও পাবে না আর কোনদিন।'
আবুওসমান পরী হিনার কথা মনে রেখেছিল। সম্পদের মোহও তাকে কখনো ভুলিয়ে দেয়নি। বরং গরিব দুঃখীদের নিয়ে তার বাকি জীবনটা সুখেই কেটেছিল।


এটাই পৃথিবীর অলিখিত নিয়ম যা আবহমান কাল থেকে একই নিয়মে চলে আসছে। আর তা হল,ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় হোক; যার সম্পদ তার কাছেই আবার ফেরত যায়। যে নিজের ইচ্ছায় দিতে পারে সে হয় সম্মানিত; যে পারে না তার কাছ থেকে তা কেড়ে নেয়া হয়, ফলে সে হয়ে পড়ে অসম্মানিত, লজ্জিত। আর যে সম্পদ কুৰিগত করতে চায়, সে হয় সমূলে ধ্বংস। সম্পদের ধর্মই হল এই... সে কারো কাছে চিরকাল থাকে না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
হোসেন মোশাররফ আমার রূপকথার গল্পে আপনি একজন পুরানো পাঠক kintu মন্তব্যের পাতায় আপনাকে সবসময় পাওয়া যায় না এটাই যা দুঃখ @ নিরব.... তবে আপনার সু-পরামর্শের প্রতিফলন সামনেই দেখতে পাবেন ইনশাল্লাহ.....মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ....
নিরব নিশাচর একজন সিরিজ গল্পকার কে কি বলে সন্মান দিব জানিনা, তবে আপনার ধারা একেবারেই আলাদা, একেবারেই ভিন্ন... এই সাইটের অনেকের মত আমিও আপনার একজন বড় ভক্ত হচ্ছি দিন দিন... পরি হিনার মত সাপোর্টিং রোল এর জনক কে অনেক অনেক ভালবাসা... রূপকথার আদলে একটা কবিতা লিখার চেষ্টা করলে কেমন হয় দাদা? দেখবেন নাকি ট্রাই করে... ভালো থাকবেন সতত
হোসেন মোশাররফ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ নীলা ....শুভ কামনা রইল ...
নিলাঞ্জনা নীল বেশ সুন্দর হয়েছে. ভালো লাগলো.......
হোসেন মোশাররফ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ > kh Anisur rahman joti সতত ভাল থাকুন .....রইল শুভ কামনা ....
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি হোসেন মোশাররফ ভাই আপনার নাতিদির্ঘ লেখাটি পাঠান্তে আমার বুঝতে আর বাকীঁ রইল না যে লেখাটির জন্য আপনি কতটা পরিশ্রম করেছেন। মার্জিত একটা লেখা । আপনাকে প্রাপ্যটা দিয়েদিলাম...................ধন্যবাদ।
হোসেন মোশাররফ একটু সময়ই না হয় নিয়ে পড়লেন কিন্তু পড়ার পর মতামত টা জানিয়ে যেতে ভুল করবেন না যেন ...>.এস এম শিহাবুর রহমান, ধন্যবাদ আপনাকে .....
এস. এম. শিহাবুর রহমান আপনার গল্পটা সময় নিয়ে পড়তে হবেতো দেখছি...
হোসেন মোশাররফ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ > মোহাম্মদ শামসুল আলম ...সতত ভাল থাকুন.....

২৫ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪