: হ্যালো সপ্তর্ষি , খুব মনোযোগ দিয়ে কথাটি শোন...
: বলো শুনছি...তুমি আমাকে হত্যা করতে বলছো ?
: এটাকে তুমি হত্যা বলছ কেন ?
: তাহলে কি বলবো , খুন ? মার্ডার ?
: আহা ,এটা হত্যা-খুন ---------এ জাতীয় কিছুই নয়।
: আচ্ছা , তুমি কি সেকেলেই থাকবে---নাকি আধুনিকতায় থাকবে ?
: হত্যা করলে আধুনিক হওয়া যায় , বাহ আকাশ বাহ-চমৎকার বলেছো!
: দেখো সপ্তর্ষি , বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন কিছু করতে হয়। যেমন ক্রসফায়ার।
: তুমি ক্রসফায়ার সমর্থন করো ?
: অফকোর্স , সন্ত্রাসীদের এভাবেই দমন করা উচিত।
: অফকোর্স নট। বিচার বহির্ভূত ভাবে শুধু মানুষ কেনো , কোন প্রাণীকেও হত্যা করা উচিত নয়। তবে কি তোমার অনাগত সন্তান -অপরাধী ? যে তাকে র্যাবের হাতে তুলে দিতে হবে !
: হাউ ষ্ট্র্যাঞ্জ আর ইউ ! এটাকে এভাবে দেখছ কেন ? এটাতো চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটা অংশ-গর্ভপাত। ভ্রূণটাকে ধ্বংস করে দেওয়া। এখন খুব সহজ পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে। তুমি একটুকুও ব্যথা পাবে না। সামান্য পিপড়ার কামড়। আমি মালিবাগে ভাল একটা ক্লিনিকে কথা বলে সব ঠিক করে রেখেছি। আগামী কালই চল ওখানে।
: আকাশ , দেহে হয়তো আমি ব্যথা পাব না , কিন্তু মানসিকভাবে ভীষণ কষ্ট পাব। আমি সহ্য করতে পারব না। না আকাশ , আমি এই কাজ করতে পারব না , কিছুতেই না।
: প্লিজ সপ্তর্ষি , পাগলামো করো না।
: আমি একটুও পাগলামো করছি না। ও এখন আর ভ্রূণ নেই। পাঁচ মাস হয়ে গেছে। গত পরশু আল্ট্রাসনোগ্রাফ করিয়েছি। ছেলে হয়েছে। জানো , দেখতে কি যে সুন্দর হয়েছে ! থ্রি-ডি আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে রঙ্গিন ছবি তোলা হয়েছে। ওর নাক-মুখ পেয়েছে সব তোমার। চোখ দুটো মনে হয় আমার মতো হবে। কি যে এক অদ্ভুত আনন্দের ঝরনা ধারা বইছে আমার ভেতর , তা তোমাকে ফোনে বলে বুঝাতে পারবো না। ছবিটা তুমি দেখবে না ? সপ্তর্ষির দু'চোখ দিয়ে বৃষ্টির মতো পানি ঝরছে।
: তুমি বুঝতে পারছনা , যে আমাদের বিয়ে হয়নি। কাজেই এ সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া মানে একটা লংকা কাণ্ড ঘটে যাওয়া।
: এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে , তা আমি তোমাকে বহুবার বলেছিলাম। তুমি শুননি।
: দেখো, ভুল তো মানুষেরই হয়।
: হ্যাঁ হয়। ভুল আবার মানুষ সংশোধনও করে। চলো আমরা সংশোধন করি।
: আর সংশোধনের এই পথইতো উত্তম।
: না , অধম এবং নির্মম-ঘৃণ্য!!!
: এ অবস্থায় পৃথিবীর সবাই তা করছে।
: হ্যাঁ করছে , আমি করবো না।
: তুমি কি পৃথিবী থেকে আলাদা ?
: আলাদাই। তোমার চোখে আমাকে সেরকমই তো আবিষ্কার করেছিলে।
: আমি ভুল করেছিলাম। আজ বুঝতে পারছি তুমি বাস্তবতাহীন একটা মেয়ে মাত্র।
: কোনটা বাস্তব আর অবাস্তব-এটুকু বোঝার ৰমতা আমার রয়েছে। ভুল তুমি করনি। ভুল করেছি আমি।তোমার মতো মানুষকে ভালবেসেছিলাম। আমার হাসি পায়-তুমি মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থায় কাজ কর। ও হ্যাঁ, তুমি না আমেরিকা যাচ্ছো-এবিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী আনতে? আফসোস হয়, নিজের অনাগত সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখতে দেখতে দিচ্ছ না। তাকে হত্যা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছ। শুধু কি তাই ? তুমি যে এখন আমার হৃদয়কেও হত্যা করতে চায়ছো। তোমার নাম আকাশ বলে আমার নাম পাল্টে রেখেছিলে 'সপ্তর্ষি'। তোমার আকাশ থেকে সেই সপ্তর্ষিসহ নতুন আরেকটি গ্রহ ঝরে যাচ্ছে। যাচ্ছে নয় , ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছো। দাও। আকাশ , তুমিও মনোযোগ দিয়ে শোন , আমি এ সন্তানের 'মা' হবো। হবোই।
০৬ এপ্রিল - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৩৭ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪