মুক্তির মিছিল

মুক্তির চেতনা (মার্চ ২০১২)

Azaha Sultan
  • ৫৬
  • ২০
ফিরে দেখি যতবার- বারবার একাত্তরের সেই দিনে
অগণিত মানুষের ক্রন্দনধ্বনি করুণার্তনাদ ভেসে উঠে আমার মর্মে!
বক্ষবিদীর্ণ করে- অশ্রু ঝরে, দেখিয়ে বর্বরতা- রক্তের ইতিহাস
হিমেল বায়ুর স্নিগ্ধবাসরে জ্বলছে দাউদাউ
সদানন্দের বর্ষানন্দ-মেলামাঠ, জনারণ্যের রূপসী হাট
শান্তির শান্তালয়-
মসজিদ, মন্দির, গির্জা, মঠ- বাংলার সমস্ত জনপদ!
ধ্বনিত অলিগলি, মুখরিত দেশ
গোলাবারুদস্বনে কম্পিত বঙ্গধরিত্রী, তমিস্র বঙ্গাম্বর ছায়াপথ দিগন্ত।
প্রসূনমুখের অগ্নিবাণী-
‘খুলে রেখো দুয়ার, দিয়ো না দ্বারে খিল
এস বন্ধু, বের হয়ে এস পথে
বের হয়েছে আমাদের মুক্তির মিছিল’।

গুলিবর্ষণ, সতত বর্ষণ, রক্তার্ণব শ্যামলভূমি-
ত্রাস! ত্রাস!
ত্রস্তবিহগ ধাবিত বনে
আমার চোখের সামনে
এই তো আমার চোখের সামনে
কত শুভ্র নীল হল, কত পাখি মরে গেল,
কত নদী সাগর হল চোখের জলে-
হায়! হায়!
কত দিবস-সন্ধ্যা-রজনী ঘুমাইতে পারি নি-
নারা দেয় আমায় একুশের প্রাত, নারা দেয় আমায় একাত্তরের সাঁজ
নারা দেয়, নারা দেয় স্লোগানমুখর সেই রক্তদিবস- করুণরাত্রি
নারা দেয় হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ গৃহহারা পুরবাসীর কান্না!
ভুলা যায় না মুক্তির সেই তীব্রমিছিল-
ভুলা যায় না
একাত্তরের জুলুমাত্যাচার, অনাচার, হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, গণধর্ষণ-
কেয়ামত!
কেয়ামত!

বাংলার মাটি ধূসরজমাট,
ধূসরজমাট লাবণ্য ঘাস- স্নিগ্ধ পথের ধূলি
আকাশে-বাতাসে আজও ধ্বনিছে হাহাকার ধ্বনি- আর্তনাদ
ত্রিশ লক্ষ নিরীহ জনতার করুণ আবেদন-
একাত্তর!
একাত্তর!!
সবুজে রাঙা ইতিহাস,
রক্তগঙ্গায় সাঁতারি এসেছি আবার সবুজডাঙ্গায়
দেখেছি ভগ্ন মন্দির, চূর্ণ মসজিদ তন্ময় হয়ে
যুদ্ধ শেষ-
শান্ত আকাশ, শান্ত মাটি
মানুষ ফিরছে বাড়ি, পাখিরা ফিরছে নীড়ে
করুণমুখের নবারুণহাসি ফিরে পেয়েছে দেশ
ফিরে পেয়েছে স্বাধীন!
মুক্ত হয়েছে পাখি, মুক্তি পেয়েছে বন্দি
বন্ধু!
তবু-
তবু কি হয়েছে আমাদের মুক্তি?
যুক্তি চাই-

ছত্রিশ বছর পর আমি কি পেয়েছি সেই স্বাধীন শহর?
যার তরে এত মিছিল! এত মিটিং!
এত স্লোগান! এত কোলাহল!
এত ধ্বংস! এত ক্ষয়ক্ষতি!
তারে কি আনতে পেরেছি ঘরে? দিতে পেরেছি স্বাধীন মর্যাদা?
হে স্বাধীনতা!
আমি অযোগ্য সন্তান তোমার
বড় অপরাধী, অপরাধ আমার সীমাহীন
বন্ধু!
তোমার মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছি পলে-পলে
চিনতে পারি নি তোমার মানানন
তাই জলাঞ্জলি আজ ভ্রাতার আত্মদান-
বোনের স্বার্থত্যাগ।

লক্ষ শহিদের রক্তের উপর পদ রেখে যারা করছে অমৃতপান
করছে দেশের অকল্যাণ
তারা হতে পারে না সুসন্তান দেশের-
আমায় ক্ষমা করো হে দেশমৃত্তিকা!
আমি কিছুই করতে পারি নি-
করতে পারি নি অপরাধীর বিচার
করতে পারি নি দেশের মঙ্গল
নিতে পারি নি দেশদ্রোহিতার প্রতিশোধ
ক্ষমা কি পাই বন্ধু!
মন তাঁদের তরে আনচান-
জানাই হাজার সালাম-নমস্কার
ভুলা যায় না তাঁদের দান- অবদান
যাঁরা নিজেকে উৎসর্গ করছে প্রজন্ম- প্রজন্মতরে
তাঁরা নিঃস্বকাঙাল
মানুষ হতে পারে নি এখনো!
যারা দেশের শত্রু তাদের আজ রাজপ্রাসাদ-
ঘুমায় তেতলায়!

আহা!
দেশের লাগি রক্ত দিয়েছে যাঁরা
দিনরাত করছে সংগ্রাম, দিয়েছে মুক্তির ডাক-
তাঁরা ভাই আমার, বন্ধু আমার পায় নি একদণ্ড স্বস্তির বাস!
হায় দিন!
চক্রকার,
চক্রকারী,
মিথ্যারে লালন কর- সত্যরে মানুষ কর না।
যত দিন রবে অত্যাচার- মজলুমের প্রতি জুলুম
যত দিন রবে রক্তপাত- মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব
যত দিন রবে মিথ্যার প্রভাব- সত্যের পরাজয়
তত দিন রবে সংগ্রাম, বন্ধ হবে না যুদ্ধ
শাশ্বত জারি রবে মুক্তকামী চেতনা-
মুক্তির মিছিল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
খন্দকার নাহিদ হোসেন আযহা ভাই, আবেগ মাখা কথা বড় সুন্দর করে বললেন। হৃদয়ে বাজলো। তবে নারা শব্দটা বড্ড চোখে লাগলো।
মিলন বনিক সুদীর্ঘ মহাকাব্য...কিছুটা বেগ পেলেও আমি পড়েছি...এবং ভালো লেগেছে...
রফিকুজ্জামান রণি খন্দকার আযাহা সুলতান ভাই খব ভালো লাগলো !
সাজিদ খান কবিতায় যে আত্নত্যাগ ও আত্নকথন এর কথা বলা হয়েছে তা সত্যিই আবেগের গন্ডি পেরিয়ে বিবেক কেও ভাবিয়ে তুলে ।দাদা , এ রকম লেখা শুধু আপনাকেই মানাই। ভালবাসা রইলো আপনার প্রতি ।
নীলকণ্ঠ অরণি আসলেই, আবৃতির জন্য চমৎকার কবিতা
Azaha Sultan আমি এবার......দুঃখিত......যাই হোক, বন্ধুগণ, আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিকতা এবং হাজার ধন্যবাদ ও সালাম.......
সেলিম রাজা পছন্দের তালিকায় থাকলো।
খোরশেদুল আলম বাংলার মাটি ধূসরজমাট, ধূসরজমাট লাবণ্য ঘাস- স্নিগ্ধ পথের ধূলি আকাশে-বাতাসে আজও ধ্বনিছে হাহাকার ধ্বনি- আর্তনাদ// আজো স্বাধীন হয়নি, স্বাধীনতা আসেনি। আমরা স্বাধীন হয়েও পরাধীন। দেশপ্রেম মানবতা কোথায়। অসাধারণ ভাবনার প্রকাশ। শুভ কামনা দাদা।
মনির মুকুল অতি সত্য ও বাস্তবতার রূপায়ন। কথাগুলো গভীর ভাবনা জাগানিয়া। (নারা দেয় = নাড়া দেয়)
কবিতাটা বহু পূর্বের রচনা কন্ভেট করে জমা দিয়েছিলেম......তেমন ধ্যান করে পাঠ করা হয় নি বিধায়.....তুমি ভাল লেখকের সাথে ভাল পাঠকও বটে.....এটা সাবের দাও উত্থাপন করেছে তুমি বোধহয় মন্তব্য খেয়াল করো নি মনির, বেশ ভাল লাগল......ভাল থেকো...
আহমাদ মুকুল এত্ত বড় কবিতা! আমার গল্পের চেয়ে আকারে বড়! তবে স্বাদ গুণে কমতি নেই।....মূল্যায়ন এক কথায়- অসম্ভব সুন্দর।

০২ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৭৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪