আলো-ছায়া

প্রত্যাশা (আগষ্ট ২০২২)

আব্দুল্লাহ আল সিফাত
  • 0
  • ১১১
আমি হেঁটে হেঁটে গল্প কুড়িয়ে নিই।মানুষগুলোকে বোঝার চেষ্টা করি। ভেতরের গল্পের খুজে।কিন্তু লেখাপড়ার চাপে গল্প ভুলে ভদ্র ছেলের মত শুরু হল পুনরায় প্রাইভেটে ছোটাছুটি। গল্পের ভূত মাথা থেকে নেমে গেল। সেদিন বড্ড শীঘ্রই প্রাইভেটের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলাম, তাছাড়া রাস্তায় জ্যাম থাকবে না তা ছিল অপ্রত্যাশিত দ্রুত পৌঁছে ভাবলাম সময়টা হেঁটে হেঁটে কাটিয়ে দিলে মন্দ হয় না, যেই ভাবা সেই কাজ এক গলি ধরে সামনে এগোতে লাগলাম। গলিটা বেশ সরু নিম্নআয়ের মানুষগুলোই এখানে থাকে দেখেই বোঝা যায়। রাস্তার এক কোণে ঝালমুড়ি বিক্রি হচ্ছে ছোট ছোট ছেলেমেয়ের জটলা পাকিয়ে কেউ কিনছে কেউবা তাকিয়ে আছে নিরীহভাবে। এক শিশু ছেড়া প্যান্ট পড়ে এভাবে তৃষ্ণার চোখে তাকিয়ে আছে তা দেখার শক্তি ছিল না, খুব ইচ্ছে হলো তাকে ঝাল মুড়ি কিনে দিতে,বাচ্চা ছেলেটার মুখে সুন্দর একটা হাসি ফোটাবো কল্পনায় ভেবে নিলাম।ভাবতেও ভালো লাগলো, যেই ছেলেটাকে বলতে যাব তখনি ছেলেটা এক দৌড়ে পালালো , তাৎক্ষণিক কিছু বলতে পারলাম না। কিছু বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে আমিও ঝাল মুড়ি খেতে ভালবাসি, আমারও লোভ হলো, সেই বাচ্চা ছেলেটার মত কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলাম।এই ঝালমুড়িতেই তৃপ্তি খুজেছিল ছেলেটা, কি জানি হয়তো মায়ের আঁচল ধরে বায়না করছে এখন তারও যে ঝালমুড়ি খেতে ইচ্ছে হচ্ছে । যাই হোক কিছু করার ছিল না আবার সেই জটলার দিকে তাকালাম। সত্যিই এক কাজ বারবার করলে দক্ষতা বাড়ে তা এই ঝাল মুড়ি বিক্রেতার ফস ফস করে মরিচ কাটা দেখার পর সন্দেহ রইল না। ঝাল মুড়ি নিয়ে হাঁটতে শুরু করেছি পুনরায়। সত্যিই এখানে যারা থাকে তারা বেশ নিম্নবিত্ত অথচ ভিক্ষুক না। ঝগড়া এদের নিত্যসঙ্গী। পানি নিয়ে বেশ ভালো ঝগড়া চলছিল তখন, কে কার আগে নিবে। দিনে মাত্র দুবেলা পানি আসে ,একেই হয়তো জীবন যুদ্ধ বলে। গৃহকর্তাদের সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ফলে এদের আহার্য জোটে। এক দুটো কেরানিও আছে হয়তো এই গলিতে। ঝাল মুড়ি খেয়ে তৃপ্তি হলো না, স্বাদ নেই বললেই চলে। অথচ মরিচকাটা দেখে বেশ লেগেছিল।আমার সাথে এমনি হয় হয়,কিংবা লোকটি বেশ চিন্তিত ছিল পরিবার নিয়ে, তাই হয়তো ঠিকমতো মশলাটা পড়েনি। তার মাথাতেও ভাবনা দুমুঠো চাল-ডাল ফিরতি পথে নিতে হবে। ভাবতে ভাবতে অনেকটুকু অগ্রসর হয়েছি,হঠাৎ থমকে গেলাম ঠিক রাজকন্যার মত দেখতে ছোট একটা মেয়ে বয়স পাঁচ কিংবা ছয় বছর হবে হয়তো। এমন জায়গায় এমন ফুটফুটে মেয়ে যেন মানায় না, নর্দমায় ফুল ফোটা যেমন বেমানান।তারও যেন বিলাসিতায় থাকার কথা ছিল।তবে হ্যাঁ মেয়েটা যে ঘরের লক্ষী সে বেশ বুঝেছিলাম, যথাসাধ্য আদর যত্ন তাকে ঘিরে। মেয়েটির গোলাপি জামার মাঝে কাজ করা বড় একটি ফুল, চোখে কাজল, চুল বাকিদের মত এলোমেলো নয় বেশ শ্রী। আমার ভেতর থেকে প্রশ্ন বেরিয়ে গেল নাম কি তোমার?মেয়েটা হেসে অল্প সুরে কিছু বলেছিল শুনতে না পেয়ে আবার জিজ্ঞেস করতেই বলল আমার নাম তোহা। নামটা বেশ লেগেছিল কিংবা সুন্দর মেয়েটার নাম বলেই হয়তো। এমন ফুটফুটে একটা মেয়ে সত্যিই আলো ছড়ায়। একটু পরে ঘর থেকে একটা ডাক পেয়ে তোহা ভেতরে চলে গেল, দেখার চেষ্টা করলাম তার মা মেয়েটাকে বুকে টেনে নিল,বাকিটুকু দেখতে পারলাম না জানালা দিয়ে। ফিরে আসব তখন চোখে পড়লো বাসাটার নেমপ্লেটে ।চকচকে নেমপ্লেট খানা পৌরসভা থেকে দেয়া হয়েছে। সেখানে লেখা "আলো-ছায়া" আর বাসার ঠিকানা। সত্যিই এ গলিতে যেন আলো আর ছায়া খেলা করে।আলোটা পারিবারিক আনন্দ আর ছায়াটা দারিদ্র্যের ছাপ....।বাস্তবতা যেন জবাব দিল গল্প আসলে খুজতে হয় না , গল্পগুলো আমাদেরই প্রত্যাশিত হলে নাম দিই না,অপ্রত্যাশিত হলে গল্প ধরে নিই এই যা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

বাস্তবের সাথে প্রত্যাশাকে মিশিয়ে মিল করা হয়েছে গল্পে।

২৩ জুলাই - ২০২২ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪