টাকার পুটলি

ভয় (জুলাই ২০২০)

Dipok Kumar Bhadra
মোট ভোট ১০ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.১৪
  • ১৪
  • ১৭২
রাত তখন ৩.৩০ টা, হঠাৎ কলিং বেলের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে দরজা খুলে দেখলাম কেউ নেই। বাইরে একটু এগুতেই দেখলাম একটা কালো বিড়াল ম্যাও ম্যাও করছে। বিড়ালটা বসার পাশের রাস্তা দিয়ে চলে যাচেছ।বিড়ালের পিছু পিছু কিছুদূর যাওয়ার পর হুস ফিরল কেন যাচ্ছি বিড়ালটার পিছনে? তারপর ফিরে এলাম।

বাসায় এসে বিছানায় শুতে গেলাম। হঠাৎ চোখ গেল সেই আলমারির দিকে, যেখানে রাখা ছিল গতকাল অফিসে এক বুড়ো এসেছিল তার পেনশনের টাকা পাশ করাতে। কয়েক দিন হলো বুড়োটা প্রতিদিন আসে এবং তার ফাইলের খোঁজ খবর নেয়।এই অফিস থেকে পেনশনের টাকা পাশ হয়।
বুড়ো বেশ কয়েকদিন ঘুরার পর কিছু টাকা পুটলি বেধে নিয়ে এসে দেয়, যেন ফাইলটা তারাতারি পাশ হয়। প্রথমে নিতে না চাইলেও বুড়োর আকুতিতে টাকার পুটলিটা নিয়ে ড্রয়ারে রেখে দেই। বুড়ো চলে যায় এই বলে যে পরে এসে চেক নিয়ে যাবে।
টাকার পুটলিটা নিয়ে এসে বাসায় আলমারিতে রাখি।মনটা কেমন যেন করে, বৃদ্ধ মানুষটা কত বার আফিসে এসে টেবিলে টেবিলে তার ফাইলের পিছনে ঘুরল। আজ আবার সে পুটরি করে এনে টাকা দিল।

আচ্ছা বুড়োর কাজটা কাল অফিসে গিয়েই করে দিব।ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছি।

সকালে ঘুম থেকে উঠে চা-নাস্তা করে অফিসে গিয়ে বুড়োর ফাইলটা সই করে চেকটা প্রস্তুত করি। কারণ বুড়ো তো সকালেই এসে সারা দিন বসে থাকে। মনে হয় অবসরের পর এটাই তার অফিস।কিন্ত হায়রে, বুড়ো তো আজ আর আসল না। চেকটা তো হয়ে গেছে দিব কার কাছে। সকাল থেকেইমনটা কেমন যেন লাগছিল। তাই টাকার পুটলিটাও অফিসে আসার সময় সংগে করে নিয়েই এসেছি।বুড়োটাকে চেকের সাথে টাকার পুটলিটাও ফেরত দিব ভেবে রেখেছি। কিন্তু না দুপুর হয়ে যাচ্ছে বুড়ো তো আর আসল না।

অফিস শেষে মনটা যেন কেমন করছে, তাই বুড়োর বাড়ির ঠিকানায় গেলাম। একজন লোককে বুড়োর বাড়ির ঠিকানা জিজ্ঞাস করতেই বলল, বুড়োটা তো গত রাতেই মারা গেছে। তাকে আজ দুপুরে দাফন করা হয়েছে। হাইরে কপাল এমন কেন ঘঠল!

ভয়ে আমার শরীরটা শিহরিয়া উঠল। বুড়োর আর কেউ নেই। বেঁচে আছে তার এক মাত্র স্ত্রী, তার বয়সও কম নয়। তার সাথে দেখা করতে চাইলাম, কিন্তু না তিনি কারো সাথে দেখা করতে নারাজ।তার কাছে সেই অবসরের চেক এবং টাকার পুটলিটা দিতে চাইলাম। কিন্তু তা আর হলো না।
ফিরে এলাম নিজ বাড়ির দিকে। কেন জানি নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে, আর মনের মধ্যে ভয় লাগছে।তাহলে কি গত রাতে ঐ বুড়োই…

ভয় করছে। রাতে ভীষণ জ্বর আসছিল। সবাই আমার মাথায় পানি দিচ্ছে। আমি ভয়ে থরথর করে জ্বরে কাপছি, বলছি চেকটা আর টাকার পুটলিটা কি করে এখন কাকে এবং কখন দেব।এগুলো থাকলে আমার জ্বর কমবে না। দিয়ে এসো এগুলো, আর পারছি না।আমিও মরে যাবো।

সবাই অবাক হয়ে আমাকে দেখছে, আর কথাগুলো শুনছে।কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছে না।আমি বলছি ভয় করছে, আমাকে বাঁচাও। আর যেন এমনটি কেও না করে। বলতে বলতে মুর্ছা গেলাম। পরে কি হলো আর জানি না।

সকালে ডান ফিরে দেখলাম সবাই আমার চারপাশে বসে আছে শোকাহত অবস্থায়। শুধু দেখছি কথাও বলতে পারছি না, হাত পাও নড়ছে না। কিন্তু মনে মনে শুধু ভয় করছে কাউকে বলতে পারছি না।

চোখের কোণ দিয়ে শুধু পানি গড়িয়ে পড়ছে, কিছু বলতেও পারছি না। মনে শুধেই ভয় বাসা বেধেছে। কাউকে কিছু বলতেও পারছি না। নিজের মৃত্যুর দিনক্ষণ গুনছি শুধু শুয়ে শুয়ে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
riktas লেখককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
Lata Rani Sarker অভিনন্দন
নীলাঞ্জনা নীল অভিনন্দন
ভালো লাগেনি ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
আরমান আহমেদ শুভেচ্ছা
ভালো লাগেনি ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
আশরাফুল হক অভিনন্দন
ভালো লাগেনি ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
পুস্পিতা আখি অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা
ভালো লাগেনি ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
শ্রাবনী রাজু অভিনন্দন
ভালো লাগেনি ১ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ঝরনা আক্তার অভিনন্দন
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
আমজাদ হোসেন শুভেচ্ছা
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

২০ মে - ২০২০ গল্প/কবিতা: ৪৪ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.১৪

বিচারক স্কোরঃ ২.১৪ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ৩ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪