অন্ধগলি

বৃষ্টি ভেজা (জুলাই ২০১৯)

মুহম্মদ মাসুদ
  • 0
  • ৫৮
কান্নার শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো। প্রচন্ড মায়া কান্না। কাকে যেমন খাবারের অভাবে চোখ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে। গাভী যেমন বিবৎসায় কাঁদে। এরকমই কান্না।
ব্রাশ হাতে নিয়ে বাইরে বের হয়ে দেখি পুরো বাড়ি ফাঁকা। রান্নাঘর থেকে শুধু ধোঁয়া বের হয়ে আসছে। ভাতের হাঁড়ি থেকে ফেনা পরে চুলা স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে নাকে প্রচন্ড দুর্গন্ধ এসে ভর করেছে। নিশ্বাস নিলে দেহ বন্ধ হতে চায়।
তড়িঘড়ি করে উঠানের কোণে মাকে আসতে দেখেই বললাম - কি হয়েছে মা? এতো কান্নাকাটি আর দুর্গন্ধ কিসের?
মা রান্নাঘরে ঢুকেই বলে উঠলো - অতনুদের বাড়িতে যা। গেলেই দেখতে পাবি। মানুষ আর মানুষ নেই রে অতল। সম্পত্তির লোভে মানুষ এতো জঘন্য হতে পারে জানা ছিলো না।
ব্রাশ হাতে নিয়েই দৌড়ে অতনুদের বাড়ির উঠানে উঠবো এমন সময় দেখি ডোবার পাশে অনেক মানুষের ভিড়। কাছাকাছি যেতেই প্রচন্ড দুর্গন্ধ এসে পেট ফুলিয়ে দেয়। ভেতর থেকে নাড়িভুড়ি বের হয়ে আসার মতো। ভিড়ের মাঝে যেতেই দেখি - অতনুর বোন শালিনী কাঁদছে।
অতনুদের বাড়িতে তেমন কোন সাড়াশব্দ নেই। মনে হচ্ছিল কোনকিছুই ঘটেনি। সচারাচর যেমন চলছিলো ঠিক তেমনই। কারোরই যেন কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।
পুলিশ শালিনীকে জিজ্ঞেস করলো - কি করে ঘটলো ঘটনা? তোমার কাকে সন্দেহ হয়?
শালিনী বললো - সপ্তাহখানেক আগে অনুদার (অতনু দাদা) সাথে মায়ের বেশ ঝগড়া হয় জমিজমা আর বাবার পেনশনের টাকা নিয়ে। এই নিয়ে প্রভাত দাদা অনুদাকে খুবই শাসিয়ে বলে - তোকে কিন্তু খুন করে ফেলবো। হাতপা কেটে ডোবায় ফেলে দেবো। শালিনী কথাগুলো বলতে বলতেই অঝোরে কাঁদতে শুরু করলো।
পুলিশ বলতে লাগলো - মানে কি? নিজের মা - ভাই মিলে......।
গ্রামের লোকজন বললো - না স্যার, আপনি যা ভাবছেন তা নয়। আসলে প্রভাত অতনু আর শালিনীর সৎভাই।
পঁচে পঁচে অর্ধগলিত হয় গেছে। চেহারাটা বোঝার উপায় নেই। পোকামাকড়ের কামড়াকামড়িতে আরও বেমানান রূপ ধারণ করছে। চোখের পলক পড়লেই নিরবিচ্ছিন্ন মুখখানি চোখের ১০০ হাত মধ্যে ভেসে ওঠে। আর বুকের ভিতর মৃত্যুর ভয়টা বালিশ চাপায় গুতাগুতি করে।
এইতো গত সোমবার সকালেও কথা হলো। বললো - চাকরির পরীক্ষা আছে। সেজন্য বাসের টিকেট কাটতে যাচ্ছি। বিকেলে দেখা হবে রে।
গত তিন-চার দিন হলো এতো বৃষ্টি ছিলো যে অতনুর সাথে আর দেখা হয়নি। ফোনেও কোন কথা হয়নি। ভেবেছিলাম ঢাকা থেকে হয়তো আসেনি। নইলে অবশ্যই আমার সাথে দেখা হতো। পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করতো।
যে ডোবায় অতনুর মরদেহ পাওয়া গেছে গত সোমবারেও সেখানে হাঁটু অবধি জল ছিলো। কিন্তু গত তিন-চার দিন হলো এতো বৃষ্টি হলো যে পুরো ডোবাটা জলে কানায় কানায় ভরে গেছে। আর মৃত্যুর পরোয়ানা হিসেবে বৃষ্টি ঘনিয়ে এসেছে।
রাস্তার ধারে অতনুর সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চাকরির পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া গেছে। অ্যাডমিট কার্ডের ফাইলের ভিতর অবধি কাঁদার ছড়াছড়ি। এ থেকেই স্পষ্ট মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টির সময় অতলকে.......।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মুহম্মদ মাসুদ ধন্যবাদ, কবিবর।
বিশ্বরঞ্জন দত্তগুপ্ত অন্ধ গলির ভিতরের গল্প - ভাল লাগল । ভাল থাকবেন । শুভকামনা রইল ।
রুহুল আমীন রাজু সুন্দর প্রকাশ । বেশ লেগেছে গল্পটি । অনেক শুভ কামনা।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

বৃষ্টি ভেজা রাত প্রেমিক প্রেমিকাদের উপযোগী। এসময় তারা খোশগল্পে মেতে উঠে। তেমনি আবার স্বামী-স্ত্রী মেতে উঠে আনন্দে উল্লাসে আদরে। বৃষ্টির ভেজা রাতে টিনের চালে বৃষ্টির নাচানাচির শব্দে অনেকেই ঘুমের শহরে ডুবে থাকে আবার অনেকেই খুন, ডাকাতি, রাহাজানি, এমনকি নিষ্ঠুর বর্বরতার কাজেও মানুষ লিপিবদ্ধ হয়। যা অনেকের বেঁচে থাকার সামর্থ্য টুকুও কেড়ে নেয়। উল্লেখিত বিষয়ের সাথে যেমন রয়েছে গল্পের সামঞ্জস্যতা তেমনি বিষয় বাহুল্য উপাদান। আশাকরি গল্পটি পাঠক হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যাবে।

৩০ মে - ২০১৮ গল্প/কবিতা: ৪৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪