মাতৃত্বের ভয়

ভৌতিক (ডিসেম্বর ২০১৮)

মুহম্মদ মাসুদ
  • ১০
  • ৬৫
টিয়ে পাখি এখনও চেচাঁমেচিতে করছে নড়াচড়া।
বেলগাছটা এখনও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে।
উঠানে কালো শালিক মৃতের গন্ধে কাতরায়।
পিঁপড়াগুলো এখনও রক্ত জমা করতে ব্যস্ত।
রক্তের আবরণে মাটি শুকিয়ে এখনও চৌচির।
গুন পোকা এখনও ডাকে এরুপ কলঙ্কে।
ভয় এখনও পিছু পিছু হাঁটে।
ছায়া হয়ে চলে।
শব্দ হয়ে বাজে শিউলি তলে।
রক্তজবা হয়ে ফোটে সকাল সন্ধ্যায়।
স্বাধীনতা,
আমি ভয়ে ভয়ে প্রহর গুনি।
আবার যদি আসে কালবৈশাখী।
আবার যদি বাঁধে যুদ্ধ।
আবার যদি ১৯৭১'র দেখা মেলে।
কেড়ে নিয়ে যাবে মানিক রতন।
কলিজার টুকরো,
হীরে মানিক সাত রাজার ধন।

স্বাধীনতা,
তোমার সংস্পর্শে পায়নি কিছু মোটেই।
খড়কুটো আর ছেঁড়া জাল ছাড়া জোটেনি কিছুই।
আত্মচিন্তার চিৎকারে বুক এখনও ফাটে।
নিঃসঙ্গ উপসর্গগুলো কল্পনায় এখনও হাটে।
বাংলা বর্ণমালারা কাঁদে জানালা ঘেঁষে ঘেঁষে।
অতৃপ্ত কান্নাকাটি ফাঁকি দিয়ে হাসে।
স্বাধীনতা, তুমিতো নিয়েছ সবি।
দিয়েছ শুধু মুঠো মুঠো অশ্রু জল।
কেড়ে নিয়েছ সবি।
দিয়েছ শুধু বুক ভরা হাহাকার।
হনন করেছ সবি।
দিয়েছ শুধু আঁচল ভর্তি আর্তনাদ।

স্বাধীনতা,
যদি ১৯৭১ না আসতো।
যদি দেখা না হতো ভয়াবহ ভয়ানক কাল রাতের সাথে।
যদি দেখতে না হতো সেই চিত্র।
যদি বোবা হয়ে থাকতে না হতো।
শাড়ির আঁচলে যদি নিজে ঢাকতে না হতো।
যদি চোখ দুটো অন্ধ হয়ে যেতো।
তবে ভাল হতো,
মেনে নিতে পারতাম দেশ স্বাধীন।
স্বাধীনভাবে পেতাম কথা বলার গৌরব।
অর্জন করতে পারতাম সাহস শক্তি।

স্বাধীনতা,
স্বাধীন হয়ে আজ চালচুলোহীন।
ঘরবাড়ি ভিটেমাটিহীন।
আইন আদালত পরাধীন।
শাসন সাম্রাজ্য বিহীন।
দেশ ভরে গেছে ক্ষমতা লোভের জঞ্জালে।
সৎ সত্য আজ লোকচক্ষুর আড়ালে।
অন্যায় ন্যায় মূর্তি হয়ে দাড়িয়ে।
উঁচুনিচু মুখোমুখি মুখোশে।
আর বিচার বিচারক অন্যের হাতে জবানবন্দি।

স্বাধীনতা,
ছালাম রফিক জব্বার এখনও মরে নি।
এখনও শুকিয়ে যায়নি ওদের আহাজারি শব্দ।
রক্তের গন্ধ লেগে আছে মাটিতে।
এখনও ডাকছে স্বাধীন হওয়ার চেতনায়।
স্বাধীনতা
শুধু ওরাই স্বাধীনতা অর্জন করেনি।
আমার কলিজার টুকরোও ছিল সেদিন রাতে।
হাতিয়ার আর বন্দুক ছিল হাতে।
লড়াইয়ে লড়েছে শত ঘাত ব্যাঘাতে।
খুন করেছে পাকিস্তানিদের নিজ অস্ত্রতে।
জীবন দিয়েছে দেশ বাঁচাতে।
তবে কেন জন্মদাতা মায়ের এমন হাল।
রোগে অসুখে কাটছে দিনকাল।
শোচনীয় অত্যাচারে শরীর যাচ্ছে শুকিয়ে।
কেন আজ আমি রুখে দাড়িয়ে?

স্বাধীনতা,
ভয় হয়। ভয়ে শরীর ঝিমিয়ে পরে।
অশ্রুসজল ঘেমে ঘেমে বের হয়।
শরীর নিস্তেজ নিঃশব্দে ভাটা পরে ভাটির দিকে।
আরও অনেক মা আছে।
অনেক রফিক জব্বার ছালাম বরকত বেঁচে আছে।
আবার যদি ১৯৭১ আসে।
আবার যদি দেখা পাওয়া যায় দুর্দিনের।
শত কলঙ্কের শত সহস্র রক্ত জলের।
শত সহস্র লাশের মিছিলের।
তবে আমি পাঠাবো না।
আমার কলিজার টুকরো বেঁচে থাক আমার লাঠি হয়ে।
আমার দেখভাল করুক সাচ্ছন্দ্যবোধে।
আমি সুখে থাকি।
সুখের পরশ গুলো স্পর্শ করুক আমাকে।

স্বাধীনতা,
আমি খুবই ভয় পাই।
কলিজা সারাক্ষণ ধড়ফড় ধড়ফড় করে।
গলা শুকিয়ে থাকে।
বুকে নিশ্বাস আটকে থাকে।
পাগুলো তালাবদ্ধ হয়ে থাকে।
কণ্ঠ আটকে যায় গলার শিকড়ে।
হাত সেতো দোয়া প্রার্থনায় বন্দী।
ছেলেকে না হারিয়ে ফেলি।
১৯৭১ তুমি যদি ফের আসো।
তবে, খোকন দৌড় যাবে।
তুলে নিবে হাতিয়ার।
যুদ্ধ করবে আবার।
ছিনিয়ে আনবে মাতৃভাষাকে।
ছিনিয়ে আনবে স্বাধীনতাকে।
হারানোর ব্যথা শুধু কষ্ট দেবে আমায়।

স্বাধীনতা,
আমার প্রচন্ড ভয় হয়।
আমি ভয়ে কেঁদে ফেলি।
ভয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখি।
মনে মনে বাসনা করি।
আর যেন না আসে বাংলাদেশে এমন স্বাধীনতা।
এমন নিঠুর যুদ্ধ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মোখলেছুর রহমান বই খাতা ভাই,যেমন বড় তেমনি সুন্দর।
এই মেঘ এই রোদ্দুর অনেক বড়। সুন্দর হয়েছে। আমার পাতায় আমন্ত্রন
এই মেঘ এই রোদ্দুর অনেক বড়। সুন্দর হয়েছে। আমার পাতায় আমন্ত্রন
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী স্বাধীনতা, আমার প্রচন্ড ভয় হয়। আমি ভয়ে কেঁদে ফেলি। ভয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখি। মনে মনে বাসনা করি। আর যেন না আসে বাংলাদেশে এমন স্বাধীনতা। এমন নিঠুর যুদ্ধ। খুব সুন্দর লেখা। বেশ ভালো লেগেছে ভাই। শুভেচ্ছা।।
আবু আরিছ শেষ পর্যন্ত পড়া হলো না, কারন সব দোষ আপনি স্বাধীনতাকে দিচ্ছেন, যেন স্বাধীনতা অভিশপ্ত কালনাগিনী, দেখুন স্বাধীনতা আসবে বলেই ত্যাগ তিতীক্ষা গুলি অমর...
মাইনুল ইসলাম আলিফ দীর্ঘ কবিতা।ভাবগত মিল রেখে সুন্দর কবিতা লিখার চেষ্টা করেছেন।আপনাকে সাধুবাদ জানাই।শুভ কামনা আর ভোট রইল।আসবেন আমার পাতায়।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

কবিতার সাথে উল্লেখিত বিষয়ের ভাবগত মিল রয়েছে। সন্তানের প্রতি মায়ের মনের ভয়টা আসল ভয়। মা স্বাধীনতা চায় আবার সন্তানও চায়।নিজের বেঁচে থাকার জন্য আশ্রয়ও চায়। এজন্য সবসময় মা ভয় পায়।

৩০ মে - ২০১৮ গল্প/কবিতা: ৪৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪