একটা সেলাই মেশিন চাই

শ্রমিক (মে ২০১৬)

মামুন মাহফুজ
  • 0
একটা সেলাই মেশিন চাই....
আমাদের একজন ছুটা কাজের বুয়া আছে। মাসে ৫০০ টাকা দেই এক কাজের জন্য। বেশিরভাগ সময়ই কাজটা হয় কাপড়কাচা।
সার্ভিস বেশ ভালো।মহিলা নামাজী। বোরকা পড়ে কাজে আসে। বোরকা খুলে কাজ শেষ করে আবার বোরকা পরে বাসায় চলে যায়। ৫-৬টা বাসায় কাজ করে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা আয় তার। এই দিয়ে কি সংসার চলে?
ছেলেটা হিফজ পড়ছে। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে বাসায় ফেরে। ডাক্তার বলেছে ভালো এবং পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। আর কি ভালো খাবার দিতে পেরেছে জানি না। তবে একগ্লাস দুধ প্রতিদিন দেয়। আর সেই দুধটা আমরাই রেখে দেই। তবে দুধের বিল পরিশোধ করে সে। যদি আমরাই দিতে পারতাম ভালো লাগতো। পারি না। আমাদের দুই ছেলের জন্য হাফ কেজি দুধ রাখা হয়। তাতেও গিন্নীর মাঝে মাঝে আপত্তি। দুধের খরচটা কমাতে হবে। আসলে খরচ বাড়লেও আমাদের বেতনতো বাড়ে না, বরং কমে।তাই খরচ কমাতেই হয়।
বুয়ার ছেলের চিকিৎসার জন্য একশ টাকা দিতে পারবা। বুয়াতো কখনও চায় না। এবারই চাইলো। আমার গিন্নীর এমন কথায় বুকটা ভেঙে যাচ্ছিল। কীভাবে না বলি?
নিজের ছেলেটা রাতে ঘুমাতে পারে না; সর্দিতে নাকবন্ধ হয়ে থাকে, গলাব্যাথায় রাতে বিছানায় বসে বসে কাঁদে। আদদ্বীনে নিয়ে গেলে ১০০ টাকা ভিজিট তাই নিতে পারছি না। ঠিক সেসময় বউ যদি বলে বুয়ার ছেলের জন্য ১০০টাকা দিতে পারবা?
আমি কী জবাব দেবো?
কবে লাগবে? দিও
কোত্থেকে?
বিদ্যুৎবিলতো দেওনাই সেখান থেকে দিও।
বিদ্যুৎবিল কিন্তু ২ মাসের জমে গেছে।....
আল্লাহ ভরসা...দেখা যাক...
সেই বুয়ার জন্যই বউ আজ আবার একটা সেলাই মেশিন চেয়েছে। কেন? সেই গল্পটা আরও কষ্টের।
বাড়ি বাড়ি কাজ করে সে, ভারি ভারি কাজ। যে কারণে পেটের ভিতর একটা সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মারা গেছে।
আল্রাহর রাসুল যেখানে একটা গর্ভবতী পশুর প্রতি মমত্ববোধ দেখিয়েছেন আমরা সেখানে একজন গর্ভবতী মহিলাকে দিয়ে ভারি কাজ করাই। এরই নাম হিউম্যানিটি।
আপনারা জানেন তাকে সেলাই মেশিন কিনে দেয়ার ক্ষমতা আমার নেই। ঠিক যখন এসব ভাবছি তখন আমার এক বড় ভাই বলে কাজ করে মজা পাচ্ছ?
আমি সত্যিটাই বললাম, মজা পাচ্ছি না।
কী কাজ করছি আমরা? মানুষের জন্য কিছুইতো করতে পারি না....
শুধু এই একজন বুয়া নয়। কতো মানুষ কষ্টে আছে। কারও জন্যইতো কিছু করতে পারছি না আমরা।
তাহলে আমরা কী কাজ করি?
শুধু উপদেশ দেই....শুধুই উপদেশ....নছিহত....যতোটা পারা যায় খরচ করি নছিহতের পেছনে.....
অথচ পেটে ক্ষুধা থাকলে কোনও নছিহত ভালো লাগে না। তার জ্বলন্ত সাক্ষীতো আমি নিজেই।...
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফেরদৌস আলম সত্যিই তো তাই, আমরা অসহায় মানুষদের জন্যই বা কী করি? করা উচিত ভাবার আগেই। সুন্দর লাগলো!
Md.Nazmul Hasan Shanto কেতকী মণ্ডল ...। আপনার প্রতিটি কমেন্ট লেখদের সম্মানিত করে , কিছু কিছু কমেন্ট দেখে মনে হয় , সে ছাড়া আর কেউ না তো কমেন্ট করতে পারে ,নাত গল্প লিখতে পারে, না গল্প কবিতা বুঝে । হিংসারও একটা মাত্রা থাকা উচিৎ । লেখকের প্রতি শুভ কামনা ...।
নাস‌রিন নাহার চৌধুরী খুব বাস্তব কথাগুলো। মনটা ভার হয়ে গেল। ভোট রইল লেখায়।
মিলন বনিক ভাবনাটা সুন্দর একটু গুছিয়ে লিকলে আরও ভালো হবে...শুভকামনা...
আহা রুবন কথাগুলো খুবই সত্যি বলেছেন। কিন্তু এটা কি গল্প হল?
রেজওয়ানা আলী তনিমা তাহলে আমরা কী কাজ করি? শুধু উপদেশ দেই....শুধুই উপদেশ....নছিহত....যতোটা পারা যায় খরচ করি নছিহতের পেছনে..... অথচ পেটে ক্ষুধা থাকলে কোনও নছিহত ভালো লাগে না। তার জ্বলন্ত সাক্ষীতো আমি নিজেই।... খুব খাঁটি কথাগুলো।

০৮ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪