ঐশ্বরিক

ঐশ্বরিক (মার্চ ২০১৭)

ধুতরাফুল .
  • ১০
  • ১১
চাষার ছেলে সে। আরবের মরু প্রান্তর। খেজুর কন্দের ঝোপ আর উষ্ট্রের ধ্বনি তার কর্ণে কোন ভাবান্তর ঘটায় না। রক্তের ভিতর মালশাদহের আদি দিগন্ত হাওয়ের পাশে ঋতুবতী ফসলের মাঠ, শষ্যদেবীর আর্শীবাদপুষ্ট সবুজ ধান, যব ,গম আর সরিষাবীজের গন্ধ। ধূপ এর তীব্রতায় আচ্ছন্ন করে ফেলে তাকে। মানসপটে প্রতিম্বিত হতে থাকে বঙ্গদেশে ফেলো আসা যুবতী বৌ এর সুর্বণ মুখাঅয়ব। তিন ভাদ্রর কাল তার আগমনের র্দীঘ প্রতীক্ষা এবার শেষ হবার পালা। তৃতীয়বর্ষীয়া ঔরসজাত কন্যা মীম ।যার কচি হাতের পরশ এখনো লাগেনি পিতৃস্নেহে ভরা দিগন্ত জোড়া বুকে। একদা থেমে যায় রাজমিস্ত্রীর হাঁকডাক নতুন গৃহ প্রস্তুত গেরস্থের অপেক্ষায়....ফিরে আসে যুবক। মরুর দেশ হতে। দক্ষিণ হস্তে ঢাউস দুরদর্শন যন্ত্রের বাক্স (LED TV)নিয়ে। আহ্লাদে বিগলিত শিশু জড়িয়ে ধরে পিতার গলা। যুবতী বৌয়ের ঘোমটার ফাঁকে খুশির দ্যুতি। প্রশান্ত করে তপ্ত মরুর বুকে খেটে আসা পরিশ্রান্ত মানুষটাকে। হপ্তা নাগাদ ফিরে যায় যুবক ফসলের মাঠে। সে যে চাষার ছেলে। রক্তে কর্ষিত জমির সোদা গন্ধ ...অগ্রহায়ণের শেষে যুবক ধানের গোছা পরিপক্ক হয় সোনালী আভায়। চলে নব্বানের উৎসব.....গেরস্থের গোশালায় উকিঁ দেয় দুটি সাদাকালো নধরদেহ গো- শাবক...আসছে কোরবানীতে গাবতলীর হাটে বিক্রীর অপেক্ষায়। পৌষের কাছাকাছি কোন এক রোদ মাখা দিনে তাদের আগমন..........আমাদের পশ্চিমের প্রতিবেশী। মা আর নানীর সাথে প্রথম আগমন আমাদের বাড়িতে। মুন্ডিত মাথায় ঔষধি তেলের গন্ধ।আয়ত নয়নে গভীর ভয় আর বিস্ময়। এতো ডাকি তাকে কাছে আসেনা। মা আর নানীর নিরাপদ কোলে নেয় সুদৃঢ় অবস্থান। পুতুলের ছোট্ট পাদুকায় হাতের আঙ্গুল গলিয়ে যখন তার দিকে এগিয়ে যায় ফিক করে হেসে ফেলে নিরাপদ কোলের সুদৃঢ় অবস্থান থেকে একটু একটু করে সরে আসে....বিছানায় বালিশে বুকের ভেতর......আন্টির সাথে চলে তার গোপন খেলা সারাবেলা.......আদুরে শব্দে সমৃদ্ধ হয় গৃহকোন.....পটলা(পরোটা) বশলা কাল(বর্ষাকাল) ফুচকি (ফুচকা)। নৈশ্য ভোজের টেবিলে প্রতিধ্বনিত হয় সেই সব আদুরে শব্দমালা যা অনুরণিত হয় পরদিন প্রাতঃরাশে। কল্পোলোকে সে এক মিশরের রাজকন্যা নাম তার মীম মিশৌরী। শিপাশিয়া নামের এক রাজপুত্রের সাথে গভীর প্রণয়। সেই কল্পিত বিয়েতে সাতনরী হার উপহার দিতে হবে আমায়। হয়তো ভাবে বেহেশতের বাড়ীতে রেখে আসা শত ভরির গহনার বাক্স বুঝি আমার কাছে গচ্ছিত আছে। অপরাহ্নে আন্টির সাথে উঠে যায় দ্বিতলবাড়ীর ছাদে.....যার এক পাশে সু-সজ্জ্বিত পুষ্প বৃক্ষরাজী অন্য পাশে চিলে কোঠায় কবুতরের বাসা। পুস্প বৃক্ষের বর্ধিত শাখা কর্তনের ছলে আন্টির সঙ্গে কচি কন্ঠ মিলায় “ মম চিত্তে নিতি নৃত্য.....কে যে নাচে তা তা থৈ থৈ...........”কবুতরের ঝাঁকে ছুড়ে দেয়া শস্যদানা .....আয়ত চক্ষু আরো বিস্ফারিত হয়। পাখিদের ঠোটে দানা তুলে নেবার শব্দ হয় দীর্ঘতর..........।নিজের পিঠে অনুভব করে সে জন্মের আগে ফেলে আসা সোনালী ডানার অস্থিত্ব। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে আসে ।ছাদের উপর কোজাগরী পূর্নিমার রাতে কার্নিশে বসে চন্দ্রের দিকে অপলক চেয়ে থাকে দুটি ছোটবড় শিশু। শ্বেত বস্ত্র খন্ডের মত মেঘ দৌড়াতে থাকে চঁন্দ্রের সাথে। দুজনের পাজঁর এক হয়ে যায়। যেন এক অখন্ড ভালোবাসা। জোসনার আলো ছায়া খেলা করে তাদের চন্দ্র মুখে। আন্টি কখন যে মিম হয়ে যায় মিম হয়ে যায় আন্টি। এই সব রহস্যময় রূপান্তর মানব চক্ষে ধরা পড়ে না। চাঁদের আলোয় কালো হয়ে যাওয়া তাল বৃক্ষ শাখায় নিশাচর পঙ্খীর ডানার শব্দ আর ঝোপের তক্ষক দুবার ডেকে উঠে সাক্ষ্য দেয় এই সব অদেখা রূপান্তর। ধীরে ধীরে শীতল হতে থাকে চন্দ্রের আলো। পাশের ডোবায় সদ্য ফোটা শাপলায় শিহরন জাগে........নীচ থেকে ভেসে আসে মায়ের আঁদুরে ডাক এখন যে এ ফর আপেল নিয়ে বসতে হবে সোনা। বিষন্ন মনে ফিরে যায় মিম আপন গৃহ কোনে। আমি কল্পনায় দেখী পৃথিবীর সমস্ত শিশুরা A ফর ANGEL হয়ে গেছে....পিঠের ব্যাগ গুলি এক একটা ঢাউস প্রজাপতি হয়ে উড়ছে । ভীতিকর বইয়ের ছবি গুলি জীবন্ত হয়ে নেচে বেড়াচ্ছে তাদের রঙিন জামায়.............|
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক সুন্দর গল্প...খুব ভালো লাগলো..শেষের দুটো বাক্য চমৎকার....
মিলন বনিক আপনার মত সুলেখক আমার লেখনী পড়েছেন তাতেই ধুতরাফুলের পরাগে আনন্দ রেণু.....
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ গল্পের শব্দ চয়ন নজর কাড়ল প্রিয়।। শুভ কামনা জানবেন।
ধুতরাফুল . প্রিয় কাজী জাহাঙ্গীর স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ সংখ্যায়২০১৭ আমার লেখা স্বাধীনতা দিবসের পত্রিকা পঠনের আমন্ত্রন রইল...ধুতরাফুল।
কাজী জাহাঙ্গীর ভাতিজি আন্টিকে ভালবাসবে এটাই স্বাভাবিক। এটা ত এশ্বরিকতা নয় গতানুগতিকতা। এমন কিছু ঘটনা আছে যা কেউ কল্পনা করেনি ঘটবে কিন্তু ঘটে গেছে তখন আমরা সেটাকে অলৌকিক বা ঐশ্বরিক বলে থাকি। আপনার বর্ণনা বেশ ভালো লেগেছে, উপমাগুলো ভালভাবেই সাজিয়েছেন। গল্প কবিতায় স্বাগতম। উত্তর উত্তর ভাল লিখুন এটাই প্রত্যাশা। অনেক শুভকামনা আর আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
প্রিয় কাজী জাহাঙ্গীর হটাৎ যদি আপনার হতে সোনার কয়েন চলে আসে কোন কারন ছাড়া সেটা অলৌকিক ঐশ্বরিক নয়। আমাদের গতানুগতিক যাপিতজীবনে যে ভালোবাসা দুঃখ,বেদনা এইসব কিছুর পিছনে মহান ঈশ্বরের সুক্ষ নিয়ন্ত্রন আছে আমরা সেটা বুঝতে পারি না .....এই আনন্দ বেদনার অনুভূতি সবই আসলে ঐশ্বরিক ....ধন্যবাদ কষ্ট করে ধুতরাফুলের গল্প পঠনের জন্য..........ধুতরাফুল।
শামীমা ইভা মীম ও আমাকে নিয়ে লেখার জন্য অভিনন্দন ধুতরাফুল....
ধুতরাফুল . ধন্যবাদ প্রিয় পাঠক.....
আহা রুবন লিখেছেন তো বেশ! মনে হয় গল্প বলার ঢঙে নতুনত্ব আনতে চেয়েছেন। কিন্তু গল্প না হয়ে কবিতার কাছাকাছি চলে গিয়েছে। তবে ভাল লেগেছে। শুভ কামনা রইল।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী আরও বড় গল্প আশা করছি কবি। দারুন লিখেছেন কবি। পুরো গল্প পড়ে খুব ভাল লাগলো। ভোট রেখে গেলাম। আমার পাতায় গুরে আসতে ভুলবেন না কিন্তু!!
ধুতরাফুল . শিশু ও রমনীর ঐশ্বরিক ভালোবাসার গল্প.......ধুতরাফুল।

১৫ ফেব্রুয়ারী - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ১৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী