প্রায়শ্চিত্ত

প্রায়শ্চিত্ত (জুন ২০১৬)

শরীফ উল্লাহ
  • 0
ছায়মাকে আমি যখন ছিনেছি। তখন আমি সম্পূর্ণ প্রাপ্ত বয়স্ক হতে পারিনি। সবে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। তখন থেকে তাকে আমার ভালো লাগতো। ছিমছাম শরীর ছিল। হেংলা অবস্থায় তাকে খুব সুন্দর দেখাতো। মামার বাড়িতে বেড়াতে গেলে ছায়মার সাথে আমার দেখা হতো। আমার মমাতো বোনের সাথে ছায়মার পুরু-পুরি বন্ধত্ব ছিল। ছায়মা আর রিয়া একই শ্রেণিতে পড়তো। সে সুবাধে ছায়মার সাথে রিয়ার সাথে ভালো সখ্য ছিল।
অল্প বয়সেই ছায়মা ফিটপাট সুন্দরের অধিকার অর্জন করেছে। শরীরের গড়ন স্মার্ট লাবন্য চিত্ত্ব সব মিলিয়ে ছায়মা সচেতন পরিবারের একমাত্র কন্যা। আমি যখন মামার বাড়িতে যেতাম তখন দেখতাম ছায়মা প্রতিদিন বিকাল বেলায় রিয়ার সাথে সময় কাটাতে আসতো। এটা তাদের নিত্য দিনের রুটিং ছিল। যেহেতু পাশাপাশি বাড়ি আর রিয়ার সাথে তার গলায় গলায় ভাব ছিল। সুতরাং এখানেই থার্ড পার্সন হিসেবে আমার প্লাস পয়েন্ট হয়েছে তাকে দেখার। তাদের সাথে আমার গল্প করার কোন সুযোগ হতো না। কারণ আমি তাদের বড়। তবে আড় চোখে দেখার স্বাধীনতা আমার ছিল। এমনিতেই লাজুক ছিলাম। কেননা ছোট থেকেই আমি লাজুক টাইপের হয়েছিলাম। কেনো জানি আমি মেয়ে মানুষ দেখলে লজ্জা পেয়ে যাই। গা শিউরে উঠে কোন সুন্দরী মেয়ে দেখলে। অথচ আমার বন্ধুরা ডজন খানেক মেয়ের সাথে ভাব ভালবাসা করে আসছে। আমার মনে হয় তারা প্রেম ভালোবাসা করে আমাকে শিক্ষা দিচ্ছে। অনেক সময়তো ইয়ার্কির চলে তারা ট্রা মেরে আমাকে টাসকি খায়ে দেয়। এতে লজ্জায় আমার মাথা নিচু হয়ে যায়।
মাঝে মাঝে সবার সাথে আমি মিশতে চাই না। যদিও গোল চক্করে পড়ে একবার মিশে যাই সেদিন তো আর আমার কোন উপায় নেই। লজ্জার জল দিয়ে সানন করে দেয় বন্ধুরা। এই জন্য বহুবার বহু মেয়ের সামনে অপমানের বোঝা বেড়িয়ে আমাকে খেশারত দিতে হয়েছে। থাক ঐসব কথা। আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলাম। মামার বাড়ি বেড়ানোর হাই স্পিডও কমে গেছে। মাঝে অনেক বছর কেটে গেছে। এক সময় ছায়মার নামটিও কখন মন থেকে মুছে গেছে। সেই টেরও পাই নি। পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টমে যখন পা রেখেছি। তখন হৃদয় জুড়ে প্রেমের হালকা বাতাস বইতে শুরু করেছে। মনে হতে লাগলো পৃথিবীটা খুব সুন্দর, তারও বেশি সুন্দর পৃথিবীর মানুষ এর চেয়ে অধিক সুন্দর মেয়েরা। যার দিকে চোখ যায় ইচ্ছে করেই তাকিয়ে থাকি। যখন কোন মেয়ে আমার চাওনি দেখে পুনরায় তাকায় তখন মাথা নিচু চাড়া আমার কোন উপায় থাকে না। বেহুলা সুন্দরী মেয়েরা এমন ভাবে তাকালে মনে হয় প্রেমে বুঝি পড়ে গেছে। কিন্তু খতিয়ে দেখলে জানা যায়। না - প্রেম পরিবেশন নয়। তিরস্কারের খোলা চিঠি প্রদান আমার দিকে। আছমকাই মরে যাওয়ার উপক্রম। বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার কোন সাহস পাই না। পাচে যদি তারা রাস্তা ঘাটে আমাকে নিয়ে তামাশা করে। তাই মনের দুঃখ মনে রেখে বড় হতে লাগলাম।
অষ্টম শ্রেণি থেকে কবিতা গল্প লেখার প্রতি ঝুঁকে পড়ি। উপন্যাস পড়ার মহড়া পড়ে যায়। পাঠ্য বইয়ের পড়া ছেড়ে দিন রাত উপন্যাস আর উপন্যাস। নাওয়া খাওয়া ঐসব করার সময় কোথায়। প্রেম শিখার পাঠ্য সূচক তো হাতের কাছে পেয়েছি। এখন শুধু আলাদিনের চেরাগের মতো ঘষা দেওয়া আর ফর ফর করে ভালবাসার ইতিহাস রচনা হয়ে যাওয়ার বাকি। এমনিতেই লজ্জার সাগরে হাবু-ডুবু খাচ্ছি। মাঝে মাঝে বন্ধুরা আমাকে নিয়ে গান রচনা করে গাইতে থাকে- হাবু রাম কাকুরে, লজ্জা কিসের লাগিরে ইনিয়ে বিনিয়ে এমন ধরনের গান যা আমার কানে আজও গুন গুন করে বাজছে।
হঠাৎ একদিন শুনতে পেলাম ছায়মা নামের কোন এক সুন্দরী আমাদের বিদ্যালয়ে পড়ছে। শুনে তো অবাক হলাম। কারণ নামটা খুব পরিচিত। তেমন মনে আনতে পারছিনা। কোথাও জেনো নামটা দৃষ্টি নন্দন দিচ্ছে। তাই খোঁজ নিতে বের হয়ে গেলাম। হায়! এমনটা হবে তা কখনো ভাবিনি। সূর্য উঠার আগেই বুঝি সব পরিষ্কার হয়ে গেল। প্রথম থেকে সব ঠিকঠাক ছিল। সে আমারি পরিচিত ছায়মা। দূর থেকে এক নজর দেখে ফেললাম। কাছাকাছি যাওয়ার সাহস করলাম না। যেহেতু নতুন করে তার সাথে আমার পরিচয় নেই। এভাবে হুট করে সামনে গেলে খারাপ জানতে পারে। এক দিকে সে রিয়ার বান্ধবী অন্য দিকে আমি রিয়ার ফুফাতো ভাই। সুতরাং একটা গোলক ধাঁধাঁয় পড়ে গেলাম।
ছায়মা তার বান্ধবী অহনার সাথে কথা বলছে। অহনাও দেখতে সুন্দর একটি মেয়ে। তবে ছায়মার তুলনায় একটু কম। বেশির ভাগ সুন্দরী মেয়েরা তার মতো রূপসী বান্ধবীর সাথে চলাফেরা করে। এক সাথে স্কুলে যাওয়া, প্রাইভেট পড়া, বসে বসে গল্প করা। বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পার্শ্বের দোতলা ভবনটির দরজা আকড়ে রেখে চায়মা কথা বলছে অহনার সাথে। আমি একটু একটু করে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিসের জন্য যাব। এমন কোন সিদ্ধান্ত নেই নি। টেনশনে পড়ে গেলাম। আমি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ছায়মা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। তাদের কাছে যাওয়ারতো কোন মানে হয় না। পায়চলা করতে লাগলাম। এদিকে ঘণ্টা পড়ারও সময় হয়ে আসছে। তাদের কাছে যাওয়া না যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম।

সত্যিই ছায়মা, ছায়মাই! যার কোন তুলনা হয় না। ছায়মাকে চন্দ্রের সাথে তুলনা করা চলবে না। জ্যোৎস্নার সাথেও না। ছায়মার তুলনা সেই নিজেই। এমন সুন্দর দেহের অধিকারী সে। রূপচর্জা আর আবিজাত্তের অহংকার করলে ছায়মাই করতে পারে। এটা তার অধিকার, একান্তই অধিকার। ছায়মাকে দেখে আমার ভেতরটা নড়ে ছড়ে উঠেছে। কিন্তু কিছুই বলতে সাহস হচ্ছে না। আমি কি তার কাছে যাবো। না- যাবনা। সে যদি কিছু মনে করে। যদি আমাকে রাবিশ বলে ঘৃণা করে। না। সে এমনটা করতে পারে না। ও ঐধরনের মেয়ে নয়। তাকে দেখলেই বুঝা যায়। সেটা কাছ থেকে হোক কিংবা দূর থেকে। এমন হাজার ধরনের প্রশ্ন মনের সাথে যুক্তি তর্ক করতে থাকে। এ মূহুর্তে মনে পড়ে গেল রিয়ার কথা। রিয়াই এর একটা সমাধান বের করে দিতে পারে। তাই একদিন ছুটে গেলাম রিয়াদের বাড়ীতে। অনেক দিন পর মামার বাড়িতে যাওয়ায় হই চই পড়ে গেছে। মামাতো ভাই বোনেরা বলতে শুরু করেছে গরিবের বাড়িতে বুঝি হাতির পা পড়েছে। আমাকে জমিদার বানিয়ে তারা উতলা ঢেউ তুলে দিল। বিকালে রিয়ার সাথে একান্ত আলপ করার সুযোগ খুজে নিলাম। কারণ রিয়ার সাথে ছোট বেলা থেকেই আমার ঘনিষ্টতা। শুধু ঘনিষ্টা নয়। আমি বড় হলেও সে এদিক দিয়ে আমার কাছে বেশি ঘনাতো। আমিও সব সময় তার কাছাকাছি থাকতাম। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিকালে রিয়ার সাথে কথা বলতে বলতে হুট করে বলে ফেললাম। রিয়া তোর কাছে যে একটা মেয়ে আসতো। সে এখন আর আসে না? কোন মেয়ে। আরে ঐ যে কি জেন নাম। মনে পড়ছে না। (আমি নাম জেনেও এই মূহুত্যে না জানার চেষ্টা করছি) তখন রিয়াই আগবাড়িয়ে বলল ছায়মার কথা বলছেন তো? হ্যাঁ। সে এখন আর তোর কাছে আসে না। আসেতো কেন কি হয়েছে। না কিছু হয়নি। ছোট বেলায় তো দেখেছি বিকাল হলে সে তোর কাছে আসতো। এখন আসে কিনা তাই বললাম। হ্যাঁ আসে। আজকেও এসেছে। তবে চলে গেছে। সে কোন শ্রেণিতে পড়ছে রে? রিয়া হাসতে হাসতে বলল। এতো খবর কি জন্যে নিচ্ছেন। না এমনিতেই বলছি। তোর বান্ধবী বলে কথা। আমার কি অধিকার নেই। তোর সাথীদের খোঁজ খবর নেওয়ার। সে অধিকার তো আপনার নেই। আমার কে কি করছে একমাত্র আমার ফ্যামিলি ছাড়া অন্য কারও খোঁজ নেওয়ার আপনার প্রয়োজন কি? তাছাড়া আমি একটা মেয়ে। মেয়েরাই মেয়েদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। আপনি একটা পুরুষ হয়ে আমার বান্ধবীর খোঁজ নিচ্ছেন। এখানে কিছু একটা লুকিয়ে আছে। সে তা ঠিক আছে। কিছু কিছু সময় এসব জানার ইচ্ছা থাকা দরকার। তাছাড়া এটা আমার মামার বাড়ি। রিয়া আবারও হাসতে হাসতে বলল মতলব কি। কোন ইস্যু টিস্যু আসে নাকি। না কোন ইস্যু নেই। ইস্যু থাকলে বলুন একটা ব্যবস্থা করি। মামার বাড়িতে এসে এমন কোন কর্মকান্ড করতে আমার ইচ্ছা নেই। তবে তুই আমাকে বলতে কোন অসুবিধা নেই যে ছায়মা এখন কোন শ্রের্ণিতে পড়ছে। সে তো সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। তবে সে কিন্তু অধিক সুন্দরী। আমি কি তাকে দেখেছি। কেন আপনি তো ছোট বেলায় তাকে দেখেছেন। সে তো অনেক আগের ঘটনা। এখন কি অবস্থায় আছে তা কি আমি জানি? সে আসলে অনেক সুন্দর। আগে থেকে অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনি দেখলে চোখ পেরাতে পারবেন না। তবে তাকে নাকি একটা ছেলে খুব বিরক্ত করছে। প্রেমের অফার করছে। সে কোন পাত্তা দেয়নি। কালকে আসলে আপনাকে তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো। তা দেখা যাবে। এখন বলুন কত দিনের জন্য এসেছেন। কতদিন মানে। আমি কি ছুটিতে এসেছি নাকি। মামার বাড়িতে বেড়াতে এলাম। না সে জন্য নয়। এখনতো আর আগের মতো আমাদের বাড়িতে আসেন না। সে জন্য বলছি। মা - যতদিন থাকবে আমিও ততদিন থাকবো। এখান থেকে স্কুলে যাওয়া আসা হবে। যেহেতু বই নিয়ে এসেছি। তা হলেতো ভালই হবে।

ছায়মার সাথে আমার বিশদ আলাপ হয়েছিল। সে খুব মিষ্টি একটা মেয়ে। সহজে মানুষের সাথে মিশে যাবে তা কখনো ভাবতে পারিনি। আগে মেয়েদের সাথে কথা বলতে লজ্জা পেতাম। ছায়মার দর্শন পেয়ে সে লজ্জা আর পেতে হয়নি। মেয়েরা যে এত সুন্দর সহজ ভাষায় ছেলেদের সাথে কথা বলে আগে আমার জানা ছিল না। ছায়মা নিজ থেকেই আমাকে তার সাথে মিশতে বলতো। তাই প্রতিদিন ছায়মা আর আমি স্কুল থেকে এক সাথে আসা যাওয়া করতাম। এক সময় বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে চলে আসলাম। ছায়মার সাথে আমার শেষ দেখা হয়েছিল এস.এস.সি পরীক্ষার শেষ দিন। সে থেকে ছায়মার সাথে আমার চলাফেরা বিছছিন্ন হয়ে গ্যাছে। মাঝে মধ্যে রিয়ার কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারতমা। তাও এখন আর হয় না। রিয়ার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর থেকে তার সাথে আর ছায়মার সাথে বেশি একটা দেখা বা কথা হয়নি। মাঝে যদি রিয়া বাবার বাড়িতে আসতো। তা হলে ছায়মার কোন খোঁজ ফেলে সে আমাকে জানাত। শোনেছি ছায়মা এখন কুমিল্লায় পড়ছে। বাড়িতে তেমন একটা আসে না। বছরে দু’একটি ঈদে যদি আসে তাহলে একদিন বা দুদিন থাকার পর চলে যায়।
ছায়ার মতো আজও ছায়মা আমার জীবনে বেঁচে আছে। কল্পনাতে তাকে আমার জীবনে এনে তার সাথে কথা বলি। এভাবে যে সম্মতি পাওয়া যায় না তা আমি জানি। অদৃর্শ্যরে হাতছানি আর বাস্তবতাকে স্বপ্নের রক্তক্ষরনে জীবন্ত রূপ দিয়ে কোন মতে বেঁচে আছি। সহজেই যে ছায়মা বদলাতে পারে কোনদিন তা মনে হয়নি। কেন জানি মনে হয় চোখের আড়াল হলে মনের আড়াল হয়। এমনটাই ঘটেছে ছায়মার জীবনে। আমিতো এখনো ছায়মাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি। তার উজ্জ্বল হাসি এখনো আমার চোখে ভেসে উঠে। জীবনটা যে কষ্টের মাঝে তিল তিল করে মরে জাবে তাতো বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।

এম এ পাস করার পর ছোট খাটো একটা অফিসিয়াল চাকুরী পেয়েছি। সময়টা তাতে ব্যয় হয়ে যাচ্ছে অফিসের পাইল তদারকি করতে করতে। এর মাঝেও কার যেন ছায়া স্বপ্নের মতো চোখের সামনে উকিঝুকি দেয়। পড়ন্ত বয়সে ভালোবাসার হাহাকার আর সয় না। বাবা মায়ের আকুতি বিয়ের বয়স প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাদের একমাত্র সন্তান আমি। আশায় বুক পেতে আছে। সন্তানটাকে সুন্দর একটা পাত্রী দেখে শুভক্ষন সময় ঠিক করে ডাক ঢোল পিটিয়ে একটা লক্ষ্মী বৌমা আনবে। ঘরে নায়নাতনি আসবে। কিন্তু তা কি সম্ভব? বাসায় গেলে মায়ের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। বাবাতো দীর্ঘদিন যাবত আমার সাথে কথায় বলছে না। আমি তাদেরকে কি করে বুঝাবো হঠাৎ কোন একদিন যদি আমার জীবনে ছায়মা এসে দাঁড়ায় তাহলে তাকে আমি কি জবাব দিবো। আমি কি তখন পারবো তার সে পুরোনো দিনগুলি ফিরিয়ে দিতে?
হান্নান সাহেব প্রায় সময় হাসি ঠাট্টা করে বলেন। ফিরোজ সাহেব এভাবে জীবনটা শেষ করে দিবেন না। সময় মতো বিয়ে করতে না পারলে ছেলে পুলের বাবা ডাক শুনতে পারবেন না। আমার কাছে একটা ভালো পাত্রী আছে। যদি সম্মতি দেন তাহলে একদিন আমি আর আপনি গিয়ে দেখে আসি। আমি বললাম কি লাভ এখন বিয়ে করে। আর কতদিনই বা বাঁচবো। কি বলেন ফিরোজ সাহেব। আমাদের বসতো শুনেছি পঞ্চাশ বছরে এসে বিয়ে করেছেন। ওনার তুলনায় আপনি এখন দশ বছর পিছিয়ে আছেন। চলুন না একদিন আমার সাথে। আপনাকে পরে জানাবো।
রিক্সায় চড়ে বসলাম। বাসায় যাব। এমন সময় ফোন বেজে উঠল। বাবা বলছেন তোর মায়ের অবস্থা বেশি ভালো না। তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আয়। মাথাটা ঘুরতে শুরু করেছে। রিক্সা থেকে নেমে একটা সিএনজি ধরলাম। ড্রাইভার কে বললাম দ্রুত চালাতে। ভাবছি আজকে মায়ের এমন অবস্থা নিশ্চয় আমার কারণে হয়েছে। বাসায় কাজ করার মতো কেউ নেই। কাজের লোক জোগাড় করতে আজকের বাজারে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সারাটা জীবন ছেলের বউয়ের মুখ দেখার জন্য অস্থির হয়ে পড়ছেন। আজ যদি মায়ের কিছু একটা হয়ে যায় তা হলে কি জবাব দেব। বৃদ্ধা বয়সে সংসারের গ্লানি টানতে টানতে অসুক বেধে ফেলেছেন। বাসায় গিয়ে দেখি এ্যা¤ু^লেন্স এসে গেছে। মাকে কয়েকজন ধরাধরি করে গাড়িতে উঠাচ্ছে। নিয়ে গেলাম কুমিল্লা সদর হাসপাতালে। ভর্তি করানো হলো ইমার্জিন্সিতে। আমি বাহিরে টেনশন করতে করতে পায়চলা করছি। ডাক্তার এসে বললেন তাড়াতাড়ি এই ঔষুধগুলো নিয়ে আসুন। বাবাকে মায়ের কাছে বসিয়ে দিয়ে বের হলাম ঔষুধের জন্য। মাথা চিনচিন করে ঘুরছে। তাড়াহুড়া করতে গিয়ে কখন যে ধাক্কা খেলাম বুঝতে পারলাম না। হঠাৎ একজন বলে উঠলো তাড়াহুড়া করবেনা ধীরে পথ চলুন। মাথা উচু করে তাকিয়ে আছি। কিছু বলতে পারছিনা। এই মুহুর্ত্যে ভেতর থেকে কোন শব্দ যেন বের হচ্ছে। যার সামনে আমি দাঁড়িয়ে আছি, সে যে ছায়মা বিশ্বাস করতে পাচ্ছি না। সে কি আমাকে চিনতে পেরেছে কিনা তাই ভাবছি। সায়মা এখানকার ডাক্তার। আগে তা জানা ছিল না। কোন দিনও সে একটি বারের জন্য আমার খোঁজ নিলো না। আমি কি করি বা কোথায় আছি। আজ এতদিন পর তার সাথে আবারও আমার দেখা। এতোদিনে সে অনেকটা পালটে গেছে। আমাকে ছিনছে না। আর ছিনার চেষ্টাও করছে না। আমি আসতে আসতে করে বাহিরের দিকে পা বাড়ালাম। ভাবলাম সে কি আমাকে ছিনেছে? হয়তো ছিনেছে, নয়তো না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
শরীফ উল্লাহ সময় নিয়ে গল্পটা শুরু করতে পারিনি। তাই বানানে ত্রুটি হয়েছে। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই। আগামীতে ভালো করার জন্য চেষ্টা করবো।
রুহুল আমীন রাজু বেশ ভাল লাগলো গল্পটি। আমার পাতায় আমন্ত্রন রইল।
কিছু বানান ভুল ছিল।আশা করি পরবর্তীতে খেয়াল রাখবেন।

০৩ মে - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী