অদৃশ্য এলিয়েন বা তরমুজ

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী (নভেম্বর ২০১৬)

জয় শর্মা (আকিঞ্চন)
  • ১১
ছোট বেলা থেকেই একটু নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করে। তবে খেলার সাথী হিসেবে ছিল সেই তরমুজ! তরমুজের সাথে আবুলের আলাপ প্রায় বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই। ঘরে ঘুমাতে বাইরে খেলতে তরমুজ ছিল তার নিত্যসঙ্গী। তবে তরমুজকে আর দশ জন দেখতে পেত না শুধু আবুল দেখতে পেত! এই নিয়ে আবুলকে কয়েকবার মানসিক ডাক্তারও দেখানো হয়েছে। তবে কোন কিছুতে কোন কিছু মিলছে না। সত্যি কী তরমুজ বলতে কেউ আছে? নাকি এসব শুধু আবুলের ভাবনা মাত্র। কিন্তু আবুল জানে সত্যি তরমুজ বলে কেউ আছে। দেখতে হয়ত আবুলের চেয়ে ভিন্ন, অনেকটা এলিয়েন এর মতো! এলিয়েন ও বলা যাই।
আবুলের ধীরে ধীরে বুদ্ধি হচ্ছে, এখন আবুলের বয়স প্রায় ১২ বছর। এলিয়েন তরমুজ একদিন হঠাৎ আবুলকে ওদের দেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলল। আরো বলল তাদের দেশ পৃথিবীর মতো এতটা সুন্দর নয়। তবু আবুলের কৌতুহল থাকলোই সে যাবে, তার বন্ধুর দেশে পাড়ি দিবেই। আবুল এ কথা কাওকে বলছেনা যদি যেতে না দেই। অশিক্ষিত আবুল, গরিব বলে পড়াশোনা টাও এখনো শুরু করেনি। তবে যথেষ্ট বুদ্ধিমান। সারাক্ষণ বন্ধু তরমুজ এর সাথে বিড়বিড় করে কী সব বলতে থাকে আবুল। সবাই এসব দেখে খুব হাসে আর বলে ঐ দেখ কাশেইম্মার পো আবুইল্লা ভূতের লগে কথা কই.........

আবুল তরমুজের সাথে রাত্রে ঘুমুচ্ছে! চোখ লেগে লেগে আসছে। বন্ধু তরমুজ আবুলকে তখনি বলল- চল আজ যাবি, আমার সাথে!? আবুলের প্রশ্নঃ কোথায়?
কেন আমাদের দেশে!
হ্যা! কিন্তু কীভাবে?
মুহূর্তে আবুল দেখতে পাই তার ঘরের পাশে একটি ইয়া বড় আকারের solanum tuberosun বা গোলআলু! এক পাশে নীল রঙের আবরণ, কিছুটা ঝলঝল করছে। কিছুক্ষণ পর ঐ ঝলঝল করা অংশটা দরজার মতো খুলে গেল। আর কিছু তরমুজের মতো দেখতে লোক বের হলো। ওরা সবাই আমাকে বলল চলো আবুল আমরা তোমাকে আমাদের দেশে নিতে এসেছি! আমিও বন্ধু তরমুজের সাথে উঠে গেলাম সেই solanum tuberosun বা গোলআলুর আকৃতির মতো ঘরটাতে। তারপর দরজা বন্ধ হলো। মুহূর্তে আবার দরজা টা খুলে গেলো, কিন্তু এবার আমি ভিন্ন কিছু দেখতে পেলাম। আমাদের পৃথিবীর মতো এইখানে তেমন কিছু নেই। শুধু রয়েছে বড় বড় কিছু, অনেকটা পিরামিড এর মতো দেখতে রঙটা আগুনের শিকার মতো লাল। আর পাশে সামান্য গভীর কিছু গর্ত, গর্তের ভিতর সবুজ রঙের কিছু আবরণ। আমি অসাবধানতার কারণে একটি গর্তে পড়ে গেলাম আর সবুজ রঙের আবরণ গুলো অনেকটা স্যাঁতস্যাঁতে কাদার মতো আমার গায় লেপ্টে গেল। কোন রকম চেষ্টা চালিয়ে গর্ত থেকে উপরে উঠে আসতেই তরমুজ গুলো আমার থেকে দূরে সরে দাঁড়ালো। আর অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। আমি তখন কিছু বুঝে উঠতে পারলাম না। অতি সাবধানতার সাথে ওরা আমাকে নিয়ে আসলো একটি ল্যাবরেটরিতে। তখনও আমার গায়ে সেই সবুজ আবরণ গুলো লেগে ছিল। তবে ওরা আমার থেকে প্রায় অনেক টা দূরত্বসীমা বজায় রাখলো। আর আমাকে একজন অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী আমার অনুভূতির কথা জিজ্ঞেস করলো।
আবুল তোমার এখন কী রকম লাগছে?
আমিও এতক্ষণ চেপে রাখা কথাটি অতি আগ্রহে বলে দিলাম- একদম দুর্গন্ধ এই আবরণ গুলো গায়ে লেগে আছে! আর আপনারা তা পরিষ্কার না করে, আমার থেকে ১৪গজ দূরে থেকে এখন জিজ্ঞেস করছেন কেমন লাগছে।
বিজ্ঞানীর আবার প্রশ্ন- শুধু দুর্গন্ধ ছাড়া আর কোন কিছুই নয়?।
আমি বললাম না।
ঠিক আছে। তুমি আমার সাথে এসো।

একটি পিতল রঙের কক্ষে প্রবেশ করলাম আমি আর সেই তরমুজ বিজ্ঞানী, তার নাম টা ঠিক জানা নেই, জিজ্ঞেস করার প্রয়োজনও মনে করলাম না। ঠিক তখন উনি আমাকে একটি যন্ত্রের উপর দাড় করালেন। কিছুক্ষণ পর আমরা ঐ পিতল ল্যাবটির থেকে ফিরে আসলাম। তখন উনি সবার উদ্দেশ্যে বল্লেন-
এই সবুজ আবরণ টি ধারণ করার ক্ষমতা আবুল রাখে। ভিতরে আবুলের আই কিউর ধারণা টা নিচ্ছিলো।
যার ফলাফল হলঃ
নামঃ আবুল।
লিঙ্গঃ পুরুষ
সেক্সP: QQQ4
IQ: 800 প্রায়।
ক্ষমতাঃ AAA এরো অধিক।
দক্ষতাঃ NM2322
সুতরাং আবুল এই সবুজ আবরণ টি অনায়াসে সহ্য করতে পারবে। এবং পৃথিবীর সব মনুষ্য এটি পারবে।
তখন এলিয়েনরা সবাই তরমুজকে/আবুলেরবন্ধুকে বলে উঠলো- তোমার কাজ তুমি দক্ষতার সাথে পালন করেছো তার জন্য ধন্যবাদ।
আবুল কিছু বুঝে উঠার আগেই বন্ধু তরমুজ ওকে বলতে লাগলো- আসলে আবুল, তোমাকে নিজ আগ্রহে এখানে নিয়ে আসাটা ছিল আমার কাজ। যদি কোন মনুষ্য নিজ আগ্রহে আমাদের দেশে আসতে ইচ্ছুক না হয় তবে কোনপ্রকার জোরাজুরি করে আনা সম্ভব নয়। তাই তোমার জন্ম হওয়ার পর থেকেই আমি তোমার সঙ্গী হিসেবে থেকেছি ২৪ঘন্টা। আর তুমি আমায় একটি নামও দিলে- "তরমুজ"। আর ঐ সবুজ আবরণ টি আসলে আমাদের এলিয়েনদের মরণ ফাঁদ। যা তোমাদের পৃথিবীর মানুষদের উপর কোনরকম আছর করে কিনা তা জানা ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। ঐ আবরণের সংস্পর্শে গেলে আমাদের এলিয়েনদের মৃত্যু অনিবার্য। যা মানুষের ক্ষেত্রে নয়, ওটা আবিষ্কার করতে আমাদের লেগেছে পৃথিবীর হিসেবে প্রায় ১৪বছর। আর যত শিগগির আমরা এই আবরণ টি সম্পর্কে জানতে পারবো। এবং আমাদের এই মরণ ফাঁদের থেকে মুক্তি পাওয়ার কৌশল।
এখন তোমাকে তোমার পৃথিবীতে পাঠানো হবে।

আবুল চোখ মুছতে মুছতে সকালে ঘুম থেকে উঠলো। আজ তার মন টা ভীষণ খারাপ! ঘুম থেকে জেগে সে তরমুজকে দেখতে পারছে না। শরীর টাও কেমন ভার ভার লাগছে। শার্ট টাও কেমন যেন ভিজে গেছে, দুর্গন্ধ টা নাকে আসছে ভীষণ।
মুহূর্তে আবুলের কালকের স্বপ্নটা মনে পড়ে। আর ভাবতে থাকে এটা কী স্বপ্ন ছিল নাকি সত্যি।
আবুল এখন অনেক বড় হয়েছে তবু এই রহস্যের কিনারা করতে পারেনি। সে এখনো ভাবে আসলে কী সেদিনের ঘটনা টা স্বপ্ন ছিল নাকি সত্যি! ভেবে আর কাজ নেই আবুল এখন অনেক ব্যস্ত মানুষ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নুরুন নাহার লিলিয়ান তরমুজ কে ভালো লেগেছে। শুভ কামনা।
কাজী জাহাঙ্গীর ভাল লিখেছেন জয় দা, তাই গোল আলুর মত একটা ভোট দিয়ে আমার গল্প পড়ার আমন্ত্রন জানালাম।
অশেষ ধন্যবাদ। আর অবশ্যই...
sakil সমাধিরঞ্জন দাদার মন্তব্যের সাথে একাত্ততা প্রকাশ করছি
দ্বিপদী ঊর্ণনাভ এখন পর্যন্ত পড়া গল্পের মধ্যে সবচেয়ে ভালো। ভোট রইল।
অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রিয়।
নুরুন নাহার লিলিয়ান বাহ! ভালো লাগলো।
অশেষ ধন্যবাদ প্রিয়।
সমাধিরঞ্জন জয়ের কাছে প্রত্যাশা অনেক। তোমার সাহসের প্রশংসা না করে থাকা যায় না। Sci fi লিখতে হলে অনেক মেহ্নত করতে হয়। দরকার প্রচুর logic আর rationalityর। এই বিষয়ে হাত দেব না ভেবেই নিয়েছিলাম। কিন্তু আমার পুত্রের এক আইডিয়া আমাকে উদ্দীপ্ত করেছিল। লেখার আগে বেশ কয়েকবার gravity, interstellar আর পড়েছি Stephen Hawking. তারপর ভাবলাম বেশি গভীরে না গিয়ে, পাঠকদের না ঠকিয়ে খুব সাধারণ মাপের গল্প লিখেই ফেলি। তোমার আইডিয়া unique. লেখা ছেড়ো না। আর আমার প্রফাইলে জন্মদিন ঠিক দেওয়া আছে। মনে হয় এরা সেই তারিখটা দর্শায় যেদিন থেকে আমি এদের সভ্য।
আপনার এই "অনন্য" মন্তব্যের প্রত্যুত্তর খুঁজে পাচ্ছি না। সাই-ফাই এ কোন দক্ষতা নেই, সেটা এই গল্প পড়েই নিশ্চয় বুঝেছেন। তবু নতুন কিছু করার একটা স্বাদ খুঁজি বলতে পারেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা স্যার।
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,ভোট রেখে গেলাম।পাতায় আমন্ত্রন
ধন্যবাদ এবং আদরে গ্রহণী "আপনার আমন্ত্রণ"।
দেবব্রত দত্ত ভাল লেগেছে। তবে আরো লিখতে হবে।
তেমন বিজ্ঞ নয় বলে...! ধন্যবাদ দাদা।

১৩ ফেব্রুয়ারী - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৩৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪