প্রেম

প্রেম (ফেব্রুয়ারী ২০১৭)

সালমা সেঁতারা
  • 0
আমাকে প্রেম সম্পর্কে কিছু লিখতে বলা হলো। যিনি লিখতে বললেন তাকে আমি হেসে বললাম, ভাই কিসব বিষয় বলেন, এ বয়সে প্রেম বিষয়ক কি কিছু লেখা যায়? তিনি হেসে বললেন, কেন যায়না? প্রেমতো মানব জীবনে একটা বিশেষ ব্যাপার।
তাই চিন্তা করলাম যে, প্রেম বিষয়ে কি লিখবো! কিন্তু কলম যখন ধরলাম তখন দেখি আদি পৃথিবী থেকে এ পর্যন্ত প্রেমের আখ্যান লেখে শেষ করা যাচ্ছে না। তাই যতটুকু জানার মধ্যে ছিল তাই উপস্থাপন করলাম। জানিনা পাঠক কীভাবে নিবেন?

প্রেম শ্বাশ্বত। এ কথা অমোঘ সত্য। এই প্রেমের মাঝে দুটি অলৌকিক বিষয় জড়িয়ে আছে। মানব মাত্রই কখনও না কখনও প্রেমকে আস্বাদন করে থাকে। এই দুটি অলোকিক শক্তি একটি হলো স্রষ্টার সৃষি রহস্য, অপরটি হলো আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রেমিক সত্বার সামান্যতম অংশবিশেষ। এই পৃথিবীর যা কিছুই মানুষ হƒদয় মন দিয়ে অনুভব করে, চাওয়াকে পেয়ে যায়, পাওয়াকে অন্তর মন দৃষ্টি দিয়ে অনুভব বা উপলব্ধী করে তার সবটুকুই প্রেম। এর মাঝেই রয়েছে অপত্য, øেহ, শুভেচ্ছা, কামনা, বাসনা ও সৌন্দর্যের পিপাসা। এ সব কিছুই মানুষকে এক রকম দারুন পিপাসায় তাড়িত করে। এই সকল চাওয়াকেই প্রেম বলে মানব হƒদয় জেনে এসেছে পৃথিবীর আদি থেকে এ পর্যন্ত। মানব জীবনের প্রধান অনুষঙ্গই হচ্ছে প্রেম। তাই ডাঃ মোহিত কামাল লিখেছেন, প্রেমের রসায়ন সম্পর্কে। হয়তো অনেকেই তার বইগুলো পড়ে থাকবেন।
আরও যদি গভীর করে প্রেমের ক্লাসিক রূপ দেখতে চাই তবে তা হলো নরনারীর প্রেম ও আল্লাহ প্রেম। আল্লাহপাক প্রেমকে পবিত্র করেছেন। প্রেম যতোই পবিত্রতা পায় ততোই প্রগাঢ় হয়ে ওঠে, আর তখনি প্রেমের ব্যাকুলতা স্রষ্টার দিকে নিজেদেরকে সমর্পন করে। পৃথিবীতে এই রকম পবিত্র প্রেমের কথা আমরা কম বেশি সকলেই জানি, যে প্রেমগুলি আজও অমর হয়ে আছে, প্রেমিক মাত্রই তা অন্ততঃ প্রেমের প্রথম পর্যায়ে গভীরভাবে অনুভব করে আসছে। সেই অন্যতম প্রেমের জুটিগুলো হলো- লাইলি মজ্নু-, শিরি ফরহাদ, ইউসুফ জুলেখা, আইয়ুব নবী ও রহীমা বিবি, নূরজাহান জাহাঙ্গীর, আনারকলি সেলিম, ( যদিও এখানে জাহাঙ্গীর ও সেলিম একই ব্যক্তি) তিনি ছিলেন মুঘল সম্রাট। নূরজাহান এসেছিলেন ইরানের “নাইশাপুর” শহর থেকে। আর যে প্রেমকে সারা পৃথিবীর মানুষ অমর

কীর্তি রূপে আজও দর্শনার্থী হয়ে দর্শন করছে, যে প্রেমের প্রতিরূপ “তাজমহল”। যে সব প্রেম ঝিমিয়ে পড়েছে সেসব প্রেমও উজ্জিবিত হয় তাজমহল দর্শনে। ভারতউপমহাদেশেই দেবদাস পার্বতির প্রেম, লীলায়িত প্রেমের যুগল রাধাকৃষ্ণ, এখনও যমুনা পুলিনে যেন বংশী বাজায়। আবার পশ্চিমে তাকাই যদি তাহলে দেখতে পাই সেকস্পীয়রের রচিত রোমিও জুলিয়েট, সীজার ক্লিওপেট্রার প্রেম কাহিনী। ট্রয় নগরী ধ্বংস হয়ে গেলো হেলেনের প্রেমে।
আবার প্রেমের রাজ্যে “পরকীয়া” একটি বিশেষণ এবং বহুল পরিচিত শব্দ। পরকীয়া প্রেমের টানে কত যুদ্ধ হয়েছে, কত রাজা মহারাজা রাজপাট ছেড়েছেন, কতজন প্রেমে দেউলিয়া হয়ে দিওয়ানা হয়ে সমাজে লোকচক্ষুর আড়ালে আবডালে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার হিসেব কে রাখে।
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রেম তো বাংলা সাহিত্যের সঙ্গীত শাখাকে নার্গীস প্রেমের পাতা পল্লবে গভীর বিরহের বেদনায় ভরে দিয়েছেন। আমাদের প্রিয় কবি তার গানের ভাষায় একবার প্রেমিক হয়ে নিজের আকুলতা জানিয়েছেন, আবার প্রেমিকা নার্গীসের হয়েও নারী হƒদয়ের কথা বলেছেন, যেমন এ গানটি- আঁচলের ফুলগুলি করুন নয়নে/ নিরাশায় চেয়ে আছে কার মুখও পানে/ মনে যেন বিধিয়াছে কার অবহেলা। আবার প্রেমের কথায় ঝগড়াও করেছেন যেমন- কার নিকুঞ্জে রাত কাটায়ে/ এলে প্রাতে পুষ্পচোর। আবার হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে তিনি একা একা বিরহের ফুল কুড়িয়েছেন। আবার নিঃশ্বেষিত জীবনের অক্ষমতার কথাও বলেছেন এই গানের ভাষায়, আমার নয়নে নয়ন রাখি/ পান করিতে চাও কোন অমিয়/ আছে- আঁখিতে উষ্ণ আঁখিজল মধুর সুধা নাহি প্রিয়গো প্রিয়।
আমাদের সকলের প্রিয় জাতিয় কবি আল্লাহ প্রেমের হাম্দ ও রাসুল প্রেমের না’তও লিখেছেন। আবার কৃষ্ণপ্রেমের কীর্তনও লিখেছেন।
উপমহাদেশের অপরাজেয় কথা শিল্পি শরতচাটুয্যের বিখ্যাত সেই সব উপন্যাসের অনন্য প্রেমিক জুটিদের কথা কেউ ভোলেনি। অভিনয়ের মাধ্যমে উত্তম-সুচিত্রা তা সুনিপুন করে বাঙালি দর্শক হƒদয়ে বেদনাবিধুর করে রেখে গেছেন। যেমন- “গৃহদাহের” অচলা মহিন। “চন্দ্রনাথের” সরযুবালা চন্দ্রনাথ, “দত্তার” বিজয়া সুরেশ, “দেবদাস” এর দেবদাস পার্বতি।
ঐতিহাসিক প্রেম, ড. মুনীর চৌধূরীর “রক্তাক্ত প্রেম” এর ইব্রাহীম কার্দি জোহরার প্রেম। বঙ্কিমচন্দ্রের “দূর্গেশনন্দিনী”র পাঠান যুবকের সাথে প্রেম, এসব প্রেম অমর!!
এতো গেল সেই সত্যিকারের অমর প্রেমের কথা। পৃথিবীতে এখনও প্রেম আছে, তবে তা স্বর্গ হতে আসেনা, এই প্রেম স্বর্গে যাবার প্রশ্নই উঠে না। এই সব প্রেম শর্তে আর স্বার্থের ঘৃন্য আরোপে ক্ষতবিক্ষত এক শরীরি বিভৎসতা!!
প্রিয় পাঠক, তাই মনে হয় এগুলির কিছু শ্রেণীবিন্যাস করা যায়-
যথা- বাদাম খাওয়া প্রেম, আইসক্রিম ফুস্কাপ্রেম, চলো যাই চাংপাই বাইরে খাই প্রেম, বাড়ী গাড়ি ব্যাংক ব্যালেন্স এর বিকচদন্ত প্রেম।এই সব প্রেমের নামে উৎপাতে প্রেম বড্ড ক্লান্ত প্রেমের ইত্যাকার দুরাবস্থা দেখে সত্যিকারের প্রেম সুনীল আকাশের ফাঁকে অসহায় চোখে তাকিয়ে কাঁদে। চেয়ে দেখে জায়ানিক স্বপ্নতাড়িত মানুষ প্রেমের কোমল সৌরভকে নর্দমার গন্ধে কেমন করে রূপান্তরিত করছে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,ভোট রেখে গেলাম ।পাতায় আমন্ত্রন রইল।
ভালো লাগেনি ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭
সেলিনা ইসলাম প্রেম বিষয়ক প্রবন্ধ বেশ লিখেছেন। লেখাটা বেশ অগোছালো। আরও কিছুটা যত্নের প্রয়োজন ছিল। বেশ কিছু উদাহরণ টেনেছেন যার কাহিনী থেকে প্রেম কতটা শক্তিশালী তা জানা যায়। তবে লেখার মাঝে প্রেম সম্পর্কে সবচেয়ে জরুরি যে কথাটা তা পেলাম না -"প্রেম হচ্ছে অনুভূতির বিষয়! প্রেম নেবার চেয়ে যেন দেবার মাঝেই বেশি আনন্দ!"এমন কিছু তথ্য যুক্ত করলে মনে হয় লেখাটা আরও বেশী পরিপক্ব হত। লিখতে থাকুন অন্যের লেখাও পড়ুন। আরও ভালো লেখা পড়ার প্রত্যাশায় শুভকামনা রইল।
ভালো লাগেনি ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

০১ ফেব্রুয়ারী - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ২০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী