ছবি

দিগন্ত (মার্চ ২০১৫)

আনিস রহমান
  • ৭৩
আমের মুকুলের ঘ্রাণ হৃদয় ছুঁয়ে যায় ৷ আউলা বাতাস আরো কত ফুলের ঘ্রাণ যে বয়ে আনে ! ধীর পায়ে হাঁটতে-হাঁটতে হঠাৎ-ই রিতা গান ধরে, "এই পথ যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হত, তুমি বলোতো!"

-- "কিন্তু পথ না ফুরালেও পথ চলা যে ফুরাবেই " , আমি নির্লিপ্তভাবে বলি ৷
--"তোমার ভেতর একটুও রোমান্স নেই", একটু কল্পনাও করতে শেখনি? --রিতার শ্লেষমাখা প্রশ্ন ৷ সে বলতে থাকে, "পথ চলা তো শেষ হবেই ৷ কিন্ত অনন্ত-যাত্রার কল্পনা এক ধরনের সুখ এনে দেয় ৷"

আমি আত্মসমর্পণের সুরে নির্লিপ্তভাবেই বলি, "মেনে নিলাম ৷"

পুকুরপাড়ে হেলান দেওয়া আমগাছটা দেখে রিতা বলে, "এই গাছে হেলান দিয়ে তুমি আমার একটা ছবি তুলবে; আর আমি তোমার একটা ছবি তুলব ৷" সেদিনের এলোমেলো বাতাস কোনো কিছুতেই আমাকে স্থির হতে দিচ্ছিল না ৷ আমি আনমনেই বলি, "ছবি তুলে কী হবে?"

এবার রিতা কিছুটা ক্ষেপে যায় আমার ওপর ৷ থেমে গিয়ে আমার চোখে ওর রাগমাখা চোখ রেখে বলে, "নয়ন, তুমি কি শুনতে পাচ্ছ আমার কথা?"

"আচ্ছা, রিতা, তুমি আমার এতটা আপন হয়ে গেছ, এটা স্বপ্ন না তো! আমার গায়ে একটু চিমটি কেটে দাও তো ৷" ও খুব জোরে চিমটি দেয় ৷ না, স্বপ্নে নয়; বাস্তবেই ওর কথা শুনতে পাচ্ছি আমি ৷ সত্যিই সে আমার আপন হয়েছে ৷

ও বলে, "এইসব ছবি আমাদের স্মৃতি হয়ে থাকবে ৷ আমাকে পাঁচবার বিয়ে করলেও এই দিনগুলো কি আর ফিরে পাবে ?" এবার আমি ছবি তোলায় মনোযোগী হই ৷

হঠাৎ রোজিনার কথা মনে পড়ে যায় ৷ আমি তখন রফিক সাহেবের একমাত্র খোকা ৷ আর রোজিনা ফরহাদ সাহেবের পরিবারে একমাত্র খুকি ৷

একসাথে কত কত দূর যে হেঁটে যেতাম! স্কুল থেকে ফিরতে দেরি হত এ কারণেই ৷

একদিন রোজিনা বলে, "আমার সাথে চলো ৷"

আমি ওর সাথে হাঁটতে থাকি ৷ কিছুদূর গিয়ে বলি, "কোথায় যাচ্ছি আমরা?"
-- "সরিষা ক্ষেতে ৷"
-- "কেন, সরিষা ক্ষেতে কেন?"
-- "ছবি তুলতে ৷"
-- "ক্যামেরা কোথায় ?" কে তুলবে ছবি?"

এতক্ষণে আমরা সরিষা ক্ষেতে পৌঁছে যাই ৷

রোজিনা বলে, "তুমি আমার ছবি তুলবে আর আমি তোমার ছবি তুলব ৷"

--"পাগল নাকি ! ক্যামেরাই তো নাই ৷"
এবার রোজিনা আমার চোখে চোখ রেখে বলে, "ক্যামেরা লাগবে না ৷ আমরা মনের ক্যামেরায় ছবি তুলব ৷ যতদিন বাঁচব, ততদিন এই ছবি দেখতে পাব ৷"

অকালে বিয়ে হওয়া এবং বাচ্চা প্রসব করতে গিয়ে অভিমান করে ওপারে চলে যাওয়া মেয়েটা বেঁচে থাকলে আজও আমার সেই ছবি দেখতে পেত কিনা জানি না ৷

পুকুরপারে আমার পাশে বসা রিতা বলে, "এরকম চুপচাপ না থেকে কিছু বল; নইলে ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দেব ৷"

আমার চোখ তখন দিগন্তের ওপারে, যেখানে রোজিনার ছবি তুলেছিলাম ৷
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
প্রিন্স ঠাকুর লাগল ভাল। শুভকামনা নিরন্তর। আমার কবিতাটি (দিগন্তের মাঝে বিন্দু) পড়ার আমন্ত্রন রইল।
আপনার জন্যও শুভকামনা রইল ৷
Noyon Hasan Sundor bornona vongi.
অশেষ ধন্যবাদ জানবেন ৷
নাজমুছ - ছায়াদাত ( সবুজ ) বেশ সুন্দর ভাল লাগলো । শুভকামনা
অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা আপনাকে ৷
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ সুন্দর গল্পটা বেশ ভাল লাগল । ভোট রেখে গেলাম ।
অনুপ্রাণিত হলাম ৷ অশেষ ধন্যবাদ ভাই ৷
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,পাতায় আমন্ত্রন রইল।
আনিস রহমান আপনাদের সমালোচনা অবশ্যই আমাকে লিখা চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে @ মনজুরুল ইসলাম ভাই ৷
মনজুরুল ইসলাম Onek valovabe sritticharon korechen.asa kori vabissote likhe jaben.

১৫ ফেব্রুয়ারী - ২০১৫ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী