কিছুটা শূণ্যতা

ফাল্গুন (ফেব্রুয়ারী ২০১৬)

মোস্তফা সোহেল
  • ২৫
খোলা আকাশ।আকাশ সব সময় কিন্তু খোলা থাকে না।আকাশ মাঝে-মাঝে ঢাকা থাকে।মেঘে ঢাকা থাকে।যখন আকাশ কাল মেঘে ঢেকে থাকে আর সেই মেঘ থেকে বৃষ্টি নামে তখন আকাশের মন খারাপ থাকে।এ জন্যই হয়তো কোন গায়ক গেয়ে উঠেছেন-আকাশের মন ভাল নেই আমাদের মন ভার নেই।সত্যি আকাশের মন খারাপ থাকলে মনটা কেমন খারাপ-খারাপ লাগে।আকাশ মুখ গুমড়া করে থাকলে মনে হয় আজ দিনটাই খারাপ যাবে।এই মূহুর্তে অবশ্য আকাশের মন খুবই ভাল মনে হচ্ছে।তবে মাঝে-মাঝে কিছু খন্ড-খন্ড সাদা মেঘ আকাশের মনটা খারাপ করার বদলে আরও বেশি ভাল করে দিচ্ছে।আকাশের মনটা বিশাল ভাল হলেও ফাহাদের মনটা আজ কিছুটা খারাপ।ফাহাদের মন খারাপের কারন আছে।যদিও অনেক সময় মানুষের মন অকারনেই খারাপ হয়।ফারহানা যখন মাঝে-মাঝে ফাহাদকে ফোনে জিজ্ঞেস করে,কেমন আছ?
ফাহাদ বলে,ভাল না।
কেন ভাল না?
মন খারাপ।
কেন মন খারাপ?
জানি না।
তখন ফারহানা বলে,আরে মন খারাপ তোমার আর তুমিই জান না কেন মন খারাপ!এটা একটা কথা হল।তখন ফাহাদ বলে,শোন ফারহানা কিছু কিছু সময় কোন কারন ছাড়াই মানুষের মন খারাপ থাকে।কিন্তু ফারহানা ফাহাদের এ কথা কিছুতেই মেনে নিতে পারে না।মোবাইলে চলে দুজনার তর্ক-বিতর্ক।এক সময় মোবাইলের চার্জ ফুরায় না হয় ব্যালেন্স।আবার কখনও নেটওয়ার্কের কারনে লাইন হয় বিচ্ছিন্ন।তবে তর্কে কখনই হারে না ফাহাদ ও ফারহানার কেউই।তবে এই তর্কের কারনে তাদের দুজনের ভালবাসায় ঘাটতিও পড়ে না কখনও।
মোবাইলে চার্জ ফুরালে শুরু হয় চার্জ দেওয়ার তোড় জোর।ব্যালেন্স ফুরালে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্লেক্সি করা।নেটওয়ার্ক গেলে নেটওয়ার্ক সিলেকশনে গিয়ে নেটওয়ার্ক আনার চেষ্টা।পরে আবার যখন দুজনের কথা শুরু হয় আগের সব তর্ক বিতর্ক ভুলে গিয়ে তখন তারা বলে,
এই লাইন কাটল কেন?
ব্যালেন্স ছিল না?
চার্জ ফুরিয়ে গিয়েছিল?
নাকি নেটওয়ার্কের সমস্যা? হবে হয়তো একটা।তবে ইদানিং নেটওয়ার্কের সমস্যাটা বেশি।আচ্ছা হারামি এই নেটওয়ার্ক।সব সময় ফুল নেটওয়ার্ক থাকতে কি হয় কে জানে।...........

আট বছর পর...

টেমস নদীর তীরে বসে আছে ফাহাদ।এই টেমস নদীর কারনে লন্ডন শহর অনেক বিখ্যাত।ফাহাদের যখন অতীত দিনের স্মৃতি গুলো বড্ড জ্বালাতন করে তখন সে এই টেমস নদীর তীরে এসে বসে।টেমসের নৈস্বর্গীয় প্রাকৃতিক দৃশ্য ফাহাদের মনে কিছুটা হলেও প্রশান্তি এনে দেয়। ফারহানা শেষ যে দিন ফাহাদের কাছে ফোন করেছিল তার পরের দিনই ফাহাদের চাচাতো ভাই ফোন করে তাকে বলেছিল,তুই তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আয় ফারহানার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।ফাহাদ খুব তাড়াতাড়িই বাড়ি ফিরে গিয়েছিল।কিন্তু ফারহানার বিয়েটা থামাতে পারেনি।ফারহানার বিয়ে হয়ে গিয়েছিল এক প্রবসী লন্ডনী ছেলের সাথে। ফারহানার স্বামীর নাম ছিল অয়ন।পরে ফারহানা তার স্বামী অয়নের সাথে ইংল্যান্ড চলে যায়।তারপর আর কোন খোঁজ জানে না ফাহাদ ফারহানার।কোন খোঁজ রাখারও চেষ্টা করেনি সে।আর খোঁজ রেখে কি লাভই বা হত।আচ্ছা মানুষ এত লাভ লসের হিসাব করে কেন।সব প্রাপ্য কি তাহলে লাভের মধ্যে।লসের মধ্যে কোন প্রাপ্য থাকে না?
কি জানি হয়তো মাঝে-মাঝে লসের মধ্যেও কিছু প্রাপ্য লুকিয়ে থাকে যেটা দেখার চোখ সবার থাকেনা।ফারহানার বিয়ের দুই বছর পর ফাহাদ ও একটা স্কলারশিপ নিয়ে চলে আসে লন্ডনে।প্রথম প্রথম ফাহাদের শুধু মনে হত লন্ডনের এই শহরের রাস্তায় কোন একদিন মুখোমুখি হবে ফারহানার। কিন্তু আজ এই আট বছরের দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ফাহাদ ফারহানাকে এক সেকেন্ডের জন্যও দেখতে পায়নি।আচ্ছা দেখা হলে কি বলত ফাহাদ ফারহানাকে।কিছুই তো বলার নেই ফাহাদের ফারহানাকে। এই আট বছরে ফাহাদের একবারও যে বাসায় যেতে ইচ্ছে করেনি তা নয়।মাঝে-মাঝে বাসায় যেতে ইচ্ছে করলেও কি এক অভিমান মনে এসে জমা হত।অভিমানটা ঠিক কার উপরে তা বলতে পারবে না ফাহাদ।তবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে অভিমানটা যে ফারহানার উপরে নয় তা অস্বীকার করতে পারবে না ফাহাদ।
আজকের দিনটা খুবই রৌদ্রজ্জকল।সারাদিন কর্ম ব্যস্ততা শেষে ফ্রেশ হয়ে ফাহাদ বেরিয়েছিল টেমস নদীর পাড়ে যাওয়ার জন্য।রাস্তায় হাটতে হাটতে ফাহাদ হঠাৎ একটা বাঙালী নারীকে দেখে।কাছে আসতেই ফাহাদ কিছুটা ভুত দেখার মত চমকে উঠে।নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বেরিয়ে যায় একটা শব্দ,ফারহানা!
ফারহানাকে দেখে ফাহাদ যে রকম চমকে উঠেছে নিজের মধ্যে যে একটা অস্বাভাবিকতার অনুভুতি উপলবদ্ধি করছে কিন্তু ফারহানাকে দেখে খুব স্বাভাবিকই মনে হল।
কেমন আছ ফাহাদ?ফারহানার কথা শুনে ফাহাদ কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
হ্যা ভাল তুমি কেমন আছ?
হ্যা ভালই আছি,তারপর লন্ডনে এলে কবে,বিয়ে শাদি করনি?শুরু হয় ফারহানার জেরা করা।ফাহাদও সুবোধ বালকের মত উত্তর দিয়ে যায়।
আজ যায় ফাহাদ অয়নের সাথে একটা পার্টিতে যেতে হবে।কথাটা বলেই হাটা শুরু করে ফারহানা।চলে যাচ্ছে ফারহানা!অথচ ফাহাদের তো কিছুই বলা হল না জানা হল না ফারহানার সম্পর্কে।ফারহানাও কেমন বদলে গেছে।কেমন আলগা আলগা একটা ভাব দেখিয়ে গেল।ফাহাদকে তার বাসায় পর্যন্ত যেতে বলল না।এই যা ঠিকানাটাও তো নেয়া হল না।ফাহাদ জানে মেয়েরা বিয়ের পরে বদলে যায়।কিন্তু এতটা বদলে যায় তা জানতে পারত না ফারহানাকে না দেখলে।
টেমস নদীর তীরে বসে ফাহাদের মনে হয় কার জন্য সে এত দিন এই প্রবাসে একা কাটালো।নিজেই নিজের জীবনের হিসাব মেলাতে পারে না ফাহাদ।না আর এক মূহুর্ত নয় এই প্রবাসে।দেশে ফিরে যেতে হবে।ফিরে যেতে হবে নিজের শেকড়ের কাছে।আর নিজের শেকড়ের কাছে ফিরে যাওয়া মানেই ফাহাদকে তার জীবনের সাথে কাউকে জড়িয়ে নিতে হবে।নিলে নিতে হবে।জীবনে নতুন কেউ এলে তার দুঃখ কষ্ট গুলোকে তো সে ভাগ করে নিতে পারবে।পাবে তো তেমন একটা জীবন সঙ্গী ফাহাদ।ফাহাদ উঠে দাড়ায় টেমস নদীর উদ্দেশ্যে সে মনে মনে বলে,বিদায় টেমস আর হয়তো কোন দিন দেখা হবে না।
ফাহাদ ঘুরে দাড়িয়ে হাটতে শুরু করে।
পেছনে তখন বয়ে চলেছে নৈস্বর্গীয় টেমস।আট বছর পর...
টেমস নদীর তীরে বসে আছে ফাহাদ।এই টেমস নদীর কারনে লন্ডন শহর অনেক বিখ্যাত।ফাহাদের যখন অতীত দিনের স্মৃতি গুলো বড্ড জ্বালাতন করে তখন সে এই টেমস নদীর তীরে এসে বসে।টেমসের নৈস্বর্গীয় প্রাকৃতিক দৃশ্য ফাহাদের মনে কিছুটা হলেও প্রশান্তি এনে দেয়। ফারহানা শেষ যে দিন ফাহাদের কাছে ফোন করেছিল তার পরের দিনই ফাহাদের চাচাতো ভাই ফোন করে তাকে বলেছিল,তুই তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আয় ফারহানার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।ফাহাদ খুব তাড়াতাড়িই বাড়ি ফিরে গিয়েছিল।কিন্তু ফারহানার বিয়েটা থামাতে পারেনি।ফারহানার বিয়ে হয়ে গিয়েছিল এক প্রবসী লন্ডনী ছেলের সাথে। ফারহানার স্বামীর নাম ছিল অয়ন।পরে ফারহানা তার স্বামী অয়নের সাথে ইংল্যান্ড চলে যায়।তারপর আর কোন খোঁজ জানে না ফাহাদ ফারহানার।কোন খোঁজ রাখারও চেষ্টা করেনি সে।আর খোঁজ রেখে কি লাভই বা হত।আচ্ছা মানুষ এত লাভ লসের হিসাব করে কেন।সব প্রাপ্য কি তাহলে লাভের মধ্যে।লসের মধ্যে কোন প্রাপ্য থাকে না?
কি জানি হয়তো মাঝে-মাঝে লসের মধ্যেও কিছু প্রাপ্য লুকিয়ে থাকে যেটা দেখার চোখ সবার থাকেনা।ফারহানার বিয়ের দুই বছর পর ফাহাদ ও একটা স্কলারশিপ নিয়ে চলে আসে লন্ডনে।প্রথম প্রথম ফাহাদের শুধু মনে হত লন্ডনের এই শহরের রাস্তায় কোন একদিন মুখোমুখি হবে ফারহানার। কিন্তু আজ এই আট বছরের দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ফাহাদ ফারহানাকে এক সেকেন্ডের জন্যও দেখতে পায়নি।আচ্ছা দেখা হলে কি বলত ফাহাদ ফারহানাকে।কিছুই তো বলার নেই ফাহাদের ফারহানাকে। এই আট বছরে ফাহাদের একবারও যে বাসায় যেতে ইচ্ছে করেনি তা নয়।মাঝে-মাঝে বাসায় যেতে ইচ্ছে করলেও কি এক অভিমান মনে এসে জমা হত।অভিমানটা ঠিক কার উপরে তা বলতে পারবে না ফাহাদ।তবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে অভিমানটা যে ফারহানার উপরে নয় তা অস্বীকার করতে পারবে না ফাহাদ।
আজকের দিনটা খুবই রৌদ্রজ্জকল।সারাদিন কর্ম ব্যস্ততা শেষে ফ্রেশ হয়ে ফাহাদ বেরিয়েছিল টেমস নদীর পাড়ে যাওয়ার জন্য।রাস্তায় হাটতে হাটতে ফাহাদ হঠাৎ একটা বাঙালী নারীকে দেখে।কাছে আসতেই ফাহাদ কিছুটা ভুত দেখার মত চমকে উঠে।নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বেরিয়ে যায় একটা শব্দ,ফারহানা!
ফারহানাকে দেখে ফাহাদ যে রকম চমকে উঠেছে নিজের মধ্যে যে একটা অস্বাভাবিকতার অনুভুতি উপলবদ্ধি করছে কিন্তু ফারহানাকে দেখে খুব স্বাভাবিকই মনে হল।
কেমন আছ ফাহাদ?ফারহানার কথা শুনে ফাহাদ কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
হ্যা ভাল তুমি কেমন আছ?
হ্যা ভালই আছি,তারপর লন্ডনে এলে কবে,বিয়ে শাদি করনি?শুরু হয় ফারহানার জেরা করা।ফাহাদও সুবোধ বালকের মত উত্তর দিয়ে যায়।
আজ যায় ফাহাদ অয়নের সাথে একটা পার্টিতে যেতে হবে।কথাটা বলেই হাটা শুরু করে ফারহানা।চলে যাচ্ছে ফারহানা!অথচ ফাহাদের তো কিছুই বলা হল না জানা হল না ফারহানার সম্পর্কে।ফারহানাও কেমন বদলে গেছে।কেমন আলগা আলগা একটা ভাব দেখিয়ে গেল।ফাহাদকে তার বাসায় পর্যন্ত যেতে বলল না।এই যা ঠিকানাটাও তো নেয়া হল না।ফাহাদ জানে মেয়েরা বিয়ের পরে বদলে যায়।কিন্তু এতটা বদলে যায় তা জানতে পারত না ফারহানাকে না দেখলে।
টেমস নদীর তীরে বসে ফাহাদের মনে হয় কার জন্য সে এত দিন এই প্রবাসে একা কাটালো।নিজেই নিজের জীবনের হিসাব মেলাতে পারে না ফাহাদ।না আর এক মূহুর্ত নয় এই প্রবাসে।দেশে ফিরে যেতে হবে।ফিরে যেতে হবে নিজের শেকড়ের কাছে।আর নিজের শেকড়ের কাছে ফিরে যাওয়া মানেই ফাহাদকে তার জীবনের সাথে কাউকে জড়িয়ে নিতে হবে।নিলে নিতে হবে।জীবনে নতুন কেউ এলে তার দুঃখ কষ্ট গুলোকে তো সে ভাগ করে নিতে পারবে।পাবে তো তেমন একটা জীবন সঙ্গী ফাহাদ।ফাহাদ উঠে দাড়ায় টেমস নদীর উদ্দেশ্যে সে মনে মনে বলে,বিদায় টেমস আর হয়তো কোন দিন দেখা হবে না।
ফাহাদ ঘুরে দাড়িয়ে হাটতে শুরু করে।
পেছনে তখন বয়ে চলেছে নৈস্বর্গীয় টেমস।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফয়েজ উল্লাহ রবি বেশ ভাল লিখেছেন, শুভেচ্ছা জানবেন। ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ভালো লাগেনি ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬
বিটপী দারুণ
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

২৪ নভেম্বর - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ২৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী