ঈশ্বর দর্শন

শুন্যতা (অক্টোবর ২০১৩)

রনীল N/A UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL#
  • ১১
  • ২৬

ডান হাতে একটি লন্ঠন আর বাঁহাতে একখানা লাঠি। লাঠির অগ্রভাগে লোহার নাল লাগানো। সাঁওতালগঞ্জ পার হবার পরপরই চটিখানা ছিঁড়ে গেছে। আগুন্তুক অবশ্য তাতে ভ্রুক্ষেপ করেননি।
জীর্ণ চটিজোড়া পথের পাশে রেখে অতঃপর তিনি নগ্নপদেই হাঁটা শুরু করেছিলেন।
সাঁওতালগঞ্জ যখন পার হচ্ছিলেন, তখন প্রায় সন্ধ্যা। গ্রামবাসী বলেছিল এরপর ধলেশ্বরী পার হয়ে আরো বিশ পঁচিশ মাইল পূবে গেলেই কাদাগোলা গ্রাম।
ধলেশ্বরী পার হয়ে আগুন্তুক প্রায় সাত ঘণ্টার মত পূবে হেঁটেছেন, গ্রামের কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছেনা।
থিকথিকে অমাবস্যা পুরো চাঁদটাকেই গিলে খেয়েছে। আগুন্তুক লন্ঠনের আগুন খানিকটা উস্কে দেন। ইদানীং রাত্রিবেলা পথ চলতে বেশ সমস্যা হচ্ছে, খুব সম্ভবত রাতকানার প্রকোপ। সময় খুব দ্রুতই ফুরিয়ে গেল, করা হলনা কিছুই।
মধ্যরাতের দিকে আগুন্তুকের মনে হল তিনি সরু কিছিমের একটি রাস্তা দেখতে পেয়েছেন। আরো কিছুদূর যেতেই তিনি রাস্তার মাথায় ভাঙ্গাচোরা সাঁকোটি আবিষ্কার করলেন।
সারা শরীর ঘামে ভিজে জবজব করছে, নতুন কোন গ্রামে প্রবেশ করার জন্য সময়টা মোটেই উপযুক্ত নয়। কিন্তু আগুন্তুকের আর কোন উপায় নেই।
দুদিনের মধ্যেই তাকে কলকাতায় ফিরে যেতে হবে। সেখানে এক প্রবাসী নওয়াবের সাথে তার জরুরী বৈঠকে বসার কথা।
হাওয়া হঠাৎ থেমে গেছে। আগুন্তুক সামনে পা বাড়াতেই কাঁদায় গোড়ালি পর্যন্ত ডেবে গেল। খাটি এঁটেল মাটি। লাঠিতে ভর দিয়ে কোনমতে পা তুলতেই অপর পা’খানি পকাৎ শব্দে একেবারে হাঁটু পর্যন্ত গেঁড়ে গেল।
প্রবেশ পথেই গ্রামের নামকরণের সার্থকতাটি টের পাওয়া যাচ্ছে। আগুন্তুক কিছুক্ষণ সেখানটাতে দাড়িয়ে উর্ধপানে চেয়ে রইলেন। মর্ত্যর তরল আঁধার সেখানটাতেও ছড়িয়ে গেছে। চাপা পড়ে গেছে বিস্ময়কর সব নক্ষত্ররাজি। আগুন্তুক উৎসুকভাবে আরো কিছুক্ষণ সেদিকে চেয়ে রইলেন। আঁধার ফুঁড়ে কেউ সেখানে উঁকি দিলোনা। আগুন্তুক অতঃপর বিমর্ষভঙ্গীতে পা বাড়ালেন, যেন আকাশ থেকে তার কোন গোপন সঙ্কেত পাবার কথা ছিল ...


সাঁকো পার হইয়া বাঁশবন ধরিয়া কিছুদূর আগাইতেই আগুন্তুক সচকিত হইলেন। রাতবিরেতে ঘোরাঘুরি করিতে করিতে তাঁহার ষষ্ঠইন্দ্রিয়টি বেশ প্রখর হইয়া গিয়াছে।
পশ্চাতে দুখানি ছায়ামূর্তি পিছু নিয়াছে বুঝিয়াও তিনি গতি কমাইলেননা। কিছুদূর যাইতেই আরো দুইজন সামনে আসিয়া সটান দাঁড়াইয়া পড়িল। পেছনের দুইজনের ন্যায় ইহাদের অবশ্য লুকোছাপার কোন বাসনা প্রত্যক্ষ করা যাইতেছেনা।
- কে রে তুই? এতো রাত্রে গাঁয়ে ঢুকিতেছিস, তোর মতলবটা কি?
আগুন্তুক স্থির চোখে কিছুক্ষণ প্রশ্নকর্তার দিকে চাহিয়া রইলো, জবাব দিলনা।
আগুন্তুকের উদ্ধত শিরের ভঙ্গিটি দেখিয়া দ্বিতীয় ব্যক্তিটির ধৈর্যচ্যুতি ঘটিল। অসহিষ্ণুভাবে আগাইয়া আসিয়া সে একেবারে আগুন্তুকের থ্যাবড়া নাসিকাটির অগ্রভাগে স্বীয় নাসিকাটি ঠেকাইয়া দিল।
- কিরে ব্যাটা? তুই কি কানে কম শুনিতে পাস, নাকি তোর আদব লেহাজ কম! প্রশ্ন করিয়াছে সে তুই শুনিতে পাস নাই?
আগুন্তুক এইবারও নিরুত্তর, মুখখানা হতাশায় মাখামাখি। আসার পথে সাঁওতালগঞ্জের বাজারে এক মুদীকে কাদাগোলা গ্রামের হদিস জিজ্ঞাসা করতেই সরলপ্রাণ সেই মুদীটি ভীষণ চমকাইয়া উঠিয়াছিল।
ডাকাতের গ্রাম বলিয়া কাদাগোলা গ্রামের কুখ্যাতি দেশ ছাড়িয়া বিদেশেও ছড়াইয়াছে। এই গ্রামের পুরুষরা দস্যুপনা ছাড়া আর কোন জীবিকায় প্রবৃত্ত হয়না। তিনপুরুষ ধরে এখানকার লোকজন কেবল পরধন লুটিয়া তবেই জীবিকার সংস্থান করিয়াছে।
এমন নয় যে আগুন্তুক লোকটি নিজেও এই প্রসঙ্গে একেবারেই অজ্ঞ ছিলেন। যাত্রা শুরুর পূর্বে পরিবার পরিজন এবং যাত্রাপথে নানান শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁহাকে বারবার নিবৃত্ত করিতে চাহিয়াছিল। তথাপি আমাদের এই গোঁয়ার গোবিন্দ প্রকৃতির আগুন্তুকটি কারুর কথায় কর্ণপাত করার প্রয়োজন অনুভব করেননি। যে কারনে আজ শেষ বেলায় আসিয়া ঠেকিয়া অতঃপর তাঁহাকে শিক্ষা গ্রহণ করিতে হইতেছে।
- এই হারামি, মুখ খুলবি? নাকি দিব মাথায় এক ঘা!
আগুন্তুক স্থির দাঁড়াইয়া দ্রুত চিন্তাভাবনা করিয়া লইলেন। সামনে পেছনে দাঁড়ানো চার দস্যুর প্রতিটিই ভীষণ রকম রোগা পটকা। লোহার নাল বসানো দণ্ডখানি দিয়া উপুর্যপুরি কখানা ঘা দিলেই এরা বাপ বাপ কহিয়া পালাইবে। আগুন্তুক তথাপি স্থির দাঁড়াইয়া রইলেন। কেন জানি তাঁহার মনে হইতেছে ইহাদের বাহিরেও আরো কেহ আছে।
অতপর অন্ধকার ছেদিয়া পঞ্চম ব্যক্তি তথা দলপ্রধানটির আবির্ভাব ঘটিল দৃশ্যপটে। দেশলাইয়ের আলোয় নেতাটি আগুন্তুকের মুখখানা একবার নিরীক্ষা করিয়া লইলো।
- হারামজাদারা যত মূর্খের দল। তোরাতো সব কুয়ার ব্যাঙ, মানী লোকের মান তোরা কি বুঝবি! এযে কোন হেঁজিপেঁজি লোক নন, এ হলেন গোটা দেশের গর্ব- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। চিনিস এঁকে! নাম শুনিয়াছিস কখনো!
দস্যুদলের বাকি সদস্যদের মুখে কোন ভাবান্তর হয়না। কুয়ার ব্যাঙের সাথে ইহাদের তুলনা করিয়া দলনেতাটি প্রকৃতই কোন ভুল করেননি। এমন অজপাড়াগাঁয়ে ও লোকজন তাঁহাকে চিনিতে শুরু করিয়াছে দেখিয়া বিদ্যাসাগর নিজেও খুব বেশী আপ্লুত হইলেননা।
লন্ঠনের ম্লান আলোয় তিনিও দস্যুদলের নেতাটিকে এক পলক দেখিয়া লইলেন। উচ্চতা ছ’ফুটের বেশি, সাস্থ্য ও বাড়াবাড়ি রকমের ভালো। বাম হাতে বিশাল শাবলখানা অনেকটা খেলাচ্ছলেই নাচাইতাছে।
বিদ্যাসাগরের গড়নের পাঁচজন পুরুষ একে ঠেলিয়া বিন্দুমাত্র স্থানচ্যুত করিতে পারিবেনা।
- এই নির্বোধগুলোর বেয়াদবি ক্ষমা করিবেন মশাই। সেই সাথে আমিও ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি। ডাকাতের দেশে আসিয়া পড়েছেন, আমরা সব ডাকাত। ডাকাতি করিয়া তবেই আমাদের অন্নসংস্থান হয়। আপনার কোমরের ওই ট্যাঁকে কত টাকা আছে?
বিদ্যাসাগর ভালমতন নেতাটির চেহারা আরেকবার নিরীক্ষা করিয়া লইলেন। জমাট চোয়াল, চোখে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। হাতের শাবলখানার সহিত ঠোকাঠুকি হইলে তাহার লাথিখানা মুহূর্তেই চূর্ণবিচূর্ণ হইয়া যাইবে।
টাকা কাড়িয়া না লওয়া পর্যন্ত এই দস্যুটি কিছুতেই থামিবেনা। বিদ্যাসাগর তথাপি অভ্যাসবশত ডানহাতে কোমরে বাঁধা ট্যাঁকখানি শক্তমুঠিতে চাপিয়ে ধরে রাখিলেন।


এর প্রায় কিছুক্ষণের মধ্যেই পূর্বের সুপারি বাগানটির ঠিক পেছনেই দুর্ধষ এক তরুণ যোদ্ধার আত্মপ্রকাশ ঘটিল। তবে দস্যুদলটি নয়, তরুণ যোদ্ধা যুদ্ধ ঘোষণা করিল আঁধার রাত্রির বিরুদ্ধে।
তরুণ যোদ্ধার আবির্ভাবের কথা শুনে এক দঙ্গল হাঁসের ছানা কোথা থেকে যেন বাহির হইয়া আসিল।
বাঁশঝাড়ের সীমানাটুকু পার হইয়া হাঁসের ছানার দলটি ভীষণ উৎসাহে ঝিলের জলে লাফাইয়া পড়িল। অদূরে একটি পাকুড় গাছের নিচে বিদ্যাসাগর নির্বাক বসিয়াছিলেন। হাঁসের ছানার জলকেলি দেখিয়া তাঁহার কোন ভাবান্তর হইলনা। টানা দুইদিন দুই রাত তিনি নির্ঘুম কাটাইয়াছেন।
গতরাতে দস্যুনেতাটি তাহাকে ফিরিয়া যাইবার জন্য শাসাইয়াছিল। বিদ্যাসাগর ফিরিয়া যাননি। নীতিবাগীশ বিদ্যাসাগর কখনো নিজ দায়িত্বে অবহেলা করেননা। এখানে তিনি মূলত আসিয়াছিলেন একজনের আমানত বুঝাইয়া দিতে। সেটি যখন হইলনা, তখন বিদ্যাসাগর উপলব্ধি করিলেন আমানত খুইয়ে ফেলার কারনে ওই ব্যক্তিটির কাছে তাঁহার ক্ষমাপ্রার্থনা আবশ্যক হইয়া দাঁড়াইয়াছে। অতঃপর তিনি ফিরিয়া না গিয়া সকাল পর্যন্ত অপেক্ষার সিদ্ধান্ত লইলেন। ঘন্টাখানেক সময় অপেক্ষা করিয়া অবশেষে বিদ্যাসাগর তাঁহার সেই উত্তমর্ণ ব্যক্তিটির সন্ধান পাইলেন। চার বছরের সেই ক্ষুদ্র পাওনাদারটি তখন সাঁকোটির পাশে দাঁড়াইয়া কেবলমাত্র তাহার সমগ্র দিনব্যাপি ক্রীড়া বিষয়ক পরিকল্পনাটি শুরু করিয়াছিল।
সারারাত অভুক্ত থাকিয়া উন্মাদ সদৃশ বিদ্যাসাগর অবশেষে ক্লান্তভাবে উঠিয়া দাঁড়াইলেন, গুটি গুটি পায়ে তিনি চিন্তাক্লিষ্ট সেই শিশুটির সন্মুখে নত হইলেন।
- বাপধন, আমি মূলত তোর জন্য স্কুল বানানোর জন্য অর্থ লইয়া আসিয়াছিলাম, সে অর্থ লুণ্ঠিত হইয়া গেছে। আমি লজ্জিত, ক্ষমাপ্রার্থী। তোকে আমি কথা দিচ্ছি নতুন করিয়া আবার অর্থ সংস্থান করিয়া আমি আবার ফিরিয়া আসিব। ততদিন পর্যন্ত বাপধন নিজেকে সামলে সুমলে রাখিস, তোর বাপ-কাকাদের সাথে মেশামেশি করিয়া আবার ডাকাত হইয়া যাসনে।
দেনাদার অর্থদানে অপারগ হইয়াছে শুনিয়া পাওনাদারটির খুব একটা ভাবান্তর হইলনা। এর চাইতে অনেক জরুরি বিষয়াদি লইয়া তাহাকে মাথা ঘামাইতে হয়।
হাঁসের ছানার দলটি হঠাৎ দৃষ্টিগোচর হইতেই শিশুটি উশখুশ করিতে লাগিল, নতমুখী বিদ্যাসাগরকে পাশ কাটাইয়া সে অতপর ব্যস্তভাবে সেদিকেই ছুটিয়া গেল।
---
সেদিন অপরাহ্ণের আহার সারাইয়া সাঁওতালগঞ্জের সেই মুদীটি দোকানের ভেতরেই ভাতঘুমের ব্যবস্থা করিতেছিল। এমন সময় ভিখিরির মত তার দরজায় আসিয়া দাঁড়াইল গতকালের সে বাবুটি। চোখ দুটো টকটকে লাল, নগ্ন ডান পা’খানি ফুলিয়া ঢোল। খুব সম্ভবত তাহাতে কাঁটা ফুটিয়াছে ...
করুন ভঙ্গিতে চৌকাট আঁকড়াইয়া বাবুটি কোনমতে বলিল- ভাইরে একগ্লাস জল খাওয়াইতে পারো কি?
ধর্মভীরু সেই মুসলিম দোকানীটি ব্যস্ত সমস্ত হইয়া ছুটিয়া গেল পানির ব্যবস্থা করতে। ক্লান্ত মৃতপ্রায় বিদ্যাসাগর দোকানের দাওয়াটিতে পা ছড়াইয়া বসিয়া রইলেন।
নতুন করে অর্থ সংস্থান করতে আবার কদিন লাগবে কে জানে! ততদিনে শিশুগুলো বখিয়া না গেলেই হয়।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক রনীল ভাই...আপনার নীললোহিতের চিঠি, ইশ্বর দর্শন গল্পগুলো পড়ে সুনীলের প্রথম আলো পড়ার মত এক অমিয় আনন্দ পাচ্ছি...একটা ইতিহাসকে সামনে বসিয়ে নিটোল বর্ণনায় বর্তমানের ছবি আঁকার মত দুরহ কাজটা আপনার হাতে ভালোই ফুটে উঠে...খুব খুব ভালো লাগলো...
বিদিশা চট্টপাধ্যায় এক কথায় অসাধারন হয়েছে...পরে মুগ্ধ হলাম ...তবে অই ভাষাটা পুরপুরি সাধু ভাষা হলে বোধহয় সবচেয়ে ভাল হত।
তানি হক রনি ভাই ...বশির ভাইয়ের মতামতের উত্তর দেখে নিজের ভুল ভাঙল... না হয় আমিও এই কথাই বুঝতেছিলাম যে হয়ত পুরো গল্পটাই সত্য ... অবশ্য সত্যি তো আছেই কিছুটা তা তো আপনি বলেই দিলেন ।। খুব ভালো লেগেছে গল্পটা মুগ্ধ হয়ে পড়ছিলাম ।। আসলে এই সভ্যতা এই সুন্দর সমাজ সুন্দর জীবন ... কখনই কি এ শুধু নিজের প্রচেষ্টা তে হয় ? আমাদের সবার মাঝেই একজন মহান মানুষের অবদান তার ছায়া থাকেই ।। যুগে যুগে বিদ্যাসাগর মশাইদের মহান হৃদয় আমাদের জীবনকে উদ্ভাসিত করেছে ... এবং এখনো করছে ।। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শিক্ষানিয় ও হৃদয় ছোঁয়া গল্পটির জন্য । ভালো থাকবেন ভাইয়া
বশির আহমেদ গল্প পড়লাম না বিদ্যা সাগর মহাশয়ের স্বরচিত জীবনী পড়লাম বুঝতে পারলাম না । একটা ঘোরের মধ্যে পাঠ শেষ করে বুঝলাম রনীলের একট জটিল গল্পে ঢুকে পড়েছিলাম । বিদ্যা সাগর বেচে থাকলে তাকে নিয়েএমন বাস্তব গল্প বর্ননা পড়ে অবাক হয়ে যেতেন । বাকী ঘটনা জানার জন্য উৎসুক হয়ে অপেক্ষায় থাকলাম ।
ধন্যবাদ বশীর ভাই। সুনীলের কোন একটা উপন্যাসে পড়েছিলাম যে বিদ্যাসাগর মশাই সারারাত পায়ে হেঁটে পরদিন সকালে যে গ্রামে গিয়ে পৌঁছতেন, সেখানে একটা স্কুল স্থাপন করে দিতেন। আইডিয়াটা আমার খুব ভালো লেগেছিল। আমরা তো স্বার্থপর মানুষ। স্বার্থ ছাড়া এক পা ও নড়তে চাইনা। অথচ এই লোকটি কোন কিছুর প্রত্যাশা না করেই সারারাত পায়ে হেঁটেছেন, স্রেফ মানুষের জন্য। এই ব্যাপারটি আমাকে খুব মুগ্ধ করেছে। এই থিমের উপরেই গল্পটা লিখেছি। পুরোটাই কাল্পনিক। এর পর তাই বাকি ঘটনাটা আপনাকে জানাতে পারছিনা।
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন আরো যেন কিছু একটু হলে মনটা ভরতো- হাসি নাকি দীর্ঘশ্বাস কোনটা বেশী ঠিক...। চমতকার, খুব ভাল লেগেছে। শুভেচ্ছা রইল।
সূর্য একটা চরিত্রকে পরিচ্ছন্ন ফুটিয়ে তুলতে যতটা যা করার দরকার তাই করেছ। বিদ্যাসাগর যে শুধু নিজের জন্য নয় যে তার সব কিছু কেড়ে নেয় তাকেও বিদ্যান করে তুলতে ইচ্ছুক ছিলেন আর তার ত্যাগ স্বীকার সবই খুব সুন্দর করেই গল্পে ফুটে উঠেছে। প্রথম পরিচ্ছদ শেষে দ্বিতীয়টা পড়ার শুরুতেই একটু হোচট খেয়েছি। ব্যাপার কী সেই পুরনো সময় আর ইশ্বর চন্দ্র তোমার উপর ভর করেনি তো (মানে ইশ্বরচন্দ্রের ডিটারমাইন্ড ভাবটায় লেখক ডুবে গেলে বা নিজেকে বিলীন করে দিলে যা হবে আর কী...) অনেক ভালো লিখেছ রনীল।
বিদ্যাসাগর যদি আমার উপরে ভর করতেন- তবে তার মত গর্বের বিষয় আর কি হতে পারতো। ব্যক্তিগত ভাবে আমি বিদ্যসাগর মশাইয়ের ভীষণ অনুরাগী। মানুষের ভালো করার অভিপ্রায়ে তিনি যেভাবে খেটেছেন সেটি এ যুগে অবিশ্বাস্য শোনায়। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ (ভালো কথা- সেদিন মাছের ছবি দেখে চোখে পানি চলে আসলো। এইটা অমানবিক। দাওয়াত যদি না দেন, তবে কেন অহেতুক এই চকচকা মাছের ছবি দেখায়া কষ্ট দেন!)
Lutful Bari Panna ঐতিহাসিক এই অসাধারণ চরিত্রটি নিয়ে আপাতত মন্তব্য করছিনা। সাধু চলিতের এই এক্সপেরিমেন্টে আমি নিজেও এক সময় করেছিলাম। তবে আমার মনে হচ্ছে পুরোটা চলিত হলে ভালই লাগত বোধ হয়। বিশেষত একই বাক্যে সাধু চলিতের মিশ্রণ অনভ্যাসবশত হলেও কানে লাগছে। স্টিল এটা পর্যবেক্ষণে রইল। আর গল্পটা দুর্দান্ত, জানিনা সত্যি ঘটনা না লেখকের কল্পনা।
ফেসবুকে আপনাকে একটা বার্তা পাঠিয়েছি, সময় পেলে একটু দেখেবেন দাদা। আর গল্পটা পুরোই আমার কল্পনা। বিদ্যাসাগর মশাই রাত বিরেতে এরকম নতুন নতুন গ্রামের উদ্যেসে রনা দিতেন- এই তথ্যটির উপর ই গল্পটি লিখেছি।
জাকিয়া জেসমিন যূথী ঘুম চোখে পাঠ করেই সোজা প্রিয়তে নিয়েছি। তবে, দিনের বেলা আরেকবার পড়তে হবে। এত ভালো কি ভাবে যে লিখেন সত্যি বুঝিনা।
এটাকেই বলা হয় প্রায়োরিটি অয়াইজ কাজ করা। আগে সবভালো গল্প পড়ে তারপর একটু টায়ার্ড হলে রিলেটিভ্লি দুরবল লেখাগুলা পড়া :(
মোটেই না। আমি বলেছি, গল্পটা আমি পরেছি। পুনরায় পড়তে হবে, এইজন্যে যে গল্পটা আনকমন। আর ভালো।
এশরার লতিফ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সুকঠিন নীতিবোধ এবং একাগ্রতা এই গল্পে সার্থকভাবে ফুটেছে। সাধু এবং চলিত ভাষা ভিন্ন ভিন্ন প্যারায় এসে প্রকাশের বৈচিত্র্য এনেছে। শব্দ, ভাষা আর আবহ মিলিয়ে খুব ভাল লাগলো।
লতিফদা, গল্পে আপনাকে পাওয়া মানে সবসময়ই বিশেষ কিছু। অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকি, ফ্রি হলে আবার নিয়মিত হব গল্প কবিতাতে।

০৪ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪