তিনি শুদ্র...অচ্ছৎ?

অবহেলা (এপ্রিল ২০১৭)

আল মামুন খান UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL#
  • ১১
  • ১৯
এক শুদ্র কিছু কিছু লিখতে শিখেছিলো। অবিরাম লিখেই যেতো সে। তবে জাতে সব থেকে নিচু হওয়াতে উঁচুতলার মানুষেরা তার লিখা পড়ত ও না, কোথাও ছাপতোও না।

একদিন চলার পথে এক ব্রাহ্মণ লেখককে ভুলবশত ছুঁয়ে দেয় শুদ্র। তাকে চিনতে পেরে ছিটকে সরে যায় ব্রাহ্মণ!
' একি ঘোর অনাচার, ওহে পাপিষ্ঠা দুরাচার! ছুঁয়ে দিলি আমায়, নির্বোধ কোথাকার?'

সত্যিই শুদ্র লেখক নির্বোধ হয়ে যায়। তখন এক ক্ষত্রিয় লেখক কোথা থেকে ছুটে আসে। মহাত্মন কে লক্ষ্য করে বলে,
- এরা যে সব আবর্জনা তৈরী করছে, সেগুলো নিয়ে আবার শিল্পকর্মের নামে ওদের যে আত্মবিলাস, এইসব ঢং দেখে বড্ড বিতৃষ্ণা জাগে আজকাল।

ব্রাহ্মণ চুপ থেকে বিড়বিড় করে কিছু একটা জপতে থাকেন। হয়তো ছোট জাতের লেখকের ছুঁয়ে দেয়ায় সৃষ্ট অশুচি ঝেড়ে ফেলে দেহের শুদ্ধিকরণের কোনো মন্ত্র পড়েন। কিন্তু মনের ভেতরের এই যে ছুঁয়ে দেয়ায় দৈহিক শুদ্ধতা আনতে উদ্যোগী হওয়া, দলিত লেখকের কাছে ব্যাপারটা যেন এমন লাগে, একটা সাবান গ্রাম্য কাঁচা টাট্টিখানায় পড়ে গেলে আরেকটা সাবান দিয়ে সেটা পরিষ্কারের মতই লাগে।

শুদ্র হেসে ফেলে। একটু বুঝি জোর হয়েছিল শব্দে। তাই ক্ষত্রিয় লেখক তেড়ে আসে.. যেন চড়াও হতে চায়, দলিতকে দলিত- মথিত করে দেবে এমন ভাব। নিজের চেয়ে উঁচু জাতের মানুষকে প্রকাশ করে ওর মনের অনুভব উদ্ধত নিচু জাতের মানুষটিকে দেখিয়ে,
- দেখলেন তো? বলেছিলাম না আবর্জনা। নিজের নিচুতাকে আড়াল করতেই এই লিখালিখির বাহানা।

মুহুর্তে ভগবান প্রকট হন.. কোথায় যেন শংখ ধ্বনি বেজে ওঠে.. বিশ্বচরাচর এক অরোরা জোতির্ময় আলোকপ্রভায় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে.. শব্দের ক্ষীণতম সুর লহরিটিও দূর নিহারিকা থেকে পলকে জড়ো হয়..বেজে ওঠে সহস্রকন্ঠে-
" ওম! নম: শিবা!!"

তিনজন লেখকই মাটিতে নত হয়ে সম্মান জানায়। তারা তিনজনই যার যার কানের বদলে দেহের প্রতিটি রোমকুপ দিয়ে শিবের কথা শুনতে পায়-
' আমি জাত বানাই নাই, মানুষ বানিয়েছি। মানুষ মনুষ্যত্ব ভুলে জাত বানিয়ে অমানুষ তৈরী করেছে। ওহে উঁচু জাতের লেখক! জনমভর এই শুদ্রের জীবন কাহিনী লিখে লিখে তুমি উচ্চশিরের অধিকারী- আর আজ ওর ছুঁয়ে দেয়ায় তোমার জাত গেল মনে হচ্ছে!?
আর আবর্জনা কাকে বলছ তুমি মধ্যম জাতের দু'কুল হারা ক্ষত্রিয়? ওদের তো তবু নির্দিষ্ট জাত আছে,প্যাচ লাগিয়ে তুমিই বা কেন কুজাতে পরিণত হতে চাইছ?

শিবের কথায় দুজন উচ্চবর্ণের লেখক নিজেদের কালো মনের ভেতর দিয়ে সৃষ্ট আলোর ঝলকের আসল উপলব্ধিতে বিলীন হয়ে চলে.. ওদের উঁচু নাক মাটিতে মিশে যেতে যেতে অনুশোচনায় তাদের হৃদয়কে দগ্ধ করে!
নিচু লেখক আরো নিচু হয়.. তবে ওর ক্ষুদ্র নাকে মাটি স্পর্শ করে না.. তবুও মাটি খুশী হয়.. ভালোবাসা আত্মসমর্পনের মোড়কে ছুঁয়ে ছুঁয়ে তার হৃদয়কে প্রসারিত করেই চলে।
একসময় সারা জগতকে বেষ্টন করে নিজের ক্ষুদ্র হৃদয়ে এসে পথ খুঁজে পায়.. আলোর ঝলকে গোপন প্রত্যাদেশে মোক্ষ লাভ? সে আলো হয়.. আলো বিলাতে আবারো পথে নামে।

প্রথম সকালের শেষ রৌদ্রকিরণ ইতোমধ্যে বিদায় নিয়েছে.. দ্বিতীয় কিরণের আগমনী বার্তার আগের সময়টুকুতে সব কেমন চুপচাপ..
নিশ্চুপ
চারিধার
একদিন
প্রতিদিন!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
SWADESH KUMAR GAYEN খুব ভালো লাগলো। আরও লেখা পড়ার আশায় রইলাম। আমার ব্লগ পড়ার আমন্ত্রন রইলো।www.golpoporuya.in
রুহুল আমীন রাজু alpo kothay anek kico ...darun laglo.
Fahmida Bari Bipu আমার খুব ভাল লাগলো আপনার লেখাটি। একেবারেই অন্যরকম একটি ভাবনা। নতুনত্বের আস্বাদ পেলাম। অনেক শুভকামনা।
মিলন বনিক বাহ! চমৎকার চিন্তাশক্তি...খুব ভালো লাগলো..শুভকামনা মামুন ভাই...
আহা রুবন মোটামুটি লাগল। শুভ কামনা জানবেন।
মোঃমোকারম হোসেন গল্পটা ভালো লাগলো ভোট রেখে গেলাম আমার পাতায় আসন্ত্রণ রইলো।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী গল্পটা অনেক মজার। একটু খানি হেসেও নিলাম। ভালো লাগলো। ভোট দিলাম। আমার পাতায় আমন্ত্রণ রইলো।
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) Shundor message kintu thik jeno chhoto golper chomok ta pelam na. Vote roilo.
ধন্যবাদ। হ্যা, সামনে থেকে চমক দেবার চেষ্টা থাকবে।
কাজী জাহাঙ্গীর বেশ হাই-থট এর গল্প দিলেন মামুন ভাই,মানুষে মানুষে জাত পাতের অবহেলা অনাচারে পুতিদুর্গন্ধময় ধরনিতল। অনেক শুভকামনা, ভোট আর আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
ধন্যবাদ জাহাঙ্গীর ভাই। খুব সুন্দর বলেছেন। জি, আসবো।

২৫ সেপ্টেম্বর - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৩০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী