পিতামহ এবং পিতাপুত্র

মা (মে ২০১১)

শেখর সিরাজ
  • 0
  • ৮৪১
দীর্ঘ নয় বছর পর পশ্চিমের কর্মস্হল থেকে সবে মাত্র কিছু দিন হলো স্ব দেশে ফিরে এসেছে মৌরিক হাসান।ইচ্ছে ছিল আরও কয়েকটা বছর কাটিয়ে প্রবাস জীবনের সম্পূর্ণ ইতি টেনে তবেই বাড়ি ফিরবে।কিন্তু তা যে কোনও ক্রমেই আর এই প্রবাস জীবনের সম্পূর্ণ ইতি টানা হবে না।এতো বছরে মৌরিক হাসান তা যেন হাঁড়ে হাঁড়ে ঝুঝে উঠেছিলেন।প্রতিবারেই ভাবেন আর ফিরে আসবেন না।তবুও কি এক সম্মোহন শক্তির বলয়ের টানে আবার ফিরে আসেন শেষ পর্যন্ত।পশ্চিমের আলো আলো বাতাসে নিজেকে খুব খাপ খাইয়ে নিয়েছেন মৌরিক হাসান।কিন্তু মনটাকে ঠিক এখন পর্যন্ত খাপ খাওয়াতে পারলেন না।বাঁধ ভাঙ্গল।অল্প দিনের আবার হাঁপিয়ে উঠেন।নিজেকে প্রায়শ মনে হয় অদৃশ্য এক দেয়াল বিহীন কারাগারের বন্দী।মাঝে মধ্যেই কিসের যেন একটা অভাব বোধের অপূর্ণতা মাথার ভিতর উগ্‌রে উঠে।তা তিনি নিজেও ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না।বছর না ঘুরতেই আবার মুক্ত বিহঙ্গ পাখির মতো উড়াল দিয়ে স্ব দেশে ফিরে আসেন।এই যাওয়া-আসা করতে করতেই তার এই পঁয়ত্রিশ উর্ধো বয়সের জীবন থেকে উল্কা পিন্ডের মতো নয় নয়টি বছর খসে পড়ছে।

না কোনও দগ্ধ ক্ষতের যন্ত্রণার কাঁচা দাগ তার জীবনে নাই। কিন্তু তার চেয়ে বেশি বোধোদয় যন্ত্রণা দায়ক তার এই একাকীত্বের বিদেশ বিভুঁইয়ের জীবন।শরীরে ওজনের চেয়ে ক্রমশ যেন মনের ওজন বেশি পায়াভারি হয়ে উঠেছে।তার নিঃসঙ্গ এই জীবন থেকে মনটা থেকে থেকে প্রায়শ উড়াল দিতো শিমুলতলী গ্রামের কাঁচা হলদে রং এর দিন গুলোতে…..যা আজ কেবলেই অতীত ধূসর,ইটের নিচে চাপা পড়া ফিকে হয়ে যাওয়া হলদে ঘাসের রং এর মতো।

অনেকটা সে কালের বায়স্কোপ দেখার মতো করে মৌরিক হাসানের চোখের সামনে ভেসে উঠে।তার একান্নবর্তী পরিবারেরে বিশাল ভারবাহী টানাপড়েন একটি সংসার।বাবা ইদ্রিস আলী মিয়ার একার উপার্জনে সংসারের চাকাটি প্রায় ক্রাচে ভর করে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে পথিকটির মতো করে চলছিল।অন্যদিকে সোমত্ত বোনের বিয়ের পণের টাকার জোগাড় জন্ত না করতে পারায় বিয়ের ঘর এসেও বার বার ভেঙ্গে যাচ্ছে।যেখানে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকাটাই মুখ্য হয়ে উঠে।সেখানে বিয়ের পণের টাকার জোগাড় গৌণ অবান্তর বলে ঠেকে।অনুশোচনার টেউ খেলে মৌরিক হাসানের বুকে।লঘু চাপা নিশ্বাসের অন্তরালে যেন এক এক করে সম্ভাবনার সব পথ গুলো অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে।ঝরে পড়ছে সম্ভাবনার সব কটি স্বপ্নের মুকুল।সব স্বপ্নেই সবার জীবনে সত্যি হয়?কারও হয়,কারও হয় না।রং বর্ণ গন্ধহীন স্বপ্নের রূপ রেখাটি এমনেই এক অলীক বস্তু।চেষ্টা আর ভাবনার সম্মিলিত প্রয়াসে যে ধরতে পারে।সে হয়তো সৌভাগ্যবান্‌ দের মধ্যে একজন।মৌরিক হাসান জানে সে হয়তো সৌভাগ্যবান দের শীর্ষ তালিকায় তার নামটি খুব সহজে লেখাতে পারবে না।চেষ্টা আর ভাবনার সম্মিলিত প্রয়াসে প্রতিকূলতার সকল পরীক্ষায় পাশ করে তাকে যেতে হবে আরও অনেক দূর।কিন্তু সে কি পারবে?মাঝে মধ্যে প্রশ্নটি ধনুকের বানের মতো বুকের ভিতর এসে বিঁধেছে।শুধু তার বাবা ইদ্রিস আলী মিয়া কেন?জ্ঞাতি গোষ্ঠীর নিকট আত্মীয় স্বজনের মধ্যে এমন কেউ নেই যে তার স্বপ্ন সাধ ইচ্ছে গুলোর মূল্যায়ন করে।সে যে কিসের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে।এটা তার কাছে এক ধরনের বিস্ময়কর ঘোর লাগে।মানুষ তার নিজের পায়ের উপর ভর করে দাঁড়াতে গেলেও তো পায়ের তলায় একটা কিছুর অবলম্বনের প্রয়োজন পড়ে।কিন্তু তার বাবা ইদ্রিস আলি মিয়ার সংসারে যে সে অবলম্বনের ভগ্ন অংশটুকুও আর অবশিষ্ট নেই।

মায়ের ব্যাবহারিক এক আধ তোলা স্বর্ণ অলংকার যা ছিল।তাও বাবা ইদ্রিস আলি মিয়া অনেক আগেই বিক্রি করে সন্তানের মুখের অন্ন সংস্হানের ব্যবস্থা করেছেন।এমনি করে কখনও কখনও বাবা ইদ্রিস আলি মিয়া পিতামহ আমলের অনেক সৌখিন দামি তৈজসপত্র জলের দরে রাস্তার ফেরিওয়ালাদের কাছে বিক্রি করেছে।বৈতালি পাড়ার উঠতি বড়লোক নতুন ঘটক বাড়ির বৌদিরা সেই সব দামি সৌখিন জিনিসপত্র দেখে কপালে চোখ তুলে ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে চড়া দামে কিনে নিয়েছিল মৌরিক হাসানের সামনেই।অপমান আর লজ্জায় লাল হয়ে বাড়ি ফিরছিল মৌরিক।অভাবের টানা হিঁচ্‌ড়ে ঘরের এমন অনেক দামি তৈজসপত্র হাত ফস্‌কে বেরিয়ে গেছে।স্বচ্ছ লতার প্রতীক পরিচয় বাহক,পিতামহ আমলের সৌখিন তৈজসপত্র সব ইচ্ছে করলেই আর ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবে না তার বাবা ইদ্রিস আলী মিয়া।এক এক করে নদীর কুল ভাঙ্গার মতো করে ভাঙ্গছিল পিতামহ আমলের সব স্মৃতি চিহ্ন।

জ্ঞান হবার পর মৌরিক হাসান তার সামান্য অবশিষ্ট ভগ্ন অংশের উষ্ণতম ছোঁয়া পেয়েছিল।আর্শীবাদের বর হিসাবে পিতামহের কাছ থেকে।মৃত্যুর পূর্ব মুর্হুতে ভবিষ্যত বাণী করেছিলেন-নরম এক দোকলা কাঁদা মাটির বুক ছিঁড়ে'পরোপকারী মনের অধিকারি,নিঃস্বার্থ।একদিন ইদ্রিস আলি মিয়ার…….ঠোঁট আওরে আশি বছরের বৃদ্ধা আরও কিছু বলতে চেয়েছিলেন পারলেন না।ভিতরের বাক শক্তি ঠোঁটের দোর গোঁড়ায় দৌড়ে এসে লাগাম ধরল অযাচিত ভাবে।কথার পিষ্টে কথা জড়িয়ে যাচ্ছিল।স্পষ্ট করে কিছু বুঝা যাচ্ছিল না।শেষ মুহুর্তে কথা না হয়ে বাক্যগুলি গড় গড় শব্দ হয়ে উঠছিল।সারস পাখি যেমনি শব্দ করে ডাকে অনেকটা সেই রকমের শোনাচ্ছিল।তবে রহস্যময়!কিসের ইঙ্গিত করেছিলেন পিতামহ মৃত্যুর অন্তিম লগ্নের শেষ মুর্হুতে?কোনও অশুভ অমঙ্গলের দূতীয়ারি না কোনও মঙ্গল শোভা যাত্রার আগমন বার্তা। কিছুই স্পষ্ট করতে পারলেন না।ভাবনার সহস্র জলের তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে।কিন্তু কোনও উত্তরণের নুড়ি পাথর কুড়াতে পারেনি মৌরিক হাসান।

বাবা বলেন-মানুষ মৃত্যুর সময় বিভিন্ন ভঙ্গিমা প্রদর্শন করে।যার কোনোটার রূপ শান্ত শূদ্র পবিত্র।আবার কোনোটার রূপ হয় ভর্য়াত বিভীষিকাময়।এর মধ্যে মানুষের মঙ্গল অমঙ্গলের কোনও আড়াল নেই।বাবা ইদ্রিস আলী মিয়ার কথায় আশ্বস্ত হয়ে মৌরিক হাসান চোখের সামনে দেখা জীবনের প্রথম মৃত্যু শোঁকের ধাক্কা সাম্‌লে উঠেছিল।কাঁচা বয়সের নরম কাদা মাটির মন।যুক্তির চেয়ে আবেগে ধাপিত হয় বেশি।তাই খুব সহজেই মনের উপর দাগ ফেলতে পারে।মনের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে মানুষ।যুক্তি তর্কের বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারে ঝাপিয়ে পড়ে।অপ্রীতিকর ঘটনার জম্ম দিয়ে উত্তরণের পথ খুঁজে।কিছু একটা আঁক্‌ড়ে ধরে সংসার স্রোতে ভেসে থাকতে চায়।পিতামহকে আঁক্‌ড়ে ধরে ইদ্রিস আলি মিয়া এতদিন-অনেক ঝড় বৃষ্টি জোয়ার ভাঁটার মঝ্যেও খড় কুটোর মতো ভেসে ছিল।পিতামহ মারা যাবার পর সেই খড় কুটো অনেকটাই ইদ্রিস আলি মিয়ার বাহু আলগা হয়ে গিয়েছিল।

ক্রমশ ধার দেনার দায়ে ডুবতে বসেছেন ইদ্রিস আলী মিয়া।অভাবের চর্ম আঘাত যখন মানুষের বুকে এসে লাগে।তখন ন্যায় অন্যায়ের শানিত বোধ গুলো নিষ্ক্রিয় নিস্তেজ হয়ে পড়ে।নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে দেখেছে মৌরিক হাসান।ব্যথা বেদনার ছোট ছোট ক্লেদ ভরা দুঃখ কষ্টে যাপিত মানুষের আর্ত করুন দৃশ্য।যেখানে হ্ণদয়ের সমস্ত মর্ম স্পর্শে জুড়ে আছে তার প্রয়াত পিতামহ অক্ষম পিতা।তাদের মত করে আরও সহস্র কাল ধরে এইসব মানুষেরা বংশ পরাক্রমিক ভাবেই যে নৃতাত্ত্বিক তৃনমুল সমাজ ব্যাবস্হার প্রতিনিধিত্ব করে আসছে।অথচয় এরাই আবার ধৃর্ত নগর সভ্যতার কাছে দৈন্যতার নগ্ন হাত পেতে বলেছে-আমাদের জ্ঞানের প্রাদ প্রদীপ দৃষ্টি টুকুও একবার জ্বেলে দিয়ে যাও।

এইসব রোগ শোঁকে কষ্ট পীড়িত মানুষ গুলির স্বপ্নের মেরুন বাঁশীর সুরটির রং।এই সব রক্ত ক্রংক্রিট ইটের মর্ম স্হল ভেদ করে সে বার্তা ধ্বনি প্রতি ধ্বনি হয়ে ফিরে এসেছে।তবুও শহরের ভদ্র সুধী জনের কাছে তা যেয়ে পৌঁছায়নি।অথচয় এই ধবল তাগড়া মেরুন বাঁশীর সুরটির রং তাল লয় মাত্রা নিয়ে আমাদের আধুনিক কর্পোরেট বিশ্বের সুধী জনেরা চিরকালেই উপ্‌ড়ে উঠবার সিঁড়ি ধাপ হিসাবে ব্যবহার করে আসছে।নব্য পুজিবাদেরা মুষ্টিমেয় কিছু লোকের বাহবা পাবার জন্য।এটাই আজ এক চেটিয়া গণতন্ত্রের নামে ধনতন্ত্রের বিকাশের সামাজিক বনেদিয়ানা হয়ে উঠছে।তাতে করে আমাদের মতো নগেন বিন্দুপন ইদ্রিস আলী মিয়ার ভাগ্যের চাকা ফিরেনি।

ভাগ্যের চাকা ঘুরেছিল।আধুনিক নব্য কর্পোরেট পুজিবাদের।ভূ-সংক্রান্ত জমিদারী প্রথার পরিবর্তন ঘটে,নাম নিল আধুনিক কর্পোরেট বানিজ্যে।মনিহারী দোকানের বাহারি রকমের ইস্তেহারের প্রর্দশনীর মত সাধারণ মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া হলো শোষণ আর নিপীড়ন আধুনিক কর্পোরেট বানিজ্যের ভূত।রাষ্ট্রের উৎপত্তিকাল থেকেই একদল মানুষ শাসনের নামে শোষণের খড়্গ ঝুলিয়ে দিয়েছে অন্য দলের উপর।যুগ যুগ ধরে বায়বীয় পদার্থের মত শাসন আর শোষণের রূপ রেখাটির নাম কেবল চিরাচরিত ভাবে পরিবর্তন হয়ে আসছে।শোষণের স্হির চিত্রটি রক্ত চোষা ছারপোকার মতোই।গণতন্ত্র নামে মানুষের ধণতন্ত্রের চর্চার বিকাশে আজ ধনী গরীব বৈষ্যমের শ্রেণী বিন্যাসের অদৃশ্য দেয়ালের প্রাচীরের রূপ রেখাটির ভিতটিকে কালের আবর্তনে যেন এসে আজ মানুষ তা এতদিনে শক্ত ভাবে রচিত করল।

পিতামহ মৃত্যুর পূর্বে ভবিষ্যত বাণী যে খুব অল্প বয়সেই তার জীবনে ফলে যাবে মৌরিক হাসান তা নিজেও ভাবতে পারেন নাই।চোখের ইজলে আটকে থাকা ভূত-ভবিষ্যতের স্বপ্নের রং তূলির আছড় গুলো,বর্ষার ইঁলশে গুড়ি বৃষ্টির মতো করে ধীরে ধীরে ধুয়ে মুছে নিয়ে যেতে লাগল।চোখে ছানি পড়া লোকের মতো ঝাপসা অন্ধকারে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখল মৌরিক হাসান।এছাড়া ঐ বয়সে কি বা করার ছিল তার একার পক্ষে।স্বপ্নকে আগলে ধরে বেড়ে উঠার মতো সাধ সাধ্য ইচ্ছের বালাই যে তাদের মতো মানুষের জীবনে থাকতে নেই।বংশ পরম্পরা লৌকিকতার রীতি অনুসারে এদের কেবল আছে।জম্ম মৃত্যু ক্ষুধা দরিদ্রের বাৎসল্য।একটি বট বৃক্ষকে আঁকড়ে ধরে এরা সারা জীবন পরগাছা লতার মতো করে কঁকিয়ে কঁকিয়ে বেঁচে থাকে।তার মধ্যে মৌরিক হাসানের মতো ছেলেদের স্বপ্ন সম্ভাবনাকে আতুর ঘরেই গলা টিপে মেরে ফেলা হয়।সেখানে ভূত ভবিষ্যতের অমৃত রসের ফল বাটি যে খুব সহজ লভ্য নয়।তা যেন দিনে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে আসছে তার কাছে।ভবিষ্যত তো আর মনিহারী দোকানে এক দু টাকায় ললিপপের মতো খরিদ করতে পাওয়া জিনিস না।তার জন্য মানুষকে শৈশব কৈশোর থেকেই গড়ে তুলতে হয়।লোহা গরম থাকাতে থাকতেই হাতুড়ি পেটাতে হয়।এতে করে লোহাটিকে ঠাণ্ডা জলে ডুবানোর আগেই ইচ্ছে মতো একটা নিদিষ্ট আকার আয়তন দেওয়া যায়।শৈশব কৈশোর শিক্ষা প্রজ্ঞার জ্ঞান পরবর্তীতে মানুষের বেঁচে থকার মেরুদণ্ডকে বহু অংশু প্রভাবিত করে।তখন জীবনে বেঁচে থাকার সমীকরণের কঠিন শর্তটিও হিসাবের খাতায় খুব সহজ হয়ে উঠে।

উঠতি বাড়ন্ত বয়সের ছেলে।ভাবনার সমুদ্রে জলে ক্ষনিকের উম্মাদনার প্রগন্ঠায় তরতরিয়ে কাঁপছে।চোখের সামনে বর্নচ্ছটা সিঞ্চন জলের ফোটার মতো করে নিয়ন আলোর বিচ্ছুরণ দানা গুলো বারবার জ্বলে উঠবার পর নিভে যাচ্ছে।চৈত্রের দুপুর কড় কড়ে রোদে তাতিয়ে আছে পুরো ঢাকা শহর।প্রথম দিনের হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমের ধকল সহ্য করতে পারেনি।শরীর দিয়ে অবিশ্রান্ত ঘামের ঝরনা বইছে।আর খানিক বাদে বাদে জলের তিষ্ঠায় ট্যাপ কলের মুখে মুখ চেপে ডগডগে জল পান করছে।তার একটু পরেই অনর্গল বমি হয়ে বেরিয়ে এসেছিল।সাথে দু একটা ভাতের দানা।সকালে পান্তা ভাতের সাথে পোড়া লঙ্কা পেঁয়াজ খেয়ে কাজে বেরিয়েছিল পিতা পুত্র মিলে।তার পর থেকে পিতা পুত্রের পেটে আর কোনও দানা পানি পোড়েনি।ক্ষুধায় যেন পেটের মধ্যে আগুনের চামর জ্বলছিল।লজ্জা শরমের টেঁকুর তুলেও বাবাকে মুখ খুলে কিছু বলতে পারেনি মৌরিক হাসান।

স্পষ্ট মনে আছে যেদিন কাজের তাগিদে প্রথম ঘর ছেড়ে-বাবার হাত ধরে যেখানে এসে পৌঁছাল।সেটা ছিল শহরের বনেদী অভিজাত পাড়া।এখানে শহরের সব নামি দামি লোকেরা বসবাস করেন।মন্ত্রী আমলা থেকে শুরু করে সরকারী উচ্চ পদস্হ কর্মকর্তা।অঢেল সহায় সম্পত্তির মালিক সবাই।নাম ভুক্ত উচ্চ সম্প্রদায় গোত্রের বাসিন্দা।মানুষ যখন তার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।তখনেই সে তার পূর্ব অবস্হাকে মনে প্রাণে অস্বীকার করে বর্তমান অবস্হাকে সর্বত্র প্রচারে ব্যস্ত হয়ে উঠে।দুস্হ গরিবের সেবা করার নামে সুধীজনের খাতায় নাম লেখানোর জন্য অবশেষে সেও একজন র্ধনাট্য উচ্চ সম্প্রদায় স্তরের বাসিন্দা হয়ে উঠে।এটা মানুষের চিরাচরিত সহজাত প্রবৃত্তি।বলা যায় তিন পুরুষের একটা জেনেটিক পরিবর্তন।সংস্কার লৌকিকতার প্রথা তার তিন পুরুষ পর্যন্ত টিকে থাকে।চৌঠা পুরুষে এসে আবার জেনেটিক পরিবর্তনে টেউ লাগে।একজন যখন সারা জীবন ধরে তার অর্থনৈতিক অবস্হার পরিবরর্তনের জন্য জীবন সংগ্রামে লিপ্ত হয়।অন্য জন তখন এসে মানসিক বৈক্যলের জন্য উত্তরণের পথ খোঁজে।

ঝকঝকে ফুটপাতের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি গুলোর দিকে তাকালে সহজেই অনুমান করা যায়।সৌন্দর্যের স্হাপনা শিল্প কারুকার্যে প্রতিটা বাড়ি যেন এক একটি নিজস্ব সৌন্দর্যের বর্হিভাব ফুটিয়ে তুলছে।প্রতিটা বাড়ি ছাদের কার্নিশ ঘেঁষে ঝুল বারান্দায় টবের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির বংশাই ফুলের গাছ লাগিয়ে বাড়ির সৌখিন গৃহকর্তা একটা কৃত্রিম সৌন্দর্যের প্রয়াস চালিয়েছেন।সকাল বিকাল দু বেলা সিঞ্চন ঝরনা জলের পরিচর্যায় যত্নে প্রকৃতির খোলা প্রান্তরের সমস্ত অকৃত্রিম উদারতাকে ঠাট্টা বিদ্রূপ করে চার দেয়ালের ইঁট পাটকলের ফ্রেমে আবদ্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছে।

ঝড় রোদ বৃষ্টির সঙ্গে দাপাদাপি করে যার বেঁচে থেকে চিরা চরিত অভ্যাস।সে কেন প্রকৃতির সমস্ত অকৃত্রিম মুক্ত প্রান্তরের উদারতাকে ছেড়ে স্বর্ণ লতার মতো পরজীবি হয়ে বেঁচে থাকবে।সে শুধু সৌখিন গৃহ কর্তার গৃহ সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য।বিশ্বকর্মা স্বয়ং তার নিজস্ব রূপ সৌন্দর্যের ঐশ্বর্যের রূপ ভাণ্ডার ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছেন সর্বত্র।তার কানা কড়ি ধারণ ক্ষমতা এসব ইঁট পাটকলের ক্ষুদ্র গৃহ কোনে তা আদৌ ধরে রাখা সম্ভব।সম্ভব নয় বলেই প্রকৃতির সাথে পাল্লা দিয়ে আজকের মানুষ বড় বেপোয়ারা।প্রকৃতির মধ্যে মানুষেই বোধোদয় সবচেয়ে উন্নত বুদ্ধিমান্‌ এবং উচ্চ মাত্রার গর্দভ শ্রেণীর প্রাণী।

মৌরিক হাসান মধ্য দুপুরের লম্বা ছায়ার মতো দীর্ঘ শ্বাস ফেলেন।প্রাত্যহিক জীবন যাত্রায় যেন দ্রুত ছন্দ পতন ঘনিয়ে আসছে তাদের সংসারে।বাবা-ইদ্রিস আলি মিয়া ছেলে সন্তানদের মুখের দিকে তাকাতে পারেন না।দু মুঠো ভাতের জোগাড় করতে যেয়ে আজকাল শরীর তার থেকে প্রাণটা থেকে থেকে যেন বেরিয়ে যাবার উপক্রম হয়।

সংসারের করুন দৃশ্য পটের জট গুলো একে একে খুলে যাচ্ছে ইদ্রিস আলী মিয়ার চোখের সামনে।অকাল বার্ধক্যে মচমচে ভাঙ্গা ডালের মতো নুয়ে পড়েছেন।এখন আর আগের মতন পরিশ্রম করতে পারেন না।শরীরে বল পান না।শ্বাসের টানেই যেন খুব বেশি তাকে কাবু করে ফেলছে।অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠেন।তা না হলে আজকের বাজারে তার দাম কি কম ছিল?নিজে ভালো একজন রাজের কারিগর।রোদ বৃষ্টি মাথায় করে সারাজীবন ইঁট সিমেন্ট রডের সাথে সহবত পোষণ করে এসেছেন।আর আজ বয়স পঞ্চাশের কোটা পার না হতেই শরীরে এসে বাসা বাধল নানা রকমের রোগ ব্যাধি।ডাক্তার কবিরাজ পদ্যি কম তো করেন নাই।তবুও যদি শরীরটা ঠিক থাকতো-দিনে তিনশ টাকার মতো হাজিরা উঠাতে পারতেন।এখন সেখানে নাম মাত্র হাজীরা পান।তাই দিয়ে কোনও রকম,জোড়াতালি দিয়ে টেনে হেঁচড়ে সংসার চলে।নিজের শরীরের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার কবিরাজ পদ্যির ব্যবস্থা করতে পারেন না।ঔষধ পদ্যির অভাবে শরীর যেন রোগ ব্যাধি মাঘ মাসের শীতের মতন ঝাঁকিয়ে বসেছে।দর্পণ আয়নাতে নিজের চেহারা নিজে দেখেই মুখ বিকৃত করে আঁৎকে উঠেছেন।নিজের চেহারা নিজেই চিনতে পারেন না এখন।মুখের চামড়ায় বলিরেখার দাগ পড়েছে।বাহুর চামড়া শিথিল হয়ে এসেছে।সারা শরীরে কেমন জানি টিলে ঢোলা ভাব থাকে সারাক্ষণ।ভিতর থেকে যেন কাজের স্পৃহা লোপ পেয়েছে।কোনও কাজের তাগিদ অনুভব করেন না।মাথার চুল গুলো ধবধবে সাদা কাশ ফুলের মতন হয়ে উঠছে।পঁচিশ বছরের তাগড়া যুবকের সঙ্গে আজকের পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই করা ইদ্রিশ আলী মিয়ার সঙ্গে একটা অদৃশ্য সাদৃশ্য খুঁজে বেড়ান।একই মানুষ পঁচিশ বছরের ব্যবধানে এসে যেন ভিন্ন দুই জগতের বাসিন্দা হয়ে উঠছেন।
বয়সের সাথে সাথে মনে হয় স্বভাব চরিত্রেও বিরাট একটা আমুল পরিবর্তন এসেছে।সারাটা দিন পাইম মাছের মতো কচ্‌লাতে থাকেন।কাজ শেষে বাড়ি ফিরে এসে ছেলে মেয়েদের সাথে খিস্তি খেঁউরে করেন।অল্পতেই মেজাজ বিগ্‌ড়ে যায়।এই খিট খিটে মেজাজের জন্য ছেলে মেয়েরা তাকে দেখলে এখন আর কাছে ভিরতে চায় না।এমনটি তিনি আগে ছিলেন না।অভাবের ঘোর দৌড় যেন তার আমুল স্বভাবটাকেই পাল্টে দিয়ে গেছে।এই সেদিনও স্ত্রী মনোরমার সাথে খুব সামান্য কারণেই তুমুল একটা ঝগড়া বাধিয়ে বসেছেন।একবার ক্ষেপে উঠলে তখন আর মেজাজ মর্জি ঠিক রাখতে পারেন না।বড় বড় শ্বাস ফেলেন।এ বয়সে এসেও স্ত্রীকে কথায় কথায় তালাকের ধমক দিয়ে উঠেন।দু চার দিন কথা বলা বলি বন্ধ থাকে।এমন কি রাতে দু ঘরে দুজনে আলাদা বিছানা পাতেন।এমনি রাগ মান অভিমানের পালা বদলে নয় সন্তানের জম্ম দিয়েছিলেন ইদ্রিস আলী মিয়া।

আগে সংসার ছোট ছিল।তবে আয় উপার্জন বেশ ভালো ছিল।খরচ পাতিও করতেন দু হাত ভরে।চায়ের দোকানে এক বসাতে ক্যাশ বিল পে করেছেন শ থেকে তিনশ টাকা।পরোপকারী সহানুভূতির হাতেম তাঈ হয়ে উঠেছিলেন।সকাল বিকাল দু বেলা বাড়িতে আত্মীয় স্ব জনেরর আনাগোনা ছিল প্রচুর।নিজের আয় উপার্জনের টাকা পয়সা দিয়ে বোনের মেয়েদের বিয়ের পীড়িতে বসিয়েছেন।পাখনার নিচে রেখে শ্যালকদের খাইয়েছেন পড়িয়েছেন।শ্বশুর মশাই সাপ্তাহের আগাগোড়ায় এসে হাজির হয়।মেয়ের জামাইয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।খাচি ভর্তি আনাচ কলা হাঁস মুরগি নিয়ে আসতেন।কখনও কখনও জিয়ে রাখা শোল মাগুর কৈ শিং মাছ হাঁড়ি ভর্তি নিয়ে এসেছেন মেয়ের জামাইয়ের জন্য।তিনিও তার মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখেছিলেন।বিপথে আপথে সবাইকে হাসি মুখে হাত ধরে পার করে দিয়েছেন।কিন্তু আজ তিনি নিজেই পার হতে পারছেন না।মাঝ নদী বরাবর এসে ঝুলন্ত সেতুর মতো নিজেই এখন ঝুলে আছেন।অনেকের কাছে ধরনা দিয়েছেন ব্যস্ততায় অজুহাত দেখিয়ে সবাই সটকে পড়েছে।বুঝতে পারেন এখন তার সেই রমরমা অবস্হা নেই।পড়ন্ত বেলার সুর্যের মতো যেন তার যৌবন টলে পড়েছে।এখন আর তার ঘরে আগের সেই আত্মীয় স্বজনের আনাগোনার ভির নেই।সকাল বিকাল দরজায় করা নড়ে না।নতুন আত্মীয়তা করতে যেয়ে মানুষ পুরাতন আত্মীয়তাকে ভুলে যেতে হয়।এটাই মানুষের চরিত্রে আত্মীয়তার ধর্ম।এখন মানুষ তো অনেক দূরের কথা,কারও পরাকাষ্ঠা ছায়া পর্যন্ত দেখেন না।

স্ত্রী মনোরমার কথায় কোনও দিন কান দেননি।দিলে হয়তো আজকের এমন কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি এসে তাকে দাঁড়াতে হতোনা।এমনটি হবে আগে জানলে সব কটাকে রাস্তার নেড়ি কুত্তার মতো তারিয়ে দিতেন।এখন তিনি নিজেই তারা খেয়ে ফেরেন,লেজ নাড়েন।খেঁউ থেঁউ করে দৌড়ান।সাহস করে কাম্‌ড়াতে পারেন না।বরং উল্টো কামড় খাওয়ার ভয়ে সব সময় সিঁধিয়ে থাকেন।নিজের জন্য নয়,ছেলে মেয়ে গুলির জন্যই তার চিন্তা হয় বেশি।উঠতি বাড়ন্ত বয়স রক্ত গরম কখন কি যে করে বসে।বলা তো যায় না,যা দিনকাল পড়েছে।সে ভাবনাই যেন আরও বেশি তাকে পেয়ে বসেছে।

তিনি নিজে এভাবে টেনে হেঁচরে আর কতদিন সংসারের চাকা সচল রাখতে পারবেন।দু একবার বাড়ি বিক্রির কথাও ভেবেছিলেন।মফস্বল শহরেরে দিকে সস্তায় জমি কিনে বাড়ি বিক্রির টাকায় আবার বাড়ি করবেন।বাড়ি বিক্রি করার পর মাঝখান দিয়ে হাতে কিছু নগদ অর্থ আসবে।এ ভাবনা থেকেই বাড়ি বিক্রি করার চিন্তাটা কেবলেই মাথার ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছিল।কিন্তু ভয় লাগে সহায় সম্পত্তির অবশিষ্ট অংশ বলতে বাড়িটাই আছে।শেষ পর্যন্ত এই বয়সে এসে না আবার বাড়িটাই খুইয়ে বসেন।বাড়ি বিক্রি করে আবার বাড়ি করার দৌড় ঝাঁপ এবয়সে শরীরের ধকল সইবে তো?স্ত্রী মনোরমাকে কথাটা বলবেন বলবেন করেও এখন পর্যন্ত সাহস করে বলে উঠতে পারেনি।।বাড়ির অর্ধেক অংশ মনোরমার নামে তারও একটা সম্মতির প্রয়োজন আছে।মনোরমার সম্মতি ছাড়া তার নামের অংশটুকুও তিনি বিক্রি করতে পারবেন না।

সেদিন রাতে ভাত খেতে খেতে মনোরমাকে বাড়ি বিক্রির করার কথাটা তুলেছিলেন।মনোরমা শুনে মুখের উপর ঝামটা মেরে বলেছিল- এখনেই তুমি বাড়ি থেকে বের হও।বাড়ির ত্রিসীমানায় যেন তোমার চেহারা আর না দেখি।সারাজীবন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে এখন পথে নামানোর ব্যবস্থা করে দিতে চাও।শেষ বয়সে এসে তোমার ভীমরতি দেখে আর বাঁচি না

ইদ্রিস আলী মিয়া মনোরমার সামনে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারলেন না।তিনি কোনও রকমে দু লোকমা ভাত খেয়ে চিমনীতে হাত ধুয়ে উঠলেন।তার শরীরের চেয়ে আজকাল মনটা ক্রমেই দিনে দিনে টক দইয়ের মতো কষিয়ে উঠছে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিন আরফান. পড়লাম, ভালো লাগলো. সামনেও লেখা চাই. চালিয়ে যান. শুভ কামনা রইল.
sakil আমি মূলত এরকম গল্পই বেশি ভালবাসি . আপনার লেখার ধরন আমার কাছে ভালো লেগেছে . আর সে কারণে বলতে পারেন আমি আপনার লেখার ভক্ত হয়ে গেলাম . আপনার কাছ theke আরো ভালো লেখা আশা করতে দোষ কোথায়
সূর্য প্রথম থেকে শেষঅবদি প্রতিটা লাইনে উপমার ব্যবহার লক্ষ্যনীয়। এতে পড়তে একটা একঘেয়েমি এসে যায়। তারচেয়ে একটু সাবলিল ভাবে বর্ণনা হলে পাঠকের জন্য সুবিধে হয়।
শাহ্‌নাজ আক্তার একেবারেই পাক্কা হাতের লিখা ...... আচ্ছা এত সুন্দর একটি গল্প কারো চোখে পরছেনা কেন ? ভোট দিব আপনাকে ....
মামুন ম. আজিজ আপনি বর্ণানাশৈলীতে বেম পারঙ্গম। লাইগুলো দীর্ঘ। এটা কাঠিন্য বহন করে। হয়তো আপনি কাঠিন্য বর্ননা দিতে ভালবাসেন। অনেকে এরকম পড়তেও ভালবাসে। কাহিনি চিন্তা প্রসূত বাস্তবতার নিরিখ। ভালো লেগেছে।
এস, এম, ফজলুল হাসান অনেক গল্প-কবিতা পড়ে আজকাল আমার মনটা ক্রমেই দিনে দিনে টক দইয়ের মতো কষিয়ে উঠছে , কিন্তু আপনার গল্পটা অনেক ভালো লেগেছে , ধন্যবাদ আপনাকে

০৩ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪