যে জীবন ফড়িঙের, দোয়েলের

অসহায়ত্ব (আগষ্ট ২০১৪)

আখতারুজ্জামান সোহাগ
মোট ভোট ২৭ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.৩
  • ৩১
  • ১৪
স্বামী কবিরুল নিরুদ্দেশ হওয়ার সাথে সাথে রুমকির জীবনটা একটা বড়সড় বাঁক নিল। তা না হলে তার জীবনের গল্পটা হতে পারত অন্যরকম।
শ্রাবণের সেই সকালে নারায়ণগঞ্জের ওদিক থেকে ভারী কিছু মেঘ ভেসে এসেছিল রুমকিদের আকাশে। ওদের দেড়রুমের ছোট্ট ভাড়া-বাসাটার টিন-চালের উপর টপাটপ শব্দ তুলে অঝোরে ঝরল কিছুক্ষণ শ্যামবর্ণের ডাগর মেঘগুলো, তারপর কিছুটা ডানা হালকা করে ভাসতে ভাসতে চলে গেল সোজা পশ্চিমে।
তখনও রেশম-গুঁড়োর মতো প্রায় ভরহীন বৃষ্টির কণা ঝরছে আকাশ থেকে। দু’পায়ের ফাঁকে কোলবালিশ নিয়ে চোখ বুজে পড়ে ছিল কবিরুল। পাশেই তাদের চার বছরের ছেলে রাহাত, ভেজা বৃষ্টির শীত-শীত সকালে চারহাত-পা এক করে গুটিসুটি মেরে ঘুমোচ্ছে, বালিশটা পড়ে রয়েছে তার মাথা থেকে হাতখানেক দূরে। লাগোয়া একচিলতে রান্নাঘর থেকে ফিরে এসে গলা তুলল রুমকি, শাড়ীর আঁচল কোমরে জড়ানো তার, এক হাতে হলদেটে আগা খুন্তি, ‘কি গো, তোমার ডিউটি নাই? অখনও ঘুমাও যে!’
‘উঁহু, ডিউটি নাই।’ ঘুমের দেশ থেকে বললো কবিরুল।
এক সাহেবের গাড়ি চালায় কবিরুল। মস্তবড় অফিসে সে সাহেবের কাজ, সপ্তাহে ছুটি পান একদিন, শুধু শুক্রবার। কবিরুলেরও সপ্তাহে ছুটি সেই একদিন-ই। কিন্তু আজ তো সোমবার! কবিরুলের কথা শুনে রুমকি তাই একটু অবাক হলো, ‘ক্যান, ডিউটি নাই ক্যান আইজকা?’
‘ছুটি লইছি। ইয়ারপোর্ট যামু। মামুনরে আনতে।’ কোলবালিশ আঁকড়ে ধরল কবিরুল।
মামুন কবিরুলের ছোটবেলার বন্ধু। দুবাই থাকে, শ্রমিকের কাজ করে সেখানে, বছর পাঁচেক বাদে দেশে ফিরছে। কিভাবে কিভাবে যেন সে কবিরুলের মোবাইল নম্বর যোগাড় করে ক’দিন আগে কবিরুলকে ফোন করে জানিয়েছে এ কথা। সেই থেকে কবিরুলের নাওয়া-খাওয়া নেই। উঠতে-বসতে, চলতে-ফিরতে মামুন মামুন করে মাথা ধরাচ্ছে। জানো রুমু, মামুন দেশে আসতাছে। জানোই তো, ঢাকায় আমি ছাড়া ওর আর কেউ নাই। তাই আমারেই যাইতে বলতাছে ইয়ারপোর্টে, আনতে। বোঝোই তো, কুটি কালের বন্ধু, আমি না গেলে কেমন দেখায়। সেদিন জিগাইতেছিল আমার জন্য কিছু আনতে হইব কি না। আমি কইছি কিচ্ছু আননের দরকার নাই। আগে ভালোই ভালোই তুই ফিইরা আই, তারপর দেখা যাইব। রুমকি শোনে, চুপ করে থাকে, ফাঁকে-ফাঁকে হাঁ-হু করে। কিন্তু মামুন যে আজই দেশে ফিরছে তা জানা ছিল না রুমকির। এখন শুনে একটু অবাক হলো, রাগ হলো স্বামীর উপর। বন্ধু আসছে বিদেশ থেকে তাই তাকে আনার জন্য ডিউটি কামাই করতে হবে? যত সব আদিখ্যেতা! সাহেবের অফিস যেতে কত কষ্টই না হবে আজকে।
এগারোটার দিকে বিছানা ছাড়ল কবিরুল। উঠেই বাথরুমে ঢুকল, দুমদাম করে এক বালতি পানি মাথায় ঢালল, তারপর বেরিয়ে এসে এক প্লেট সবজি-ডাল-গরমভাত ঢালল গলায়- যেন একবস্তা ধান উপুড় করে ফেলল রাইচমিলের হলারের উপর। ইস্তিরি করা সাদা জামা গায়ে চাপিয়ে একটু বাদে ফুলবাবুটি সেজে বের হয়ে গেল। যাওয়ার আগে রুমকিকে বললো, ‘আমার ফিরতে একটু দেরী হইতে পারে। মামুনরে ট্রেনে তুইলা দিয়া তারপর আসুম।’ রাহাত তখন ঘুম থেকে সবে উঠেছে, খেলছে দু’দিন আগে বাবার কিনে দেওয়া চাবি-দেওয়া গাড়িটা নিয়ে। তাকে কিছু বললো না কবিরুল যাওয়ার সময়, চলে গেল ব্যস্ত-সমস্ত হয়ে।
টুকটাক কাজে ডুবে ছিল রুমকি দুপুর পর্যন্ত। কবিরুলের কথা মনে পড়েনি অতটা। দুপুরের পর একবার মোবাইল বাজল, রুমকি দৌড়ে গিয়ে ধরতেই ওপাশ থেকে ঢোক গিলে গিলে বললো কবিরুল, ‘রুমু, মামুন কিছুতেই ছাড়তেছে না। বলতেছে ওর সাথে বাড়িত্ যাইতে। যামু?’
রুমকি বললো না কিছু, ফোন কানে ধরে রইল কিছুক্ষণ। এপাশের নীরবতায় একটু সাহস পেল কবিরুল। বললো, ‘একটুও চিন্তা কইরো না। আমি ওরে গ্রামে পৌঁছায়া দিয়াই ফিরতি ট্রেনে ঢাকা ফিরুম।’
আগুন ধরে গেল রুমকির মাথায়। যেন জলন্ত দেশলাই কাঠি থেকে আগুন ধরল গ্যাসের চুলোয়। আঙুলের আগা দিয়ে টিপে ধরল মোবাইলের কল কাটার বোতামটা। ফোনের একপাশে তখন প্রিয় বন্ধুকে কাছে পেয়ে প্রগলভ কবিরুল, অন্যপাশে জ্বলজ্বলে আগুনের ফুলকি রুমকি।

তারপর দু’দিন হয়ে গেল, কবিরুলের আর কোন খোঁজ নেই। মানুষটা এত বড় কাণ্ডজ্ঞানহীন নয়। নয় এতটা পাষাণও। ছেলেকে না দেখে থাকতে পারে না দু’দণ্ড, দু’দিন তো ভাবনারও বাইর। তাছাড়া সে বুঝতে পেরেছে রুমকি তার উপর রাগ করেছে। সচরাচর এ রকম হলে সে বার বার রুমকিকে ফোন করে, এটা ওটা বলে বৌয়ের মান ভাঙাতে চায়। এ দু’দিনে সে রকম কিছুও করেনি কবিরুল! মনের ভিতর তাই কু ডাকতে শুরু করল রুমকির। তবে কি তার কোন বিপদ হলো! দু’দিনের জমানো অভিমান আর ক্ষোভের বহ্নিশিখা এখন নিভে এসেছে অনেকটাই। কিন্তু পোড়া ক্ষতটা জ্বলছে আগের মতোই, রুমকির বুকের চিতায়। ফাঁকে ফাঁকে নানা আশঙ্কার লকলকে জিহবা উঁকি দিয়ে যাচ্ছে মনের ঘরে, বিষাক্ত সাপের জিব যে রকম উঁকি দেয়।
সেদিন দু’পুরে খাওয়ার পর রাহাত জিজ্ঞেস করল, ‘মা, বাবায় কখন আসব?’
‘জানি না তোর বাপে কখন আসব।’ ঝাঁজ মেখেই বললো রুমকি।
‘বলো না মা, বলো না। বাবায় কখন আসব?’ মায়ের শরীরের দিকে এলোমেলো হাত-পা ছুড়তে লাগল রাহাত।
‘সন্ধ্যায় আসব। অখন ঘুমা।’ ধমক দিয়ে ছেলেকে থামাল রুমকি।
মায়ের ধমক খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল রাহাত। উঠল সন্ধ্যার একটু আগে। কিছুক্ষণ খেলল খেলনা গাড়িটা নিয়ে। সন্ধ্যা উতরালে রুমকি তাকে নিয়ে বসল প্রতিদিনের মতো, হাতে বর্ণমালার বই। তখনই আবার বাবার কথা মনে পড়ে গেল রাহাতের, বলে উঠল, ‘মা, তুমি না কইছো, বাবায় সন্ধ্যাকালে আসব! বাবায় আসে না ক্যান? বাবায় কখন আসব?’
‘একটু বাদে আসব বা’জান। তুমি পড়তে বসো।’ এবার আর গলায় অতটা জোর পেল না রুমকি।
‘বাবায় না আসলে আমি পড়তে বসমুনা। বসমু না।’ জেদ ধরল রাহাত, কাঁদতে আরম্ভ করল জোরে জোরে। রুমকি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাল, কষে চড় বসাল ছেলের গালে। মার খেয়ে কান্নার তোড় আর শব্দের তীব্রতা দু’টোই বাড়ল। ছেলের কান্না থামানোর আর কোন উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়েই মোবাইল হাতে নিল রুমকি, ফোন করল কবিরুলের নম্বরে। তখনই আবিষ্কার করল কবিরুলের মোবাইল বন্ধ!
সে-রাতে কিছু খেল না রাহাত, কাঁদতে কাঁদতেই এক সময় ঘুমিয়ে পড়ল। কিন্তু রুমকির ঘুম এলো না কিছুতেই। এর মধ্যে কবিরুলের মোবাইলে চেষ্টা করল রুমকি অনেকবার। কিন্তু সেই একই যান্ত্রিক শব্দ, কল ঢুকল না কিছুতেই। কত কিছু যে মনে হতে লাগল রুমকির! একবার মনে হলো রাগ করে সে সেদিন ফোনের লাইন কেটে দিয়েছিল বলে হয়তো কবিরুল এখন ইচ্ছে করে নিজের মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে তাকে ‘মজা’ দেখানোর জন্য। আবার একটু বাদে মনে হলো হয়তো মোবাইলের চার্জ ফুরিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে, ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সে এখন তাকে ফোন করতে পারছে না। পরক্ষণেই আবার মন ছুটল উল্টোপথে। ঠিক আছে বোঝা গেল চার্জ নেই বলে মোবাইল বন্ধ, তাই বলে কি একটা ফোন করার আর কোন উপায় নেই? ফোন করার কত কত দোকান থাকে পথে-ঘাটে, রেলস্টেশনে, সেখান থেকেও তো একটা ফোন করা যায়। এমন তো না যে রুমকির নম্বর তার মুখস্ত নেই। নাকি বাল্যবন্ধুকে পেয়ে আহলাদে আত্মহারা হয়ে বৌয়ের মোবাইল নাম্বারটাও ভুলে বসে আছে!
সে-রাতটা শেষ হচ্ছিল না কিছুতেই। মাঝে মাঝে চোখ লেগে আসছিল রুমকির, কিন্তু তন্দ্রার সুতো কাটছিল আচমকা ধেয়ে আসা কোন সূক্ষ্ম শব্দেও। বারবার বালিশ থেকে মাথা উঁচু করে কান খাঁড়া করে শুনছিল দরজায় কারও টোকা পড়ল কি না!

পরের দিন দুপুরের পরপর একজন ভদ্রলোক এলেন রুমকিদের বাড়ির সামনে। রাহাত তখন ঘুমিয়ে। মুখে আঁচল টেনে ঘরের দরজায় দাঁড়াল রুমকি। আগন্তুকের ফর্সা চেহারা তেতে লাল, বিন্দু বিন্দু ঘাম কপালে, কবিরুলের বাসা অব্দি আসতে তাকে মেলা কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে বোঝা যায় অল্পতেই। রুমকিকে দেখে ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন, ‘এখানে কবিরুল থাকে?’
‘জি।’ বললো রুমকি।
‘আপনি কবিরুলের…?’ জিজ্ঞাসু চোখে তাকালেন ভদ্রলোক।
‘জি, আমি তার ইস্তীরি।’ বললো রুমকি।
‘দু’দিন ধরে সে ডিউটিতে যাচ্ছে না। মোবাইলও বন্ধ। তাই খোঁজ নিতে এলাম। কি হয়েছে কবিরুলের?’ ভদ্রলোক জানতে চাইলেন।
‘আমারও জানা নাই তার খবর। বন্ধুরে নিয়া গ্রামের বাড়িত গি’ছিল। আসার কথা ছিল পরদিনই। কিন্তুক আজ তিনদিন তার কুনো খোঁজ নাই। মোবাইলডাও বন্দ।’ ভদ্রলোককে দেখে খুশি হয়ে উঠেছিল রুমকি, এক মুহূর্তের জন্য আশার সঞ্চার হয়েছিল হয়তো তাঁর কাছ থেকে কবিরুলের কোন সংবাদ পাওয়া যাবে। এখন জানা গেল, যিনি এসেছেন তিনি সংবাদ নিতে এসেছেন, দিতে নয়। তাই আশার বেলুন চুপসে গেল রুমকির।
‘ওর আত্মীয়-স্বজন কারো মোবাইল নম্বর আছে আপনার কাছে? কারো কাছে খোঁজ নিয়েছেন?’ সাহেবকে একটু চিন্তিত দেখাল।
‘তিনকুলে ওর কেউ নাই। এর গ্যারেজে, ওর গ্যারেজে কাম কইরা মানুষ হইছে। তাগো কাউরে তো আমি চিনি না।’ ভাত ফোটার গরগরে কণ্ঠে একদমে রুমকি বললো কথাগুলো।
রুমাল বের করে মুখের ঘাম মুছলেন সাহেব, কথা হাতড়াতে হাতড়াতে বললেন, ‘আপনার কাছে নগদ টাকা পয়সা কিছু আছে? বলতে একদম সংকোচ করবেন না।’
যা ছিল তা তো শেষ এই ক’দিনেই। তবুও কিভাবে বলা যায় সে কথা মুখ ফুটে! বলতে সংকোচ হচ্ছিল খুব। চুপ করে রইল রুমকি।
একটা পাঁচশ টাকার নোট বাড়িয়ে ধরলেন সাহেব রুমকির দিকে। হাত বাড়িয়ে নোটটা নিল রুমকি।
মানিব্যাগ থেকে চকচকে শক্ত এক টুকরা চারকোণা কাগজ বের করে তার পিছনে খস করে কিছু লিখে এগিয়ে দিলেন সাহেব রুমকির দিকে, ‘এটা আমার কার্ড। এখানে আমার নাম ঠিকানা লেখা আছে। বাসার ঠিকানাও লিখে দিলাম। দরকার হলে যোগাযোগ করবেন। আর কবিরুল ফিরে এলে আমাকে ফোন করতে বলবেন।’
মাথা নাড়ল রুমকি, হাত বাড়িয়ে কার্ডটি নিল।
সাহেব চলে গেলেন কিছুটা দুশ্চিন্তা, কিছুটা বিরক্তি আর কিছুটা হতাশা নিয়ে।

দিন এগোয়, রাত পেরোয়, সময় পিছনে পড়ে। রুমকির জীবননাট্যে কবিরুল চরিত্রটি থেকে যায় অনুপস্থিত, কালো পর্দার আড়ালে। তাকে ঘিরে পুরোনো স্মৃতিরাই যা নোঙ্গর ফেলে বসে থাকে মনের বন্দরে, নতুন স্মৃতি জন্মায় না। কবিরুল ফিরে আসে না। তার মোবাইলও চালু পাওয়া যায় না আর।
হতে পারে ছোট বাচ্চাদের ভিতরে কিছু বোধশক্তি কাজ করে। সে বোধশক্তি ব্যবহার করে পরিস্থিতিও বিচার করতে পারে তারা তাদের মতো করে। বাবার কথা জিজ্ঞেস করে প্রত্যুত্তরে শুধু মায়ের চোখে জলের প্লাবন দেখে রাহাত যা বোঝার বুঝে নিয়েছে এ ক’দিনে। সারাদিনে সে আর এখন বাবার কথা জিজ্ঞেস করে না। কিন্তু রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় বাবার কথা না বলেও পারে না। এই সপ্তাহখানেক আগেও সারাদিন খাটাখাটনি করে রাতে বাসায় ফিরে খাওয়া-দাওয়ার পর বাবা তার শুয়ে থাকত টানটান হয়ে। সে সময় বাবার পেটের উপর বসে তার লোমশ বুকের উপর ছোট্ট খেলনা গাড়িটা চালাত রাহাত। মুখ দিয়ে ইঞ্জিনের শব্দ করত। হর্ণ বাজাত। গাড়ি চালিয়ে চালিয়ে ক্লান্ত হতো এক সময়, ঠিক তার বাবার মতো। তারপর এক বুক ক্লান্তি নিয়েই ঘুমিয়ে পড়ত বাবার বুকের উপর। এখন বাবা নেই। খেলনা গাড়িটা চালাতে আগ্রহ পায় না রাহাত। ক্লান্তিরা ঘিরে ধরে না এখন ছোট্ট ছেলেটিকে, দু’চোখে লুটোপুটি খায় না ঘুমেরাও। মেলা রাত পর্যন্ত রাহাত তাই এখন জেগেই থাকে।
এমন দুঃসময়ে কাছে পাবার মতো রুমকির কেউ নেই এই শহরে। মা মারা যাওয়ার পরে সৎ মায়ের সংসারে তিষ্ঠাতে না পেরে সেই কবে লঞ্চে চেপেছিল রুমকি! ঢাকায় এসে এক গার্মেন্টে কাজ নিয়েছিল। সে কাজ ছেড়েছে সে মেলাদিন আগে, বলতে গেলে কবিরুলের সাথে বিয়ে হওয়ার পরপরই। পুরাতন গার্মেন্ট-সহকর্মী যারা এক সময় ছিল সুখ-দুঃখের সাথী তাদের সাথে আজ আর কোন যোগাযোগই অবশিষ্ট নেই। কেরানীগঞ্জের ওদিকে ওরা থাকত তখন। সেই সব সঙ্গী-সাথীরা হয়তো এখন আর থাকে না সেখানে, আর থাকলেও হয়তো তারা চিনতে পারবে না রুমকিকে। রুমকিও পথঘাট চিনে পৌঁছাতে পারবে না সেখানে এখন আর। এ শহরে পথেরা নিত্য রূপ বদলায়। চিনে উঠতে উঠতে ফের হয়ে ওঠে অচেনা। আর এ পথে তো পা-ই পড়ে নি বহুদিন হয়, চিনে রাখার চেষ্টাও ছিল না রুমকির সদ্য অতীত হওয়া দিনগুলোতে!

দিনদশেক কাটাল রুমকি পথ পানে চেয়েই। তারপর একদিন সাহেবের দেওয়া কার্ডটা হাতে করে রাহাতকে সাথে নিয়ে চলল মালিবাগের দিকে। খুঁজে-টুজে বের করল সাহেবের বাসা। বাসার সিকিউরিটি কবিরুলকে চিনত। নিপাট ভালো লোক বলে জানত সে কবিরুলকে। এমন একজন ভালো মানুষের হঠাৎ তিরোধানে সেও ভীষণ মর্মাহত- জানাল রুমকিকে কথায় কথায়। আরও বললো, সাহেব এখন বাসায় নেই, সকালে দৌড়েছেন অফিসে। সে তাই ইন্টারকমে মেমসাহেবের সাথে কথা বললো, তাকে জানাল কবিরুলের স্ত্রী রুমকির আগমনের কথা। অনুমতি মিলল। রুমকি রাহাতকে সাথে নিয়ে ঢুকল সাহেবের ফ্ল্যাটে।
মেমসাহেব বললেন, ‘সাহেবের অফিসে যেতে হয় প্রতিদিন। আর কতদিন তিনি কবিরুলের পথ চেয়ে থাকবেন! তাই নতুন ড্রাইভার নেওয়া হয়েছে।’
রুমকি লম্বা শ্বাস ফেলল।
কবিরুলের হঠাৎ নিরুদ্দেশে হা-হুতাশ ঝরল মেমসাহেবের কথায়। এক ফাঁকে ফ্রিজ থেকে বের করে মিষ্টি খেতে দিল রাহাতকে। খাবার টেবিলের উপর রাখা ফলমূলের গাদা থেকে একটা আপেল আর একটা কমলা তুলে দিল রাহাতের হাতে। জোর করে এটা ওটা খাওয়াল রুমকিকেও। রুমকির কিছুই নামছিল না গলা দিয়ে। কি সুন্দর ফুটফুটে একটা বাচ্চা রয়েছে সাহেবদের! দামী খেলনা নিয়ে খেলছে তো খেলছেই, চুপচাপ, টিভির সামনে বসে। রাহাতের চেয়ে বয়সে কিছুটা ছোটই হবে। কিন্তু এ বয়সেই ইংলিশ স্কুলে যায়, কথায় কথায় বললো মেমসাহেব।
রুমকি যখন চলে আসছিল তখন মেমসাহেব জিজ্ঞেস করল, ‘তোমাদের এখন চলছে কিভাবে?’
চুপ করে রইল রুমকি। ছেলেকে নিয়ে বেঁচে আছে- আধপেটা খেয়ে, না খেয়ে। ক্ষুধা, আশঙ্কা আর অনিশ্চয়তার মেঘ সারাক্ষণ মাথার উপরে, আকাশ কাঁপিয়ে ডাকছে সব সময়। এটাকে কি চলা বলে! হয়তো বলে।
রুমকির হাতে পাঁচশ টাকার একটা নোট দিল মেমসাহেব। হাত পেতে সেটা নেওয়া ছাড়া আর কিছু করার ছিল না রুমকির।
‘এখন কি করবে ঠিক করেছ?’ জানতে চাইল মেমসাহেব।
‘ভাবতাছি কারো বাসা-বাড়িত কাম নিমু।’ বললো রুমকি।
কি যেন ভাবলেন মেমসাহেব, ‘সামনের মাস থেকে আমি একজন কাজের লোক রাখব ঠিক করেছি।’ একটু থামল, বলবে কি বলবে না একটু দোনামনা করছিল বোধ হয়, শেষ পর্যন্ত বলেই ফেলল, ‘দীপ্তকে স্কুলে দিয়েছি ক’দিন হলো। তোমার সাহেবের সময় নেই। তাই আমিই নিয়ে যাই ওকে সকালে, ঘণ্টাদু’য়েক থাকতে হয় সেখানে আমায়। তারপর বাসায় এসে ঘোর-দোর গোছানো, রান্না-বান্না করা, জামা-কাপড় পরিষ্কার করা খুব কঠিন হয়ে যায়, সময় মেলাতে পারি না। তাই ভাবছি একটা কাজের লোক রেখে দেব। ইচ্ছে করলে… ইচ্ছে করলে তুমি আমার বাসায় কাজ করতে পার। আমাদের ছোট সংসার, কাজ কর্ম বেশি একটা নেই।’
সময় নেওয়াটা তখন বিলাসিতা-ই মনে হচ্ছিল রুমকির কাছে, যেটা তার সামর্থ্যের একেবারেই বাইরে। খুব দ্রুতই সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিল তাই সে। তৎক্ষণাৎ হ্যাঁ বলে দিল, সাহেবের বাসায় ঠিকে-ঝিয়ের কাজে লেগে গেল পরদিন থেকেই।

কবিরুল থাকাকালীন সময়ে রুমকিরা যে বাসাটিতে ভাড়া থাকত তার ভাড়া ছিল মাসে পঁচিশশ’ টাকা। এখন কবিরুল নেই, আয়-রোজগারও নেই। তাই বাসাটা ছেড়ে দিল রুমকি। আবার যেকোন দিন কবিরুল ফিরে আসতে পারে, আর এসেই হয়তো খুঁজবে ওদের পুরোনো বাসাতেই, এই ভেবে পুরোপুরি এলাকা ছেড়ে যেতে পারল না। আগের বাসাটার সামান্য দূরে বস্তির মধ্যে একটা খুপরি ঘর ভাড়া নিল রুমকি, মাসিক নয়শ’ টাকা ভাড়ায়। সেখান থেকে কাজে যেতে লাগল প্রতিদিন সাহেবের বাসায়। রাহাতও তার সাথে যায়।
রুমকির রোজনামা মোটামুটি একই রকমের। সকাল ন’টার দিকে সাহেবের বাড়িতে যায় সে। একটু বাদে দীপ্তকে নিয়ে চলে যায় মেমসাহেব। সেই ফাঁকে কিছু কাজ এগিয়ে রাখে রুমকি। স্কুল থেকে ফিরে এসে সাজ-পোষাক বদলে রান্নায় হাত দেয় মেমসাহেব, রুমকি তখন এটা ওটা এগিয়ে দেয় তাকে। এক ঘর খেলনা দীপ্তর। সেগুলো নিয়ে রাহাত খেলে দীপ্তর সাথে। প্রায় সময় দু’জন মিলেমিশে খেলে, মাঝে মাঝে ঝগড়া বেধে যায় দু’জনের মধ্যে, তখন রুমকি দৌড়ে গিয়ে থামায়।
প্রায় চারমাস হয়ে গেছে কবিরুল নিখোঁজ। এখন মাঝে মাঝেই রুমকির মনে হয় কবিরুল আর ফিরে আসবে না কোনদিন। ঢাকা ফেরার পথে হয়তো কোন দুর্বৃত্তের হাতে সে বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছে, লাশটা দাফন হয়ে গেছে বেওয়ারিশ হিসাবে- এ রকম নির্দয় আশঙ্কারাও হায়েনার মতো হানা দেয় রুমকির মনে, যদিও রুমকি সেগুলোকে মনের ঘরে বাসা বাঁধতে দেয় না কখনোই।

এক শুক্রবারের কথা। সাহেব মুখ গুঁজে ছিলেন কম্পিউটারে। ছুটির দিনে রান্না হয় বেশি পদের। রুমকি ছিল মেমসাহেবের সাথে, রান্নাঘরে। অগ্রহায়ণের দিন, রোদের তাপ একটু কমেছে, তবুও দু’জনই ঘেমে নেয়ে অস্থির চুলোর পিঠে। ভীষণ তাড়াহুড়ো দু’জনেরই- ডানে-বায়ে তাকানোর সময় নেই একদম। এমন সময় গলা ফাটানো চিৎকার ভেসে আসল দীপ্তর, ওদিককার ঘর থেকে- যে-ঘরটিতে রাহাত আর দীপ্ত খেলছে। রুমকি ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটল সেদিকে। গিয়ে দেখল রাহাতের হাতে একটা চকোলেটের খোসা, মুঠি শক্ত করে সে সেটাকে ধরে রেখেছে, আর দীপ্ত সেটা ওর কাছ থেকে কেড়ে নিতে চাইছে। দীপ্ত শারীরিক শক্তিতে কোনমতেই পারছে না রাহাতের সাথে, তাই চিৎকার করছে, যেকোন মূল্যেই সে ঐ মূল্যহীন খোসাটা পেতে চায়। রুমকি গিয়েই ছেলের কাছ থেকে কেড়ে নিতে চাইল খোসাটা। ছেলেও জেদ ধরে আছে, কিছুতেই হাতছাড়া করবে না সে ওটা। অবস্থা বেগতিক দেখে ছেলের পিঠে দুম করে কিল বসিয়ে দিল রুমকি। কিল খেয়ে রাহাত চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। রুমকি জোর করে তার কাছ থেকে চকোলেটের খোসাটা কেড়ে নিয়ে মেমসাহেবের ছেলে দীপ্তর হাতে দিল। এখন দীপ্তও সেটা নেবে না। সে সমানে কেঁদেই চলেছে। ততক্ষণে মেমসাহেবও চলে এসেছে, ‘খালি জেদ’, বলেই চড় কসাল দীপ্তর গালে। সাহেব বেরিয়ে এলেন কম্পিউটার ফেলে, মেমসাহেবকে বললেন, ‘তুমি ছেলের গায়ে হাত তুললে কেন?’
মুহূর্তেই সারা বাড়ি রূপ নিল জলন্ত উনুনে। ছেলেকে টানতে টানতে রুমকি নিয়ে চলে গেল রান্নাঘরের এক কোণায়। লজ্জায় আর ভয়ে বাতাসে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিল তখন রুমকির। কোনভাবে ছেলেকে নিয়ে অশরীরী হয়ে যেতে পারত যদি সে তক্ষুণি!
এক সময় দীপ্তর কান্না থামল। সাহেব মেমসাহেবও যার যার নিজের কাজে গেলেন। কিন্তু দু’জনেরই মুখ থমথমে। যেন যেকোন সময় বড়সড় ঝড় উঠবে!
সেদিন জুমআ’র নামায পড়ে বাসায় এসে সাহেব স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘রাহাতকে সাথে নিয়ে আসা চলবে না কিছুতেই। এ বাসায় কাজ রাখতে চাইলে রুমকিকে একাই আসতে হবে কাল থেকে।’
রুমকির চোখে আঁধার ঘনাল। এক রত্তি ছেলে তার। কোথায়, কার কাছে রেখে আসবে সে তাকে! ওই খুপরি ঘরে ছোট্ট ছেলেটাকে একা রেখে আসার কথা সে ভাবতেই পারে না। মেমসাহেবের হাতে পায়ে ধরল রুমকি খুব করে। কিন্তু মেমসাহেব কোন কথা বললো না।
সেদিন সন্ধ্যার পরে একটু আগে-ভাগেই ঘরে ফিরতে পারল রুমকি। মনটা ভালো ছিল না। রাহাতের মনটাও ভেজা ভেজা। তার বুঝতে বাকি নেই বড় সড় কিছু একটা গোল বেঁধেছে। এটাও বুঝতে পেরেছে, গোলটা তাকে নিয়েই। ঘরে ফিরে তেল চিটটিটে বিছানায় গড়িয়ে পড়ল রাহাত। দুপুরবেলা ছেলেকে মেরেছে রুমকি, সে কারণে ভীষণ অনুশোচনা হচ্ছিল রুমকির। ছেলের পাশে বসে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল, কপালে চুমু খেল কয়েকটা। মায়ের আদরে ছেলের মন আরও নরম হলো যেন, দু’চোখ বেয়ে নামল জলপ্রপাত ‘মা, বাবায় আর আসব না, তাই না?’
‘আসব বা’জান, আসব।’ বলতে বলতেই চোখ ভিজল রুমকিরও।
‘বাবায় আইলে বাবারে কমু আমারে চকলেট কিনে দিতে। বাবায় কিইন্যা দিব না মা?’
‘হ বা’জান, দিব।’ বলে ছেলের কপালের উপর থুতনি রাখল রুমকি।
রাহাত চোখ বুজল। একটু বাদেই ঘুমিয়ে পড়ল ছেলেটা। রাহাতের মাথা বালিশে সোজা করে দিয়ে হাত-পা টেনে ঠিকঠাক করে দিতে গিয়ে টের পেল ছেলের হাতের মুঠিতে কিছু একটা শক্ত করে ধরা। মুঠি আলগা করতেই বেরিয়ে এলো দুপুরের সমস্ত গণ্ডগোলের মূল সেই চকোলেটের চকচকে খোসাটা! একটা দীর্ঘশ্বাস বের হলো রুমকির বুক ফুঁড়ে, সেই সাথে এলো বুক কাঁপিয়ে কান্না। আহা, তার সোনাটা! তার আদরের মানিকটা!
খুব ভালো ছিল না রুমকিরা কখনোই। কিন্তু স্বস্তিতে ছিল। অভাব বলতে ছিল না কিছুই। মন-মেজাজ ভালো থাকলে, বেতনের টাকা পেলে কবিরুল ছেলের জন্য খেলনা কিনে আনত। কিনে আনত আইসক্রিম, চকোলেট। অথচ এখন! কতদিন হয়ে গেল ছেলেটাকে একটা খেলনা কিনে দিতে পারেনি রুমকি। ছেলেটা এটা ওঠা খেতে চায়। কিছুই কিনে দিতে পারে না তাকে। এই চারমাসে নিজের দিকেও তাকায়নি রুমকি। আগের চেয়ে মনে হয় সে একটু শুকিয়েছে, ব্লাউজটা ঢিল ঢিল লাগে ইদানীং। সেদিন মেমসাহেবের আয়নায় নিজের মুখ দেখে ভীষণ চমকে উঠেছিল রুমকি। চোখদু’টো কোটরে, মুখ শুকিয়ে কাঠ। যে ক’টা টাকা পায় সে ঠিকে-ঝিয়ের কাজ করে তার অনেকটাই চলে যায় ঘর ভাড়া দিতে। বাকি টাকা খেয়ে না খেয়ে জমাচ্ছে রুমকি। কবিরুলের খুব শখ ছিল ছেলেকে ‘কিন্ডারগার্ডেন’ স্কুলে পড়াবে। এখন কবিরুল নেই। কিন্তু স্বপ্নটা এখনও ‘নেই’ হয়ে যায়নি। রুমকি এগোচ্ছিলও ঠিক পথে। কিন্তু কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল আজ! এখন কি করবে রুমকি? রাহাতকে কার কাছে রেখে যাবে সে কাজে যাওয়ার সময? সারাদিন কিভাবে একা একা থাকবে ছোট্ট ছেলেটা এই খুপরি ঘরে! এমনিতে সাহেব খুব নরম মানুষ। কিন্তু একবার ‘না’ বললে না, কিছুতেই ‘হ্যাঁ’ বলানো যাবে না। কি হবে এখন! মেমসাহেবের বাসার কাজটা ছেড়ে দেবে? এত ভালো একটা কাজ!
কতক্ষণ শুয়েছিল রুমকি বলতে পারবে না। একটু চোখ লেগে গিয়েছিল। হঠাৎ-ই জড়ানো গলায় উড়ে আসা হিন্দী গানের কলি চোখের ঘুম তাড়াল। রুমকি শুনতে পেল টলমল পায়ে কারও পথ মাড়ানোর শব্দ। নিশ্চয়ই হায়দার! এই বস্তির রাজা সে, খান-বিশেক খুপরির মালিক, সব ভাড়া দেওয়া, অধিকাংশই গার্মেন্টের মেয়েদের কাছে। খুপড়িগুলোর মধ্যে যারা থাকে তাদেরও মালিক হায়দার! গলা পর্যন্ত বাংলা মদ গিলে প্রতিরাতে দশটা-এগারোটার দিকে বস্তিতে আসে। কখনো ভাড়া নিতে, কখনো অন্য কিছু। রুমকি অন্য কিছু চাইবার সুযোগ দেয় না কখনোই, প্রতিমাসে আগে-ভাগেই ঘর-ভাড়া শোধ করে দেয়। রুমকির হাত থেকে টাকা নেওয়ার সময় শকুনের মতো তাকায় হায়দার। শাড়ীর আঁচল টেনে ছেড়া ব্লাউজ ঢাকে রুমকি।
চোখের পলকে ফুঁ দিয়ে বাতি নিভিয়ে দিল রুমকি। হায়দারের পায়ের শব্দ এসে থামল রুমকির খুপরির দরজায়। গুনগুন করে গাইছে হায়দার, ‘মুন্নি বদনাম হুয়ি…।’ মৃদু ধাক্কা দেয় সে রুমকির চাঁচের দরজায়। যেন একটা ভল্লুক থাবার মধ্যে নখ গুটিয়ে শব্দহীন এগোয় শিকারের দিকে। রুমকি নিশ্বাস বন্ধ করে পড়ে থাকে লাশ হয়ে। ভল্লুকটা দরজা ভেঙে ভিতরে এসে শ্বাস-প্রশ্বাসহীন রুমকিকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যাবে অন্য কোন খুপরিতে, অন্য শিকারের ধান্দায়- এই আশায়।
দরজার উপর চাপ বাড়তে থাকে ক্রমশ। ভল্লুকটা কি আজ একটু বেশিই ক্ষুধার্ত! অঘ্রানের শীত-শীত রাতেও ঘামতে থাকে রুমকি। তার শরীর লেপ্টে যায় স্যাঁতসেঁতে বিছানায়। কৃষ্ণপক্ষের আঁধার চুইয়ে চুইয়ে ঢোকে রুমকির ঘরে। এক সময় জমাট অন্ধকার গ্রাস করে নেয় পুরোটা ঘর।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফয়জুল মহী সহজ,সরল, সুন্দর ও সাবলীল লেখনী।
ভালো লাগেনি ৩০ জানুয়ারী, ২০২০
Gazi Nishad অভিনন্দন।
জমাতুল ইসলাম পরাগ অভিনন্দন
ভালো লাগেনি ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
অনেক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
জাতিস্মর অসংখ্য অভিনন্দন...আর এত্ত এত্ত শুভ কামনা।
ওয়াহিদ মামুন লাভলু অনেক অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা।
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন, সব সময়।
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
শামীম খান Congratulations. Best of luck brother.
ভালো লাগেনি ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
অনেক অনেক ধন্যবাদ শামীম ভাই। শুভকামনা আপনার জন্য।
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
নাজনীন পলি খুব ভাল লাগলো আপনার লেখা । শুভেচ্ছা রইলো ।
ভালো লাগেনি ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু। গল্প পড়ার জন্য। মন্তব্য করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য।
ভালো লাগেনি ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
আমির ইশতিয়াক আপনার লেখা গল্প এই প্রথম পড়লাম। এক কথায় চমৎকার হয়েছে।
ধন্যবাদ আমির ভাই। শুভকামনা আপনার জন্য।

০৫ এপ্রিল - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৫ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.৩

বিচারক স্কোরঃ ৩.৫ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ১.৮ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী