আব্বু! ভাত খাবা না? বাবা! ভাত খাবা না? আব্বু! ভাত খাবা না? প্রতি রাতে মা আমাকে এভাবে খাওয়ার জন্য ডাকতে থাকেন। আমি এদিক ওদিক মোড়ামুড়ি করি, কিন্তু মা নাছোড় বান্দা, তাঁর কোন ক্লান্তি নেই। আমাকে প্রতি রাতে এভাবেই ডাকাডাকি করে তিনি ভাত খাওয়ায়-ই- ছাড়েন। সারাদিন ক্লাস করে এবং করায় আমি অনেক ক্লান্ত থাকি। আর ট্রাফিক জ্যামে প্রতিদিনই নাস্তানাবুদ হয়ে বাসায় ফিরি। বাসায় ফিরে তাই কথা বলার বা খাওয়া-দাওয়া করার আর কোন শক্তি শরীরে থাকেনা। বিছানায় তাই চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ি। আমি চুপচাপ ঘুমালেও, মা তো আর চুপ থাকতে পারেন না। তিনি তো মা, তাই তাঁর নিত্যদিনের কাজ হল, চিল্লাচিল্লি করে বিছানা থেকে উঠিয়ে আমায় ভাত খাওয়ানো। এজন্যই তিনি প্রতিদিন উপরের কথাগুলো চিল্লিয়ে বলতে থাকেন! মা কিছুদিনের জন্য গ্রামে বেড়াতে গিয়েছেন। আমি সারাদিনের কাজ শেষে বাসায় ফিরেছি। প্রতিদিনের ন্যায় চুপচাপ ঘুমিয়েও পড়েছি। গভীর ঘুমে আমি। রাত তিনটা। ঘুমের মাঝেই কানে আওয়াজ আসছে- আব্বু! ভাত খাবা না? বাবা! ভাত খাবা না? কিছুক্ষণ মোড়ামুড়ি করলাম। তারপর লাফ দিয়ে উঠলাম। ঘুম থেকে ওঠে, ডাইনিং রুমে গেলাম। মা ডাইনিংয়ে নাই। ডাইনিংয়ে কোন খাবারও সাজানো নেই। তাহলে মা কোথায়? পুরো বাসা খোঁজাখুজি। ও,ও মা তো গ্রামে গিয়েছেন। তাহলে আমায় ডাকল কে, ভূত?! না, না ভূত নয়। বুঝতে পারলাম- মায়ের ভালোবাসা আমায় ডাকছে। মা বাসায় নেই তাতে কি হয়েছে, মায়ের ভালোবাসা তো আমার পাশেই বিচরণ করছে। পেটে অনেক ক্ষুধা। ফ্রিজ খুললাম। খাবার বের করে, ঠান্ডা খাবার নিয়েই ডাইনিংয়ে বসলাম। খাবার গলা দিয়ে কোন ভাবেই ভেতরে যাচ্ছেনা। কিভাবে খাবার গলা দিয়ে যাবে, মা যে আজ পাশে নেই! খাবার না খেয়েই তাই বিছানায় ফিরে এলাম। দেখলাম-মোবাইলের স্ক্রিন আলোকিত হচ্ছে আর নিভছে। মোবাইলে মিসড কল বা মেসেজ আসলে এমনটা হয়। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখলাম, মা পঞ্চাশ বার ফোন দিয়েছেন। মোবাইল ভাইব্রেশন করা ছিল, উপরন্তু গভীর ঘুমে থাকায় আমি বুঝতে পারি নাই। ফোন না ধরায় মা আমায় মেসেজ দিয়েছেন- বাবা! তুমি ভাত না খেলে যে, আমার রাতে ঘুম হয় না। খাওয়া-দাওয়া করে একটা ফোন দিবা। না হয়, আমার আজ সারা রাত ঘুম হবে না। মায়ের ঘুম হবে না, আমি ভাত না খেলে! আবার ডাইনিংয়ে গেলাম, সামান্য ভাত খেলাম। মা কে ফোন দিলাম। ফোন বাজতেই মা ধরলেন। বাবা! খেয়েছো তো? জ্বি, মা খেয়েছি। ঠিক আছে বাবা ঘুমাও। বুক ফেটে কান্না চলে আসল, অঝোরে চোখ দিয়ে পানি ঝড়ল। ভাবলাম- আহ... কি অসাধারণ হতে পারে, মায়ের ভালোবাসা। সন্তান না খেলে, মায়ের নিদ্রা উড়ে যায়! আম্মু... ও আম্মু...! তোমায় অনেক ভালোবাসি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
১৩ ফেব্রুয়ারী - ২০১৪
গল্প/কবিতা:
০ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।